নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিস্তি ৭০:
ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় ডাটসে(ট্যুরিস্ট সোসাইটি) আমি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়লাম। সাংবাদিক সমিতির রাজনীতির গিট খুলতে খুলতে কান্ত। তার মধ্যে ডাটস কে সময় দেয়ার সুযোগ মিলছিলোনা। আমার ঘনিষ্ঠতম বাবু ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক থেকে ভারমুক্ত হয়েছে। সালেহীন ভাই সভাপতি। তার সাথে আমার একটা আবদারের সম্পর্ক বরাবরই ছিল। সব মিলিয়ে ডাটস চলছে ভালো, এটা বাবুর’র কাছ থেকে শোনা। তাই এ নিয়ে আমার বিশেষ কোনো আগ্রহ ছিল না। কোনো সমস্যা হলে আমি যেতাম। বাবু ও সালেহীন ভাইদের আয়োজনে একটা ট্যুরেও আমি গিয়েছিলাম। সেটা সেন্টমার্টিন।
এই একটা দ্বীপে ট্যুর হলে আমার যেতে কোনো বাধা নেই। এখানে আমি হাজার বার যাবো তবুও কান্ত হবো না, খারাপ লাগবেনা। কারো প্রবালের ওপর বসে পা-টা পানিতে ডুবিয়ে দিলে আমার দিনেকের কান্তি উবে যায়। ইচ্ছে করে অনেকদিন যৌবনদীপ্ত হয়ে বেঁচে থাকতে। জীবনের সাথে যৌবনের একটা নিবীড় সম্পর্ক আছে। যৌবন-যৌনতাকে অনেকে খারাপ চোখে দেখে। এ সব নিয়ে আলাপেও অনেকের আপিত্তি! যদিও তলে তলে সবাই সদরঘাট যেতে চান। কিন্তু পর্যটনের সাথে যৌবনের একটা সম্পর্ক আমি বরাবরই খুঁজে পাই। যৌবনদীপ্ত মানুষ সবসময় উজ্জ্বল, পর্যটনও তাই। তবে প্রকৃতি বুড়িয়ে যায় না তাই অনন্তকাল ধরে রূপ সুধা ছড়ায়। মানুষ এক সময় হারিয়ে যায় নব প্রজন্ম আসে, নব আঙ্গিকে উপভোগ করে প্রকৃতির অপার লীলা।
সে বার সেন্টমার্টি যাবার আগে হালকা তালগোল পাকিয়ে গেলো। বাসে বসা নিয়ে সমস্যা। সূর্যসেন হলের এক ছাত্রনেতা যাচ্ছেন ট্যুরে। সে ডাটসের রুল ফলো করছে না। ডাটসের মেম্বার ডাটসের রুল ফলো করবে না, এটা হতে পারে না। সে যতই ক্ষমতাধরই হোক। ওর নামটা এখন আমার মনে পড়ছে না। তবে ছেলে একটু বলদ টাইপ। ডাটস যেভাবে সিট বণ্টন করেছে সেটা তার পছন্দ না। তাই সে নিজের মত করে বসেছে। বাবু এসে আমাকে এ খবর জানালো। সে সময় ক্যাম্পাসে আমাকে রাজনৈতিক নেতা কর্মীরা কিঞ্চিত সমীহ করে, তাই আমি ওই ছাত্র নেতাকে বোঝানোর দায়িত্ব নিয়ে বাসে উঠলাম। গিয়ে দেখি জুনিয়র ছোট ভাই। আমাকে দেখে বললো ভাই আপনি যাচ্ছেন নাকি। বললাম, হ্যাঁ। ও বললো কই বসবেন। আমি বললাম পেছনে। ও সোজা উঠে পেছনে চলে গেলো। বললো আপনি এই সিটে বসেন।
ক্যাম্পাসের অধিকাংশ ছাত্রনেতা ও ক্যাডার পরিচিতি হওয়ার কারণে আমি কোনো সমস্যা বোধ করিনি। ওরা যে যেই গ্রুপই করুক না কেন, আমার সাথে কখনো খারাপ আচরণ করেনি। এখনো করে না। তাই স্বস্তির সাথে ক্যাম্পাসে সব সময় ছিলাম, এখনো যাই।
২০০৩ সালের মার্চ মাস। হঠাৎ শুনলাম ডাটস দখল হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি আমি বাবুকে জানালাম। বাবু আমলে নিলো বলে মনে হলো না। সালেহীন ভাই নিজেও এটা শুনেছেন। তাই তিনি খুবই গুরুত্বের সাথে নিলেন। আমাকে ডেকে নিলেন টিএসসির মাঠে, বললেন, উপায় কি বল। আমি কোনো উপায় দেখলাম না। রাজনৈতিক দলের কবলে পড়লে যে সমস্যা হয়। পরে বললাম, আমাকে তো আপনারা বাদই দিয়ে দিয়েছেন। সালেহীন ভাই বললো তুই তো সহ সভাপতি আছিস। আমি যে এ পদে আছি বাবু বা অন্য কেউ আমাকে কখনোই জানায়নি। তাই প্রথম জানলাম!
পরে সালেহীন ভাই বললো তুই সভাপতি হয়ে যা। বললাম, না আপনিই সভাপতি থাকেন। আমি ভারপ্রাপ্ত হিসাবে সামনে থাকি। যাতে কেউ এখানে এসে ক্ষমতা দেখাতে না পারে। সে হিসাবে সালেহীন ভাই আমাকে ভার দিলেন। প্রথম অনুষ্ঠান করলাম ১৪ এপ্রিল, পয়লা বৈশাখ। সে অনুষ্ঠানে স্পন্সর করেছিলেন আলিম ভাই। উনি সে সময় ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি। উনি নিজে অনুষ্ঠানে আসার পর আর কারো ডাটসের ছায়া মাড়ানোর সাহস হয়নি।
আমি মাঝে মধ্যে যেতাম। মেয়াদ শেষে সালেহীন ভাই আমাকে সভাপতি হিসাবে পূর্ণ দায়িত্ব দিলেন। আমি তার কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে পেলাম। বাবু আমার কমিটির সাধারন সম্পাদক হিসাবে থাকলো। ডাটস কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা চলছিল। আমি চাইছিলাম বাবুই ডাটস চালাক। কিন্তু শুরুতে একটি ট্যুর আয়োজন নিয়ে ঝামেলা বাঁধে। সেটি পরের কিস্তিতে বলবো!
©somewhere in net ltd.