![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সোহাগের সাদা কেডস
সোহাগের বয়স ৮ । ইস্কুলে্র কোন পরীক্ষায় সোহাগ সব সাবজেক্ট এ ১০০ তে ১০০ পায় না । এতে সোহাগের বাবা কোন দিন এ মন খারাপ করেনা,সোহাগের মা ও কিছু বলে না । এদিক থাকে সোহাগ খুব স্বাধীন । সোহাগের শুধু ১ টা কারনে মন খারাপ হয় ।সবাই শরীরচর্চা তে ১০০ তে ১০০ পায়, সোহাগ সেখানে ৮০ পায়।শুধুমাত্র ১ জোড়া সাদা কেডস জন্য শিক্ষক ২০ নাম্বার কম দেন ।প্রতিদিন সোহাগ বাবা কে বলে ১ জোড়া সাদা কেডস এর জন্য, সোহাগের বাবা সাইদুর রহমান ,সোহাগের এই আবদার বাম কান দিয়ে শুনে বাম কান দিয়ে বের করে দেন ।তিনি নিজে ও কোন দিন সাদা কেডস পরেন নি।মাঝে মাঝে সাইদুর রহমান ভাবেন ,আগামী মাসের বেতন পেলে ১ জোড়া সাদা কেডস কিনবেন ।সাইদুর রাহমান সাহাবের বেতন ৮০০০ টাকা ,বাসা ভাড়া ৩৫০০ টাকা ,বাজার খরচ পরে কিছু টাকা গ্রামের বাড়িতে পাঠাতে হয় ।বাজারে ১ জোড়া সাদা কেডস এর দাম ১০০০ টাকার কম না ।এই ত সেদিন তার ই কলিগ আজিম ভাই তার ছেলের জন্য ১ জোড়া সাদা কেডস কিনলেন, দাম ১৬০০ টাকা ।সাইদুর রহমান ১ জুতার দোকানে দামদর ঠিক করে আসছেন । ঠিক করেছেন সামনের মাসে বেতন পেলেই সোহাগের জন্য ১ জোড়া সাদা কেডস কিনবেন। সোহাগের এখন যে জুতা আছে ,সেটার অবস্থা খুব খারাপ । একটু খানি বৃষ্টির পানি হলে ,জুতা থাকে পছ পছ শব্দ হয়। সোহাগ ১ টা ফুরমুলা বের করছে, যখন ইস্কুলের বন্ধুরা সামনে থাকে ,তখন সে আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে হাঁটে , এতে সব আওয়াজ টা আর বের হয় না,কিন্তু আরও ১ টা জিনিস তাকে খুব ভোগায় ।প্রতি সোমবার সোহাগের ড্রইং ক্লাস থাকে ,এই ক্লাসে সবাই ক জুতা খুলে ভিতরে যেতে হয় ।সোহাগ জুতে খোলা মাত্র খুব বাজে গন্ধ বের হয় । ক্লাসের কেউ কেউ সোহাগের নাম ছোট করে হাগ বলে । পিউ নামে ১ টা মেয়ে বাদে ,সবাই তাকে এই নামে ডাকে । ড্রইং ক্লাস এর জুতার গন্ধের কথা সারা ইস্কুলের সবাই জেনে যাই ।এর পর থেকে ক্লাসে কোন গন্ধ বের হলেই সবাই বলে #হাগুর গন্ধ # ।হাগুর গন্ধ মানেই সোহাগ । সোহাগ কে দেখলে মেয়েরা কানে কানে কথা বলে , আর হাসাহাসি করে । সোহাগ বাবা কে এইসব কথা বলে ,কিন্তু সাইদুর রাহমান ছেলের কথাই কান দেন না ,তিনি জানেন ইস্কুলে এইরকম অনেকের বাজে নাম থাকে । সোহাগের বাবার ইস্কুলের অঙ্ক শিক্ষক রফিক সার অনাবরত নাক থাকে লোম তুলে একটা কাগজে পুরে ক্লাসের কোন ছেলেকে বলত যা ফেলে দিয়ে আই । তাই সবাই রফিক সার এর নাম দিল বা..... রফিক। মাসের ৫ তারিখ বেতন হয়ছে ,পকেটে ৫০০ টাকার ১৬ টা নতুন নোট । ঢাকা শহরে হরতাল ,তাই সব কিছু বন্ধ । ভাগ্য ভাল যে পরিচিত সেই জুতার দোকান খোলা ছিল । জুতার দোকান থাকে সোহাগের জন্য ১ জোড়া সাদা কেডস কিনে বাসায় ফিরছিলেন ,হটাত কথা থেকে ১ টা বোমা পরল ,সাইদুর রাহমান সাহেব কিছু বোঝার আগে জ্ঞান হারালেন ।হারান জ্ঞান তিনি আর কোন দিন ফিরে পেলেন না। হসপিটালের মেঝেতে সাইদুর রাহমান সাবের ডেড বডি পরে আছে ।সোহাগের মা, দূর সম্পর্কের চাচা হসপিটালে আসছেন ।কোন ঝামেলা ছাড়া সাইদুর রাহমান সাবের ডেড বডী বুঝে নিলেন ।সোহাগের মা পাগলের মত কাঁদছেন ।যা করার তার চাচাই করছেন ।সহাগ কিছুই বুজতে পারছে না । সোহাগ ১টা জিনিস খুঁজে পেলে ।প্যাকেট মোড়ানো রক্ত মাখা, ছেঁড়া ১ জোড়া সাদা কেডস । সোহাগের মন টা খুব খারাপ হলে গেলো ,এবার ও সোহাগ শরীরচর্চা তে ১০০ তে ৮০ পাবে ।
কাহিনী , সজল তরফদার
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৪
বাংলার রাবণ বলেছেন: ভাই...নির্মম জিনিস এভাবে না লিখলে হত না....? ভালো হয়েছে লেখাটা...কিন্তু মনটা একটু বেশিই খারাপ করে দিলেন...।