নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজের সম্পর্কে তো বলতে পারেন মহামানবই। আমি তো অতি নগণ্য।।।।

অসংজ্ঞায়িত নিঝুম

বিষাদের বহমান করুন স্রোতধারায় গা ভাসাইয়া দেয়া ক্ষুদ্র মানব আমি।

অসংজ্ঞায়িত নিঝুম › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি খোলা চিঠি

১৬ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:১৫



প্রিয় নিয়তি,
আমাকে কাঁদিয়ে নিশ্চয়ই ভালো আছো। হয়তো অনেক বেশীই ভালো আছো। তোমার ভালো থাকায় আমি মোটেও বিস্মিত নই। তবে জীবনে দ্বিতীয়বার তোমাকে লিখতে হবে কখনো ভাবিনি। বিশ্বাস করো, তুমি চলে যাবার পর আমার হৃদয়ে প্রবল ভূমিকম্পের তান্ডবে এলোমেলো হয়ে গেছে ভালোবাসার ছোট্ট কবিতাঘর। রিকটার স্কেলও মাত্রা পরিমাপে ব্যর্থ। জীবনে বহুবার হেরেছি তোমার কাছে। নতজানু হয়ে কুর্নিশ চিত্তে তোমার রাজ্যে প্রজারূপে শাসিত হয়েছি সহস্র কোটি বছর। কখনো বিদ্রোহ করিনি, সর্বদা চেয়েছি বিপ্লব ঘটুক ভালোবাসায়। ভালোবাসার বিপ্লব ঘটাতে হৃদয়ে রক্তক্ষরন ঘটিয়েছি বারংবার। তবুও বোধয় বিপ্লব ঘটাতে পারলাম না। ভেবেছিলাম এবার হয়তো বিপ্লব আসবে। প্রবল বেগে ধাবিত হবে ভালোবাসার অমিয়ধারা। দিবাস্বপ্নে বুদ হয়ে অবচেতন মনের নিছক হাস্যকর অনুভুতির জটলা। যখন চেতনা ফিরে পেলাম তখন দেখি সবকিছু এলোমেলো। তোমার মায়াবী চোখ মুহুর্তেই রক্তচক্ষু আর ঠোটের কোনের ঐ মন ভুলানো মৃদু হাসিটা যেন ছলনার প্রতিবিম্ব, আর তোমার ভালোবাসা যেন "হেমলকের" সেই বিখ্যাত বিষ। তুমি সর্বদাই বিখ্যাত ছিলে তাই হয়তো তোমার বিষাক্ততাও বিখ্যাত। তোমার রাজ্যে ভালোবাসারা বড্ড মূল্যহীন। স্বার্থের লাগাম ছিড়ে যাওয়া পাগলা ঘোড়ার মত বিক্ষিপ্ত ছোটাছুটি। আচ্ছা বলোতো! তুমি কি সওদাগর? আমার হৃদয়ের অববাহিকায় সওদা করতে এসেছিলে? আমার অনুভুতিগুলোকে পূঁজি করে আবেগগুলোকে নিলামে তুলে কতটা লাভ হলো আমাকে জানিও। আমি ইতিহাস রচনা করবো। ইতিহাসের পাতায় তোমার নাম লিখবো খুব বড় অক্ষরে। সভ্যতা ধ্বংসের হাজার বছর পরেও সেই নাম থাকবে অমলিন। কোন এক প্রত্নতাত্ত্বিকবিদ তোমার নামের রহস্যভেদ করতে কাটাবে যুগের পর যুগ। আচ্ছা! বলোতো! তোমার কখনো বুক কাপেনি? কখনো কষ্ট হয়নি? কখনো কিছু হারিয়ে যাইনি? হয়তো প্রতিটা প্রশ্নের উত্তরে তুমি মুচকি হেসে ছোট্ট একটি "না" শব্দে ঘাড় নাড়াবে। আচ্ছা! তাহলে তোমার অস্তিত্বের সাথে মিশে যাওয়াটাই কি আমার ভুল ছিলো? তোমার রাজ্যে ভালোবাসা সত্যিই কি মাস্তূল তোলা সুবিশাল জাহাজের দাহ্য পদার্থ? যার দহনে আমি পুড়ে পুড়ে অঙ্গার।

