নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছড়া সব করে রব

নাদিয়া জামান

নাদিয়া জামান

সবাই ছড়া পড়ুন মনকে প্রফুল্ল রাখুন । এই মাধ্যমটি শুধুমাত্র কল্পনার রাজ্যে বসবাসকারিদের চিন্তার খোরাক নয় এর থেকে বেশি কিছু । বেশি বেশি ছড়া আর অল্প কিছু কবিতা ............ মনে হয় খারাপ লাগবে না ....

নাদিয়া জামান › বিস্তারিত পোস্টঃ

যাপিত জীবন (১) আমাদের সমুদ্র দর্শন

২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:০৯

আমি সবই করতে পারি তবে আমার ইদানিং খানিকটা হিসেব কষতে হয় আর সব সব কিছুতে একটু বেশি সময় লেগে যায়। এই তো ক'দিন আগেই বরের বন্ধুর অনুরোধে তাদের সাথে হলিডে হোমে ঘুরতে গেলাম। আসা আর যাওয়া মিলিয়ে ৩ ঘন্টা আর সেখানে সময় কাটানো ৪ ঘন্টা, এই মোট ৭ ঘন্টা হলো। তিন মাস বয়সী আমার ছোট মেয়ের জন্য ৩টা আর সাথে ১টা এক্সট্রা ৪টা ফিড নিলেই হবে। বড় মেয়েটির বয়স সবে দুই বছর। দুপুরে খাওয়ার পর তার পটিতে বসার রুটিন, মনে করে তা সাথে নিয়ে যেতে হবে। সাগর পাড়ে কি ঠান্ডা লাগবে? যদিও এখন ভীষণ রকম তাপদাহ চলছে ইংল্যন্ডে তবুও দুটি ফুলহাতা জামা নিয়েই নিই। যদি আবার বেশি গরম লাগে সাথে একদম পাতলা জামাও নাহয় দুটো করে বাড়তি নিলাম।

বড় মেয়ে সমুদ্রে দাপিয়ে খুব খুশি, আমিও খানিক পা ভেজালাম। কিছুক্ষনের মধ্যেই বড় মেয়ে পানিতে ভিজে বালিতে গড়িয়ে মাখামাখি, আবার ঠান্ডায় ও কাঁপছিল। ওর বাবা ঝটপট মেয়ের ভেজা জামা বদলিয়ে পাশের দোকানে নিয়ে গেলো গরম কিছু একটা খাওয়া কিনে দিতে। এদিকে ফেরার সময় ও হয়ে এসেছে। সঙ্গী ভাবিরা জানতে চাইলো আমি ঠিক আছি কি না। ছোট মেয়েকে ফিডার খাওয়াতে খাওয়াতে একগাল হেসে জানালাম আমি একদম ঠিক আছি। তারা হোটেলের দিকে হাঁটা দিলো। এই রে আমাকে ও তো উঠতে হবে, ওরা যে চলে যাচ্ছে। ছোট জনকে এক হাতে আগলে আমি গোছগাছ এর চেস্টা করি।

আমার কি এখন আর শুধু হাতব্যগ কাঁধে ঝুলিয়ে বেরুবার উপায় আছে! দুই বাচ্চা নিয়ে যেখানে ই যাই একটা ব্যগে বাচ্চাদের বাড়তি কাপড় আর খাওয়া, একটা ব্যগে ন্যপি, ওয়াইপ, চেইঞ্জিং ম্যট বাড়তি তোয়ালে আরো টুকিটাকি জিনিস আর ছোট হাতব্যগে আমার মোবাইল, ওয়ালেট, বাসার চাবি ইত্যাদি। আমার তড়িঘড়িতে গুঁড়োদুধের কৌটো উল্টে মাখামাখি হয়। আমি ফিডারের মুখটা আবার কোথায় রাখলাম তা খুঁজে পাই না। কাপড়ের ব্যগে রেখেছি কি? পাচ্ছি না তো, বোধহয় ন্যপি আর তোয়ালে যে ব্যগে সেখানে রেখেছি। কই পাচ্ছি নাতো, তাহলে বোধহয় হাত ব্যগে রেখেছি। আমি উদগ্রীব চোখে তাকিয়ে দেখি বড় মেয়েকে নিয়ে তার বাবা আসছে কি না। ৫ মিনিট ও সেদিন আমার কাছে পাঁচ ঘন্টা লাগছিলো। মেয়েকে গরম গরম ফ্রাইজ খাওতে খাওয়াতে তার বাবা ফিরলো। আমি চোখ গরম করে বললাম, এখন খাওয়াতে হবে না সবাই চলে যাচ্ছে সব গুছিয়ে নাও। সাগর পাড়ে বিকেলে ঠান্ডা হাওয়া ছেড়েছে। সাথের ভাবিরা তাদের বাচ্চা নিয়ে ততক্ষনে চলে গেছে। এক ভাই আমার বড় মেয়েকে কোলে নিয়ে সাম্লাচ্ছেন, ছোটজন আমার কোলে আর আমার বরের বন্ধুটি বিচটেন্ট গুটিয়ে তল্পাতল্পি গোছাতে আমার বরকে সাহায্য করছেন।

