নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিস্তি ৫২:
আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার তখন ছাত্র নেতারা সবাই বয়ষ্ক ছিলেন। ছাত্রদল নেত্রী ফরিদা আপার বয়স একটাই বেশি ছিল, আমি তাকে ফরিদা খালা ডাকতাম! বেশ মনখারাপ করলেও রোকেয়া হলের এই সাবেক নেত্রী কিছু বলতেন না। রাজনীতির স্বার্থে হজম করতেন। একই অবস্থা আরো অনেকের ছিল। সে সময় ছাত্রদল সভাপতি ছিলেন সাহাবুদ্দিন লাল্টু ভাই। ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন লিয়াকত ভাই। দুজনেই নেতা হিসাবে ভালোই ছিলেন। কিন্তু তার কর্মীদের সাথে বয়সের তফাৎটা খুব বেশি ছিল। লিয়াকত ভাই এটা স্বীকার করতেন। একদিন মধুর ক্যান্টিনের চা সিগারেট ফুকতে ফুকতে লিয়াকত ভাই বললেন, আমার সামনে একটা প্রথম বর্ষের ছাত্র কি বলবে? বল। ওর আর আমার চাওয়া পাওয়া কিম্বা আবেগ অনুভূতি সব কিছুর মধ্যেই বিস্তর ফারাক। আমি চাই আমার মত বয়সে কেউ যেন আর ছাত্র রাজনীতির হাল না ধরে।
লিয়াকত ভাই সেটি বাস্তবায়নও করেছেন। অনেকে বলে থাকেন, টাকা খেয়ে অল্প বয়সী পোলাপাইন দিয়া তার পরের কমিটি করেছেন। কিন্তু আমি সে সব মানি না। আমি লিয়াকত ভাইকে এ জন্য ধন্যবাদ জানাই উনি অল্প বয়সীদের হাতে ছাত্র রাজনীতির হাল তুলে দেয়ার সাহস করে সফল হয়েছেন। এখন ছাত্রলীগ বড় ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে অন্যতম যার কমিটির শীর্ষ পদগুলো মোটামুটি অল্প বয়সীরা অবস্থান করছেন। এর পুরো কৃতিত্ব লিয়াকত ভাইয়ের। আমি এ জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই।
অন্যদিকে লাল্টু ভাই। ছাত্র রাজনীতির সন্ত্রাস কেন্দ্রিক যে চর্চা, তার বাইরে ছাত্র রাজনীতিকে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে তার একটা ভূমিকা আছে। টুকটাক মারামারি যে হয়নি তা নয়, তবে রাত জেগে অস্ত্রের মহড়া, মারামারি , হৈ হাঙ্গামাটা কমতে শুরু করেছে লা্ল্টু ভাই যখন সভাপতি ছিলেন সে সময়। এ জন্য ছাত্র সংঘটনের এই দু নেতার প্রতি আমার কিঞ্চত দূর্বলতা আছে। অনেকে এদের বিস্তর সমালোচনা করবেন, করা যাবে, সমালোচনা করার শেষ নেই, আমি এ দুজনের আলোকিত দিকটার কথা বললাম।
তবে ছাত্রদলের রাজত্বের সময় ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে ছিল, এমন কি সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে হলে হলে সহ অবস্থানেও গিয়েছিল। যেটি ছাত্রলীগের রাজত্ব কালে আমরা দেখছি না। এটা পীড়া দায়ক। এখানে রাজনীতির চেয়েছ ছাত্র পরিচয়টা মূখ্য হওয়ার বদলে গৌণ। এটাকে কোনো বিচারেই প্রশ্রয় দেয়া যায় না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ এখন এতটাই বেপরোয়া যে আরেফিন স্যারের মত ভিসিও তাদের সমঝোতায় আনতে পারেন না। আরেফিন স্যারের কথা বলছি এ জন্য যে, উনি বিরোধী অবস্থানে থাকার সময় বেশি বেশি নীতি নৈতিকতার কথা বলতেন, তবে তার ক্ষমতায় থাকাটার সময়টা বেশি অনৈতিকতায় ভরা। সে সব থাক, স্যার নমস্য, তাই আমি তার বিরুদ্ধে বেশি বলে বিরাগভাজন হতে চাই না।
©somewhere in net ltd.