![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
'তারমানে আপনি আপনার কিডনি বিক্রি করতে চান? '
'জ্বি স্যার চাই 'অত্যন্ত বিনীতভাবে বললাম।
আমি এখন ওসমান সাহেবের তাপানুকুল অফিসে বসে আছি এবং ওসমান সাহেব আমার সামনে বসে আছেন। বিরাট ধনী মানুষ ওসমান সাহেব।
'হুমম, কত? আই মীন, কত টাকায়. বিক্রি করবেন? 'প্রশ্ন করলেন ওসমান সাহেব।
'পাঁচলাখ '
'বলেন কী! দুলাখ হলেই তো কিডনি পাওয়া যায়, যায়না?
'অবশ্যই যায়, তবে স্যার, ওগুলোর বেশিরভাগেরই মালিক নেশাখোর। তাছাড়া স্যার আমার বংশ ভাল।শেখ বংশ। '
'আপনার বংশ দিয়ে আমি কি করব? 'ভ্রু সামান্য কুন্চিত হল ওসমান সাহেবের।
'স্যার এটা কি বললেন? সামান্য কটা টাকার জন্য নিজের দেহে নিম্নমানের 'প্রোডাক্ট 'কেন ব্যাবহার করবেন? '
'কিডনি আমার জন্য না, আমার একমাত্র ছেলের জন্য। ওর দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে।'
'তাহলে তো স্যার আরো উচ্চ বংশ দরকার। সৈয়দ বা চৌধুরী বংশ হলে ভাল হয়। তবে খানও চলবে। '
'আপনি কি আমার সঙ্গে রসিকতা করছেন?'বেশ কঠিন শোনাল আমার সামনে বসা ধনবান মানুষটার গলা।
'জ্বি, সামান্য করছি। আপনার মন ভাল করার চেষ্টা। '
'এই মহান দায়িত্বটা আপনার পালন না করলেও চলবে। আপনি এখন আসুন। আপনার কিডনি আমি নেবনা। '
'আপনি কিন্তু শেষপর্যন্ত কিডনিই নেবেন। '
'হোয়াট! '
'জ্বী আপনার চোখ দেখে আমার তাই মনে হচ্ছে। '
'ও আচ্ছা, তারমানে আপনি একজন সাধুসন্ত পুরুষ! মানুষের মুখ দেখেই ভূত ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারেন?'এবার ব্যাঙ্গের সুর ওসমান সাহেবের গলায়। যেন আমার কথায় বেশ মজা পাচ্ছেন উনি।
'জ্বী না, তথ্যে সামান্য ভুল আছে। ভূত টুত না, মনের কথা বলতে পারি।দাড়ান, আপনাকে প্রমাণ দেখাচ্ছি' ,বলে আমার পেছনে তালগাছের মত দাড়িয়ে থাকা ওসমান সাহেবের ম্যানেজারের দিকে তাকালাম। লোকটাকে আমার শুরু থেকেই ঘোড়েল মনে হচ্ছে।
'স্যার, ম্যানেজার সাহেব কি ভাবছেন বলি। উনি ভাবছেন, "হারামজাদার পাছায় লাথি মেরে বের করে দেয়া দরকার, "আমি কি ঠিক বলেছি ম্যানেজার সাহেব? '
এইফাঁকে মনে মনে শুকরিয়া আদায় করে ফেললাম যে আল্লাহ চোখের আগুনে ভস্ম হওয়ার কোনো সিস্টেম রাখেননি। নইলে এতক্ষণে আমার চেয়ারটায় নিশ্চিতভাবেই কিছুটা ছাই পড়ে থাকত।
"মাইনকার চিপা "বলে একটা জিনিস আছে, ঘোড়েল ম্যানেজার এখন সেই চিপায়। ব্যাটাকে আরো খানিকটা রগড়ে দেব কিনা ভাবছি এমন ওসমান সাহেব বলে উঠলেন, 'আমি বুঝতে পারছি আপনি সস্তা রসিকতা করে আমাকে অভিভূত করতে চাইছেন যেন আমি আপনার কিডনি নেই। আমি অত সহজে অভিভূত হইনা।'
'এখন আপনি ম্যানেজার সাহেবের সাথে স্কয়ার হসপিটালে যাবেন।যদি পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায় তাহলেই আপনার কিডনি আমি নেব। দাম যা চেয়েছেন তাই পাবেন। '
আমি মনে মনে বললাম, আপনি একশবার অভিভূত হয়েছেন। মুখে কিছু বললাম না। যেন উনার দয়ায় আমি খুবই কৃতজ্ঞ এমন একটা ভাব ফুটিয়ে তুললাম চেহারায়।
'ঠিকআছে আপনি এখন আসুন। '
আমি চলে আসছি তখন ওসমান সাহেব বললেন, 'বাই দ্যা ওয়ে আপনার নামটা যেন কি?'
