নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিভৃতচারী

জ্ঞানের দৈন্য আমি পূরণ করি-অধ্যয়ন দিয়ে আর মেধার দৈন্য –অনুশীলন দিয়ে

খান ইখতিয়ার

আমার প্রিয় শিক্ষক কবিয়াল এস,এম, নুরুল আলম (মরহুম) বলতেন,'অখ্যাত থেক তবু কুখ্যাত হয়োনা'। আমি আমার এই সাধাসিধে জীবনে এই শিক্ষাটুকু পরম ভক্তির সাথে মেনে চলার চেষ্টা করি।

খান ইখতিয়ার › বিস্তারিত পোস্টঃ

আলহাজ্ব

২০ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২২

সেই পরিচিত কৌতুকটা দিয়েই শুরু করা যাকঃ দুই অপরিচিত ব্যক্তি একসাথে কোথাও যাচ্ছেন। প্রথমেই পরিচয় নেবার পালা। একজন অপরজনকে জিজ্ঞেস করলেন,ভাই আপনার নামটা যদি দয়া করে বলতেন। অপর ব্যক্তি আহলাদিত হয়ে উত্তর দিলেন, ‘হাজী রহমতুল্লাহ’। প্রশ্নকর্তা থমকে গেলেন। হাজী সাহেব সঙ্গীকে জিজ্ঞেস করলেন- আপনার নাম? “নামাজী বরকতুল্লাহ” নিঃসংকোচ উত্তর প্রথম প্রশ্নকর্তার। এবার হাজী সাহেবের থমকানোর পালা। বিড়বিড় করে হাজী সাহেব যেন একটু বিরক্তিই প্রকাশ করলেন,বললেন-এমন আজব কথা তো শুনিনি,কেউ কি নামের আগে নামাজী লাগায়? অপর ব্যক্তির চোখে কৌতুক খেলা করতে লাগলো। তিনি আবার প্রশ্ন করলেন-হুজুরের বয়স? “পঁয়ষট্টি” নীরস উত্তর হাজী সাহেবের। “কয়বার হজ্ব করেছেন”? “দু’বার” এবার একটু আগ্রহ ভরেই জওয়াব দেন হাজী সাহেব।প্রথম প্রশ্নকর্তা বিনীতভাবে আরজ করে, “আপনার পয়ষট্টি বছরের জীবনে মাত্র দু’বার হজ্ব করে যদি আপনি নামের পূর্বে হাজী লাগাতে পারেন, তবে আমি দৈনিক পাঁচবার নামাজ আদায়কারী হয়ে কেন নামের পূর্বে নামাজী লাগাতে পারবনা? হাজী সাহেবের চেহারা দেখার মত আকৃতি ধারণ করে।

প্রিয় পাঠক, নিছক হাস্যরসের জন্য আমি এই কৌতুকের অবতারণা করিনি। এ থেকে শিক্ষনীয় আছে অনেক কিছুই। আজ আমাদের মুসলিম জাতির প্রায় সব কাজই আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সন্তুষ্টির পরিবর্তে মানুষের সন্তুষ্টি ও নাম যশের জন্য পরিচালিত হচ্ছে। আজকাল ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোও লোকদেখানো কার্যে পরিণত হয়েছে। নিছক আনুষ্টানিকতায় পর্যবসিত হতে চলেছে ধর্মীয় মর্মবাহী অনুষ্টানগুলো,আনুষ্টানিকতার তোড়ে ভেসে যেতে চলেছে প্রকৃত মর্ম। সুন্দর সুন্দর কাপড় পরিধান করে ঈদ্গাহে হাজির হই,যে শিক্ষা প্রদান ও গ্রহণের জন্য ঈদ্গাহে জমায়েত হতে ইসলামের নির্দেশনা তার কাছ থেকে আমরা অনেক দূরে। কোরবানীর দিনে অবলা পশুটি জবাই করে আমরা গর্ববোধ করি,আনন্দে উদ্বেলিত হই,কিন্তু মনের ভেতর জেগে থাকা শত পশুত্বকে কোরবানী দেয়া হয়না। এতো ইসলামের শিক্ষা নয়।

