নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল নিয়াজী বলেছিলেন, "মরলেও আত্মসমর্পণ করবো না"। সেই নির্লজ্জ বেহায়াটা ৩০ লক্ষ বাঙালির রক্তে স্নান করে অবশেষে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন, তা দেখে হেসেছিলো সারা দুনিয়া।
তিনি আত্মসমর্পণ করেছিলেন মিত্রবাহিনীর কাছে। মিত্রবাহিনীর প্রধান ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর জেনারেল অরোরা। যেহেতু আমাদের দেশটি তখনও স্বাধীন হয়নি, তাই জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী আমাদের সেনাপ্রধান জেনারেল এম,এ,জি ওসমানির কাছে পাকিস্তান আত্মসমর্পণ করেনি, করেছে মূলত ভারতের সেনাবাহিনীর কাছে। কেননা দুটি স্বাধীন দেশের মধ্যে এই কনভেনশন অনুযায়ী চুক্তি হতে পারে। পাকিস্তান আর ভারত তখন দুটি স্বাধীন দেশ ছিলো।
আজকের দিনটিকে ভারতও বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে। বাংলাদেশের একটি দল ভারতে গেছে এই উৎসবে অংশ নিতে, দুটি দেশের সম্পর্কের এই চরম অবনতির মাঝেও। ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এই দিনে পাকিস্তান ভারতের কাছে যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলো। কথাটি ভুল নয়। কারণ ৮+ মাস ধরে চলে আসা পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যকার যুদ্ধে ভারতও সরাসরি জড়িয়ে পড়েছিলো এবং জয়লাভ করেছিলো। আমাদের দৃষ্টিতে এটি আমাদের জয়, আবার তাদের দৃষ্টিতে এটা তাদেরও জয়। আমরা মিলিতভাবেই জয়লাভ করেছি। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কর অবনতি নাহলে আমার বিশ্বাস মোদিজি তাঁর উক্ত পোস্টে বাংলাদেশ-ভারতের মিলিত জয়ের কথাই লিখতেন। কিন্তু, বাংলাদেশের অনেকে ইদানিং বলা শুরু করেছে-- মুক্তিযুদ্ধ ছিলো ভারতীয় ষড়যন্ত্র, আমরা নিজেরাই স্বাধীন হয়েছি ভারত কিছু করেনি ইত্যাদি। তাদের জন্যই তিনি বাংলাদেশের কথা এড়িয়ে গেছেন বলে মনে হচ্ছে।
১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তান সবচেয়ে বড় ভুলটি করে ভারতের মাটিতে হামলা করে। ভারতের বিদেশনীতি অনুযায়ী আক্রান্ত নাহলে তারা পালটা হামলা করতে পারে না। তাই ১ কোটি শরনার্থীদের আশ্রয়, খাবার, চিকিৎসা দান করলেও, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশে গণহত্যার কথা তুলে ধরে জনমত সংগ্রহ করলেও, মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দিলেও, মুজিবনগর সরকারকে আশ্রয় দিলেও ভারত সরাসরি আমাদের জন্য অস্ত্র নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়তে পারছিলো না। পাকিস্তান হামলা করে তাদেরকে যুদ্ধে সরাসরি আহবান করলো। আর মাত্র ১৩ দিনেই ভারত ও বাংলাদেশের মিলিত মিত্রবাহিনী পাকিস্তানকে হারিয়ে দিলো। আমাদের পাশে ছিলো রাশিয়া, পাকিস্তানের পাশে ছিলো আমেরিকা। এটাই ইতিহাস, এটাই সত্যি। বাইরের হেল্প না পেলে ৯ মাস কেন, ৯ বছরেও প্রবল পরাক্রমশালী পাকিস্তানি আর্মির সাথে আমরা জয়ী হতে পারতাম না। কারণ আমাদের না ছিলো ট্রেনিং, না ছিলো অত্যাধুনিক অস্ত্র। লাঠি নিয়ে একে৪৭ এর বিরুদ্ধে লড়াই করা যায় না।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় ভারতের লাভ হয়েছে এটাও সত্যি। লাভ ছাড়া কেউ কিছু করে না। লাভ ছাড়া ভারতের এত সেনাই বা প্রাণ কেন দিবে, কেনই বা এক কোটি শরনার্থীকে আশ্রয় দেবে? বর্ডারের দুই দিকে শত্রুভাবাপন্ন দেশ থাকার চেয়ে একদিকে অপেক্ষাকৃত বন্ধুদেশ থাকা ভালো। এটাই তাদের লাভ। আর আমাদের লাভ তাদের হেল্প নিয়ে আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি, বঞ্চনা-নির্যাতনের অবসান হয়েছে। আমরা পাকিস্তানের চেয়ে সবদিক দিয়েও অনেক এগিয়েছি। আজ পাকিস্তানের বাসিন্দাদেরই অবস্থা চরম খারাপ, আমরা একসাথে থাকলে আমাদেরকে লুটেপুটে খেতো আরও।
ভারত যদি চাইতো, তখনই বাংলাদেশ দখল করে নিতে পারতো। কিন্তু তারা তা করেনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেশে ফিরেই ইন্দিরা গান্ধীকে বলেছেন সেনা ফিরিয়ে নিতে। ভারত তাই করেছে। বিশ্বের আর কোনো দেশ থেকে এত দ্রুত কোনো বিজয়ী সেনা চলে যায়নি। এর জন্য চড়া মূল্য দিতে হয়েছে শেখ মুজিবকে তার ৪ বছর পরেই! ভারতীয় সেনাবাহিনী থাকলে বা অন্তত ভারতের গোয়েন্দা রিপোর্ট শুনে নিজদেশের জনগণের প্রতি এতটা অন্ধবিশ্বাসী নাহলে হয়তো তিনি সপরিবারে হ*ত্যার শিকার হতেন না। তবে এটাও ঠিক, তাঁর অনেক ভুলও ছিলো।
