![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তোমাদের মাঝে খুজিয়া ফিরি আমার বিশ্বলোক; নরকে গেলেও হাসিয়া বলিব আমি তোমাদেরই লোক।
বাংলাদেশ আজ এমন এক যুগসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে কেবল সরকার পরিবর্তন নয়— প্রয়োজন রাষ্ট্র কাঠামোর গভীরে প্রোথিত সংকটের শিকড় উপড়ে ফেলা এবং একটি নতুন ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা নির্মাণের। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলমান কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, বিচারহীনতা, গণতন্ত্রের প্রতীকী উপস্থিতি এবং দুর্নীতির সাংঘাতিক বিস্তার বাংলাদেশকে এক অব্যবস্থাপূর্ণ, দিশাহীন ও নিরাপত্তাহীন রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
কিন্তু সংকটের গভীরতা বোঝা এবং তা থেকে উত্তরণের পথ খোঁজা— এই দুইয়ের মাঝে রয়েছে একটি মৌলিক ব্যবধান। বহুদিন ধরে আমরা কেবল উপসর্গ মোকাবিলায় ব্যস্ত থেকেছি—কিন্তু সমস্যার মূল উৎপাটনে কোনো ঐকমত্য, পরিকল্পনা বা সদিচ্ছা প্রকাশ পায়নি। বিরোধী দলগুলোর দায়িত্বহীন আচরণ, নিজেদের অভ্যন্তরীণ অবিশ্বাস, এবং পুরনো রাজনীতির গণ্ডিতে আটকে থাকার প্রবণতা জাতীয়ভাবে একটি বাস্তবসম্মত, ভবিষ্যতনির্ভর রূপান্তরমূলক আন্দোলনের পথ রুদ্ধ করেছে।
এই প্রেক্ষাপটে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে সংস্কার কমিশনসমূহের প্রস্তাবনার ভিত্তিতে গঠিত ঐক্যমত্য কমিশনকে একটি বাস্তবসম্মত এবং বহুমাত্রিক রোডম্যাপ উপস্থাপন করতে হবে, যা বিচার, সাংবিধানিক সংস্কার এবং একইসাথে গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের দিকনির্দেশনা প্রদান করবে। এই রোডম্যাপ কোনো ব্যক্তিকেন্দ্রিক নেতৃত্বের একচ্ছত্র অভিপ্রায় নয়— বরং এটি একটি যৌথ চেতনা ও বৈপ্লবিক রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ফসল, যার লক্ষ্য ভবিষ্যতের প্রজন্মকে একটি অধিকতর ন্যায্য ও টেকসই রাষ্ট্র উপহার দেওয়া।
এই প্রস্তাবিত রোডম্যাপটি তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়াবে— ১. বিচার: অতীতের অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, ২. সংস্কার: রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক রূপান্তর, ৩. নির্বাচন: রাষ্ট্র পুনর্গঠনের ভিত্তিপ্রস্তর
আমাদের মূলত এই তিনটি স্তম্ভের ভেতর দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে হবে। কারণ এখন আর সময় নেই এই তৎপরতা বিলম্বিত করার, কিংবা প্রতীকী সমাধানে আশ্রয় নেওয়ার। ইতিহাস আমাদের কাছে জবাব চাইছে— আমরা কীভাবে একটি অপরাধপ্রবণ, বৈষম্যনির্ভর ও কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রব্যবস্থাকে পেছনে ফেলে একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী, মানবিক, জবাবদিহিমূলক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারি।
বিচার: অতীতের শুদ্ধিকরণ এবং জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ইতিহাসের পরতে পরতে লুকিয়ে আছে নানা অপরাধ, অন্যায় এবং দমনপীড়নের করুণ স্মৃতি। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বারবার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের মাধ্যমে গড়ে ওঠা স্বৈরাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, এবং জনগণের অধিকার হরণের যে ধারাবাহিকতা আমরা দেখেছি, তা রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিঃশেষ করে দিয়েছে। ফলে ‘বিচার’ এখন আর কেবল একটি ন্যায়বিচারমূলক প্রক্রিয়া নয়; এটি হয়ে উঠেছে অতীতের শুদ্ধিকরণ, জাতির আত্মপরিচয়ের পুনর্গঠন, এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি সুদৃঢ় ভিত্তি নির্মাণের রাজনৈতিক, নৈতিক ও সাংস্কৃতিক অনিবার্যতা।
