নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যই সুন্দর

নিয়ামত মাষ্টার

লালনগীতির ভাবার্থকারী, গবেষক, সংগ্রাহক ও প্রবন্ধকার। সত্যই সুন্দর

নিয়ামত মাষ্টার › বিস্তারিত পোস্টঃ

সত্যই সুন্দর

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:০১

সম্মানিত সুধী ও পাঠকবৃন্দ,

নবাগত হিসাবে আমার সুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ গ্রহণ করুন। ভাবগীতি ও লালনগীতি এবং সাধুগুরু ও তাদের সাধন-ভজন নিয়ে সুদীর্ঘ পঞ্চাশ বছর যাবত গবেষণালব্ধ আমার সংগৃহিত মহাত্মা লালন ফকিরসহ অন্যান্য ৪৬০ জন ভাবগীতিকারের অধিকাংশের গুরুর নাম সহ ৬,০০০ হাজার টি ভাবগীতির সার্বিক তথ্য বিবরণী প্রদান করা হলঃ

(ক) লালনগীতি আছে ১১১৬টি। আমি প্রত্যেকটি লালনগীতির মধ্য হতে দুর্বোধ্য শব্দ বেছে নিয়ে তার শব্দার্থ, সরলার্থ ও গূঢ়ার্থ করেছি। উল্লেখ্য যে, ১১১৬ টি লালনগীতির ভাবার্থও করেছি, যা বিশ্বে এই প্রথম।



(খ) প্রথমে ১১১৬ টি লালনগীতিকে যাচাই বাছাই ও পরিশুদ্ধ করে পাঠোপযোগি করেছি। অতঃপর গানগুলিকে সুনির্দিষ্ট দাড়ার অর্ন্তভূক্ত করে প্রত্যেকটি দাড়াকে সংজ্ঞায়িত করেছি। এছাড়া ব্যতিক্রম ধর্মী কাজ হচ্ছে, আমি ১১১৬ টি লালনগীতির মধ্য হতে কঠিন ও দুর্বোধ্য শব্দ বেছে নিয়ে তার শব্দার্থ, গূঢ়ার্থ, ও রূপকর্থের শব্দকোষ (অভিধান) রচনা করেছি । এই সকল কাজ করা হয়েছে শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের বোধগম্যের জন্য ॥



(গ) লালনগীতি ও ভাবগীতির বিষয়বস্তুর উপর নির্ভর করে প্রায় শতাধিক গবেষনা মূলক প্রবন্ধ রচনা করেছি। যার অনেকগুলো বিভিন্ন প্রত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। প্রত্যেকটি প্রবন্ধের বিষয়বস্তু, উত্তরোত্তর গবেষনার ক্ষেত্রে তথ্য-উপাত্তের কাজ করবে বলে আমি আশা করি। এছাড়া প্রত্যেকটি লালন গীতির দূর্বোধ্য ও রূপক ছন্দের ভাবার্থ করেছি।



(ঘ) ভাবগীতি বোঝার জন্য ভাবপূর্ণ শব্দ ও বাক্যের (প্রশ্ন ও উত্তর সম্বলিত) “জ্ঞানের আকর” নামে আর একটি তত্ত্ব ও তথ্যপূর্ণ বই রচনা করেছি। উক্ত বই এর মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ভাবসংগীতের জটিল ও কঠিন শব্দ ও বাক্যের অর্থ জানা। প্রশ্ন ও উত্তরাকারের বইটিতে গুনি-জ্ঞাণী ও জগৎপূজ্য মহাজন ব্যক্তিদের নীতিবাক্য সন্নিহিত করেছি। এই আকর গ্রস্থটি ভাববাদী লেখক, লালন গবেষক, ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রভূত কাজে আসবে বলে আমি মনে করি।