প্রাচীন মিশরে অনেক আগে থেকেই মমি করে রাখা হত মানুষকে। মৃত্যুর পর প্রিয়জন আপনার কাছেই অবস্থান করছে কিন্তু শুধুমাত্র দৈহিকভাবে,আত্নিক কোন বন্ধন তার সাথে আপনার আজ নেই। উন্মেলিত নয়ন আপনার পানে থাকিয়ে রয়েছে ঠিকই কিন্তু সে নয়নে দৃষ্টিশক্তি নেই,নেই সে ভালবাসার প্লাবন।যে দু’হাত দেখতে পাচ্ছেন তা কখনোই আপনাকে কাছে টেনে নেবেনা, মাথায় হাত বুলিয়ে দেবেনা। সে হাত, বুক,মুখ দেখতে পাচ্ছেন তা কখনোই আপনাকে জড়িয়ে ধরে বলবেনা,প্রিয় বৎস তোমার কি কোন কষ্ট হচ্ছে? এক কথায় বলা যায়,যে দেহ দেখতে পাচ্ছেন,তার থেকে প্রাণবায়ু উড়ে গেছে অনেক আগেই,তাতে নেই কোন বোধশক্তি। আজ মুসলিম জাতির অবস্থা ও তথৈবচ। আল্লামা ইকবালের সাথে আপনিও গলা মিলিয়ে বলতে পারেন- “রছম আছে আজানের,নেই সে বেলালী সুর-দর্শন আছে তবে গাজ্জালীর শিক্ষাতো আজ বহুদূর”। মুসলিম জাতির সেই খোদাভীতি,রাসুল প্রেম,স্পৃহা, উদ্দাম যেন বিদায় নিয়েছে অনেক আগেই। রিয়া বা লোকদেখানো হয়ে পড়েছে আমাদের সব ইবাদাত। অনেকে আছেন যারা জীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র করে গড়ে তোলা সঞ্চয় নিয়ে আল্লাহ্‌র রাহে হজ্বে যাত্রা করেন, কিন্তু হজ্ব করে যখন তার মনে উদয় হয়, আমাকে লোকে হাজী বলবেতো? তখন তার হজ্বের উদ্দেশ্য কি আদৌ পূরণ হয়? যে সব কাঠ মোল্লারা এসব হাজী, আলহাজ্ব শব্দগুলো নামের সাথে পরিচয়বাহী করার ট্রাডিশন চালু করেছেন, তারা কি একবারও ভেবে দেখবেন-তাদের এ ব্যবসায়িক চিন্তাভাবনা কজন হজ্বযাত্রীর নিয়তে কালো প্রলেপ ফেলছে,এঁকে দিচ্ছে সন্দেহ চিহ্ন। অনেকে আবার আরো আগ বেড়ে জিজ্ঞেস করছেন,আচ্ছা ভাই,কয়বার হজ্ব করলে হাজী আর কয়বার করলে আলহাজ্ব? যেন হাজী আর আলহাজ্ব হওয়ার জন্যই তার এ পরিশ্রম। বিভিন্ন প্রোগ্রামে দাওয়াত দিতে গিয়ে দেখেছি,নামের পূর্বে আলহাজ্ব না লিখলে অনেকের মুখে মেঘ জমে,প্রদেয় অনুদানের অংকটা বহুলাংশে স্বাস্থ্যহীন হয়ে পড়ে। রাসুলে আকরাম (দ),সাহাবায়ে কেরাম,আইম্মায়ে কেরামসহ এত বড় বড় মনীষিদের কারো নামের পূর্বে তো হাজী বা আলহাজ্ব শব্দ দেখিনা,তবে কেন আমাদের পাক-ভারত উপমহাদেশবাসীর এই আগ প্রবণতা?

