![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা দেখি যেভাবে দেখি (কহিলো সে ফিরে দেখো, দেখিলাম থামি , সম্মুখে ঠেলিছে মোরে পশ্চাতের আমি...) [email protected]
আমাদের সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাতের বেলায় এখানে সেখানে কাঁধে ঝোলা, সস্তা তোষকের কাপড়ে বানানো জোব্বা পরা, লম্বা চুল, শীর্ণ তণু, সন্ন্যাসীর মতো দেখতে এক কবি ব্যস্ত পায়ে হেঁটে যেতেন। কবি সাবদার সিদ্দিকি। তাঁকে দিনের বেলায় সাধারনত: ক্যাম্পাস-মধুর ক্যান্টিন এলাকায় দেখা যেতো না। তখন এরশাদ সরকার বিরোধী আন্দোলন চলছে। প্রধান প্রধান কয়েকটা ছাত্রসংগঠনেই ক্যাডার নামক অস্ত্রধারী ছাত্র-অছাত্রদের উপস্থিতি ছিলো। মাঝে মাঝে সে সব ছাত্র সংগঠন পরষ্পরের সাথে সশস্ত্র সহিংসতায় লিপ্ত হতো। সে সব ছাত্র সংগঠনের ভেতরের উপদলীয় কোন্দলেও গোলাগুলি-খুনোখুনি ছিলো নিত্যকার ঘটনা। সে সব সংঘাতের ফলশ্রুতিতএ কয়েক ঘন্টা বা দু'এক দিনের জন্য বিজয়ী পক্ষের নিয়ন্ত্রনে চলে যেতো কোন আবাসিক হল কিম্বা মধুর ক্যান্টিন এলাকা, বিজিত পক্ষ হতো ক্যাম্পাস ছাড়া। বিজয়ী পক্ষ নিজেদের শক্তি বৃদ্ধির জন্য ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে অস্ত্রধারী তরুনদেরকে নিয়ে এসে হলগেটে এবং মধুর ক্যান্টিনে মহড়া দিতো। সে রকম এক দিনের গোধুলী বেলায় কবি সাবদার কলাভবন এবং ডাকসু ভবনের পাশের রাস্তা দিয়ে ঢুকে মধুর ক্যান্টিনের পাশ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ এবং লাইব্রেরী ভবনের মাঝের রাস্তা দিয়ে আপন মনে হেঁটে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। মধুর ক্যান্টিনের সামনের আম গাছ তলায় চেয়ার পেতে বসে ছিলো কয়েকজন অস্ত্রধারী ক্যাডার। মাস্তানদেরকে সালাম -আদাব না দিয়ে, এদিক দিয়ে একজন মানুষ চুপ চাপ চলে যাচ্ছেন দেখে সেই মাস্তানদের ইগোতে চোট লাগলো (সম্ভবত: হলের গেষ্টরুমে অস্ত্রকোলে বসে থেকে নিরীহ ছাত্রদের সালাম পাওয়ার কালচারে অভ্যস্ত হয়ে তারা ভেবেছিলো দুনিয়ার সবাই তাদেরকে ছালাম দিতে বাধ্য)। যা হো'ক যখন তারা দেখলো কবি সাবদার তাদেরকে সালাম না দিয়েই হেঁটে মধুর ক্যান্টিনের পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছেন, তখান তারা পেছন থেকে কবিকে উদ্ধত ভাবে ডাকলো। কবি এবং অস্ত্রধারী ক্যাডারের মধ্যে সেই ডাক পরবর্তী কথোপকথন ছিলো নিম্নরূপ:
জনৈক অস্ত্রধারী ক্যাডার: "হেই মিয়া এদিকে আসো!"
কবি সাবদার সিদ্দিকি: "আমাকে ডাকছেন? কিছু বলবেন?"
জনৈক অস্ত্রধারী ক্যাডার: সালাম-আদাব কিছু দিলা না, তোমার নাম কি, বাড়ী কই তোমার? আমাগো চেনো না?
কবি সাবদার সিদ্দিকি: "নাতো ভাই আপনাদেরকে তো চিনতে পারলাম না। আমার নাম সাবদার সিদ্দিকি, বাড়ী চাঁদপুর।"
জনৈক অস্ত্রধারী ক্যাডার: ঠিক আছে, এর পর আমাদেরকে দেখলে ছালাম দিবা কিন্তু! এখন যাও।
কবি সাবদার সিদ্দিকি (ঘাড় নেড়ে সম্মতি প্রকাশ করে কয়েক কদম এগিয়ে গিয়ে আবার পেছন ফিরে): ও মিয়ারা, আমার বাড়ী কোন চাঁদপুর বুঝছো নাকি? (আকাশের দিকে আংগুল উঁচিয়ে) আমার বাড়ী ঐ চাঁদপুর!
অস্ত্রধারীদের কিংকর্তব্যবিমুঢ়তার মধ্য দিয়ে কবি তার চিরাচরিত ক্ষিপ্র পদক্ষেপে চলে গেলেন মসজিদ আর লাইব্রেরীর মাঝের রাস্তা ধরে কোথায় কে জানে!
১০ ই জুন, ২০২১ সকাল ৯:২৪
মুক্ত মানব বলেছেন: কবিরা চন্দ্রাহত, বলা যায়, লুনাটিক। তাই 'হেই চাঁদপুর'!
হ্যাঁ।
২| ০৯ ই জুন, ২০২১ সকাল ৮:৩৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কবি সাবদার সিদ্দিকি সম্পর্কে বর্ণনা ভালো লাগলো। আপনার লেখাটা দুইবার কপি হয়েছে। একটা মুছে দেন।
৩| ০৯ ই জুন, ২০২১ দুপুর ১:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ পড়লাম। লেখাটা দুবার এসেছে।
৪| ০৯ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৩:০৮
ঢাবিয়ান বলেছেন: কবি সাবদার সিদ্দিকি (১৯৫০-১৯৯৪)। আপনার অভিজ্ঞতা মনে হয় আশির শেষের দিকের । ভাল লাগলো পড়ে।
৫| ০৯ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৪:০১
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: কবির জন্য শুভকামনা ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই জুন, ২০২১ সকাল ৮:২৩
আমিই সাইফুল বলেছেন: ঐ চাদপুর বলতে কবি কি বুঝিয়েছেন? আর আপনি কি প্রত্যক্ষদর্শী? মাস্তান্দের মুখের অবস্থা সম্ভবত দেখার মত ছিলো।