আমি ফিরে তাকিয়ে বললাম 'স্যার, অভ্র '
দুই
লিফটে করে ওসমান সাহেবের অফিস থেকে নিচে নামছি আমি আর ম্যানেজার সাহেব।
'আচ্ছা ম্যানেজার সাহেব, স্যারের গাড়িটা কোন ব্র্যান্ডের? '
'স্যারের গাড়ি দিয়ে আপনি কি করবেন? '
'না, আসলে কোন গাড়িতে চড়ছি জানা থাকা ভাল না? '
'আমরা গাড়িতে যাচ্ছি আপনাকে কে বলেছে? '
'ও, ট্যাক্সি নেবেন?সমস্যা নাই কোনো। হলুদ ট্যাক্সি নিয়েন বস, এসিওয়ালা।'
'আমরা বাসে যাব, 'চোখমুখ শক্ত করে জানাল ম্যানেজার সাহেব।
যতটা মনে করেছিলাম, ব্যাটা দেখছি তারচেয়েও ঘোড়েল। আমি মনে মনে খানিকটা দমে গেলাম। তবে সেটা তো আর ম্যানেজারকে বুঝতে দেয়া যায়না। নইলে লোকটা নিজেকে বিশ্বজয়ী আলেকজান্ডার না ভাবলেও নিদেনপক্ষে এভারেস্ট জয়ী মুসা ইব্রাহীম ভেবে বসতে পারে।
ম্যানেজারকে কোনোটাই হতে দিলাম না। মুখে একগাল হাসি নিয়ে লোকাল বাসে উঠে পরলাম।
কোথায় যেন পড়েছিলাম, ছেলে হোক মেয়ে হোক, বদের হাড্ডি একটাই যথেষ্ঠ। ' ম্যানেজারকে দেখে আমারও সেরকমই মনে হচ্ছে। বদটা আমার উপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য লোকাল বাসে তুলেছে আমাকে।শালা কাউন্টার বাসে তুললেও তো পারতি! তোর বসের ছেলেকেই তো কিডনি দিচ্ছি!
বাসটা দেড়ঘণ্টা পর যখন স্কয়ার হসপিটালের সামনে আমাদের নামিয়ে দিল, ততক্ষনে ম্যানেজারের অবস্থা তথৈবচ। বেচারা বোধহয় অনেকদিন হল লোকাল বাসে চড়েনা। ইয়ে কেয়্যা চীজ হ্যায়, উসকো মালুম নেহী।তবে আমার কোনো সমস্যা হচ্ছেনা। যে টাকার জন্য নিজের কিডনি বিক্রি করছে সে নিশ্চয়ই রোলস রয়েসে চলাফেরা করেনা।পদযুগলের পরে লোকাল বাসই আমার একমাত্র বাহন। সুতরাং বাস থেকে নামার পর ম্যানেজারের ঘর্মাক্ত মুখের দিকে তাকিয়ে তাকে একটা মধুর হাসি উপহার দিতে পারলাম।
হাসিটা দিয়ে হাঁটা ধরলাম ফাইভস্টার হোটেলের মত হসপিটালের দিকে।যতবারই এই. হসপিটালটা দেখি ততবারই মনে হয় বিশাল এই বিল্ডিংটা যেন আমাকে উপহাস করছে। যেদেশের মানুষকে নিজের কিডনি বিক্রির জন্য প্রতিযোগিতায় নামতে হয় সেদেশে এমন হসপিটাল থাকতে পারেনা।
অবশ্য হসপিটালে ঢুকতে এসির হাওয়ায় গান্ধীসুলভ মনোভাব বেমালুম উবে গেল।মনে মনে কষে নিজেকে গাল দিলাম। শালা তুই ফকিরনী দেখে সবাই তোর মত পিজিতে ভর্তি হবেরে?
এখানে কত সুন্দর ব্যাবস্থা! ধনী মানুষগুলো শেষ নিশ্বাস ফেলবার আগমূহুর্তেও অনুভব করতে পারবে তারা কতটা ধনী!
