নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের সম্পর্কে তো বলতে পারেন মহামানবই। আমি তো অতি নগণ্য।।।।

অসংজ্ঞায়িত নিঝুম

বিষাদের বহমান করুন স্রোতধারায় গা ভাসাইয়া দেয়া ক্ষুদ্র মানব আমি।

অসংজ্ঞায়িত নিঝুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিরোনামহীন কিছুকথা...

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৪



চারদিক নীরব নিস্তব্ধ। নগরীটা যেন ক্লান্তিতে গা এলিয়ে দিয়েছে। আর নগরবাসী? মায়া ঘুমে বুদ । মাঝে মাঝে দু একটা গাড়ীর ভো-ভো শব্দ সাথে ভেপু। মনে হয় গাড়ি নামক দানবগুলো যেন সব লন্ডভন্ড করে দিয়ে সামনের দিকে সজোরে চলে গেলো। মাঝে মাঝে মহল্লার আধপেটা নেড়ী কুকুরদের ঘেউ ঘেউ। নগরীর বুক চিরে রাস্তার দু ধারে মাথা হেট করে দাড়িয়ে আছে ল্যাম্প পোস্টগুলো। সোডিয়ামের নীল আলোগুলোও যেন যেন জ্বলতে জ্বলতে ক্লান্ত হয়ে টলে পরতে চাইছে। ইট-পাথরের শহরে ল্যাম্পপোস্টগুলোই যেন এখন কালের স্বাক্ষী হিসেবে দাড়িয়ে আছে। আর থাকবেইনাবা কেন? সবুজের চাষ কমে গেছে অনেকাংশে আর সবুজের চাষ কমে গিয়েই তো নাম লেখালো যান্ত্রিকতার দলে। হঠাত মসজিদ থেকে মোয়াজ্জিনের মায়ামাখা হৃদয়ছোয়া আজানের ধ্বনি জানান দিয়ে গেলো নিকটতম ভোরের। সময়ের স্রোত বইতে বইতে পৃথীবির বুকে ভুমিষ্ঠ হলো আরেকটি ভোরের। চারিদিক সোনামাখা রোড। ভ্যাপসা শহুরে বাতাস আর নাগরিক পাখি কাকের আর্তনাদ। সামনের ডাস্টবিনে বোধয় কাকেদের মহোৎসব চলছে। সব মিলিয়ে কোলাহলময় সকাল। ঘুম ভেঙে গেলো। বিছানার উপর কি যেন ভাবতে ভাবতে বসে রইলাম। বহুকালোর পুরোনো নিষ্ঠুর দেয়াল ঘড়ির ঢং শব্দে অামার ধ্যানভঙ্গ হলো। ঘড়িটাকে নিষ্ঠুরই বলি কারন, সেই আদি থেকে নিরলসভাবে চলছে কারো জন্য এক মুহুর্ত অপেক্ষার যেন অবকাশ নেই। বিছানা ছেড়ে উঠে মিনিট পাচেকের ব্যাবধানে ফ্রেশ হয়ে অফিসের ব্যগটা কাধে ঝুলিয়ে বের হয়ে পরলাম। ইচ্ছা হোক কিংবা অনিচ্ছা, সুস্থ হই বা অসুস্থ একদিনও অফিস কামাইয়ের জোঁ নেই। তাহল জীবন জিবিকারা যে থমকে যাবে। মিনিট বিশেক অপেক্ষার পর ৮ নম্বর বাসটা পেলাম। এক প্রকার যুদ্ধ করেই বাসে উঠতে হলো। মাঝে মাঝে একটা ব্যাপার খুব ভাবায় আমাকে, যেখানে শহরের হোমরা-চোমরারা দিব্যি একটা প্রাইভেটকারে ১ জন যাত্রী হয়ে ছুটে চলে সেখানে কিনা আমাদের মত অথর্ব মানুষদের কয়েকশ ক্যালরী শক্তি খরচ করে বাসে উঠতে হয়। কোলাহল আর ব্যস্ততায় ঘেরা শহুরে সময় ছুটে চলা অবিরাম। হঠাত ধরনীকে সিক্ত করার জন্য বৃস্টির আগমন। যদিও আমি বৃষ্টিবিলাসী নই। কারন আমাদের মত বিত্তহীন মানুষদের জন্য বৃস্টি আশির্বাদ নয় অভিশাপ। আর এ অভিশাপের সাথে পরিচিতি সেই ছোটবেলা থেকেই যখন দেখতাম ঘরের টিনের চালের ফুটো থেকে পানি এসে পুরো ঘরকে ভিজিয়ে দিয়েছে। মা খুব কৌশলে বাটি বা গামলে পেতে রাখতেন। তবে এখন মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বৃস্টিবিলাসীদের মত হাতদুটোকে দুদিকে ছড়িয়ে মুখটাকে আকাশমুখী করে খানিক সময় বৃস্টিতে ভিজতে। আর বুকের ভেতরে পুষে রাখা অতৃপ্তি আর অপ্রাপ্তির বিষাদগুলোকে হালকা করার জন্য চিতকার করে কাদতে। যাহোক বিত্তহীনদের সখ আহ্লাদ বলে কিছু থাকতে নেই। এবার সময় হলো বাড়ী ফেরার। তবে বাড়ী ফেরার সময় "মন্টু" মামার টং দোকান থেকে আদা দিয়ে এক কাপ রং চা পান করা অভ্যাস না যেন নেশায় পরিনত হয়েছে। আমি যেন ক্রমশই টং দোকানের চা প্রিয়সী হয়ে উঠেছি। এবার আর দেরী নয় বাড়ী যে ফিরতেই হবে। শহরের অচেনামানুষগুলো সবারই যেন এখন বাড়ী ফেরার তাড়া। যে যার মত ছুটে চলেছে। শুধু বাড়ী ফেরার তাড়া নেই আমার। বেখেয়ালি মন নিয়ে প্রতিদিন ফেরার সময় ভাবি বাসে হয়তো আমার জন্য একটা সিট অপেক্ষা করছে। কিন্ত বিধিবাম কখনোই সেই সিটটা আমার জন্য অপেক্ষা করেনি। অতঃপর শহুরে অচেনা লোকেদের ভীড় ঠেলে হেটে চলি। কাঠ-খোট্টার শহরে সবাই যেন স্বার্থপর। আপন মনে ছুটে চলেছে সবাই। সবাই যেন ক্রমান্বয়ে ভীড়ে হারিয়ে যাচ্ছে। সন্ধাটা বোধয় এবার হয়ে এলো। হ্যা তাইতো! বস্তিঘেসে দাড়ানো ধুলোজড়ানো গাছটার নিচে কয়েকজন রিক্সওয়ালা গাজার তামাক সাজাচ্ছে। আরেকটু সামনে ল্যাম্পপোস্টটার ধারে বেশ সুনসান নীরবতার আড়ালে রাতপরীদের মেলা বসেছে। খদ্দেররা দাম হাকাচ্ছে আর ভদ্রলোকেরা ভদ্রতার খাতিরে দর কষাতে না পেরে কামনাকে সুপ্ত রেখেই চোখ থেকেই যেন কয়েকবার ধর্ষন করে নিলো। আসলে আমরা সুযোগের অভাবে সবাই কিঞ্চিত চরিত্রবান.....

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.