একসময় পানির জাহাজে করে হজ্বে যেতে হত। শুনেছি আমাদের দেশের হজ্বযাত্রীরা যাওয়ার সময় শ্রীলংকায় যাত্রা বিরতি করে আদম (আঃ) এর মাযার জিয়ারত করত। এ সুযোগে কতক সুযোগসন্ধানী জাহাজ ছেড়ে পালাত এবং শ্রীলংকায় কিছু টাকা-পয়সা আয়ের চেষ্টা চালাত। এরা দেশে ফিরে আসলে এদের বলা হত কলম্বো হাজী। এখন উড়োজাহাজের কল্যাণে এ আশংকা কমলেও বেড়ে গেছে আরো শতধরণের সমস্যা ও সম্বাবনা। এখন নাকি হজ্ব ও ওমরাহ্‌র ভিসা নিয়ে অনেকে সৌদি আরব গিয়ে পালিয়ে বেড়ায় চাকরির খুঁজে। আর অনেকে চাকুরির খুঁজে সৌদি আরব গিয়ে আসার সময় হজ্ব করে এসে বড় হাজী সাহেব হয়ে যান। আরবের অনেক দেশে আবার অনারবরা জুব্বা পরিধান করতে পারেন না, তাই ওখানে ভাঁজ করে আলমিরাতে তুলে রাখা জুব্বাটা বাংলাদেশে এসে সবসময়ের বসনে পরিণত হয়। আর তিনি বড় মুফতি (?) হয়ে ফতোয়া দিতে থাকেন,সৌদী আরবে এটা নেই ওটা নেই,এগুলো তোমরা কেন কর? এগুলো শিরক,বিদাত ইত্যাদি। আমার আলোচনা ছিল লোকদেখানো ইবাদত নিয়ে । ঐ প্রবাসী যদি এই নিয়ত করতো যে, আমার জীবিকা নির্বাহের জন্য রোজগারের প্রয়োজন। আর আমি রোজগারের জন্য আমেরিকা-লন্ডন না গিয়ে সৌদি আরব যাচ্ছি এজন্য যে,আমি সেখানে গেলে পবিত্র হজ্ব সম্পাদন ও রাসুলে আকরাম (দঃ) এর জিয়ারতের সুযোগ পাব, তবে তার সমস্ত সফরই নিশ্চয়ই ছাওয়াবের হয়ে দাড়াত। কিছু কিছু আরব দেশে অনারবদের জুব্বা পরিধানে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমার এক বন্ধু সুন্দর এক মন্তব্য করেছেন। তার মতে, বর্তমান আরবদের আরবীয় জাতীয়তাবাদ ক্রমশ প্রখর হচ্ছে আর ইসলামী জাতীয়তাবাদ বা মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধ ক্রমশ তলানীতে ঠেকছে।