আমাদের এখন গন্তব্য ড.ফজলুল কবীর। ওসমান সাহেবের ছেলে রাজের অপারেশন উনিই করবেন।
লিফটের দিকে এগুতে এগুতে হঠাৎ মনে হল, আচ্ছা হোটেল কি ফাইভস্টারের উপরে হয়?সিক্সস্টার, সেভেনস্টার? হওয়া তো উচিৎ। বাংলাদেশের সোনারগাঁও, আর জুরিখের হিলটন নিশ্চয়ই এক হবেনা। ম্যানেজারকে কি জিজ্ঞেস করব? উঁহু, বেচারার অবস্থা এখনও স্বাভাবিক না। তাছাড়া লোকটার জানার কথা না।তার বিলাসিতা লোকাল বাসে না চড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
ব্যাপারটা মাথায় থাকল। ওসমান সাহেবকে জিজ্ঞেস করতে হবে। আরো একটা জিনিস ঠিক করলাম। টাকাটা হাতে পেলে একদিন কোনো ফাইভস্টার হোটেলে থাকব। সারাদিন ঘুরলাম, খেলাম, রাতে হোটেলে থাকলাম। একদিনের বড়লোক! কত আর খরচ হবে? বিশ হাজার নাকি তিরিশ হাজার? হলে হোক।
লিফটে উপরে উঠছি। ম্যানেজার এখনও ঘাম মুছছে খানিক পরপর। বেশ অসুস্থই লাগছে দেখতে। লিফটের ভেতর একজন জিজ্ঞেস করল,'উনার কি হয়েছে? অসুস্থ? '
প্রশ্নকর্তা বোধহয় ধনী কোনো রোগীকে দেখতে আসা মধ্যবিত্ত আত্মীয়। ধনীদের এত সময় আছে নাকি আরেকজনের খোঁজ নেয়ার?
আমি দুঃখী দুঃখী গলায় বললাম, 'দুটো কিডনিই নষ্ট উনার। যেকোনো মূহুর্তে ইন্তেকাল। '
লোকটা মুখ দিয়ে চুক চুক জাতীয় শব্দ করল সমবেদনার।
আমি না তাকিয়েও বুঝতে পারছি, ম্যানেজার আরেকবার চেষ্টা করছে আমাকে চোখের আগুনে ভস্মীভূত করার।
তিন
আধঘণ্টা পর। আমি ড.ফজলুল কবীরের চেম্বারে বসে আছি। ম্যানেজার চলে গেছে।
এতক্ষণ ধরে ব্লাড টেস্ট, টিস্যু ম্যাচিং, আরো হাবিজাবি কীসব টেস্ট করলাম। ঘন্টাখানেক পর রিপোর্ট দেবে। ঠিক করেছি ফলাফলটা জেনেই যাব।
ড.ফজলুল কবীর ছোটোখাটো একজন মানুষ।বিশাল রিভলবিং চেয়ারটায় যেন ডুবে গেছেন ভদ্রলোক।
হঠাৎ করেই মানুষটার পা দেখতে ইচ্ছে হল।আমার ধারণা এই চেয়ারে বসলে উনার পাদুটো মাটিতে মেশেনা, উঁচু হয়ে থাকে বাচ্চাদের মত।
আমি রুমে ঢোকার পর থেকে তাঁকে গভীর মনোযোগে একটা ফাইল পড়তে দেখছি।আরো কয়েক মিনিট পর ফাইল থেকে মুখ তুলে আচমকা জিজ্ঞেস করলেন, 'দেখে তো শিক্ষিতই লাগছে চাকরি বাকরি না করে কিডনি বিক্রি করতে এসেছেন কেন? '
আকস্মিক আক্রমণে কিছুটা হকচকিয়ে গেলাম। সামলে নিয়ে পাদুটো বাড়িয়ে আমার বার্মিজ স্যান্ডেল দেখালাম ড.ফজলুল কবীরকে। বললাম, 'স্যার আমি প্লাস্টিকের স্যান্ডেল ব্যাবহার করি কেন জানেন? এপর্যন্ত বহু স্যান্ডেল ক্ষয় করেছি ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে। আঠাশটা চাকরির অ্যাপ্লিকেশন করেছি। একবার হাজতেও গেছি একারণে। '
'হাজতে গেছেন মানে? '
'একবার ইন্টারভিউ দিতে গেছি একজায়গায়। আমি রুমে ঢুকতেই প্রশ্ন কর্তা "উড়াধুড়া "প্রশ্ন শুরু করল।'
'দাড়ান, দাড়ান, "উড়াধুড়া মানে কি? "আমাকে থামিয়ে জানতে চাইলেন ড.ফজলুল কবীর।
আমি আকাশ পাতাল ভাবছি উড়াধুড়ার সমার্থক শব্দের জন্য। এমনসময় ডাক্তার সাহেব বললেন, ' লান্চের সময় তো হয়ে গেছে, কী খাবেন বলেন?'