প্রথমত, অতীতের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অপরাধ যেমন—গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ, পুলিশি নির্যাতন, অবৈধ বন্দিত্ব, এবং তথ্য ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণের মতো কর্মকাণ্ড—এসবের নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচারের জন্য একটি স্বতন্ত্র কমিশন গঠন প্রয়োজন। এই কমিশন কেবল আইনি তদন্ত করবে না, বরং গণশুনানিরও আয়োজন করবে যাতে ভুক্তভোগী নাগরিকরা তাদের অভিজ্ঞতা জাতির সামনে তুলে ধরতে পারেন। এটি একধরনের ঐতিহাসিক জবাবদিহিতা, যেখানে জাতি নিজের অতীতকে পর্যালোচনা করে, ভুলগুলোকে স্বীকার করে এবং এগুলোর পুনরাবৃত্তি রোধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
দ্বিতীয়ত, দুর্নীতি, অর্থপাচার, এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুন্ঠনের বিরুদ্ধে কার্যকর বিচার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের নৈতিক কর্তব্য। দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দুর্নীতি ও লুটপাটকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে, যা কেবল অর্থনীতিকে ধ্বংস করেনি, বরং সাধারণ মানুষের রাষ্ট্রের প্রতি বিশ্বাসকেও ভেঙে দিয়েছে। যারা রাষ্ট্রের নাম ব্যবহার করে দেশের সম্পদ লুট করেছে, তাদের বিচারের মুখোমুখি করে রাষ্ট্রীয় অর্থ উদ্ধার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
তৃতীয়ত, বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা ও কার্যকারিতা ছাড়া জবাবদিহি কল্পনাও করা যায় না। আমাদের বিচার বিভাগ বহু বছর ধরে রাজনৈতিক প্রভাব, ক্ষমতাকেন্দ্রিক নিয়ন্ত্রণ এবং পেশাগত দুর্বলতার শিকার। এই বাস্তবতা থেকে মুক্তির জন্য বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণভাবে নির্বাহী ক্ষমতা থেকে মুক্ত করে একটি স্বতন্ত্র সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। একইসঙ্গে, নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত সকল স্তরে বিচারপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা, গতিশীলতা এবং ডিজিটাল রূপান্তর ঘটাতে হবে, যাতে দ্রুত বিচার বাস্তবায়ন হয় এবং সাধারণ মানুষ সহজেই আইনের আশ্রয় নিতে পারে।
চতুর্থত, নির্যাতনের শিকার নাগরিকদের ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমা প্রকাশের মতো পুনর্মূল্যায়ন প্রক্রিয়াও বিচার ব্যবস্থার অংশ হওয়া উচিত। এটি শুধু বিচারপ্রক্রিয়ার পরিপূরক নয়, বরং একটি মানবিক রাষ্ট্রের প্রতীক। এমন একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহিমূলক কাঠামোর আওতায় আনা হবে এবং জনগণের ওপর যে কোনো রকম ক্ষমতার অপব্যবহার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—বিচারপ্রক্রিয়া যদি জনগণের মধ্যে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে না পারে, তবে শাসনব্যবস্থা কখনোই দীর্ঘমেয়াদে টেকসই হবে না। আইন ও ন্যায়বিচারের প্রতি জনগণের আস্থা পুনর্গঠন না করলে, কোন সংস্কারই বাস্তবায়নযোগ্য হবে না। এই আস্থা ফিরিয়ে আনার একমাত্র পথ হলো—অতীতের অপকর্মের দায় নিরপেক্ষভাবে নিরূপণ, অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত এবং একটি স্বচ্ছ, স্বাধীন ও জনগণবান্ধব বিচারব্যবস্থা গড়ে তোলা।
অতএব, বিচার ব্যবস্থা কেবল একটি প্রশাসনিক ও আইনগত কাঠামো নয়, এটি একটি সভ্য রাষ্ট্রের আত্মা। অতীতের শাসকদের ও তাদের সহযোগীদের অপরাধের বিচার না হলে, ভবিষ্যতের রাষ্ট্র কেবল একটি পুনরাবৃত্তি নির্ভর সহিংস ও দমনমূলক সংস্কৃতির বৃত্তে আবর্তিত হবে। বিচারই একমাত্র পথ, যা আমাদের মুক্তি দিতে পারে সেই অন্ধকার অতীত থেকে এবং তৈরি করতে পারে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও মর্যাদাসম্পন্ন গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ।
সংস্কার: রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক রূপান্তর ও সমতা প্রতিষ্ঠা
