নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেডলি ট্রাভেল লাভিং ওয়ান।

মোরতাজা

আমি সাধারণের একজন। বেড়াতে, বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।

মোরতাজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টি

২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:১৬

কিস্তি : ৫৯ :: বৃষ্টি



প্রচণ্ড বৃষ্টি নামার পর আমরা ভেবেছিলাম, এখন কোথাও একটু ছাউনি পেলে তার তলে মাথা লুকানো যায়। কিন্তু পরে মনে হলো বৃষ্টির জন্য আমরা শ্রীমঙ্গলে। সুতরাং বৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করাটাা ঠিক হবে না। ২০০৪ সালের কথা এটা। আমি নিজে সাধারণত বৃষ্টি দেখার জন্য শ্রীমঙ্গল যেতাম, সেবার আমার সাথে আমার সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী। আমার মাথায় যে নানা রকমের সিট আছে, এ সম্পর্কে তার জানা ছিল। কিন্তু আষাঢ় মাসে হঠাৎ করে বৃষ্টি দেখার জন্য শ্রীমঙ্গল সত্যি সত্যি যাবো এমনটা তার ভাবনার বাইরে। আমরা ভিজতে ভিজতে হাজির হলাম হীডের বাংলোয়। সারা বিকাল থেকে রাত এমনকি পর দিন সকালেও বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছিল শ্রীমঙ্গলে চায়ের বাগান। টিলার ওপরে টিনের বাংলোয় সে বৃষ্টির শব্দ টানা বয়ে যাচ্ছে। আমরা দুজনে বসে আছি। সামনা সামনি। বেতের চেয়ারে।



বৃষ্টি উপভোগের জন্য আমি এর আগেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হলের বারান্দায় বৃষ্টির ছাট এসে ভিজিয়ে যাওয়া উপভোগ করেছি অনেকবার। কিন্তু সেবার ছিল ব্যাতিক্রম।



শ্রীমঙ্গল এসে ঘরে বসে থাকলে চলবে না, আমরা পরের দিন বিকালে বের হলাম চায়ের বাগন আর মণিপুরী পাড়া ঘুরে দেখার জন্য। রিকশা করে এ ভ্রমণ । বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে চায়ের বাগান, ছড়ার ঘোলাটে পানি বাড়ছে, সে সব দেখতে দেখতে আমরা পার করে এলাম পুরো একটা বিকাল। পরের দিন আমরা গিয়েছিলাম বাইক্কার বিলে। বিলের ওপর বৃষ্টি সেই রকম। এমন বৃষ্টি আমি অনেকেবারই দেখেছি। বৃষ্টি নিয়ে আমার বিলাস পুরেনো। আমি কখনো ছাতা ব্যবহার করি না। অন্তত বিশ্ববিদ্যালয় লাইফের শুরু থেকে। আগে ব্যবহার করতে বাধ্য ছিলাম, কারণ বাড়িতে এ সব ব্যবহার না করে জ্বর বাঁধানো যাবে না বলে মায়ের নির্দেশ ছিল। সে নির্দেশ বাধ্যগত সন্তান হিসাবে নিয়মিত পালন করেছি।



চা বাগানের চা পাতার ওপর বৃষ্টির ফোঁটা কিম্বা হাওরে জলের ওপর বৃষ্টির দৃশ্য চোখে লেগে থাকার মত, যে রকম প্রথম সন্তানের প্রথম হাসি কিম্বা মায়ের মুখ লেগে থাকে চোখের পাতায়। ঠিক সে রকম। দুটোরই অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। তবে প্রকৃতির এই বৃষ্টি নামক জিনিসটা আমরা বেশি ভালো লাগে। এমনকি প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে আমি রাঙামাটি লেক পাড়ি দিয়েছি অনায়াসে। বর্ষায় যৌবনা লেকে উতল ঢেউ থাকে, সে সাথে ছোট ডিঙ্গি নৌকা মাতালের মত করে চলে এ দিক সেদিক।



কিন্তু ভয় আমাকে কখনো স্পর্শ করেনি। পাহাড়ে, বনে এবং নগরে বৃষ্টির নানা রূপ দেখতে দেখতে বড় হচ্ছি ঠিকই কিন্তু ছোট বেলায় বৃষ্টি ভিজে মাছ মারা আনন্দটা এখন আর নেই। আমাদের গ্রামে অবশ্য এখন মাছ মারার সংস্কৃতি প্রায় উধাও হতে বসেছে। তাই এখন এ সব কেবলই স্মৃতি। আমাদের ছোট বেলায় দেখা বিল এখন আর নেই। নেই জলে টই টম্বুর ফসলা জমি। এখন ইঁটের গাঁথুনি দিয়ে ঘর উঠছে, আসছে নগরে সভ্যতা সেই সাথে কমপ্লিকেটেড মানুষের ভরে যাচ্ছে গ্রাম। এখন নতুন হয়েছে মফস্বল শহর। সেই শহরেও বৃষ্টি নামে, তবে সেই বৃষ্টি এখন আর আগের মত আমাকে আকর্ষণ করে না। তাই এখনো বৃষ্টি দেখতে ছুট শ্রীমঙ্গলে, হীডের বাংলো বাড়িতে বসে থাকি ঝিম মেরে। গরম চায়ে চুমুক দিতে ভাবি সবকিছু কেমন যেন বদলে যাচ্ছে। বদলে যাবে সবই।



ষাটের পরের কিস্তি গুলো হবে পর্যটন নিয়ে। আমার নতুন জীবনের নতুন অধ্যায়ের গল্প শোনাবো। এতদিন দিন আমার কিস্তি পড়ে যারা নানা রকমের জ্ঞান জাহির করার চেষ্টা করেছেন। তাদের আর বলার কিছু থাকবে না। তাই ভেবে কষ্ট হচ্ছে!!!





মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১৩ রাত ১০:৩২

খেয়া ঘাট বলেছেন: ভালো লাগলো পোস্ট। অনেক ভালো লাগলো।
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
একগুচ্ছপ্লাস।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:১৩

মোরতাজা বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ২৯ শে জুন, ২০১৩ রাত ৮:০৯

জিউরানা বলেছেন: আপনার একদিনের ঘূরে যাওয়া হীড এর বাংলো আমার বাসস্থান.....আবার আসবেন আশায় রইলাম।

০৩ রা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৩৫

মোরতাজা বলেছেন: আপনার আসল নাম, ফোন নম্বর যেন, আমি আগে প্রায় যেতাম, সামনেও যাবো। সময় করে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.