'আমাকে বলছেন? 'কিছুটা অবাক হয়ে প্রশ্ন করলাম। আমাকে কেউ সেধে কিছু খাওয়াতে পারে বলে জানতাম না।
'জ্বী, আপনাকেই বলছি। '
'স্যার বিরিয়ানি কি খাওয়াতে পারবেন? কাচ্চি বিরিয়ানি। '
'দাড়ান অর্ডার দিচ্ছি'। ইন্টারকমের দিকে হাত বাড়ালেন তিনি।
'স্যার একটা দইয়ের অর্ডারও দেবেন। গুরুপাকের পর দই খাওয়া ভাল। '
আমার কথায় হেসে ফেললেন ড.ফজলুল কবীর। কাকে যেন একটা বিরিয়ানি আর একটা দইয়ের অর্ডার দিলেন।
আমার প্রশ্নবোধক দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে বললেন, 'আমি এগুলো খাবনা। আমার ডায়বেটিস আছে, বাসা থেকে খাবার আসে।আপনি গল্পটা বলুন। '
'স্যার "উড়াধুড়া" মানে অপ্রাসঙ্গিক বলতে পারেন। যেমন এখন আপনাকে এখন বললাম, "বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে সমাজতন্ত্রের গুরুত্ব "সম্পর্কে লেকচার দেন। '
যাইহোক,ওটা ছিল আমার আঠাশ নাম্বার ইন্টারভিউ।
এই সমস্ত ফাজিল লোকদের উপর ইতোমধ্যেই যথেষ্ঠ ত্যাক্ত আমি। হঠাৎ কি যেন হল।ফাজিলটাকে একটা রামচড় মেরে চলে এলাম। '
'চড় মেরে চলে এলেন? 'আশ্চর্য হয়ে জানতে চাইলেন ড.ফজলুল কবীর।
'না স্যার, আসতে পারিনাই। গেটে গার্ড ধরে চড় খাওয়া লোকটার কাছে নিয়ে গেল। লোকটা আমাকে দেখে কিছু বলল না।
একটু পরই দেখি পুলিশ হাজির। লুতুপুতু কেউ না, স্বয়ং ওসি। ওসিকে দেখে আমার মনে হল, এই লোকটা ডাকাত না হয়ে কিভাবে পুলিশ হল, এটা নিয়ে তিন সদস্যের একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা যেতেই পারে।
প্রশ্নকর্তা ওসিকে বললেন, 'এমন ব্যাবস্থা করেন যেন বদমাইশটা কমপক্ষে পাঁচবছর জেল থেকে বেরোতে না পারে। '
'ওসি তার ডাকাতের মত চেহারা আরো ভয়ংকর করে বলল, 'স্যার মার্ডার কেসে ফাঁসায়ে দেই? এমন কেস দাড় করাবো যাবজ্জীবন নিশ্চিত। '
'যা ইচ্ছা করেন, শুধু হারামজাদার তেল যেন কমে যায়। '
উনাদের কথোপকথনে আমি যথেষ্ঠ আতংকিত হলেও চেহারায় 'ড্যামকেয়ার 'ভাব বজায় রাখলাম। যেন জেলে আমি রোজই যাই।
কিছুক্ষণ পর ওসি আমাকে থানায় নিয়ে এল। মুখোমুখি বসলাম আমি আর ওসি সাহেব।
আশ্চর্য! এখন তাকে আগের মত ভয়ঙ্কর লাগছেনা। যদিও উল্টোটা হওয়াই উচিৎ ছিল। বনের বাঘকে তো বনেই বেশি ভয়ংকর লাগবে!
'আপনি কি জানেন, আপনি কি করেছেন? 'বলল ওসি সাহেব।
আমি জবাব দিলাম না।
'কোনো হোমড়া চোমড়া আত্মীয় আছে? 'আবার জিজ্ঞেস করল ওসি।
আমি মাথা নাড়লাম, নেই।
ওসি একজন কনস্টেবলকে বললেন আমার হাতকড়া খুলে দিতে।
সর্বনাশ! ক্রসফায়ার করবে নাকি? পুলিশও নাকি আজকাল ক্রসফায়ার করে শুনেছি।
আমি চুপচাপ বসে আছি। হঠাৎ ওসি ধমকে উঠলেন, 'বসে আছেন কেন?যান। '
'কোথায় যাব? 'জিজ্ঞেস করলাম।
'কোথায় যাবেন সেটা আমি বলে দেব? '
আমি চুপচাপ উঠে চলে এলাম।
'তারমানে লোকটা আপনাকে ছেড়ে দিল? 'নিখাদ বিস্ময় ড.ফজলুল কবীরের কন্ঠে।
'হুঁ ' ছোটকরে বললাম।
'আশ্চর্য! কেন? '
'জানিনা স্যার, তবে আমি ঠিক করেছি, কিডনি ৰিক্রির টাকা হাতে পেলে একদিন "উড়াধুড়া " বাজার করে ওসি সাহেবের বাসায় যাব। '
'আপনি না একটু আগে বললেন, "উড়াধুড়া "মানে অপ্রাসঙ্গিক? 'উড়াধুড়া বাজার 'আবার কি? "
'ভুল বলেছি স্যার,উড়াধুড়া মানে অপ্রাসঙ্গিক না, উড়াধুড়া মানে উড়াধুড়াই।
চার
বাসে করে হসপিটাল থেকে বাসায় যাচ্ছি।
পজিটিভ রেজাল্ট পাওয়া গেছে। রাজের অবস্থা বেশি ভালোনা তাই জরুরি ভিত্তিতে আগামীকালই কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট হবে।
আসার আগে কাগজপত্রে সাইনও করে এসেছি।কাগজে কলমে আমি এখন ওসমান সাহেবের নিকটাত্মীয়। আইন অনুযায়ী আমাদের দেশে নিকটাত্মীয় ছাড়া কেউ কিডনি দিতে পারবেনা।তাও দান করতে হবে, বিক্রি করা যাবেনা।
রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম। বসে বসে কি করব? অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। টাকা হাতে পেলে কি কি করব সেটা নিয়ে খানিক ভাবা যাক।
তিনলাখ টাকা দিয়ে একটা পিচ্চি ব্যাবসা শুরু করব। জায়গামতো লাগাতে পারলে তিনলাখ টাকা কম না।সবচেয়ে বড় কথা নিজের স্বাধীনতা থাকল।
একলাখ টাকা লাগবে আমাদের বাড়িটাকে বাসযোগ্য করতে।তিরিশ হাজার আমার 'একদিনের বড়লোক'প্রকল্পের জন্য।বিশ হাজার বাবা মা আর টুম্পার জন্য। বাকিটা ব্যাংকে রেখে দেব।কখন কোন বিপদ হয় তার ঠিক আছে?
বাসায় যখন ঢুকছি তখন সন্ধ্যা। বাসা না বলে খুপরি বললেও কোন কারো কিছু বলার নেই।
আমার বাবা পুরোপুরি ব্যার্থ একজন মানুষ।সারাজীবন সরকারি চাকরি করেছেন। তার দীর্ঘ ছত্রিশ বছরের চাকরি জীবনে একটামাত্র প্রমোশন পেয়েছেন।সেটাও রিটায়ারমেন্টের দুবছর আগে।
বাংলা সিনেমায় যেমন দেখা যায়, সততার কারনে নায়কের বাবা সারাজীবন একই পদে চাকরি করেন, বাবার ব্যাপারটা এমন না। আমার ধারনা তিনি অসৎ হবার কোনো সুযোগই পাননি কখোনো।তাকে সবাই সবসময় গোনার বাইরে রেখেছেন।
তবে এই ব্যার্থ মানুষটার পেনশনের টাকায়ই চারজনের এই সংসার এখনো ধুকতে ধুকতে চলছে।
আমাদের এই বাড়িটা মা নানার কাছ থেকে পেয়েছিলেন। নানাও মধ্যবিত্ত ছিলেন। তবে তার তিন মেয়ের মধ্যে মা ছাড়া বাকিদের ভাল বিয়ে দিতে পেরেছিলেন।
নানা মারা যাবার আগে আমাদের দৈন্যতা দেখে তাঁর একমাত্র স্থাবর সম্পত্তি এই বাড়িটা মার নামে লিখে দিয়ে যান। আমার কোনো মামা নেই। খালারা সম্পদশালী হওয়ায় তাঁরাও আপত্তি করেননি।
যার ফলে এই আক্রার বাজারেও একজন ব্যার্থ মানুষের পেনশনের টাকায় মেগাসিটিতে এতদিন টিকে থাকতে পেরেছি।আর পারছিনা। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।এখন আমাদের বাসায় একবেলা রান্না হয়, খাওয়া হয় দুবেলা। নামমাত্র।
আমি দুবছর ধরে বাউন্ডুলের মত ঘুরে বেড়াচ্ছি চাকরির জন্য। পাঁচহাজার টাকা বেতনের একটা চাকরির জন্য নুন্যতম তিনলাখ টাকা ঘুষ দিতে হবে। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে পরিমাণটা আরো অনেক বেশি। তিনলাখ টাকা উসুল করতে আমার পাঁচববছর চাকরি করতে হবে। যদিও আমি নিশ্চিত নই পাঁচবছর পর চাকরিটা আমার থাকবে কিনা, অফিসটাই বা থাকবে কিনা।
আস্তে আস্তে হতাশা গ্রাস করছে আমাদের পুরো পরিবারকে। আমার ক্লাস নাইন পড়ুয়া ছোটবোনটার চোখেও আজকাল হতাশ দৃষ্টি দেখতে পাই আমি।
দুটোমাত্র ঘর আমাদের। বাবার চোখ এড়িয়ে আমার রুমে যাওয়ার কোনো উপায়ই নেই। ঢুকতেই চোখাচোখি হয়ে গেল বাবার সাথে। 'নবাব পুত্রের কোথা থেকে আসা হল 'জাতীয় কিছু একটা বলবেন ভেবেছিলাম। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে বললেন, 'কিছু করতে পারলি?'বাবার কন্ঠের অসহায়ত্ব প্রকট হয়ে উঠল আমার কাছে। কোনোমতে 'চেষ্টা করছি 'বলে আমার রুমে চলে এলাম।
রুমে ঢুকে দেখি টুম্পা মাথা দুলিয়ে পড়ছে। খুবই মেধাবী আমার বোনটা। বেচারির আলাদা কোনো রুম নেই। পড়ে আমার রুমে, রাতে বাবা মার রুমে মেঝেতে বিছানা করে ঘুমায়।ওর জন্য একটা রুম করতেই হবে।সামনেই এসএসসি পরীক্ষা।
টুম্পা আমাকে দেখেই চলে যেতে লাগল।
'কিরে কই যাস? '
'তুমি রেস্ট নাও। সারাদিন বাইরে ঘোরাঘুরি করো।আমি থাকলে ডিস্টার্ব হবে। '
কথাগুলো টুম্পা এমনভাবে বলল, চোখে পানি এসে গেল। অকর্মা এই ভাইটার জন্য এত মমতা কোথায় জমা করে রাখে এতটুকুন মেয়েটা?