স্বাধীন দেশে আজ ৫৩ বছর পর এই ইতিহাসকে পালটে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধা সাজতে চাইছে। রাজাকারের বাচ্চারা বিজয় দিবস উদযাপন করছে! তারা ভারতকে আরও একবার আক্রমণ করে ক্ষেপাতে চাইছে। এর পরিণতি কী হবে জানি না। তবে ১৯৪৭ সালে ধর্মের ভিত্তিতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর (যুদ্ধ না করেই স্বাধীন হয় পাকিস্তান) আজ পর্যন্ত একটা যুদ্ধেও পাকিস্তান জিততে পারেনি। এটাই ইতিহাস। এটাই সত্যি। তারা আরেকবার ভারতে আক্রমণ করুক। ভারতকে শায়েস্তা করে দিক। একাত্তরের বদলা নিক! তা না করে বাংলাদেশকে উস্কানি দিচ্ছে কেন? কারণ পাকিস্তানের এখন যা অবস্থা, নিজেরাই খেতে পায় না, যুদ্ধ করবে কি? বিশ্বাস নাহলে যারা ভারত ভ্রমণ করেছেন, তারা একবার বিনা ভিসায় পাকিস্তান ভ্রমণ করে আসুন। নিজেরাই উত্তর পেয়ে যাবেন।
২| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ২:১০
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
আসিস নজরুল বলেন
ভারত ছিল এই বিজয়ের মিত্র, এর বেশি কিছু নয়।
এটা ভুল কথা। আরো কিছু আছে।
ভারত ৯ মাস ধরে আশ্রয় অস্ত্রসস্ত্র দিয়ে মুক্তি বাহিনী কে সাহায্য করে এসেছিল, নিজে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে যায়নি।
কিন্তু ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তান পশ্চিম ফ্রন্টে ভারতের উপর প্রবল আক্রমণ করে যুদ্ধ ঘোষনা করে। এবং সেই রাতেই ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করতে বাধ্য হয়। যুদ্ধ ভারতের দুটি প্রান্তে পশ্চিম এবং পূর্ব ফ্রন্ট হয়, সেই যুদ্ধে ১৬০০ এর উপরে ভারতীয় সৈনিক নিহত হয় এবং কয়েক হাজার আহত হয় তাই প্রতি বছরই এই দিবসটি অবস্যই ভারতেরও জয়। 'ভারতের জয়' এই কথা ভারতের দিক থেকে বলা হলে সেটা সম্পূর্ণ যৌক্তিক।
৩| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০০
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: ইতিহাস আপনাকেই লিখতে হবে।
৪| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪
রাজীব নুর বলেছেন: কারন, পাকিস্তানীরা বাঙ্গালীর হাতে ধরা পড়লে কল্লা থাকবে না। তাই তারা জান বাচাতে ভারতের সেনাদের কাছে ধরা দিয়েছে।
৫| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:১৮
কিরকুট বলেছেন: নিয়াজির ভয় ছিলো মুক্তিবাহিনীর হাতে ধরা পরলে চামড়া ছিলে কুত্তা দিয়ে খাওয়াবে। ৭১ এর ১৬ই ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী কে ঢাকা ঘিরে রাখার আদেশ দেয়া ছিলো। অন্য সব রকম কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার কড়া আদেশ ছিলো। বিশ্বাস করুন ওই দিন যদি মুক্তিবাহিনীদের সুজুগ থাকতো ঢাকায় ঢোকার একটা পাকিস্থানী কুত্তাও আস্ত ফিরে যেতো না সেই সাথে এখন যে সব কুত্তার ছাও আছে এদেরও কুচিকুচি করা হত। নিয়াজির আত্মসমর্পণের শর্ত এটাই ছিলো। নিয়াজী কুত্তার মতো কেউ কেউ করে কাদছিলো।
৬| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৩৯
আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: বাংলাদেশ যেহেতু তখন জেনেভা কনভেনশনে স্বাক্ষর করেনি তাই ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ না করলে মুক্তি বাহিনী পাকিস্তানী সেনাদেরকে কচুকাটা করে ফেলতো। জীবন বাঁচাতে তারা ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
পাকিস্তানিরা বুঝে গিয়েছিলো বাংলাদেশ দখল করে রাখতে পারবে না, যুদ্ধও আর বেশিদিন কন্টিনিউ করতে পারবেনা। আমেরিকার নৌবহর আর আসবে না, পাকিস্তান থেকে নতুন সাপ্লাই ও সেনা আসাও বন্ধ। যেই মুহূর্তে তাদের শেষ গুলিটি ছোড়া হয়ে যাবে, ঠিক তার পরেই গর্ত থেকে, বন জংগল থেকে পিল পিল করে বের হয়ে আসবে বাঙালী মুক্তিবাহিনী , যারা কোন জেনেভা কনভেনশনে স্বাক্ষর করেনি এবং কোন আন্তর্জাতিক যুদ্ধনীতির তোয়াক্কা না করেই তারা নির্বিচারে মারতে থাকবে পাকিস্তানিদের, তাই ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া তাদের আর কোন উপায় ছিলো না।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৩৯
ঊণকৌটী বলেছেন: সহমত ভাই