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংকটের গভীরে যে জটিলতা লুকিয়ে আছে, তা মূলত একটি কেন্দ্রায়িত, ক্ষমতাকেন্দ্রিক এবং নির্বাহী নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্র কাঠামোর ফলাফল। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে এসেও আজ আমরা এমন একটি ব্যবস্থার মধ্যে আটকে আছি যেখানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভারসাম্য নেই, সংবিধানের মূল চেতনা চর্চার বাইরে, এবং জনগণের প্রতিনিধিত্ব একটি প্রতীকী ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে। এই বাস্তবতা আমাদের রাষ্ট্রকে প্রতিনিয়ত একপক্ষীয় শাসনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা কেবল রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে নয়, সমাজের সামগ্রিক বৈচিত্র্যকেও দমন করে চলেছে। ফলে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর একটি মৌলিক ও দৃষ্টিভঙ্গিগত রূপান্তর এখন সময়ের দাবি, জাতীয় টিকে থাকার প্রয়োজনীয়তা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি আমাদের দায়িত্ব।
প্রথমত, সংবিধানের মূলনীতি পুনর্বিন্যাস করতে হবে, যেখানে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ এবং জনগণের সার্বভৌমত্বকে সর্বাগ্রে স্থান দিতে হবে। এই মূল্যবোধ কেবল নীতিগত ঘোষণা নয়, বরং রাষ্ট্র পরিচালনার প্রতিটি স্তরে আইন ও নীতিমালার রূপায়ণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। বিশেষভাবে, রাষ্ট্রের নির্বাহী শাখার—বিশেষত প্রধানমন্ত্রীর—অসীম ক্ষমতা সীমিত করতে হবে এবং একটি কার্যকর ভারসাম্য তৈরি করতে হবে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও সংসদের মধ্যে। এটি কেবল ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নয়, বরং গভীরতর এক রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্ম দেবে, যেখানে অংশগ্রহণমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও দায়িত্ববোধমূলক শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে।
দ্বিতীয়ত, এককেন্দ্রিক এককক্ষবিশিষ্ট সংসদ ব্যবস্থার পরিবর্তে একটি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠন সময়োপযোগী। এতে একটি কক্ষ থাকবে সরাসরি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জন্য (নিম্নকক্ষ) এবং অপরটি নির্ধারিত হবে পেশাজীবী, প্রান্তিক, জাতিগত ও আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে (উচ্চকক্ষ)। এর ফলে জাতীয় আইন প্রণয়নে বিভিন্ন স্তরের চিন্তাভাবনা, বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং নৈতিক জবাবদিহি যুক্ত হবে। নারীর প্রতিনিধিত্ব বাধ্যতামূলকভাবে সম্প্রসারণ করে এই কাঠামো আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করা সম্ভব।
তৃতীয়ত, বিচার বিভাগকে কার্যকরভাবে নির্বাহী ও আইন প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান থেকে পৃথক করতে হবে। শুধু কাগজে কলমে স্বাধীনতা নয়, বাস্তবিক অর্থে একে আত্মনির্ভর ও জবাবদিহিমূলক করতে হবে। এছাড়া বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকেও, যাতে জনগণ সরাসরি নীতিনির্ধারণ ও উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে। একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার কাঠামো কেবল প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ নয়, বরং তা হবে জনগণের আত্মনির্ভরতা ও গণতান্ত্রিক চর্চার প্রাথমিক মঞ্চ।
সবশেষে, রাষ্ট্রীয় সংবিধানে মৌলিক মানবিক অধিকারগুলোকে (খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, তথ্যপ্রাপ্তি ও ডিজিটাল সংযোগ) সুনির্দিষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, এবং এদের সুরক্ষার জন্য রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা স্পষ্ট করতে হবে। এই অধিকারের বাস্তবায়ন শুধু নৈতিক অঙ্গীকার নয়, এটি একটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিনির্মাণের পথ।
