নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এসেছি তোমার জন্য , খুজে নিব তোময় মায়ার সংসারে

মো: নাইমুর রহমান দূর্জয়

মো: নাইমুর রহমান দূর্জয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি চিঠি অতপর ভালবাসা

০৭ ই মার্চ, ২০১৭ ভোর ৪:৪৫

- আম্মু তাড়াতাড়ি কর
- আমার হয়ে গেছে ……… তুই টেবিলে আয়

- হুম …… দাও আমার দেড়ি হয়ে যাচ্ছে ত
- এই নে …… সবগুলো শেষ করবি কিন্তু


- এই তর প্লেটে ত অর্ধেক খাবার পরে রইল আর তুই দৌড়ানি শুরু করলি
- আমার সময় নেই ………ক্যাফে খেয়ে নেব
- দাড়া বলছি যত সব আজে বাজে খাবার খাওয়া দিন দিন শুকে কাট হচ্ছিস………
দাড়া আরএকটু খেয়ে যা মা

কে শুনে কার কথা যেতে পারলেই বাচি


আমি খাদিজা…… খাদিজা তুল কুবরা । আমি আমার বাবা মার একমাত্র মেয়ে । বাবার কাছে সবচাইতে লক্ষী আর মায়ের কাছে …… উফ আর বলে মুডটা নষ্ট করতে চাইলাম না। এক্ষণ যার সাথে কথা বলছিলাম তিনি হলেন আমার মহমান্য আম্মি ।

আজ আবার সুমন স্যারের ক্লাস আছে । ও আপনাদের একটা কথা বলাই হইনি আমি রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পড়ি । আমি কতক সময় ভেবে পাইনা আমার মত স্টুডেন্ড কি করে এখানে চান্স পেলাম

অনেক ক্ষণ থেকে দাড়িয়ে থেকেও রিকশা পেলাম …… যেদিন দরকার পড়ে সেদিনই এদের দেখা মিলে না আর অন্য সময় রিক্সার প্রয়োজন না হলেও কাছে এসে ঠিকই বলবে আফা মনি যাবেন নাকি ……… আর এখন দাড়িয়ে পা ব্যাথা হচ্ছে তাও রিক্সার দেখা নেই


আমি শুধু একটু না অকেটা অবাক হচ্ছি কারণটা আমার হাতের একট খাম সম্ভাবত চিঠি একটি ছোট ছেলে দিয়ে গেল ……… খামটা সাধারণ খামের মত না …… আসলে খামের গায়ে ছবি দেওয় আছে তার আবার ভাঙ্গা কাচের ছবি
যাইহোক আমার হাতে সময় নেই যে করে হোক ক্লাস ধরতে হবে, আমার হাতে সময় না থাকার কারণে খামটা ব্যাগে রাখলাম পড়ে পড়ে দেখব

……………………………………………………………………………………………………………………
এখন রাত ৮ টা , এসময় টা আমি একা ছাদে থাকতে অনেক ভালবাসি এখন অবশ্য আমার হাতে সকালের খামটা আছে। খামটা আমাকে শুধু অবাক না অনেকটা কৌতুহলও করেছে বটে

যাইহোক শত কৌতুহল শেষে খাম টা খুললাম ……… যা ভেবেছিলাম তাই একটা চিঠি , প্রেম পত্র নয়ত আচ্ছা আগেত পড়ি আসলে আমার কাছে এর আগেও এরকম আরও অনেক চিঠি এসেছে অবশ্যই সেগুলো নীল খাম নয়ত লাভ চিহ্ন থাকত আর চিঠি গুলো পড়ে অনেক মজা পাইতাম খারাপ ভাবেন না আমায় আসলে যারা চিঠি লেখত তার এমন এমন ভাষা লেখত যা দেকখ আমার খুব হাসি পেত যেমন ধরেন লেখা আছে …আমি তোমই ছাড়া বাচবনা , এমনকি বলত তোমার জন্য জীবন দিয়ে দিব … এ ধরনের টইপের যা শুধু আজাইরা পেচাল


