নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাসরীন খান

নাসরীন খান

প্রত্যেক সৃষ্টিরই আলাদা সৌন্দর্য রয়েছে।প্রয়োজন সৃজনশীল মন।

নাসরীন খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্লগ সমাচার---গল্প

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৬

অনেক খুঁজে অবসরপ্রাপ্ত হাকিম সাহেব একটি কাজ পেলেন।দিনটা কি!ঘুমছাড়া বিদঘুটে রাতটাও ভালই কাটবে এবার।হিসেবের মাথামুন্ডু কিচ্ছু মিলতে চায়না যেন আজকাল।রেবেকা গত হয়েছে মেলা বছর।দশ বারতো হবেই।রাকিবকে জিজ্ঞেস করে নেব ক্ষন।রাকিবটাকেত ছুটির দিন ছাড়া পাওয়া ভার।বৌমাকে জিজ্ঞেস করব না হয়।কিন্তু বৌমাইতো ফিরেনি এখনো।থাক ওসব কথা কাজ পেয়েছি সেটাই বড় কথা।

ইফতি ব্লগে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিল।আমার বড় নাতিন।ওইতো কাজটা খুঁজে দিয়েছে।মাহিনা না পেলেও কাজ বটে।সারাদিনটায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আর পেপারে মাথা গুঁজে লাইন টু লাইন দেখা।মাঝে মধ্যে আত্মীয় স্বজনের খবর জানা ,এই ছিল রূটিন ।তবে এখন আত্মীয় স্বজনের খুঁজ নিতে ভাল লাগে না।মনে হয় এই বয়সে সবাই আমার খুঁজ করবে আমি কেন উল্টো খুঁজ নেব।

বুড়ো হলে এক ধরনের অভিমানী হয় মানুষ।তার ব্যতিক্রম তিনিও নন।একটাসময় সবার জন্য করতে করতে ক্লান্ত আর অভিমানী হয়ে উঠেন।তখন ছোটদের মত বায়না করেন।না ভেবেই হয়ত অনেক কিছু বলে ফেলেন।কারন তখন ধৈর্য্যও বাঁধন হারা ঘোচের হয়।আউট অব কন্ট্রোল আরকি!যা মনে মনে ভাবছেন তা না ভেবেই বলে বসলেন।অবচেতন মনেই।কে কি ভাবল তা নিয়ে আর ভাবতে ইচ্ছে করে না এখন।হয়ত খেতে বসলেন,রান্না ভাল লাগছে না।বলে ফেললেন-বৌমা আজকের তরকারী রান্নাটা এত বিশ্রী হয়েছে ,খাওয়া যাচ্ছেনা।

রাকিব অবশ্য বৌকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছে,বাবার বয়স হয়েছে।বয়স হলে ছোটদের মতন হয়ে যায় মানুষ। তখন অত কিছু ভেবে বা বুঝে কথা বলেন না।তাতে তুমি মন খারাপ নাকরে বুদ্ধির সাথে মোকাবেলা করো প্লিজ।বাবা একা একা কতটা বছর কাটিয়ে দিচ্ছেন। শুধুমাত্র আমাদের কথা ভেবেই দ্বিতীয় বিয়ে করেননি।ওকে পজেটিভলি বুঝাতে সক্ষম হয়েছে রাকীব তার বাবার অবস্থান।তাই এটা শুনার পরে বৌমা উত্তর করলো

-তাই বুঝি বাবা।খাবার না খেতে পারলে রাখুন।আমি প্লেট চেন্জ করে অন্য তরকারী দেই।নাকি ডিম ভেজে দেব।

-তাই দাও,একটু বসি আমি।

ব্যাস ,এভাবেই বাবা আর বৌ এর একধরনের মিষ্টি সমঝোতার সম্পর্ক তৈরীর সেতু তৈরী করে দিয়েছে রাকীব।মাঝে মাঝে অনামিকা রেগে গেলে রাকীব বাবার হয়ে নিজেই সরি বলে নেয়।কখনো অনামিকার সাথে খারাপ কথা বা ব্যাবহার করে না সে।বুঝিয়ে মেনেজ করে। সে জানে মাথা ঠান্ডা রেখে কিভাবে ঘর সামলাতে হয়।অনামিকা একটু রেগে গেলেও রাকীবের আদরের কাছে গলে পানি হয়ে যায়।তাই বৌ -শ্বশুরের সম্পর্কও চমৎকার।অনামিকার জন্মদিন কিংবা বিয়ে বার্ষিকীতে উপহার দিতে ভুল করেনা হাকিম সাহেব।অবশ্য এখানেও রাকীবের অবদান অনস্বিকার্য।

ব্লগে রেজিষ্ট্রেশন করিয়ে দিল ইফতি।এবার নানাকে বুঝিয়ে দিচ্ছে কোথায় ক্লিক করলে নতুন ব্লগে ঢুকা যাবে। কিভাবে লিখা শুরু করবে। বিষয়বস্তু কি হতে পারে।আগামীকাল লিখা শুরু করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিলেন।সেই উপলক্ষে তার নাতি নাতনীদের খাওয়াবেন বলে বাসায় জানিয়ে দেয়া হল।অনামিকা সেই অনুযায়ী রন্ধন কার্যটি সারছে।হাকিম সাহেব চিন্তা করে দেখলেন দিন হিসাবে শুক্রবারটি অতি উত্তম।সেইদিন থেকেই লিখা শুরু হবে।সেই মোতাবেক তার বড় মেয়ে ,ছোট মেয়ে ও তাদের জামাই সন্তানেরা উপস্থিত হয়েছে।



