![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তোমাদের মাঝে খুজিয়া ফিরি আমার বিশ্বলোক; নরকে গেলেও হাসিয়া বলিব আমি তোমাদেরই লোক।
জাগরণ এখানে সূর্যের নয়— জাগরণ জন্ম নেয় একটি যান্ত্রিক পুলকারের ঠুসঠাস শব্দে, যা কাঁচা ঘুমের ভেতর এক শিশুর মুখ থেকে ছিঁড়ে নেয় স্বপ্নের শেষ উষ্ণতা। এই ভূমিতে প্রভাত মানে শ্রমিকের কাঁধে চাপানো পৃথিবী, যেখানে দিন শুরু হয় এক বোতল জল আর অনিশ্চয়তার ছায়ায়।
হে বাংলাদেশ, তোমার শিল্পাঞ্চল এক দীর্ঘশ্বাসের জনপদ, যেখানে প্রতিটি সুচ হয়ে উঠেছে রাষ্ট্রের উপেক্ষার প্রতীক, প্রতিটি মেশিন—এক মৌন নালিশ, যার শব্দে রচনা হয় পুঁজির জ্যামিতি আর লুণ্ঠনের বীজগণিত।
তুমি কি দেখেছো? পোশাক শ্রমিকের হাতে লাল সুতা— যা কেবল জামা নয়, গাঁথে রাষ্ট্রের মুখোশ। সেই সুতা দিয়ে তারা সেলাই করে রাষ্ট্রপতির বার্তা, যা পড়ে রাষ্ট্র—কিন্তু বোঝে না তারা, যাদের আঙুল ফেটে গিয়েছিল সেই অক্ষর লেখার আগেই।
তবু সে হেঁটে চলে, হাঁটে এক অনন্ত সন্ধ্যার দিকে— যেখানে কাঁধে থাকে সন্তানের স্কুল ফিসের বোঝা, আর বুকে থাকে স্ত্রীর অপারেশনের বিল। সে জানে, তার ছুটি নেই, অধিকার নেই— তবু সে হাঁটে, কারণ তার হাঁটা মানে জীবনকে পেছন না ফেরা এক প্রতিশ্রুতি।
মে দিবস? এখানে সে এক থেমে যাওয়া ঢেউ, যা কেবল প্রতীক, কেবল ব্যাজ, আর কিছুমাত্র রাষ্ট্রীয় হাস্যরসের উপাদান।
তাদের জন্য দিবস আসে না— আসে ওভারটাইম, আসে বকেয়া, আসে ‘আগামী মাসে হবে’ নামক চিরায়ত প্রতারণা। এখানে তাদের চেতনা কোনো রাজনৈতিক দলনির্ভর স্লোগানে নয়— তাদের চেতনা জন্মায় ক্ষুধার মুখে মায়ের অসমাপ্ত গান থেকে, সেই গানে নেই রাগ-তাল— তবু তাতে আছে ইতিহাসের বীজ, ভবিষ্যতের গন্ধ।
তোমরা যারা র্যালিতে লাল ঝান্ডা ওড়াও, তোমরা জানো না— সে রক্ত লাল নয় কেবল, সে এক জ্যোতিষ্কের রং— যা জ্বলে জ্বলে নিঃশেষ হয়, কিন্তু নিভে না, কারণ সে নিভলেই জাতির আলো নিভে যায়।
বাংলাদেশ— তুমি আজও শ্রমজীবী মানুষকে গণনার পেছনে লুকিয়ে রাখো, তোমার উন্নয়ন মানচিত্রে তারা কেবল গ্রাফের রূপ, তাদের আর্তনাদ ঢেকে যায় বাজেটের হ্যান্ডআউটে। কিন্তু জানো কি? একদিন সেই ঘাম ঝরানো হাতেই উঠবে বেহালা, যা বাজাবে তোমার অনুশোচনা। তাদের চোখেই দেখা যাবে সময়ের আয়না— যেখানে প্রতিচ্ছবি হবে প্রশ্নবিদ্ধ রাষ্ট্রচিন্তার অরূপ মুখচ্ছবি।
হে মে দিবস, তুমি এসো আর একবার, সোচ্চার কণ্ঠে নয়, সশব্দ নীরবতায়— যেখানে শব্দ হয়ে উঠবে ক্রোধ, আর নীরবতা হবে বিদ্রোহের উচ্চারণ।
তুমি এসো, আঙুল ছেঁড়েও যাদের শিল্প হয়, পোড়া বুকেও যাদের নদী থাকে— সেই মানুষের মুখে তুমি উচ্চারণ হও, তাদের নিঃশ্বাসে তুমি বহ্নিশিখা হও, আর তাদের দেহে তুমি হয়ে উঠো ইতিহাসের পূর্ণ ব্যাখ্যা।
২| ০১ লা মে, ২০২৫ সকাল ১০:৫২
কাঁউটাল বলেছেন: "যুদ্ধের প্রস্তুতি" শুনলেই কার গায়ে আগুন লাগে? একটু ভেবে দেখুন...
৩| ০২ রা মে, ২০২৫ সকাল ৯:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা মে, ২০২৫ সকাল ১০:৩০
শাওন আহমাদ বলেছেন: হে মে দিবস, তুমি এসো আর একবার, সোচ্চার কণ্ঠে নয়, সশব্দ নীরবতায়— যেখানে শব্দ হয়ে উঠবে ক্রোধ, আর নীরবতা হবে বিদ্রোহের উচ্চারণ।