চিঠিটা খুলেও অবাক হলাম কার চিঠিটা যে নামে দেওয়া আছে সেটা আমার নাম না
আচ্ছা চিঠিটা পড়েই দেখি



প্রিয় নীলঞ্জনা,
হয়ত নামটা শুনে অবাক হয়েছ , অবাকই ত হওয়ার কথা নামটা যে তোমার না । আমি
জানি নামটা তোমার না আবার
তোমারই । হয়ত অবাক হয়েছে নয়ত বিরক্ত হচ্ছ । মনে মনে ভাবছ এ আবার কোন
পাগল ,আবার ভাবছ এ কোন পাগল
আমাই আবার প্রেম পত্র দিল । এটাকে প্রেম পত্র বলা যায়না কারণটা পরেই বুঝতে পারবে ।

সময়ট ১ বছর আগের কথা তখন আমি কলেজে অনার্সে ৪য় বর্ষের ছাত্র । আমার জীবনে আমি খুব কম মেয়ের সাথেই
মিশেছি কারণ টা আমার লাজু কতা । কম মেয়েদের সাথে মিশলেও জীবনের ব্যস্ততম রাস্তায় অনেক সুন্দরী মেয়ে দেখেছি
কাউকে এ হৃদয় তার পাতায় নাম লেখেনি , কাউকে ভালোও লাগেনি । ছাত্র হিসেবে আমি খুব ভাল না হলেও চলার মত
ছিলাম ।

তোমাই প্রথম দেখেছিলাম কলেজের এক অনুষ্ঠানে প্রথম দেখাইতে তোমাকে আমার ভাল লেগে যাই আর ভাল
লাগাইটাই কখন যে ভালবাসায় পরিণত হয়েছে । জান তোমাকে আমি প্রতি দিন লুকিয়ে দেখতাম কিন্তু তোমাই বুঝতে দিতাম না
এমন কি তোমার সামনে পর্যন্ত যাইনি এনকি লজ্জার জন্য আমার বন্ধুদের তোমার সর্ম্পকে জানাই নি । তাইত তুমি কিসে পড়তে কি নাম
তোমার কিছুই জানতাম না যখন তোমার সর্ম্পকে জানতে পারলাম তখন তুমি এচএসসি পরীক্ষার্থী ।
আমি সব সময় নামায শেষে তোমার ভালো ফলাফরে জন্য দোয়া করতাম

যেখন শুনে ছিলাম তোর ফলাফল ভাল হয়েছে সিত্যি আমি অনেক খুশি হয়েছিলাম আবার যখন জানতে পেরেছিলাম
তুমি রাজশাহী মেডিকেল কলেজে টিকে গেছ তখন খুশি হওয়ার সাথে সাথে ব্যাথিত হয়েছিলাম কারটা একটাই
তোমাকে আর দেখতে পারবনা আরকটা বড় কারণ ছিল তুমি ডাক্তার আর আমি তখন সাধারন বিষয়ে পড়ে
কেবলে লেখাপড়া শেষ করেছি , কোনদিনই আমি তোমাকে পাব না আর ,তোমাকে হারিয়ে ফেলেছিলাম ,
তবুও খুশি ছিলাম কারণ প্রিয় মানুষের খুশির মাঝেই ত আসল খুশি

জানো আমি তোমার জন্য অফিস শেষে প্রতিদিন গোলাপ কিনি আর কল্পনা একে যাই তোমাকে নিযে । অফিসের কথা
শুনে অবাক হতে পার কেন না পড়ালেখা শেষ করেই একটা চাকরি পেয়েছি , যাইহোক এত অযথা কথা তুমি পড়তে
বোধহয় বিরক্ত হচ্ছ ।