এবার একটু যাকাত উৎসব নিয়ে আলোচনা করি। যাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম স্তম্ভ এবং ইসলামী অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কল্যাণকামী ইসলামী অর্থনীতি যাকাতের সঠিকভাবে আদায় ও এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করে। ইসলামী রাষ্ট্রে যাকাত আদায় ও বন্টনের জন্য একটি সক্রিয় দপ্তর কাজ করে এবং কঠোরভাবে পর্যবেক্ষন করা হয় যাতে কেউ যাকাত ফাঁকি দিতে না পারে। রাসুলে আকরাম (দঃ) ও খোলাফায়ে রাশেদার শাসনামল ও রাষ্ট্রনীতি থেকে এ শিক্ষাগুলো আমরা পেয়েছি। বর্তমান বিশ্বে যে কটি রাষ্ট্র নিজেদের ইসলামী বলে পরিচয় দেয় তাদের যাকাত সম্পর্কীয় নীতি সম্পর্কে আমার পরিচ্ছন্ন ধারণা নেই এবং এ রচনায় তার প্রয়োজনও নেই। আসলে আমি এসব আলোচনা দ্বারা যাকাতের সঠিক উত্তোলন ও এর যথাযথ ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরতে চাইছি। আমাদের মত সুবিধাবাদী গণতন্ত্রের দেশে যাকাত আদায় ও বন্টনের জন্য কোন দপ্তর কার্যকর নেই বিধায় যাকাত প্রদানকারীরা নিজ উদ্যোগে যাকাত বন্টন করেন। তাদের যাকাত আদায় নিয়ে প্রশ্ন উঠতোনা যদি তারা ইসলামের দাবী অনুযায়ী যাকাত আদায় করতেন। বর্তমানে তাদের যাকাত আদায় দ্বারা যাকাতের উদ্দেশ্য শুধু ব্যাহতই হচ্ছেনা বরং অনেকক্ষেত্রে ভঙ্গও হচ্ছে। দারিদ্র দূরীকরণের বদলে প্রতিবছর বেড়ে চলছে দরিদ্র লোকের সংখ্যা। আগে আমরা ঈদুল ফিতর সন্নিকটে এলে পত্রিকায় দেখতাম, “অমুক শিল্পপতি যাকাত বন্টন করছেন”।পত্রিকায় ছাপানো ছবিতে দেখা যেত তার হাতে শাড়ি,লুঙ্গি,পাঞ্জাবী বা পঞ্চাশ-একশত টাকার নোট। আর পত্রিকায় এখন দেখা যায়, অমুক শিল্পপতির যাকাত প্রদানের সময় ধাক্কাধাক্কিতে এতজন নিহত, এতজন আহত। আগে শিল্পপতিরা ব্যক্তিগত প্রচারের জন্য তার যাকাত প্রদানের ছবি পত্রিকা অফিসে পাঠাতেন আর এখন পত্রিকাওয়ালারা শিল্পপতির যাকাত উৎসব কাভার করতে গিয়ে হতাহতের সংবাদ আনে। উভয় ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে প্রচারই সার, যাকাত প্রদানের আসল উদ্দেশ্য সুদূর পরাহত। নতুবা কোন বাস্তব জ্ঞানসম্পন্ন লোক কি বলতে পারে এই সস্তা শাড়ি কিংবা একশত টাকার নোট দিয়ে কোন লোকের দারিদ্র দূর হবে। ইসলাম তো যাকাত প্রদানের নাম দিয়ে হাজার হাজার লোককে আঙ্গিনায় সমবেত করে উৎসব আয়োজন করতে বলেনি। ইসলামে যাকাত প্রদানের উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজ হতে দারিদ্র দূর করা। দারিদ্র দূর করতে হলে এমনভাবে যাকাত দিতে হবে, এবার যে যাকাত নিচ্ছে সে যেন আগামীবার যাকাত নিতে না আসে। প্রয়োজনে সামর্থানুসারে কম সংখ্যক লোককে দেয়া হোক। আর বর্তমান পদ্ধতিতে এইবার যে যাকাত নিচ্ছে সে পরবর্তীবার তার আত্নীয় স্বজনসহ আট দশজন নিয়ে আসছে এবং ক্রমেই বেড়ে চলেছে যাকাত গ্রহণকারীর সংখ্যা। একই সূচকে বাড়ছে দরিদ্র জনগোষ্টি। এ ধরণের যাকাত প্রদান হতে প্রকৃতপক্ষে উপকৃত হচ্ছেনা কেউই না যাকাতদাতা না যাকাত গ্রহীতা। জাগতিকভাবে উপকৃত হচ্ছে সেই যাকাত দাতা যার উদ্দেশ্য প্রচার। তাহলে এই যাকাত আদায় কি লোক দেখানোর জন্য?