এই প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো কোনো দলীয় এজেন্ডা নয়—এটি জাতীয় স্বার্থ, প্রজন্মগত দায় এবং রাষ্ট্রের আত্মার পুনর্জাগরণের এক ঐতিহাসিক আহ্বান। এ সংস্কার বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ তার বহুদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামাজিক বৈষম্য ও ন্যায়ের সংকট থেকে ধীরে ধীরে মুক্ত হতে পারবে এবং একটি মানবিক, গণতান্ত্রিক ও সহনশীল রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হবে।
নির্বাচন: রাষ্ট্র পুনর্গঠনের ভিত্তিপ্রস্তর
রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো নির্ভর করে একটি সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, কার্যকর এবং প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন ব্যবস্থার উপর। বর্তমান দলকেন্দ্রিক, পুঁজিনির্ভর ও সাংগঠনিকভাবে দুর্বল নির্বাচন কমিশন একটি জবাবদিহিমূলক এবং গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়া গঠনে বারবার ব্যর্থ হয়েছে। এই সংকট কেবল ভোটের নয়, রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক অসারতার প্রতিফলন। তাই প্রয়োজন একটি ধাপে ধাপে বিন্যস্ত এবং রাজনৈতিক ন্যায্যতার ভিত্তিতে নির্মিত বিকল্প নির্বাচন কাঠামো—যা হবে দ্বিস্তরে বিভক্ত: (১) স্থানীয় সরকার নির্বাচন, (২) একই সাথে গণ পরিষদ নির্বাচন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সঠিক অনুক্রম রক্ষা করা, যাতে নির্বাচন ব্যবস্থার গ্রহণযোগ্যতা ও আস্থার ভিত্তি গড়ে ওঠে।
১. স্থানীয় সরকার নির্বাচন: গ্রহণযোগ্যতা ও দক্ষতা নির্মাণের অনুশীলনভিত্তিক ধাপল
জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পূর্বশর্ত হিসেবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন একটি যৌক্তিক ও রাজনৈতিকভাবে অপরিহার্য সিদ্ধান্ত। কারণ বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের সাংগঠনিক দুর্বলতা, আমলাতান্ত্রিক নির্ভরতা এবং রাজনৈতিক চাপমুক্ত থেকে নির্বাচন পরিচালনার বাস্তব সক্ষমতা একপ্রকার অনুপস্থিত। এই বাস্তবতায় জাতীয় নির্বাচন বা গণ পরিষদ নির্বাচন আয়োজন করার পূর্বেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত—যা হবে কমিশনের দক্ষতা যাচাই, রাজনৈতিক প্রভাব হ্রাস এবং জনগণের আস্থার ভিত্তি গঠনের একটি কার্যকর অনুশীলনপর্ব।
এই স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে দলনিরপেক্ষ, ব্যক্তিকেন্দ্রিক ও স্বচ্ছ পদ্ধতিতে। সিটি কর্পোরেশন, ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে এই নির্বাচনগুলোর মাধ্যমে আমরা দেখতে পাব নির্বাচন কমিশনের বাস্তব সক্ষমতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা এবং প্রশাসনিক কাঠামোর গ্রহণযোগ্যতা। এতে একদিকে যেমন নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে, অন্যদিকে ভবিষ্যতের বৃহৎ জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার পূর্বপ্রস্তুতি ও বিশ্লেষণী অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—এতে দলীয় বলপ্রয়োগ, অর্থনৈতিক অনুপ্রবেশ ও কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের হার হ্রাস পাবে, যা একটি স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক পরিবেশ নির্মাণে সহায়ক হবে।
২. গণ পরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন: একত্রে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক রূপান্তরের কাঠামো
স্থানীয় সরকারের ভিত্তি সুদৃঢ় করার পর অনুষ্ঠিত হবে একটি একক নির্বাচন, যা একযোগে পূরণ করবে দুইটি জাতীয় উদ্দেশ্য: (ক) সংবিধান সংস্কারের জন্য গণ পরিষদ গঠন, এবং (খ) সেই একই নির্বাচনের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ সরকার গঠন। এই পরিকল্পনা ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় আধুনিক বাস্তবতায় এক নতুন রাষ্ট্র কাঠামো নির্মাণের সূচনাবিন্দু।
