নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের সম্পর্কে তো বলতে পারেন মহামানবই। আমি তো অতি নগণ্য।।।।

অসংজ্ঞায়িত নিঝুম

বিষাদের বহমান করুন স্রোতধারায় গা ভাসাইয়া দেয়া ক্ষুদ্র মানব আমি।

অসংজ্ঞায়িত নিঝুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

অপ্রসাঙ্গিক (১)

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩০

(১)
চারদিক নিস্তব্ধ। সুনসান নীরবতা। হঠাতই যেন দূর থেকে ভেসে আসা মোয়াজ্জিনের মায়ামাখা আজানের ধ্বনি জানান দিয়ে গেল সকাল সন্নিকট। ব্যস্ত নগরী বোধয় এবার তার মায়াঘুম কাটিয়ে মিশে যাবে ব্যস্ততায়। অন্ধকার যেন মৃদু আলোতে ক্রমশ ম্লান হতে শুরু করেছে। এদিকে শহুরে কাফেলাগুলোও যেন ব্যস্ত থেকে ব্যস্ততর হচ্ছে। অতঃপর ভোর। যোযনকোটি দুর থেকে সূর্যের আলো পৃথিবীতে আছড়ে পরে পৃথীবিকে আলোকিত করছে। মৃদু কোলাহল আর মহল্লার পাশের ডাস্টবিনে চলছে নাগরিক পাখি কাকেদের মহোৎসব। হুরমুর করে উঠে পড়েছে নয়ন। তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে দোকানে যাবার প্রস্তুতি। মধ্যবিত্ত পরিবারের নয়নকে কাচা বয়সেই ঝাপিয়ে পরতে হয়েছে জীবনযুদ্ধে। কিছুদিন আগেই এই শহর হয়েছে তার ঠিকানা। ভাগ্যজোড়ে একটা দোকানে চাকরি নিয়েছে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে। পরিবারের বড় ছেলে বলে কথা। দায়িত্ব তো সেদিনই কাধে চেপে জন্মেছিল ছেলেটা। বেশ চঞ্চল হলেও বোধ-বুদ্ধির ততটা উন্নতি হয়নি। কি করেই বা হবে?যখন পাড়া বেড়ানো, দৌর-ঝাপ আর বন্ধুদের নিয়ে উল্লাসিত থাকার কথা।ঠিক তখনই রুক্ষতার আড়ালো চিরনির্ভর শান্তির ছায়া বাবাকে হারিয়ে দায়িত্ব বেটা দিক-বিদিক হারিয়ে নয়নের কাধে এসে হুমরি খেয়ে পড়লো । নড়বড়ে রুগ্ন গারোয়ানের অর্ধভগ্ন গরুর গাড়ীর চাকার মত বেশ দুর্বল গতিতে চলছে নয়নের জীবন। শহুরে হাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে নিয়েছে অনেকটা। মাঝে মাঝে মেসের এলোমেলো রুমটার দিক তাকিয়ে একদৃষ্টিতে ভাবতে থাকে তার জীবনটাও বোধয় এমন অগোছালো। আনমনে ভাবতে ভাবতে কোন এক অজানা সুখে নয়নের ঠোটের কোনায় ফুটে উঠলো এক চিলতে মলিন হাসি। তবে ছেলেটা আজকাল বেশ বিষন্ন থাকে। কপালে চিন্তার ভাঁজ স্পস্টভাবে ফুটে উঠতে শুরু করেছে। হয়তো অদুর অন্ধকার ভবিষ্যত ভেবে। মুহুর্তে নিজেকে সামলে ব্যস্ততায় গা এলিয়ে দিয়ে ৮ নম্বর বাস ধরে চলে এলো কর্মস্থলে। বেশ মনযোগী হয়ে কাজ করে নয়ন। কাজের ফাকে একটু-আধটু ঢু মারে ফেসবুক নামক এক ভার্চুয়াল দুনিয়ায়। যেখানে রিকোয়েস্ট দিয়ে বন্ধু বানাতে হয়। বড়ই আজব খেলা। যাহোক বেশ চলছে জীবনযুদ্ধ সাথে তার একঘেয়েমি রুটিন। এভাবে চলতে চলতে একসময় নাকের নিচে পাতলা ফিনফিনে গোফের অস্তিত্ব অনুভব করলো নয়ন। কন্ঠটা দিন দিন কেমন যেন আধভাঙ্গা হয়ে যাচ্ছে। জীবনের এ সময়টাকে বোধয় যৌবন বলে। "এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার সময় তার" যদিও নয়নের যুদ্ধটা যৌবনপ্রাপ্ত হওয়ার অনেক আগেই শুরু হয়েছিল।