(ঙ) এছাড়া আমার সংগ্রহে আছে, বিগত ব্রিটিশ আমল হতে ইং ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত রচনাকৃত ৪৬০ জন ভাবগীতিকারের (অধিকাংশের গুরুর নাম সহ) ৫,০০০টি অত্যন্ত দু¯প্রাপ্য ভাব সংগীত। উল্লেখ্য যে, এখানে শুধু বৃহত্তর নদীয়া ও বৃহত্তর কুষ্টিয়ার ভাবগান সন্নিবেশিত আছে। প্রত্যেকটি ভাবসংগীত একটি সুনির্দিষ্ট দাড়ার অন্তভূক্ত। দাড়া ছাড়া ভাবগান চোখে পড়েনা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার গানকে (প্রেম, পূজা ও বাউল) পর্বে বিভক্ত করেছিলেন। ভাব গানেরও ঠিক ঐ রকম অনেকগুলি দাড়া, ধারা, পর্ব বা পর্যায় আছে। আমি ভাবগান হতে প্রায় ৮০টি দাড়া খুঁজে পেয়েছি এবং উক্ত দাড়াগুলিকে সংজ্ঞায়িত করেছি। লালন ফকিরের ১১১৬টি গানকে দাড়াভূক্ত করে তার ভাবার্থও করেছি।



(চ) ভাবগীতি রচনার ক্ষেত্রে গীতিকারদের জ্ঞাত ও অজ্ঞাতসারে যে সমস্ত বিষয় ফুটে উঠেছে সেগুলো হচ্ছে, ধর্মীয় বিধান ও সংস্কার, কথিত ধর্মীয় কাহিনী , লোকগাঁথা, মিথ, পুঁথি, উপকথা, রূপকথা, কোরান, আয়াত, হাদিস, দেবদেবী, শাস্ত্র, সাধূ শাস্ত্র, সামাজিক প্রেক্ষাপট, বেদ, রামায়ন ও মহাভারতের কাহিনী, মুরশিদ ও পীর আওলিয়ার কাহিনী, গুরু-শির্ষ্যরে ভজন সাধন ও গোপন অকৈতব কাহিনী। আরও এসেছে রূপকভাব ভাবনা, রূপককথন, ইত্যাদি ইত্যাদি।



(ছ) সাহিত্যের মানদণ্ড ও মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে, ভাবগীতিতে এসেছে শিল্পতত্ত্ব, অলংকার ও তার বিভিন্নরূপ। যেমন ঃ উৎপ্রেক্ষা, যমক, চুটকি মাত্রাবৃত্ত, স্বরবৃত্ত, অনুপ্রাস ও অধিকন্ত। লালনগীতি হতে প্রায় ৫০টি অলংকার ও ২০টি শিল্প মূল্য খুজে নিতে তার সংজ্ঞাসহ লালনগীতির ছন্দ হতে উদাহরণ দিয়েছি। সাহিত্য মূল্যের দিক দিয়ে উদাহরণগুলি লালনগীতি ও ভাবসংগীতকে অলংকার ও শিল্পমূল্যে সম্বৃদ্ধ করবে বলে আমি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি।



(জ) এ যাবৎকাল লালনগীতি, ভাবগীতি ও সাধূফকিরদের নিয়ে গবেষণার নামে যে সকল পুস্তক ও প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেখা হয়েছে, সেগুলি অনেকাংশে কষ্টকল্পিত ও নির্ভেজাল উদ্ধৃতিমূলক, যাতে বাস্তবতার কোন ছোয়া লাগেনি। সকল লেখক যে এরকম তা নয়, ডঃ আহাম্মদ শরীফ ও ডঃ উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে এ পর্যায়ে ধরা যাবে না, তারা যথাযথই লালন ও বাউল গবেষক। অন্যান্য লেখকগণ বাস্তবতার ধারে কাছেও না গিয়ে শুধুমাত্র কল্পিত ও কথিত কাহিনীর উপর নির্ভর করে তাদের গবেষণামূলক কর্মকান্ড চালিয়ে গেছেন। কিন্তু তাদের উচিৎ ছিল “যাকে” নিয়ে ও “যে” বিষয়ের উপর লেখা হয়েছে অর্থাৎ লালনগীতির মূল বিষয় সম্বন্ধে সম্যক ভাবে জানা। যেমন একজন ভাববাদী যে বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা করেন, সে বিষয়টিকে বৈজ্ঞানিক সত্য দিয়ে প্রমান করতে যাওয়া বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয় কারণ ভাব ও বৈজ্ঞানিক সত্য এক নয়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে এমনটাই ঘটে চলেছে।



