নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুব সহজ এবং তার চেয়েও বেশী সাধারন একজন মানুষ । আইটি প্রফেশনাল হিসেবে কাজ করছি। টুকটাক ছাইপাশ কিছু লেখালেখির অভ্যাস আছে। মানুষকে ভালবাসি। বই সঙ্গে থাকলে আমার আর কিছু না হলেও হয়। ভালো লাগে ঘুরে বেড়াতে। ভালবাসি প্রকৃতি; অবারিত সবুজ প্রান্তর। বর্ষায় থৈ থৈ পানিতে দুকুল উপচেপরা নদী আমাকে টানে খুব। ব্যাক্তিগতভাবে বাউল, সাধক, সাধুদের প্রতি আমার দুর্বলতা আছে। তাই নামের শেষে সাধু। এই নামেই আমি লেখালেখি করি। আমার ব্লগে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো। ভালো থাকুন সবসময়। শুভ ব্লগিং। ই-মেইলঃ [email protected]
আমাকে সে নিয়েছিলো ডেকে;
বলেছিলো: 'এ নদীর জল
তোমার চোখের মত ম্লান বেতফল:
সব ক্লান্তি রক্তের থেকে
স্নিগ্ধ রাখছে পটভূমি;
এই নদী তুমি।'
'এর নাম ধানসিঁড়ি বুঝি?'
মাছরাঙাদের বললাম;
গভীর মেয়েটি এসে দিয়েছিলো নাম।
আজো আমি মেয়েটিকে খুঁজি;
জলের অপার সিঁড়ি বেয়ে
কোথায় যে চলে গেছে মেয়ে।
সময়ের অবিরল শাদা আর কালো
বনানীর বুক থেকে এসে
মাছ আর মন আর মাছরাঙাদের ভালোবেসে
ঢের আগে নারী এক - তবু চোখ ঝলসানো আলো
ভালোবেসে ষোলো আনা নাগরিক যদি
না হয়ে বরং হতো ধানসিঁড়ি নদী।
[সে - জীবনানন্দ দাস]
কার্তিকের ৫ তারিখ ছিল প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশ এর মৃত্যুবার্ষিকী।
তিনি বাংলা কাব্যে আধুনিকতার পথিকৃতদের মধ্যে অগ্রগণ্য, রবীন্দ্র-পরবর্তীকালে বাংলা ভাষার প্রধান কবি হিসাবে তিনি সর্বসাধারণ্যে স্বীকৃত।
খুব অবাক লাগে এই ভেবে যে, কবি জীবনানন্দ দাশ যে সময় ট্রাম দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মারা গিয়েছিলেন তখন পর্যন্ত একশত বৎসরে ট্রাম দুর্ঘটনায় কলকাতায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল মাত্র একটিই– সেটা কবি জীবনানন্দ দাশ।
জানা যায়, সেই সময় ট্রাম লাইন পার হচ্ছিলেন কবি।
দুই হাতে দুই থোকা ডাব নিয়ে গৃহে ফেরার সড়কে ওঠার জন্য ট্রাম লাইন পার হবার সময়েই ঘটে এই দুর্ঘটনা।
গুরুতর-ভাবে আহত জীবনানন্দের চিৎকার শুনে ছুটে এসে নিকটস্থ চায়ের দোকানের মালিক চূণীলাল
এবং অন্যান্যরা তাঁকে উদ্ধার করে।
পশ্চিমবঙ্গের তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় কবিকে দেখতে এসেছিলেন এবং আহত কবির সুচিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছিলেন যদিও এতে চিকিৎসার তেমন উন্নতি কিছু হয়নি।
কবি মারা যান ২৩ শে অক্টোবর। এ সময় কবির স্ত্রী লাবণ্য দাশকে খুব কমই কবির পাশে দেখা গিয়েছিল। জানা যায় তিনি তখন টালিগঞ্জে সিনেমার কাজে ব্যস্ত ছিলেন।
কি অবাক!! কবি তখন অর্থকষ্টে ছিলেন।
হায় কবি!
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৯
নীলসাধু বলেছেন: হু তাও জানি কিছুটা।
কবির জন্য শ্রদ্ধা।
২| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:৩৩
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: ''ওগো পাখি, ওগো নদী,
এতোকাল ধরে দেখেছ আমারে- মোরে চিনে থাকো যদি,
আমারে হারায়ে তোমাদের বুকে ব্যথা যদি জাগে ভাই,-
যেন আমি এক দুখ-জাগানিয়া, -বেদনা জাগাতে চাই!
পাই নাই কিছু, ঝরা ফসলের বিদায়ের গান তাই
গেয়ে যাই আমি,- মরণেরে ঘিরে এ মোর সপ্তপদী।।''
১৪ই অক্টোবর, ১৯৫৪। গুনগুন করতে করতে কোলকাতা শহরের বালিগঞ্জের ব্যস্ত রাস্তা ধরে কবি হেঁটে যাচ্ছেন। এই ব্যস্ত লোকারণ্য শহরে কবি সম্ভবত একা। তিনি একা বলেই পাখি , নদী , প্রকৃতিকে সাথী করেন। কথা বলেন , গল্প করেন। নদীর স্রোত ঢেউ খেলে , কবিও সেই ঢেউয়ে ভাসেন। নির্জন দুপুরে পাখির কলতান কবিকে ঘুম পাড়ায়। এই নিঃসঙ্গ জাগতিকতায় এরাই কবির আপনজন , কাছের মানুষ।
রাস্তার পাশের ডাব বিক্রেতার কাছে থমকে দাঁড়ালেন কবি। ডাব কেনা কি খুব জরুরি ? এই অক্টোবর ডাবের পিপাসায় কবি কি তৃষিত ? নাকি অন্য কিছু ?