তুমি বোধহয প্রথমে এই খামটা পেয়ে অবাক হয়েছিল , প্রশ্ন জেগেছিল তোমার মনে । কেন খামের গায়ে ভাঙ্গা কাচের
ছবি ?
হৃদয়ট আমার ভাঙ্গা কাচর ন্যায তুমি হীনা । জানি তোমাই পাবনা তবুও একে যাই তোই
আমি তোমই দূর থেকেই ভাল বেসে যাব । আমার পরিচয়টা না হয় গোপনই থাক , গোপন থেকেই ভালবেসে যাব । জানি মিল হবে না আমাদের কোনদিন




- চিঠিটা পরে আমি অবাক হয়েছি বল্লে ভুল হবে অকে অনেক অবাক হয়েছি যা ভাষায় বলতে পারব না । মানুষে এভাবেও ভাল বাসতে পারে । ছেলেটা পাগল বটে । এর নাম ঠিকানা কিছুই দেওনাই । এমন টা পাগরের ছাড়া কেউ করতে পারেনা
- খাদিজা খাদিজা তুই কোথায় …………. আবার তুই এ রাতে ছাদে উঠেছিস , রাতের খাবার খাবি কখন দিন দিন ত শুকে কাঠ হয়ে যাচ্ছিস
- মা এ টুকুর জন্য এত কথা বলতে হবে
- এত কথা মানে ………তাড়াতাড়ি নিচে আই
- যাও আসছি
……………………………………………………………………………………………………………………
- নাহ চোখে ঘুম আসছে না । চিঠিটা আমাকে কিছুতেই শান্তি দিচ্ছে না । বরাবরই কৌতুহলটা আমার বেশী কাজ করে , কোন জিনিস সমাধান না করে আমার শান্তি হবেনা । নাহ পগল ছেলেটা আমাকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না । যে করে হোক একে খুজে বের করতে হবে কিন্তু কি করে …………………. হুম পেয়েছি আডিয়া ছেলেটাকে ধরতে হলে প্রথমে সকালের ছেলেটাকে ধরতে হবে ছেলেটা নিশ্চয় সে রাস্তার আশে পাশে থাকতে পারে হয় তবা ছেলেটা ফুল বিক্রেতাও হতে পারে তাহলে আমার কাজ আরও সহজ










