![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা দেখি যেভাবে দেখি (কহিলো সে ফিরে দেখো, দেখিলাম থামি , সম্মুখে ঠেলিছে মোরে পশ্চাতের আমি...) [email protected]
পূবের মন পশ্চিমের ক্ষণ: পশ্চিমা প্রবীণদের আত্নমর্যাদার ধন
দু'হাজার সালের কথা। জীবনের প্রথম এসেছি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক বছরের একটা ফেলোশীপ প্রোগ্রামের অধীনে এ দেশের উত্তর পূর্ব উপকুলের এক নামকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে। সদ্য প্রবাসী, বাংলাদেশী তরুণ। সপ্তাহান্তে সময় কাটাতে স্থানীয় ষমাজসেবা মূলক কমিউনিটি সংস্থাগুলোর সাথে পরিচিত হবার আগ্রহ ব্যক্ত করলাম প্রোগ্রামের পরিচালকের কাছে। তিনি আমাকে দু'তিনটি সংস্থার নামে বললেন, তার মধ্যে একটার নাম ইউনাইটেড ওয়ে (United Way), একটা ওয়াইএমসিএ (YMCA)। এবং একটা বৃদ্ধাশ্রম। তিনটা প্রতিষ্ঠানের সাথেই ফোনে যোগাযোগ হলো। এক সকালে ইউনাইটেড ওয়ে'র Day of Caring প্রোগ্রামের অধীনে এক দরিদ্র প্রৌঢ় দম্পতির বাড়ীর আশপাশ এবং গ্যারাজ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী মিলে আমরা সুন্দর, পরিচ্ছন্ন এবং মেরামত করে দিলাম। একদিন স্থানীয়'ওয়াইএমসিএ'তে গিয়ে ওদের পরিচালিত কমিউনিটি কর্মসূচি সম্পর্কে জানলাম। আরেক সপ্তাহান্তে স্থানীয় এক বৃদ্ধাশ্রম থেকে দাওয়াত পেলাম ওদের একটা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছু বলতে। তো সেই বৃদ্ধাশ্রমের সেই অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রথম যে কালচারাক শক পেয়েছিলাম সে ঘটনা এখানে তুলে ধরছি। তাদের অনুষ্ঠান শুরু হবার কথা ছিলো সন্ধ্যা সাতটার দিকে। আমি নির্ধারিত সমায়ের আধাঘন্টা আগে বৃদ্ধাশ্রমের অডিটোরিয়ামে পৌঁছে দেখি আশি নব্বই বছরের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাগণ প্রানান্ত চেষ্টা করে টেবিল, চেয়ার, মন্চ ইত্যাদি সাজাচ্ছেন। একেকটা চেয়ার এবং টেবিল টানতে অশিতিপর বৃদ্ধদের হাঁস-ফাঁস অবস্থা দেখে আমার পুবের তরুন মন মূহূর্তেই নিজ পরিচয় ওদেরকে জানিয়ে আস্তিন গুটিয়ে কাজে লেগে যেতে চেয়েছিলো। কিন্তু অবাক কান্ড, সেখানে কর্তব্যরত বৃদ্ধরা আমার এ স্বেচ্ছাসেবী মনোভাবকে স্বাগত না জানিয়ে বরং সম্ভবত: তাদের শারিরিক সামর্থ্য সন্মন্ধে একটা কটাক্ষ ভাবলো এবং তীব্রভাবে আমাকে হাত লাগাতে নিরুৎসাহিত করলো। ওদের বক্তব্য: দেখো আমরা আমাদের অনুষ্ঠানের অবকাঠামো নিজেরাই ঠিকঠাক সেটআপ করতে পারবো জেনেই এ কাজে হাত লাগিয়েছি। এটা আমাদের (প্রবীনদের) আয়োজিত অনুষ্ঠান এবং এটা আমরা প্রবীণরাই সফল ভাবে ম্যানেজ করবো। তুমি আমন্ত্রিত অতিথি, তুমি চুপটি করে অতিথির মতো বসে থাকো এটাই আমরা চাই।ওদের চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝে গেলাম, এটা ওদের বয়সের আত্মমর্যাদার প্রশ্ন-ইজ্জতকা সওয়াল। পরিষ্কার বুঝতে পারলাম এটা 'আরেকবার সাধিলেই মানিয়া লইবো' টাইপের পরিস্থিতি নয়। অবশেষে বুড়োদের আত্মর্যাদার জেদের কাছে পরাস্থ হয়ে চুপ চাপ অতিথি হিসেবে বসে বসে দেখতে লাগলাম কি প্রাণান্ত পরিশ্রম করে বৃদ্ধাশ্রমের অধিবাসীরা একটা একটা করে চেয়ার এবং টেবিল যথাস্থানে রাখছেন এবং স্টেজ সাজাচ্ছিলেন । ভাবছিলাম বাংলাদেশের কেউ দুর থেকে এ দৃশ্য দেখলে হয়তো কাহিনীর অগ্রপশ্চাৎ না জেনেই মূহুর্তেই তার মনের আদালতে আমার বিচার করে তাৎক্ষনিক রায় দিয়ে দিতেন এ ছোকরা চিকিৎসার অতীত বেয়াদ্দপ, বৃদ্ধরা খেটে মরছে আর ছোকরা লাট সাহেবের মতো গ্যাঁট হয়ে বসে আয়েশ করছে। "তাই বলি ভোলা মন, তাৎক্ষনিক করিওনা কারো বিচার অনুক্ষণ!"
২| ২৮ শে জুন, ২০২১ সকাল ৯:২৩
খায়রুল আহসান বলেছেন: যদ্দেশে যদাচার!
সে দেশে আত্মমর্যাদা কোন মূল্যেই বিক্রয়যোগ্য নহে।
৩| ২৮ শে জুন, ২০২১ সকাল ১১:১৩
নীল আকাশ বলেছেন: সামাজিক বিষয়াষয় স্থান কালের উপর নির্ভর করে বদলে যায়।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জুন, ২০২১ ভোর ৪:৫৩
কামাল১৮ বলেছেন: ঠিক বলেছেন।এরা অকারন সম্মান দেখানো অকদম পছন্দ করে না।