দুই হাতে ডাব নিয়ে কবি রাস্তা ধরলেন। ঠিক করলেন ট্রাম লাইন পার হবেন।
''ওগো পাখি, ওগো নদী,
গেয়ে যাই আমি,- মরণেরে ঘিরে এ মোর সপ্তপদী।।''
ট্রামের ক্যাচারে আটকে যায় কবির শরীর , ভেঙ্গে যায় ঊরু ,পাঁজরের হাড়। দলিত শরীর নিয়ে কবি পড়ে থাকেন কোলকাতার রাস্তায়। পরজন্মে শঙখচিল , হাঁস হয়ে কলমীর গন্ধভরা জলে ভাসার তীব্র আকাঙ্খায়, কবি এই জাগতিক নিঃসহায়তাকে বিদায় জানান -- ২২শে অক্টোবর, ১৯৫৪। কোলকাতা ইতিহাস বলে , গত একশ বছরে ট্রাম দুর্ঘটনায় কোলকাতায় মৃত্যুর সংখ্যা মাত্র একটি এবং তিনি হচ্ছেন কবি জীবনানন্দ দাশ।
আমরা যাকে 'রূপসী বাংলার কবি ' বলে আমার কাছে তিনি 'বিষণ্ণতার কবি'। আমি বিশ্বাস করি তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। তাঁর কল্পনার জগৎ সম্ভবত আরো সুন্দর ছিল। জাগতিক নিঃসঙ্গতা তার বেঁচে থাকার ইচ্ছাকে শূন্য করে দিয়েছিল। তিনি কি যেতে চেয়েছিলেন অন্য কোনো জগতে , তিনি কি অন্যকিছু কল্পনা করতেন ?
কবির জন্য শ্রদ্ধা। পোস্টে ভালো লাগা রইলো প্রিয় মানুষ।
৩| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:৫৩
মা.হাসান বলেছেন: মাঠের শস্যের মত আমাদের ফলিবার রহিয়াছে সময়;
একবার ফলে গেলে তারপর ভাল লাগে মরণের হাত,
ঘুমন্তের মত করে আমাদের কখন সে বুকে তুলে লবে
সেই মৃত্যু কাছে এসে একে একে সকলেরে বুকে তুলে লয়
সময় ফুরায়ে গেলে সব চেয়ে ভাল লাগে তাহার আস্বাদ!---
কবি যেমন রোমান্টিক ছিলেন, কবির বিবাহিত জীবন সে রকম রোমান্টিক হয়নি। ৫০ এর দশকে কলকাতায় জনসংখ্যা যা ছিল তাতে ট্রাম দূর্ঘটনা ঘটার কারণ অন্যমনস্ক থাকা বলেই মনে হয়। কবি আরো আসবেন, জীবনানন্দ আর আসবেন না। বরিশালের প্রেমিক কবির প্রতি অনেক ভালোবাসা।
সাধু ভাই কে অনেক ধন্যবাদ পোস্ট টি দেয়ার জন্য।
৪| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: 'চোখে তার শিশিরের ঘ্রান'...
জীবন বাবুর মতোন এরকম একটা লাইন আর কোনো কবি কি লিখতে পেরেছেন?
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫২
নীলসাধু বলেছেন: নাহ, পারেননি। আর পারবেন কে কবে তাও জানি না।
ধন্যবাদ জানবেন।
৫| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:২৬
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: প্রিয়কবিকে ম্ৃত্যু দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি ।
আমিও এখন সাদা বক দেখি দেখি গাঙচিল সুরঞ্জণা কোথায় সে আমি যেন ডোল্লীর বিলে ডুবে থাকা পানকৌড়ি ।
অশেষ কৃতজ্ঞতা চমৎকার শেয়ারে ।
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫২
নীলসাধু বলেছেন: ধন্যবাদ সেলিম আনোয়ার ভাই।
৬| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৪০
বিজন রয় বলেছেন: গভীর শ্রদ্ধা রইল প্রিয় কবির প্রতি।
আপনাকে ধন্যবাদ এই পোস্টে দেওয়ার জন্য।
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩২
নীলসাধু বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন।
৭| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৪৯
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: "নির্জন মাছের রঙে যেইখানে হ’য়ে আছে চুপ
পৃথিবীর একপাশে একাকী নদীর গাঢ় রূপ;
কান্তারের একপাশে যে-নদীর জল
বাবলা হোগলা কাশে শুয়ে-শুয়ে দেখিছে কেবল"
কবির জন্য শ্রদ্ধা। পোস্টে ভালো লাগা রইলো সহ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৮
নীলসাধু বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন।
৮| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:০৫
আহমেদ জী এস বলেছেন: নীলসাধু,
"ঝরা পালক"এর কবি ঝরে গেছেন হয়তো কিন্তু তিনি জেগে রয়েছেন তারা ভরা আকাশের তলে !
ভিড়ের মধ্যে একা ।
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৮
নীলসাধু বলেছেন: কবির জন্য শ্রদ্ধা।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:০২
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: জীবন বাবুর কবিতা অনন্য অসাধারণ।
কিন্তু তার এটা দুর্ঘটনা নাকি আত্মহত্যার চেষ্টা তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।