- যাক ছোট ছেলেটাকে ত পেলাম । যা ভাবছিলাম তাই ………… ছেলেটা রাস্তার ধারে ফুল বিক্রি করেছে ..
.
.
- এই ছেলে শোন (আমি)
- ফুল লইবেন আপা (ছেলেটা )
- হুম … তার আগে বল তোমার নাম । (আমি)
- আপা আমার নাম হইল গিয়া অরণ্য .. আমাকে সবাই অরু বলেই ডাকে (অরণ্য)
- হুম …আমিও তোমাকে অরু বলে ডাকব
- আচ্ছা
- অরু কালকে আমাকে একটা খাম দিয়েছিলে মনে আছে
- মনে থাকব না আবার ওইটাত সাকি……
- কি হল নামটা বল
- নাম বলতে মানা আছে
- কে মানা করেছে তোমায়
- ভাইয়া মানা করেছিল
- আমি বলছি তোময় নামট বল
- কিন্তু ভাইয়া মানা করেছিল যে
- ঠিক আছে নাম বলা লাগবেনা , তোমার সেই ভাইয়াটাকে দেখাতে পারবে
- ………
- কি হল কথা বলছ না কেন
- এটাও পারবনা
- এটাত দেখছি বদের হাড্ডি , এই ভাবে কাজ হবে না ……… সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুল টা বাকাতে হবে দেখছি ( মনে মনে)
- তোমার হাতের এই ফুল গুলোর দাম কত
- আপা ২০০ টাকা
- এই ফুল গুলো আমি সব নিব কিন্তু একটা কাজ করতে হবে
- কি কাজ আপা
- তোমার ভাইয়ার নাম আর তাকে দেখাতে হবে
- এটা পারব না আপা … ভাইয়াকে আমি কথা দিয়েছি
- রাখ তোমার কথা … তোমার ভাইয়া কিছু জানতে পারবেনা …… আর আমার কথা মানলে তোমার কাছ থেকে আমি প্রতিদিন ফুল নেব…… আর এখন তোমার হাতের সব ফুল গুলো নেব
.
.
. একটু কি যেন ভাবল তার পর তার মুখ খুল্ল …… খুলবেন আবার ছোট হলেও ত
. টাকর লোভ আছে না
- আচ্,ছা বলছি ..কিন্তু সব ফুল দিতে পারব না কারণ ভাইয়া প্রতিদিন আমার কাছে থেকে ফুল নেয় তাই তার জন্য একটা ফুল রেখে দিই
- কখন আসে তোমার ভাইয়
- এইত একটু পরেই আসবে
- এইবার ত নামটা বলবে
- সাকিব
- কার …তোমার ভাইয়ার নাম
- হ্যা
- আমি যে তোমার কাছে এসে ছিলাম আর যা যা জানতে চেয়েছি তোমার ভাইয়া যেন না জানে
- ঠিক আছে আপা
.
.
.
যা ভেবেছিলাম তাই ছেলেটাকে দেখতে একদম বোকা টাইপের । যেন ভাজা মাছটা উল্টা খেতে পারে না । তার আবার চার চোখি …মায়াবি চোখদুটো যেন আতল চশমার নিচে ঢাকা পড়েছে । লোকটা আসলেই বোকা
.
.
.
- এই যে মিস্টার শুনছেন
- আমাকে কে..কে বলছেন ( সাকিব)
- হ্যা আপনাকেই ( এমন ভাব করছে যেন আমি চোর ধরতে এসেছি……… চোরত ধরতে এসেছি বটে)
- জ্বী বলেন
- (ব্যাগ থেকে ছোট্ট একটা ঠিকানা এমন ভাবে বার কলরাম যেন চিঠি বের করছি আর ওর চেহেরাটা এমন হয়েছে যা বলার মত ভাষা খুজে পাচ্ছি না আমি স্পস্ট তার কপালে ঘামের বিন্দু দেখতে পারছি , বোকাটা যেন ভয়ে অস্থীর হয়ে গেছে যেন আমি চোর ধরে ফেলেছি আর এখন তাকে রিমান্ড নিচ্ছি)
- এই ঠিকানাটা কোন দিকে বলতে পারবেন ( এমন ভাব করল যেন মৃত্যৃ দন্ড মাফ হয়ে গেল)
- দে..দে..দেখি দেন (সাকিব)
- তোতলাচ্ছেন কেন
- এমনিতেই
- ঠিকানাট
- হ্যা …… চলেন আমি দেখিয়ে দিচ্ছি
.
.
.
.
বোকাটা এখন আমার সামনে সামনে যাচ্ছে আসলে চেহারটার বোকা বোকা হলেও মায়বী , বোকা হলে কি হবে একটা চিঠিতেই আমাকে গ্রাস করে ফেলল ।
এখন বোকাটা ভাবছে আমি ওর সম্পর্কে কিছুই জানি না ……… কিন্তু আমিত এখন অকে জানি আসতে আসতে ওর সম্পর্কে আরও জানব ।

… হয়ত আপনার ভাবছেন এটু দেখা আর একটা চিঠিতেই প্রেম হল
আসলে আপনার যা ভাবছেন তা নয় আমার হয়ত সে ভাবে অনুভুতি তৈরি হয়নি কিন্তু সে ……… সে ত আমাকে অনেক আগে থেকে ভালবাসে ..আর মেয়েরা সব সময় চাই তার প্রিয় মানুষ তাকে ভালবাসুক .. আমিও মেয়ে তাই আমিও ত তাই চাই । আর সত্যি বলতে আমি বোকাটার চোখের মায়াই পড়েগেছি ।
.
.
সমাপ্তি

লেখকঃ নাইমুর রহমান দূর্জয়

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.