এই নির্বাচন হবে একটি বৃহৎ জাতীয় অনুশাসন। জনগণ প্রথমে এই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করবে—যারা প্রথম ধাপে সংবিধান সংস্কারের কাজে নিয়োজিত হবেন। গণ পরিষদ গঠিত হবে এই নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা, যারা জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত রাষ্ট্র কাঠামো, সংবিধান ও সংস্কার রূপরেখা যাচাই-বাছাই করে, সর্বসম্মতিক্রমে বা সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে তা অনুমোদন করবেন। এতে জনগণ পাবে তাদের কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র গঠনের প্রাতিষ্ঠানিক অনুমোদন।
পরবর্তী ধাপে, এই গণ পরিষদই রূপান্তরিত হবে জাতীয় সংসদে, এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধিরা সরকার গঠন করবেন। এভাবে, রাষ্ট্র ক্ষমতা পরিবর্তনের নির্বাচন নয়—বরং কাঠামোগত পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে নির্বাচনকে ব্যবহার করা হবে। এই ধারা হবে রাজনৈতিক জনমতের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ এবং ‘নতুন সামাজিক চুক্তি’ প্রতিষ্ঠার কার্যকর মঞ্চ।
এইভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়ার দ্বিস্তরকে যথাযথ অনুক্রম ও যৌক্তিক বিন্যাসে পরিচালনা করলে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী হবে, জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে এবং সাংবিধানিক রূপান্তর লাভ করবে পূর্ণ গণতান্ত্রিক বৈধতা ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি।
রাজনৈতিক দল ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা: দ্বন্দ্ব থেকে ঐক্যের পথে
বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় সবচেয়ে গভীর সংকটগুলোর একটি হলো—প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী অনাস্থা, প্রতিহিংসা ও প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি কেবল মতাদর্শগত বিভাজনের ফসল নয়, বরং তা ক্ষমতা দখল ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে এক ধরনের অস্তিত্ববাদী লড়াইয়ে পরিণত করেছে, যার ফলাফল হচ্ছে নির্বাচনী অনিশ্চয়তা, সহিংসতা, প্রশাসনিক পক্ষপাত, এবং জনগণের রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রতি আস্থাহীনতা।
এই প্রেক্ষাপটে, একটি কার্যকর, গণমুখী ও দীর্ঘস্থায়ী রূপান্তরের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোডম্যাপ বাস্তবায়নের জন্য প্রথম শর্ত হলো—দলগুলোকে নিজেদের দলীয় ও তাৎক্ষণিক স্বার্থ ছেড়ে জাতীয় স্বার্থকে সর্বাগ্রাধিকার দেওয়া। অতীতের মত প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করার সংস্কৃতি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দলীয় ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। পরিবর্তে প্রয়োজন একটি গঠনমূলক রাজনৈতিক সংলাপ, যেখানে সবাই সংবিধান, গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকারকে শ্রেষ্ঠ মূল্য হিসেবে মেনে নিয়ে ভবিষ্যতের পথনির্দেশনা নির্ধারণ করবে।
একইসঙ্গে, রাজনীতিতে জবাবদিহি ও স্বচ্ছতার অভাবে তৈরি হয়েছে গণঅসন্তোষ, যা কখনো কখনো অসাংবিধানিক শক্তির হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি করে দেয়। এপ্রসঙ্গে সেনাবাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত সংবেদনশীল। বাংলাদেশে অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, রাষ্ট্রীয় শূন্যতা তৈরি হলে কিংবা রাজনৈতিক অচলাবস্থা দেখা দিলে সেনাবাহিনীকে কার্যকর শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে—কখনো সরাসরি, কখনো পরোক্ষভাবে। কিন্তু গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী একটি রাষ্ট্রে এই প্রবণতা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