আমি বললাম, 'ডিস্টার্ব হবেনা, তুই বস। '
টুম্পা বসে পড়ল।
'ওখানে না কাছে এসে বস। তোকে কতদিন আদর করিনা। '
ও আমার পাশে এসে বসল। একহাত দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে বললাম, তোর বান্ধবীদের দেখলে তোর অনেক কষ্ট হয়, নারে? সবাই কত সুখী!'
'দেখিস, একদিন ঠিকই তোর জন্য পৃথিবীর সব সুখ আমি কিনে আনবো। '
টুম্পা কিছু না বলে আমাকে জড়িয়ে ধরল। দুজনেই কাঁদছি আমরা।
পাঁচ
ওসমান সাহেবের অফিসে বসে আছি আমি। ওসমান সাহেবকে খুবই বিমর্ষ দেখাচ্ছে। চোখের নিচে একপোচ কালি।
'অভ্র সাহেব, আপনার কিডনি আমার আর প্রয়োজন নেই। '
বুকটা প্রচন্ড ভাবে কেঁপে উঠলো। 'কেন স্যার? কি করেছি আমি? '
'আপনি কিছুই করেননি। যার জন্য কিডনি, আমার ছেলে রাজ, ও মারা গেছে। সুতরাং আপনার কিডনিও আমার দরকার নেই। '
সমস্ত পৃথিবী দুলে উঠলো যেন। পেছনে তাকিয়ে দেখি ম্যানেজার বিশ্রীভাবে হাসছে। মাথায় রক্ত উঠে গেল।খপ করে ম্যানেজারের কলার ধরে ফেললাম।অমানুষের মত ঝাঁকাচ্ছি।
ঘুমটা তখনই ভেঙে গেল। এতক্ষণ ধরে স্বপ্ন দেখছিলাম তাহলে? কি ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্ন!
পরক্ষণে একটু আশ্চর্যই হলাম। নিজের কিডনি নিজের দেহেই থাকছে, এটাকে সুখস্বপ্ন না ভেবে দুঃস্বপ্ন কেন ভাবছি? অদ্ভুত তো!