(২)
দারিদ্রতা সাথে রুঢ় বাস্তবতাকে সঙ্গী করে নয়নের চলার পথটা বেশ অমসৃন ছিলো। ঠিক বাংলা "নুন আনতে পান্তা ফুরায়" প্রবাদটার মত। তবুও সব কিছু মিলিয়ে নিজেকে সুখী ভাবতো। শুক্রবারের সাপ্তাহিক ছুটিটা ছিলো যেন আনন্দের মহোৎসব। বন্ধুদের সাথে ঘোরাফেরা আর আড্ডায় মেতে উঠতো। যান্ত্রিক জীবনের যান্ত্রিক শহরে দুটো প্রিয় জায়গা খুজে পেয়েছিলো নয়ন (ক) রামকৃষ্ণ মিশন (খ) টি এস সি মোড়। অবসরে নয়নের দেখা এ জায়গা দুটুতেই মিলত। যান্ত্রিকতার ভীড়ে নয়নের যেন স্বস্তি দেয় এই জায়গাগুলো। তবে শহরটা বেশ অদ্ভুদ ১০ টাকায় ও খাবার পাওয়া যায় আবার ১০০০ টাকায়ও। একপাশে দামী বিএমডব্লিউ কারে চেপে একজন অপরপাশে ৮ নম্বর বাসের সেই গাদাগাদি। কেউবা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে নরম গদিতে আবার কেউবা ফুটপাতে মলিন পোষাকে একটুকরো আধভাঙ্গা ইটে মাথা দিয়ে। তবে দু"দলের গন্তব্যই ঘুম। এগুলো দেখলে ক্ষনকালের জন্য মনে হয় স্রস্টা যেন স্বার্থপরের মত মানুষে মানুষে বিভেদ সৃস্টি করেই তৈরী করেছেন। কোথায় যেন পড়েছিলাম "এত আবেগ দিয়ে পৃথিবী সৃস্টি করা যায়না" তারই জীবন্ত উদাহরন যেন এখানে ফুটে উঠেছে। আজকাল নয়ন বড্ড উদ্ভট চিন্তা নিয়ে মঘ্ন। তবুও জীবন-জীবিকা তাকে থামতে দেয়না। সময়ের স্রোতে ব্যস্ততার ভীড়ে নয়নকে যে মিশতেই হবে। এভাইবেই চলছিলো নয়নের।

(৩) আজ শনিবার। যথারীতি প্রাত্যাহিক কাজ সেরে কর্মস্থলে নয়ন। আজ তেমন কাজ নেই কারন অফিস পাড়া সরকারি ছুটিতে। বোধয় একটু স্বস্তি। অতঃপর নয়ন ফেসবুকে লগিন করে আনমনে নিউজফিডটা স্ক্রোল করতে লাগলো। নয়নের চ্যাট লিস্টে ৭-৮ জন ছাড়া অার কাউকে দেখা গেলনা। বন্ধুসংখ্যাও সীমিত। হঠাতই একটা নটিফিকেশন "নীল পরি wants to be your friend. খুব একটা ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট আসেনা। তাই একটু নড়েচড়ে বসলো নয়ন। নীল পরি নামক অদৃশ্য মানবীর প্রোফাইলটা ভিজিট করতে লাগলো। অজানা কোন কারনে নয়ন নীলপরির রিকোয়েস্টটা একসেপ্ট করে নিলো।
নয়নঃ হাই
পরীঃ হ্যালো
নয়নঃ কেমন আছেন?
পরীঃ হুম! ভালো, আপনি?
নয়নঃ কখনো ভালো কখনো মন্দ
পরীঃ মানে কি?
নয়নঃ বুঝবেন না।
পরীঃ ওহ!
নয়নঃ আচ্ছা একটা প্রশ্ন করবো?
পরীঃ হুম।
নয়নঃ আপনি কে? আমাকে কি আপনি চিনেন?
পরীঃ নাহ! চিনবো কি করে?
নয়নঃ ওহ!
এভাবে খানিক্ষন নয়ন পরীর সাথে চ্যাট করতে করতে কখন যে নয়ন ব্যস্ত হয়ে পরলো তা টেরও পায়নি।
(চলবে...)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: নিজের অভিজ্ঞতা থেকে লিখছেন নাকি?
নয়ন কি আপনি?

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:২০

অসংজ্ঞায়িত নিঝুম বলেছেন: হ্যা নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই না হয় প্রথম শুরুটা করলাম। দোয়া করবেন রাজীব নূর ভাই

২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০৮

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: ভাল লাগলো, চলুক

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:১৭

অসংজ্ঞায়িত নিঝুম বলেছেন: ধন্যবাদ...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.