সেনাবাহিনী দেশের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নিরাপত্তায় অতুলনীয় অবদান রাখে। কিন্তু তাদের ভূমিকা অবশ্যই সংবিধান, আইন ও পেশাদারিত্বের সীমারেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। সেনাবাহিনীকে রাজনৈতিক ক্ষমতার পালাবদলে অংশ না নিয়ে বরং একটি স্থিতিশীল ও নিরাপদ রাষ্ট্রিক পরিসর রক্ষায় সহায়ক হতে হবে। এটি রাজনৈতিক দলগুলোর জন্যও একটি আত্মশুদ্ধির সুযোগ—যেখানে তারা বুঝতে পারবে যে, নিজেদের অন্তঃকলহ এবং অসহিষ্ণুতা রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামোকেই দুর্বল করে তোলে, যার ফাঁকে সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা তৈরি হয়।
এই বাস্তবতায়, সেনাবাহিনীর জন্য প্রয়োজন একটি নতুন ধরণের ভূমিকা—যেখানে তারা গণতন্ত্রের রক্ষক, সংবিধানের পাহারাদার এবং জাতীয় ঐক্যের প্রান্তিক শক্তি হিসেবে অবস্থান নেবে। অপরদিকে, রাজনৈতিক দলগুলোকেও এমন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে, যাতে গণতন্ত্রের পথ কখনোই সেনাবাহিনীর জন্য ‘সংকট নিরসনের মাধ্যম’ হয়ে না ওঠে।
বাংলাদেশের রাজনীতি ও প্রশাসনের পুনর্গঠনে রাজনৈতিক দল এবং সেনাবাহিনীর দায়িত্ব একে অপরের পরিপূরক, প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। রাজনীতিকে সুষ্ঠু পথে আনতে হলে, সেনাবাহিনীকে তার সাংবিধানিক সীমা বজায় রেখে জাতীয় স্থিতিশীলতার সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে নেতৃত্ব দিতে হবে আস্থা, সহনশীলতা ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির ভিত্তিতে। একমাত্র এই দ্বৈত ভূমিকার ভারসাম্যই বাংলাদেশকে অতীতের অচলাবস্থা ও দ্বন্দ্বের বৃত্ত থেকে বের করে এনে একটি সহনশীল ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট: সমর্থন ও চ্যালেঞ্জ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারের পদক্ষেপ বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক যুগান্তকারী পর্ব সূচিত করেছে। এটি শুধু অভ্যন্তরীণ প্রয়োজন নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে একটি কৌশলগত ঘটনা। এ পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক পরিসরে গভীর মনোযোগ আকর্ষণ করেছে, বিশেষত জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে।
জাতিসংঘ এই পদক্ষেপকে ‘গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সময়োপযোগী প্রচেষ্টা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং নির্বাচন ও প্রশাসনিক সংস্কারে কারিগরি সহায়তা জোরদার করছে। যুক্তরাষ্ট্র রাষ্ট্র সংস্কারকে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের ইতিবাচক ধাপ হিসেবে চিহ্নিত করে “Democratic Transition Initiative” নামে ১৫০ মিলিয়ন ডলারের একটি প্যাকেজ অনুমোদন করেছে এবং সংস্কারের প্রেক্ষাপটে ভিসা নীতিতে শিথিলতা এনেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আইনের শাসন ও নির্বাচন কমিশনের সংস্কারকে উৎসাহব্যঞ্জক বলে বিবেচনা করে বাংলাদেশকে উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র হিসেবে পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব তোলে।
জাপান দুর্নীতিবিরোধী কাঠামোতে বিনিয়োগ শুরু করেছে এবং ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত হলে FDI তিনগুণ বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। তবে মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিশেষ করে রাজনৈতিক নিপীড়নের অভিযোগে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ হাইকমিশনার ভলকার টার্কও আইনি সংস্কারের নির্বাচনী দৃষ্টিভঙ্গি ও পুলিশি ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
