![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তোমাদের মাঝে খুজিয়া ফিরি আমার বিশ্বলোক; নরকে গেলেও হাসিয়া বলিব আমি তোমাদেরই লোক।
'
সমাজে নারী-পুরুষের সম্পর্ক, বিশেষ করে বৈবাহিক সম্পর্ক একটি দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক ও নৈতিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে। এই সম্পর্কের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর ঘনিষ্ঠতা, পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সম্মান একটি মৌলিক ভিত্তি তৈরি করে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ‘ম্যারিটাল রেপ’—অর্থাৎ বৈবাহিক ধর্ষণ—নামে একটি ধারণাকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে, যা একদিকে যেমন যৌক্তিক প্রশ্নের উদ্রেক করে, তেমনি অপরদিকে সাংস্কৃতিক ও বিচারিক কাঠামোর দৃষ্টিকোণ থেকে তা গভীরভাবে সমস্যাজনক হয়ে উঠছে।
‘ম্যারিটাল রেপ’ ধারণার উৎপত্তি ও বিতর্ক:
পশ্চিমা সমাজে যেখানে ব্যক্তিস্বাধীনতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা এবং ব্যক্তিত্বের আইনি রক্ষা কাঠামো যথেষ্ট শক্তিশালী, সেখানে ‘ম্যারিটাল রেপ’ আইনগতভাবে সংজ্ঞায়িত হয়েছে। কিন্তু আমাদের সমাজে বিয়ে শুধুমাত্র একটি আইনি চুক্তি নয়, এটি সামাজিক, ধর্মীয় এবং পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের একটি ঘনিষ্ঠ সমন্বয়। এখানে বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে 'ধর্ষণ' শব্দটি প্রয়োগ করা নৈতিকভাবে অসম্পূর্ণ এবং বাস্তবিকভাবে বিপজ্জনক।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ও সীমাবদ্ধতা:
বাংলাদেশে ধর্ষণের যে সংজ্ঞা বিদ্যমান, তার কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। হাজার হাজার ধর্ষণের মধ্যে কয়টি মামলা হয়, আর তার মধ্যে কয়টির বিচার হয়—এই সংখ্যাগুলো পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট হয়, আমাদের বিচারব্যবস্থা এখনও ভিক্টিমের পক্ষে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে অপারগ। এই বাস্তবতায়, যখন বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত শারীরিক সম্পর্ককে ‘রেইপ’ বলে ঘোষণা করা হয়, তখন সেটি বাস্তবায়নের পথে নতুন এক বিপর্যয়ের জন্ম দিতে পারে।
সামাজিক ও আইনি বিপর্যয়ের আশঙ্কা:
‘ম্যারিটাল রেপ’ এর সংজ্ঞা যদি আইনত প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে তা পারিবারিক বন্ধনকে দুর্বল করবে, অনেক সময় প্রতিশোধমূলক অপব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করবে, এবং সমাজে সন্দেহ ও অবিশ্বাসের পরিবেশ তৈরি করবে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত হওয়ার আগেই সংসার ভাঙনের ঝুঁকি বাড়বে। বিশেষ করে নারীর নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষার যে আইনগত অস্ত্র দরকার, তার অভাব থাকায় এই সংজ্ঞা প্রয়োগে প্রকৃত ভিক্টিমরাও অনেক সময় বিচার বঞ্চিত হবেন।
সমাধান কী?
আইন পরিবর্তনের আগে প্রয়োজন সংস্কার—সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির, শিক্ষার, এবং আইনি অবকাঠামোর। দাম্পত্য সহিংসতা, মানসিক নির্যাতন, বা শারীরিক জুলুমকে ‘রেইপ’ নয়, বরং ‘সহিংসতা’ বা ‘নিপীড়ন’ হিসেবে চিহ্নিত করে আইনি সহায়তা নিশ্চিত করা যেতে পারে। এতে করে একদিকে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে, অন্যদিকে বৈবাহিক সম্পর্কের পবিত্রতা ও সামাজিক ভারসাম্য বজায় থাকবে।
ধর্ষণ নিঃসন্দেহে একটি জঘন্য অপরাধ। কিন্তু ধর্ষণের সংজ্ঞাকে যখন অতি সম্প্রসারিত করা হয়, বিশেষ করে বৈবাহিক সম্পর্কের মতো সংবেদনশীল ও জটিল প্রেক্ষাপটে, তখন তা সমাজে বিভ্রান্তি, নৈরাজ্য ও অবিশ্বাসের জন্ম দিতে পারে। তাই বাংলাদেশে ‘ম্যারিটাল রেপ’ সংজ্ঞায়নের আগে রাষ্ট্র, সমাজ ও বিচারব্যবস্থার সক্ষমতা, সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট এবং পারিবারিক কাঠামোর উপর সুস্পষ্ট মূল্যায়ন জরুরি। না হলে আমরা যেটাকে সমাজে ধর্ষণ বলে গণ্য করি, সেটার বিচারই আরও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে।
০২ রা মে, ২০২৫ সকাল ৮:২১
মুনতাসির রাসেল বলেছেন: আমার কথাই শেষ কথা নয়।
২| ০২ রা মে, ২০২৫ সকাল ৮:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: জানলাম।
৩| ০২ রা মে, ২০২৫ দুপুর ১২:২৪
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: ধর্ম বাদ দিয়ে যতই পশ্চিমকে ফলো করা শুরু হবে ততই সামাজিক অবক্ষয় শুরু হবে। বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোতে বেসিক ধর্মের বাইরে কিছু এপ্লাই করা বিপদজনক...
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা মে, ২০২৫ রাত ২:০৫
যামিনী সুধা বলেছেন:
আপনি তো বিরাট সমাধান দিয়েছেন; ইহা যদি কাজ করে তা'হলে জাতির রক্ষা।