ছোট মেয়েকে এবার তার বাবা ক্যরিয়ারে বুকে ঝুলিয়ে নিলো। বিচ থেকে হোটেল মাত্র মিনিট ১০ এর হাঁটা পথ। আসার সময় আমার বড় মেয়ে লাফিয়ে দৌড়ে চলে এলেও ফেরার সময় সে ভীষণ ক্লান্ত। দু পা হেঁটেই কোলে ওঠার বায়না। ১২সপ্তা আগেই আমার ২য় সিজারিয়ান হয় তাই দু'বছরের মেয়েকে কোলে নিয়ে ১০ মিনিট হাঁটাও আমার জন্য তখন ভীষণ ক্লান্তিকর। ছোটজনকে আমি ক্যরিয়ারে ঝুলিয়ে নিলে অবস্য বড় জনকে তার বাবার কোলে দেয়াই যায়। তবে আমার ভয় লাগে যদি আমি হোঁচট খাই বা পিছলে পড়ি! থাকুক বাবা, এর থেকে কোন রকম বড় মেয়েকে হাচড়ে পাচড়ে আমি হাঁটা দেই। মিনিট চারেকের মধ্যেই আমার নাভিশ্বাস অবস্থা দেখে আমার বর তার বন্ধুকে অনুরোধ করে বড় মেয়েকে কোলে নিতে। মায়ের কোল ছেড়ে যেতে কিছুটা আপত্তি করলে ও আমার ক্লন্ত মেয়েটি এই কোলবদল মেনে নিয়ে আংকেলের কাধে মাথা এলিয়ে দেয়।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:২৮

মিরোরডডল বলেছেন:




এজন্যই সকল মায়েরা হচ্ছে সুপার উইম্যান ।
কি করে যে এতকিছু ম্যানেজ করে !

পোষ্টের শুরুতে মনে হয় কোন ছবি ছিলো, ওটা দেখা যাচ্ছে না ।

২১ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ২:৪৬

নাদিয়া জামান বলেছেন: ধন্যবাদ আয়না পুতুল, আসলেও তাই মায়েরা সুপার উইম্যান সব ই ম্যনেজ করে ফেলে তবু মাঝে মাঝে একটু শূন্যতা গ্রাস করে। অনেকেই হয়তো মানতে চাইবে না, মায়েদের অনুভূতি গুলিও হিসেবে বাধা।
ছবিটি লেখার শুরুতে দেয়ার ইচ্ছেছিলো কিন্ত এতো বছর পর আবার সামুতে লিখলাম কি করে ছবি যুক্ত করবো তা ভুলে গিয়েছি।

২| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:৩৪

শেরজা তপন বলেছেন: দুটো সিজারিয়ান দু'বছরের মধ্যে! ভয়াবহ ব্যাপার!!!
এ্সব নিয়ে এত হ্যাঁপা সামলেছেন বলে দীর্ঘ বিরতিতে পোষ্ট দিলেন- এবার লিখুন হাতখুলে।

২১ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ৩:১৯

নাদিয়া জামান বলেছেন: ইচ্ছে তো খুব করে হাতখুলে মনের কথা লিখি তবে জানেন কি আগের মতন ল্যাপটপ খুলে লিখতে বসার সময় মেলে না। মোবাইলের ছোট স্ক্রনই ভরসা। ব্লগটি ঘুরে যাবার জন্য ধন্যবাদ রইলো। ভালো থাকুন।

৩| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:০৩

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
একই লেখা দুবার করে পোস্ট হয়েছে।
ভ্রমণ পেস্টে বেশী বেশী ছবি না থাকলে আমার মন ভরে না।

২১ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৪:৫৬

নাদিয়া জামান বলেছেন: ঠিক ভ্রমণ কাহিনী হিসেবে লিখি নি তো। নিজের যাপিত জীবনের কিছু এলেবেলে ভাবনা। সময়ের সাথে আমাদের দায়িত্ব বাড়ে আর আমরা তা ঠিকঠাক পালন ও করি কিন্ত কোন কোন দিন মন খানিকটা বেয়ারা হয়ে যায় অভিমানে ফুঁসে ওঠে।

৪| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:০৮

অক্পটে বলেছেন: আপনি আসলেও ঠিকঠাক আছেন। মাতৃত্বের এই সুমহান দায়িত্ববোধের অনস্বীকার্য ব্যপারগুলোর কারণে আপাতত এমন মনে হতে পারে। ওরা আরেকটু বড় হলে আরো সহজ হয়ে যাবেন।

২১ শে আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:০১

নাদিয়া জামান বলেছেন: অকপটে ঠিক কথাটি বলেছেন। হয়তো পোস্টপার্টম ডিপ্রেশন মাঝে মাঝে চেপে ধরে। বাচ্চারা বড় হলে ওদের এই ছোট্ট বেলাটা মিস করবো এইটা ভেবেও তো আবার মন খারাপ লাগে। কি মুশকিল!
শুভকামনা আপনার জন্য।

৫| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ সকাল ১১:১১

কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনার লেখাটি একাধিক বার এসেছে!

ভাল লাগল আপনার অভিজ্ঞতা। আপনার বড় মেয়ে নিশ্চয়ই উপভোগ করেছে এই ভ্রমন! এই বয়সের ছেলেমেয়েরা সমুদ্র খুব উপভোগ করে!

২১ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:৪০

নাদিয়া জামান বলেছেন: তা আর বলতে, কি রেখে কি করবে দিশেহারা ছিলো। এই মুঠো মুঠো বালি নিয়ে মাথায় মাখছে আবার খুশিতে পানিতে লুটোপুটি খাচ্ছিলো। ব্লগটি ঘুরে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো।

৬| ২০ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৪:৫৯

জটিল ভাই বলেছেন:
আমি সমুদ্রের বিশালতা পাইনি। এক মায়ের বিশালতাকে খুঁজে পেলাম।

২১ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:৪৩

নাদিয়া জামান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে তবে বিশালতার মাঝে ও কিন্ত শূন্যতা বিরাজমান থাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.