জানো? তুমি যখন বর্তমান ছিলে তখন রোজ ভোরে মেডেলার মেলা বসতো আমার জানালায়। যদি কখনো আমি বিষন্ন হতাম ঠিক তখনই হুংকার ছেড়ে মেঘেরা ঘরের ছাদে হলি খেলতো। আর আমি? বোকার মত নিজেকে হারিয়ে ফেলতাম নির্দিধায়। আমার আঙ্গিনা জুড়ে থাকতো হাজারো রক্তজবা । আর অলস বিকেলের সোনা রঙ নিয়ে আমার সুখগুলো মেতে ওঠতো বিমুগ্ধ সব সুরে।ধ্বনিত হতোনা ভায়োলিনের করুন সুর। শোনো! আমার সুখের পায়রা গুলো যখন ঘুঙ্গুর পড়ে পেখম মেলে থাকতো আমি তখন সর্বসুখে পরম তৃপ্তিতে দুচোখ বন্ধ করে রাখতাম। আমার উপত্যকার সমস্ত সুখগুলো যেন রাজ্যাধিপতি নিজ হাতে গড়ে দিয়েছিলেন। তবে সে নগরীতে বৃষ্টি দেখিনি কোনদিন। তবুও মায়ায় পড়ে গিয়েছি সে নগরীর। এ মায়া আমি অত সহজে ছাড়বোনা। হয়তো একদিন মৃত্যুর থাবা আমাকে গ্রাস করবে। তবুও কোন এক বৃষ্টিস্নাত বিকেলে ব্যঙের ছাতার নিচে দাড়িয়ে দেখবো ভিজলে তোমার ঐ বেশ্যানগরী কেমন দেখায়। ভেবেছিলাম তোমার সিঁথিতে জ্বল জ্বল করে উঠবে আমার পড়ানো সিঁদুর। তুমি আমি আর আর আমাদের ছোট্ট কুট্টুসিতে পূর্ন হবে তোমার মাতৃত্ব। কিন্ত হায় বিধাতা! সিঁদুর মানে তোমার কাছে একটা লাল রং মাত্র। স্বার্থের কাছে সিঁদুরও বিক্রি করে দিলে অবলীলায়। বাহ!

জানো? আজ আর সুখ অবশিষ্ট নেই। সুৃখের আকাশে সগৌরবে সহস্রকোটি বছর ধরে লেপ্টে থাকা তারকারাজিরা একে একে খসে পড়লো। বিলীনের মৈথুনতায় হারিয়ে গেছে সোনালী বিকেলের আলোর ঝলমলানি। খলখলা চিরযৌবনা নদীও আজ যেন মৃতপ্রায়। তোমার ভালোবাসার গল্পটা কোন এক পৌরাণিক উপাখ্যানে পড়বে সভ্যতা। তবে কি লিখবো? কোথায় আমার কবিতাঘর? এলোমেলো শব্দগুলোও তো বিশ্বাসঘাতকতা করলো। এদিকে মস্তিস্কের কালিও শুকিয়ে এসেছে। উপলব্ধির ক্ষমতাও দিন দিন হ্রাস পেয়েছে। এখন আর বিছানায় গা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে ধমনীর শীতল রক্তপ্রবাত অনুভব করতে পারিনা। মাঝে মাঝে মনে হয় হৃদপিন্ডটা দুমড়ে মুচড়ে ছিড়ে যাচ্ছে। তবুও আমার মুক্তির স্বাদ মিলছেনা।

যাহোক বিদায়। তুমি একদিন একটা চিঠি লিখতে বলেছিলে। কিন্ত সে চিঠিটা যে বেদনায় বিদীর্ন বুকের রক্তে লিখতে হবে বুঝতে পারিনি। যাহোক আজ আর লিখবোনা আবারও বলছি "বিদায়"। তবে অদ্ভুত! বিদায় সব সময় বিষাদের হয়। কিন্ত আজ আর বিদায় লিখতে ততটা বিষাদ আমাকে স্পর্শ করতে পারেনি। তবে লেখার সময় ডায়েরীর পাতায় মনের অজান্তেই দু'ফোটা অশ্রুর বিসর্জন হলো। ভালো থেকো।

ইতি,
বেদনায় বিদীর্ন এই আমি

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৩১

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: চিঠি'টা পাঠকের চোখ থেকে কয়েক ফোটা নোনাজল বিসর্জন করানোর ক্ষমতা রাখে।

পোস্টে +

১৬ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:১৫

অসংজ্ঞায়িত নিঝুম বলেছেন: গত কয়েকটা রাত জলপ্রপাতে চোখের কোনে শ্যাওলা জমে গেলো। দোয়া করবেন। আর আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ ♥

২| ১৬ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: দারুন আবেগময় চিঠি।
তবে আজকালকার মেয়েদের আবেগ অনেক কম।

১৬ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:১৬

অসংজ্ঞায়িত নিঝুম বলেছেন: হ্যা। আবেগ নিলামে তোলে তারা নির্দিধায়... ধন্যবাদ রাজীব দাদা ♥

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.