ইফতি নেট অপেন করে ব্লগে গিয়ে নতুন লিখা বের করে সরে বসল।হাকিম সাহেব লিখতে শুরু করলেন।

'আজ আমি প্রথম ব্লগে লিখা শুরু করলাম।আজ শুক্রবার,অতি উত্তম দিন।সেই জন্যই আজ শুরু ।আমার নাতি-নাতনী ছেলে মেয়ে সবাইকে সেই উপলক্ষে নেমন্তন্য করেছি।আমি আমার মনের কথাগুলি আপনাদের জানাবো বলেই লিখব।আমি এই বয়সে একটা কাজ পেয়েছি সেটাই বড় কথা।আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।আমার নাতি-নাতনীদের জন্যও দোয়া করবেন,তারা যেন ভাল মানুষ হতে পারে।মানুষের সেবায় নিজেদের বিলিয়ে দিতে পারে।'

লিখাটুকুন ব্লগে প্রকাশ করুন এ পাঠিয়ে দেয়া হল।সবাই হাতে তালি দিয়ে তাকে উৎসাহিত করল।



প্রথম কয়দিন অনুৎসাহে কাটল।কারণ কোন কমেন্টস পাচ্ছে না,আবার প্রথম পাতায়ও আসছে না।যাই হোক অষ্টমদিনে তার সেই কাংখিত দিনটি এলো।হাকিম সাহেব মহাখুশি।খুশিতে অনামিকাকে এই খবরটি দিতে ফোন করে করল।বৌমা তাকে আরো উৎসাহিত করলো।পরে ইফতিকেও ফোন দিল।

তার ভেতরকার এই ক্ষমতাটা এতদিন সুপ্ত ছিল।এত আবেগ দিয়ে,দরদ দিয়ে উনি লিখতে পারেন এটা তার নিজেরও জানার বাইরে ছিল।বিষয় বস্তু চমৎকার ফুটে উঠে তার স্পর্শে।তার এই প্রতিভায় সবাই মুগ্ধ।পরিবারের সবাইকে ডেকে পড়িয়ে তবেই তৃপ্ত হন তিনি।লিখায় কমেন্টসও পাচ্ছেন বেশ।অবসর নেয়ার পর তার ধারনা হয়েছিল আর তার কিছুই করবার নেই মানুষের জন্য ,সমাজ -সংসারের জন্য।আজ এটুকু অন্তত মনে হয় ,মানুষ যতদিন বেঁচে থাকেন সমাজের জন্য কিছু না কিছু করা তার দায়িত্ব।বয়সের অভিজ্ঞতা অনেক বড় অভিজ্ঞতা।তা দিয়ে মানুষকে ভাল মন্দের তফাৎ বুঝানো যায়।উপদেশ দেয়া যায় বাস্তবতার নিরিখে।উনি নিজেও ভীষন ভাবে তৃপ্ত লেখালিখি করে।

রাকীবেরও আগ্রহ বাবার প্রতি কম নয়।ভাবছে বাবার ভাল ভাল লিখাগুলি বেছে নিয়ে বই প্রকাশ করবে।সত্যি এমনটি হবে কখনো ভাবা হয়নি ।আজ সেইদিন ,রাকীব সাহেবের প্রথম বই 'বেদনার একাত্তর' এর আজ প্রকাশনা উৎসব।খুশীতে রাকীবুল হাসান কেঁদে ফেলেছেন।রাকীবুল হাসানের জন্ম যেন আজ সার্থক মনে করছেন তিনি।





























মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২৯

আমিনুর রহমান বলেছেন:




গল্পে ভালো লাগা।
কেমন আছেন?

২| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৫০

নাসরীন খান বলেছেন: apny kemon achen.ami alhamdulillah valo achi .donnobad

৩| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:০৭

দুষ্টু ছেলেটি বলেছেন: ভাল লাগলো, আসলেই একটা বয়সে যখন মানুষের কিছুই করার থাকেনা তখন একাকীত্বটা মানুষকে নিঃশেষ করে দেয়।

লেখালেখির অভ্যাস থাকলে এই বয়সে সেটা বেশ ভাল কাজে দেয়

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩২

নাসরীন খান বলেছেন: অাসলে সে বয়সটাকে মাথায় রেখে গল্পটা লিখা.থাদের পজেটিভ কোন কাজে উৎসাহিত করাটাই গল্পের থিম।ভাল থাকেন।

৪| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:০০

আজমান আন্দালিব বলেছেন: দুষ্টু ছেলেটি বলেছেন: ভাল লাগলো, আসলেই একটা বয়সে যখন মানুষের কিছুই করার থাকেনা তখন একাকীত্বটা মানুষকে নিঃশেষ করে দেয়।

লেখালেখির অভ্যাস থাকলে এই বয়সে সেটা বেশ ভাল কাজে দেয়

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৯:০৩

নাসরীন খান বলেছেন: কেমন অাছেন ?অনেক দিন পর ।নতুন কিছু লিখুন সে প্রত্যাশায়।

৫| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:০৭

আজমান আন্দালিব বলেছেন: আমি ভালো আছি। আজ একটা পোস্ট দিলাম। একটু সময় করে ঘুরে আসার আমন্ত্রণ রইলো। আচ্ছা আপনার কি ফেবু আইডি আছে? Akhteruzzaman Bhuiyan অ্যাড্রেসে ফেবুতে আসার অনুরোধ করছি। স্কুল নিয়ে সবার সাথে ওখানে সমন্বয় করছি।

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৪৬

নাসরীন খান বলেছেন: হা অাছে ।nasreen khan .অামার ছেলের ছবি দেয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.