(ঝ) আমার প্রত্যেকটি গবেষনার বিষয়বস্তু হচ্ছে, উপরোক্ত ভাবগীতিকারদের রচিত গীতি হতে আহরিত বিষয়বস্তু, (যা তারা রূপকভাবে তাদের ভাবগানে ব্যবহার করে গেছেন)। আমি উক্ত গানগুলির বিস্তারিত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষন করে বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি মাত্র। যাতে সাধারণ মানুষ সহজেই তা বুঝেনিতে পারেন। সকলেরই মনে রাখা উচিত যে, সাধুশাস্ত্র ও সাধুদর্শনের শিকড় অনেক গভীরে প্রথিত। সাধুফকিরদের সক্রিয় সহযোগিতা ব্যতীত এ গ্রন্থীর জট ছাড়ানো এত সহজ নয়। কারণ লালনগীতির সুরমুর্ছনা বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীদের হৃদয়কে স্পর্ষ করলেও ভাবগীতির বিষয়বন্তু ও মূলভাব এবং সাধন-ভজনরীতি যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়ে গেছে । ভাবগীতির তত্ত্ব ও তথ্য বোদ্ধার সংখ্যা আগের মতই রয়ে গেছে। আমার রচিত বইগুলি পড়লে কঠিনতত্ত্ব ও বিষয় বোঝা অনেকটাই সহজ হবে।



(ঞ) লালনগীতি ও ভাবগীতির প্রচার ও বিশ্বায়নের জন্য উভয়গীতির সঙ্গে সম্পক্ত গায়ক, সুরকার, পরিবেশক, প্রকাশক, সম্পদক, সংগ্রাহক, সামালোচক, আলোচক, সংশোধক, পরীক্ষক, নিরাক্ষক ও সর্বপরি গবেষকবৃন্দের প্রশ্নের যৌক্তিক উত্তর দেওয়া যেতে পারে।



পরিশেষে স্ববিনয়ে সকলের সদয় অবগতির জন্য অনুরোধ করছি যে, আমি লালনগীতি ও ভাবসংগীত সংগ্রহ ও সঠিকভাবে সংশোধনের কাজে দীর্ঘ ৫০ বৎসর নিয়োজিত আছি। সেই কারণে আমাকে বিভিন্ন প্রকার গানেরআসর, সাধুসংঘ, সাধুদের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগ, সাহচর্য গ্রহণ সহ ভাবসংগীত বিষয়ক পুরাতন খাতাপত্রের সাহায্য গ্রহণের মাধ্যমে উপরোক্ত তথ্য-উপাত্তগুলি সংগ্রহ করেছি। এক্ষনে যে যেভাবে পারেন (আর্থিক সাহায্য ব্যতিরেকে) আমার রচনা সম্ভারগুলো যাতে প্রকাশের মুখ দেখতে পারে, তার সার্বিক সহযোগিতা ও সুপরামর্শ দানে বাধিত করবেন। আপনাদের উপদেশ ও মতামত সাদরে গ্রহন করা হবে ॥





শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদান্তে

মোঃ নিয়ামত মাষ্টার (অবঃ, প্রাঃ, শিঃ) লালন গবেষক ও প্রবন্ধকার।

গ্রাম: গোবিন্দপুর, পোষ্ট+উপজেলা: আলমডাঙ্গা, জেলা: চুয়াডাঙ্গা।

তারিখঃ ২৯/০৪/২০১৪ ইং।

মোবাইল নং- ০১৯৩৫-৫০৭২০৩।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.