রাত প্রায় শেষের দিকে। আর ঘুম আসবেনা জানি। সে চেষ্টাও করলাম না।
কিছুক্ষণ পর খুটখাট আওয়াজে বুঝলাম, মা উঠেছে নামাজ পড়তে।
আমি নিয়মিত নামাজ পড়ি, শুধু ফজরটা পড়া হয়না সময়মত উঠতে পারিনা বলে। আজ যেহেতু উঠে পড়েছি নামাজটা পড়েই ফেলি।
নামাজ পড়ে গিয়ে দেখি, মারও নামাজ শেষ। বললাম, আমি কয়েকদিনের জন্য একজায়গায় যাচ্ছি।'
''কোথায় যাচ্ছিস, কেন যাচ্ছিস, কবে আসবি 'জাতীয় কোন মাতৃসুলভ প্রশ্ন এলোনা। আমার কয়েকটা দিনের খাবার খরচ বেঁচে যাচ্ছে, মা এতেই খুশি ।
একটা ছোটো ব্যাগে দরকারি দু একটা জিনিস নিয়ে বাসা থেকে বের হলাম।
মধ্যবাড্ডা থেকে নয়াপল্টনে ওসমান সাহেবের অফিসে হেটে যেতে মোটামুটি ঘন্টা দেড়েক লাগবে।
ব্যাপারটা এমন না যে, আমার সাতসকালে হিমু হবার শখ হয়েছে। আসল কথা পকেটে সর্বসাকুল্যে তেরো টাকা আছে। এর মধ্যে আবার পাঁচটাকার একটা নোট চলবে কিনা বুঝতে পারছিনা। মাঝখান থেকে ছেঁড়া।অতএব হন্টন।
হাঁটতে হাঁটতে কিছু একটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করলে কষ্টটা গায়ে লাগেনা।
ধরা যাক আমার একজন প্রেমিকা আছে, তাহলে এই পরিস্থিতিতে কি কি ঘটতে পারত। আমার কিডনি বিক্রির কথা শুনে নিশ্চয়ই কষ্ট পেতো। কান্নাকাটিও কি করত? করার তো কথা। প্রেমিক একটা কিডনি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ব্যাপারটা সব মেয়ের জন্যই ভয়ঙ্কর।
প্রায় দেড়ঘণ্টা পর আমার কাল্পনিক প্রেমিকার সাথে খুনসুটি করতে করতে ওসমান সাহেবের অফিসের সামনে চলে এলাম।এখনো অফিস খোলেনি। খোলার কথাও না। আমাকে তিনি আসতে বলেছিলেন সাড়ে আটটার সময়। এখন বাজে পৌনে আটটা। স্বপ্নটা দেখার পর থেকেই অস্থির অস্থির লাগছে। তাই আগেভাগেই চলে এসেছি।
প্রচন্ড খিদে লেগেছে। গতকাল দুপুরে ড.ফজলুল কবীরের ওখানে বিরিয়ানি খাবার পর থেকে পেটে কিছু পরেনি।
একটা চায়ের দোকানে গিয়ে পাঁচটাকার একটা পাউরুটি নিলাম। একটা প্ল্যান আছে মাথায়। রুটিটা খেয়ে ছেড়া নোটটা দেব। যতদুর মনে হচ্ছে দোকানদার মামা টের পাবেনা। প্রচুর ভীড় দোকানে। টাকাটা চললে অন্য একটা দোকানে গিয়ে একটা চা খাব।
'মামা টাকা রাখ ',নোটটা বাড়িয়ে দিলাম।
মামা কিছু না বলে নোটটা রেখে দিল।
আমি পাশের একটা দোকানে চলে এলাম।আগের মামার সাথে আমার সব লেনদেন চুকে গেছে।
চা খাচ্ছি হঠাৎ পাশের দোকানে হাউকাউ। সম্ভবত আমার নোটটা নিয়ে ক্যাচাল লেগেছে।
হু কেয়ারস!
চা 'টা শেষ করে চলে এলাম ওখান থেকে। ওসমান সাহেব চলে এসেছেন।
ওসমান সাহেবের রুমে ঢুকে দেখি উনি যেন কার সাথে ফোনে কথা বলছেন।
'বসুন অভ্র সাহেব, 'আমাকে দেখে মাউথপীসে হাত চাপা দিয়ে বললেন তিনি।
আমি বসলাম।কথা শেষ হতে বললাম, ' স্যার রাজ কেমন আছে?'
'আগের মতই। '
'আপনি শিওর? 'বলেই মনে মনে জিভ কাটলাম। এটা কি বললাম আমি?
'মানে?'
'না এমনি বলছিলাম।কিছুনা। '
'নাস্তা তো বোধহয় করেননি। দাড়ান আনিয়ে দিচ্ছি'। আপনার খাওয়া শেষ হলেই আমরা হসপিটালে রওনা দেব। এগারটায় অপারেশন।
আমি শুধু মাথা ঝাকালাম।
ছয়
তিনদিন পর।
অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে। আজ আমাকে রিলিজ করে দেবে। রাজকে আরো কিছুদিন থাকতে হবে।
অপারেশনের দিন রাজকে দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিলাম। মানুষ এত সুন্দরও হয়!