এ ধরণের যাকাত আদায় করতে গিয়ে যে শুধু ছাওয়াব হতে বঞ্চিত হতে হয় তা নয়, ইহলৌকিক ক্ষেত্রেও শিকার হতে হয় অনেক বিড়ম্বনার। গত চারদলীয় জোট সরকারের আমলের আমাদের সংসদ সদস্যের বাড়ি আমাদের সন্নিকটে। তিনি সংসদ সদস্য থাকাকালে একবার ঈদের আগে যাকাত দিতে বাড়ি আসলেন। যাকাত দেওয়ার সংবাদ শুনে তার বাড়ির আঙ্গিনাসহ সংলগ্ন রাস্তা লোকে লোকারণ্য , যেন এক বিশাল জনসভা। যাকাত দিতে দিতে যখন তিনি দেওয়া বন্ধ করে দিলেন তখনো তার বাড়ির সামনে ও রাস্তায় তিন-চতুর্থাংশ লোক অপেক্ষমান। হতভাগারা শুন্যহাতে ফিরে যেতে যেতে এম পি সাহেবের বাপ দাদার শ্রাদ্ধ করছিল এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল যে শ্রোতাদের কানের রোজাই চলে যাবার যোগাড়। অনেকে তো বলে ফেলছিল, আগামীবার ভোটের জন্য গেলে ঝাড়ু মারবে, জুতো মারবে হেনতেন অনেক কিছুই। একজনকে সাহস করে বলেই ফেললাম-যখন ভোটের পূর্বরাত্রে ‘কচকচে বাংলাদেশ ব্যাংক’ ধরিয়ে দেয়া হবে তখন সবই ভুলে যাবি। এর সাথে সংশ্লিষ্ট আরেকটি ঘটনা বলে যাকাত প্রসঙ্গ শেষ করব। ঈদুল ফিতরের পূর্বরাত্রে জরুরী প্রয়োজনে নানাবাড়িতে যেতে হয়েছিল। পাশের গ্রামের এক অপরিচিত রিকশাওয়ালাকে আসা যাওয়ার জন্য রিজার্ভ করে রওয়ানা দিলাম। রাতের বেলা, তাই চুপচাপ বসে না থেকে তার সাথে অনেক কথাই হল। তার কাছ হতে জানতে পারলাম, যেদিন এম পি সাহেব যাকাত দিচ্ছিলেন সেদিন এই রাস্তার অনেক রিকশাওয়ালা যাকাতের জন্য গেছিল, কিন্তু তিনি যাননি। তার সাথী রিকশা চালকেরা যখন যাকাত না পেয়ে বিফল মনোরথ হয়ে ফিরে আসছিল তখন রিকশা চালিয়ে তার পকেটে জমা হয়েছিল দুইশত আশি টাকা। তাকে তার এ সাহসী সিদ্ধান্তের জন্য ধন্যবাদ জানালাম এবং তার নিকট যাকাতের উদ্দেশ্য ও বর্তমান আদায়রীতির পার্থক্য তুলে ধরলে তিনি এর আগের বছরের (২০০৩) একটি ঘটনার কথা জানালেন। স্বল্প পরিচয় এক লোক তার রিকশায় যাচ্ছিল। নামার সময় ভাড়া বাবদ বিশ টাকা এবং একটি পাঁচশত টাকার নোট দিয়ে বলে দিলেন যেন কাউকে না বলে, বললে আগামী বছর আর দেবেননা। রিকশাওয়ালা মন্তব্য করলেন,দান করলে এমন হওয়া চাই, প্রকৃত দাতা বিজ্ঞাপন দিয়ে দান করেনা। আমিও সায় জানালাম।

নামের জন্য কাজ করলে যে অনেক ক্ষেত্রে হাসির খোরাক হতে হয় তার একটি বাস্তব উদাহরণ দিয়ে ইতি টানছি। গত চারদলীয় জোট সরকারের সময় চকরিয়া-পেকুয়া সংসদীয় এলাকার এম পি ছিলেন যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দীন আহমদ। সে সময় সেখানে “শহীদ জিয়া স্মৃতি বৃত্তি পরীক্ষা” নামে একটি বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্টিত হয়। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে একটি প্রশ্ন ছিল- যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দীন আহমদ সম্পর্কে দশটি বাক্য লেখ। চতুর্থ শ্রেণীর কোমলমতি ছাত্রীটি, যে শিখে গিয়েছিল ‘গরু’ সম্পর্কে ৫টি বাক্য সে ‘গরু’ রচনা অনুকরণ করে লিখলঃ সালাহউদ্দীনের দুইটি হাত ও দুইটি পা আছে। সালাহউদ্দীনের একটি নাক ও দুইটি কান আছে। তার দুইটি চোখ আছে। তার একটি মাথা আছে এবং মাথার অগ্রভাগে কিছু চুল আছে।সালাহউদ্দীন একটি গৃহপালিত পশু এবং সে আমাদের খুব কাজে লাগে।

(লেখাটি মাসিক ছাত্রবার্তা,মার্চ ২০০৪ সংখ্যায় প্রকাশিত এবং ঈষৎ পরিমার্জিত)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৭

শাহরিয়ার খান রোজেন বলেছেন: শেষ জায়গাতে এসেও হাসলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.