চীন ও ভারত রাষ্ট্র সংস্কার রোডম্যাপকে ভিন্নভাবে মূল্যায়ন করছে। চীন স্থিতিশীলতা ও অবকাঠামো উন্নয়নে আগ্রহী থাকলেও মানবাধিকার ইস্যুতে নিরপেক্ষ রয়েছে। ভারত সংস্কারের নিরাপত্তা ও সীমান্ত দিকগুলো নিয়ে কূটনৈতিকভাবে সতর্ক, যদিও প্রকাশ্যে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।
এই প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র সংস্কার বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অবস্থান পুনর্গঠনের গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে। কার্যকর ও স্বচ্ছ পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকার যদি আইন, নির্বাচন ও দুর্নীতিবিরোধী কাঠামোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করতে পারে, তবে বৈদেশিক সহায়তা ও বিনিয়োগ প্রবাহ বহুগুণে বাড়বে। বিপরীতে, সংস্কার যদি রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে ওঠে, তবে আন্তর্জাতিক আস্থা ভেঙে পড়বে এবং কূটনৈতিক চাপ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও সহায়তা স্থগিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে।
রাষ্ট্র সংস্কার এখন কেবল জাতীয় প্রয়োজন নয়, এটি আন্তর্জাতিক কূটনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। অংশগ্রহণমূলক শাসন ও ন্যায়বিচারের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতাই নির্ধারণ করবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আস্থার কেন্দ্রে থাকবে, না কি কোণঠাসা হয়ে পড়বে।
ঐক্য ও প্রত্যয়ের মাধ্যমে রূপান্তর নিশ্চিতকরণ
বাংলাদেশের বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য একতাবদ্ধ, সুশৃঙ্খল ও সুসংগঠিত রোডম্যাপ প্রয়োজন। বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠন সম্ভব। এই প্রক্রিয়ায় সরকার, রাজনৈতিক দল, সেনাবাহিনী ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার।
অতএব, সময় এসেছে—পুরনো বিভাজন ভুলে গিয়ে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি মানবিক, জবাবদিহিমূলক এবং টেকসই বাংলাদেশ নির্মাণের। ইতিহাস আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে জবাব চাইছে—আমরা কীভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করব এবং একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।
২৭ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৩
মুনতাসির রাসেল বলেছেন: ফ্যাসিবাদের পাওয়ার হাউজ এই আমলাতান্ত্র, একে জবাবদিহিতে আনতে হবে।
২| ২৭ শে মে, ২০২৫ বিকাল ৫:১২
ফেনিক্স বলেছেন:
আপনি রূপান্তর করছেন, আপাতত দেশ ইয়েমেনে পরিণত হয়েছে; আরো কিছুদিনের মাঝে ইহাকে সুদানে পরিণত করতে পারবেন।
৩| ২৭ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২০
ফেনিক্স বলেছেন:
আপনার রোডম্যাপ দিয়ে জাতিকে সুদানে পরিণত করা যাবে।
২৭ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৪
মুনতাসির রাসেল বলেছেন: বাংলাদেশ বানানোর রোডম্যাপ নিশ্চয়ই আপনার কাছে আছে, সেটা যদি দিতেন?
৪| ২৭ শে মে, ২০২৫ রাত ৮:১০
কামাল১৮ বলেছেন: বাংলাদেশের জন্য দরকার গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা।সেটা যত তাড়াতাড়ি হয় তাতেই জাতির মঙ্গল।
৫| ২৮ শে মে, ২০২৫ সকাল ১০:০০
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২৫
কাঁউটাল বলেছেন: এক ঠিকানায় সকল নাগরিক সেবা নিয়ে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা |
https://www.youtube.com/watch?v=FLkU9dXteqI
উত্তপ্ত সচিবালয়, বিপ্লবের হুঁশিয়ারি |
https://www.youtube.com/watch?v=imcgk6-U_S8
এক ঠিকানায় সকল নাগরিক সেবা দিলে এক দংগল সচিবের দরকার থাকবে না। ভারতে প্রতি ২১০০০০ লোকের জন্য একজন আইপিএস অফিসার লাগে, আর বাংলাদেশে লাগে প্রায় ৯ জন।
তার মানে বাংলাদেশের ৯ জন বিসিএস অফিসার = ভারতের একজন আইপিএস অফিসার?
এফিসিয়েন্সি এত কম হলে কিভাবে হবে?