ওর বয়স মাত্র আট বছর। আমি নিশ্চিত, আর দশবছর পর মেয়েদের জ্বালাতনে নিজের রুপের প্রতি খানিকটা বিরক্তই হবে ছেলেটা।
রাজকে একটা চুমু দিতে খুব ইচ্ছে করছিল। তবে ওকে ডায়ালাইসিস দেয়া হয়েছিল বলে সেটা সম্ভব হয়নি।
এতক্ষনে আমার রিলিজের সব ফর্মালিটিজ শেষ হয়েছে বোধহয়।
একটু পর ওসমান সাহেবের ম্যানেজার আমার বেডে ঢুকল।
'স্যার আপনাকে রাজের বেডে আসতে বলেছেন। '
আমি আমার ছোট্ট ব্যাগটা নিয়ে উঠে দাড়ালাম।
রাজকে জেনারেল বেডে আনা হয়েছে গতকাল।
ম্যানেজারের পেছন পেছন রুমে ঢুকে দেখি ড.ফজলুল কবীর আর ওসমান সাহেব দাড়িয়ে আছেন।
'আসুন, অভ্র সাহেব,'স্বাগত জানালেন আমাকে ওসমান সাহেব।
'আসলে আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ জানাবো ঠিক বুঝতে পারছিনা। '
'ধন্যবাদ জানানোর কিছু নাই স্যার।কিডনি তো আমি বিক্রি করেছি। '
'এভাবে বলছেন কেন? এগুলো কি বিক্রি করার জিনিস? আল্লাহ তায়ালার দান এগুলো।আপনি আমার এতবড় উপকার করছেন বিনিময়ে আমি আপনাকে সামান্য উপহার দিচ্ছি। '
মনে মনে হাসলাম আমি, কিছু বললাম না।
'ভাইয়া তুমি নাকি তোমার একটা কিডনি দিয়েছ আমাকে? '
রাজের গলায় ফিরে তাকালাম ওর দিকে।ও জেগে আছে এতক্ষণ খেয়াল করিনি। এই প্রথম ওকে কথা বলতে শুনলাম।
হ্যাঁ বলতে গিয়েও পারলাম না। কিভাবে বলি? আমি তো কিডনি ৰিক্রি করেছি ,দেইনি।
একটা মিষ্টি হাসি দিলাম ওর দিকে তাকিয়ে।
'এই যে অভ্র সাহেব আপনার টাকা। 'একটা চেক বাড়িয়ে ধরেছেন ওসমান সাহেব আমার দিকে।
অভিভূত হয়ে তাকিয়ে রইলাম ওটার দিকে। আমার স্বপ্নপূরনের চাবিকাঠি!
হাত বাড়িয়ে নিলাম চেকটা আমি।একটা শিহরণ খেলে গেল গোটা শরীরে।আমি এখন পাঁচলাখ টাকার মালিক!
'থ্যাঙ্কস স্যার। '
জবাবে কিছু বললেন না ওসমান সাহেব। হাসিমুখে মাথা নাড়লেন শুধু।
'স্যার অনুমতি দিলে রাজকে একটা চুমু দিতাম। '
'নিশ্চয়ই। '
আস্তে করে বাচ্চাটার দিকে এগিয়ে গেলাম। হাঁটু গেড়ে বসলাম ওর পাশে। 'কেমন আছ ভাইয়া?'বললাম আমি।
'ভাল, 'ছোট্ট জবাব রাজের।
ওর মাথায় হাত রেখে ওর কপালে চুমু দিতে যাব তখনই আচমকা মনে হল ,কাজটা ঠিক হচ্ছেনা। স্বর্গের ফুলের মত এই বাচ্চাটাকে একজন কিডনি বিক্রেতার স্পর্শ করা কখনোই উচিৎ না। স্বর্গীয় ফুলকে স্পর্শ করতে হলে পবিত্র হতে হয়।
ঠিক বিদ্যুৎচমকের মতই সিদ্ধান্তটা নিলাম। পকেটে সযত্নে রাখা চেকটা বের করে একটানে ছিড়ে ফেললাম।এরপর আলতো করে রাজের কপালে চুমু এঁকে দিলাম।
বসা থেকে দাড়িয়ে দেখি রুমে উপস্থিত সবাই আমার দিকে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে।
আমি ওসমান সাহেবের সামনে দাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম, 'স্যার, সেভেন স্টার হোটেল কি আছে? কিংবা সিক্স স্টার? '
ওসমান সাহেব একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।
আমি আবার বললাম, 'কেন জিজ্ঞেস করলাম জানেন? আমি কোনো একদিন আমার পুরো পরিবার নিয়ে ওই হোটেলটাতে যাব।
আসি স্যার, দোয়া করবেন। '
সবাইকে হতভম্ব অবস্থায় রেখে বেরিয়ে এলাম আমি।
উপসংহার
হসপিটাল থেকে বেরিয়ে রাস্তায় হাটছি আমি। পকেটে তেরোটাকার অবশিষ্ট তিনটাকা আছে।
আমি অভ্র। এমন একজন মানুষ যে কিনা তার সমস্ত দুঃখ ভুলতে চায় সস্তা রসিকতা দিয়ে।সে কোনো কিডনি বিক্রেতা নয়। শুধুই অভ্র।
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫২
আবুল ফাতাহ বলেছেন: না সহজ না,আর না বলেই এটা গলপ
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৪:৩৫
লেজকাটা বান্দর বলেছেন: শেষটা এমন কেন হল? চেক ছিঁড়ে ফেলা এতই সহজ?