![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাটির মানুষ ভিজলে কাদা হয় না কেন প্রশ্ন জাগে, মানুষ গড়া অন্যকিছুয় আমার শুধু এমন লাগে।
সৈকতের লাল কাঁকড়ার মত হুট করে কোথায় যেন গায়েব হয়ে গেল লাল টকটকে সূর্যটা। বালুর কোন গর্তে লুকিয়েছে সূর্যটা- ছানি পড়া চোখে মাঝি ভাল করে দেখতে পায়নি। নাম মাঝি হলেও এই বেয়াল্লিশ বছরের দীর্ঘ জীবনে লগি-বৈঠা ছুঁয়েও দেখেনি কখনো। ভাল করে সাঁতারও জানে না। পুকুর ঘাটে কোমর পানিতে নেমে গোসল করেই জীবন গেছে। গলা পানিতে নামার সাহস হয়নি। হাতে বৈঠার বদলে দোতারা ধরেছিল মাঝি সেই শৈশবে। দোতারাটার বয়স যে আসলে কত নিজেও জানে না। গুরু সাদেক ফকীরের ছিল এটা। মরার আগে মাঝিকে দিয়ে গেছে। কবিগানের তালিম আর নেয়া হয়নি। গুরুগৃহে লোটা পানি দেয়ার কাজ হাতে নিতেই গুরু যক্ষা হয়ে লোকালয় ত্যাগ করেছে। বনে গিয়ে হয়ত মরেছিল। লাশ মাটিতে খেয়েছে না বাঘে খেয়েছে- কেউ বলতে পারবে না। সাদেক ফকীরের বয়স হয়েছিল অনেক। আশির কাছাকাছি। দাঁত যে কয়টা টিকে ছিল- তা নিয়েই গান ধরতে পারতো। আসর জমাতে পাঁচ মিনিটও লাগতো না লোকটার।
“আমি দ্যাখি মস্ত কানা
পিরিত বুজি না,
সাঁইয়ের ঘরের লোটা গড়ায়
ভিজলো দুনিয়া......”
মাঝির বয়স বোধহয় এগারো বারো হবে, ঘূর্ণীঝড় আর নদীর পাড় ভেঙ্গে ওর মা বাপ মারা যাওয়ার পর ঘুরতে ঘুরতে সাদেক ফকীরের হাতে এসে পড়েছিল। কিন্তু সময় বেশি বাকি ছিল না তখন সাদেক ফকীরের। কৃষ্ণপক্ষের এক রাতে যক্ষা নিয়ে জঙ্গলে পালিয়ে গিয়েছিল লোকটা। যাবার আগে ঘরের দাওয়ায় ঘুমাতে থাকা মাঝিকে ঠেলা দিয়ে জাগিয়ে বলেছিল, “অ মাজি, যাইতাছি গা। দেকি জঙ্গলে গিয়া রক্ষা পাই নাকি।” বেদম কাঁশছিল সাদেক ফকীর। কাঁশির দমকে দমকে রক্ত উঠে আসছে নাকে মুখে। খোঁ খোঁ শব্দে কেঁশেই যাচ্ছে, কথা বলতে পারছে না।
মাঝি চোখ কচলে উঠে বিমূঢ়ের মত বসেছিল। হাতের দোতারাটা মাঝির কোলের ওপর রাখতে রাখতে বিষণ্ন মুখে সাদেক ফকীর বলেছিল, “তোর লোটা পানির দানে আমার এই দোতারাটা দিয়া গেলাম। মাজি নামটার লগে মিলায় দিছি। এইটা তো বৈঠা। গানের দড়িয়ায় নাও চালাইবি। আমি গেলাম।”
অন্ধকার পৃথিবীর মাঝে কাঁচা রাস্তাটা দিয়ে আস্তে আস্তে লাঠি আর পা ফেলে হারিয়ে গেছে সাদেক ফকীর। লোকটা জীবিত অবস্থায় বিদায় নিয়েছিল। তাই গুরুর মৃত্যু হয়নি লোকালয়ে। মানুষের বিশ্বাস সাদেক ফকীর আবার ফিরে আসবে একদিন। মাইঝ গাঁও রেল স্টেশনের পাশের বটতলায় আসর বসাবে। এক ছিলিম তামাক নিয়ে কলকেতে টান দিয়ে গান ধরবে ভাঙা গলায়-
“মোরে কোরলি একা, জনম রেখা
ঘুচলো রে হাতে,
মোর পরাণ যারে চাইলো সনে
মানলো নারে জাতে......”
মাঝির খুব ইচ্ছা গুরু ফিরে আসলে তাকে সামনে বসিয়ে গান শোনাবে। এই এক জীবনে কম গান বাঁধা হয়নি। প্রথম জীবনে মাইঝ গাঁও রেল স্টেশনে থামা ট্রেনে উঠে যেত মাঝি। চলন্ত ট্রেনে এক বগি থেকে আরেক বগিতে হেঁটে হেঁটে গেয়ে বেড়াতো। মানুষ আগ্রহ-অনাগ্রহ দুটো নিয়েই সে গান শুনে যেত। সিলেটের শ্রীমঙ্গলের আঁকা বাঁকা রেল লাইনগুলোর দুই পাশের গাছগুলো মাঝি কবিয়ালের ছেঁড়া ছেঁড়া গানের সাক্ষী হয়ে আছে বহু বছর ধরে।
“উড়িল্ কেতন উড়িল্ ও হায় আমার পরাণ চাহে,
কালির মাঝে আঁতুর ঘরে জনম নিমু বাহে,
পিঞ্জ্রা ভরা দরদ ছিল, চোক্ষে পেমের বাণী
এমন গীতে মোজমুরে ভাই, চলবো কানাকানি......”
মাইঝ গাঁও স্টেশনের পাশেই সরকারী ভাবে এক-দেড় একরের মত জমিতে ভূমিহীনদের জন্য জায়গা দেয়া আছে। রিক্সাওয়ালা, দিনমজুর, ফকির কিংবা ফেরীওয়ালা- সবারই বসবাস এখানে। পাশাপাশি ঠাশাঠাশি বেড়া আর টিনের ঘর। পৃথিবীতে এত জায়গা থাকতেও এই এতটুকু জমিতে দুই বাড়ির পাটিশন এক দেয়াল দিয়ে হয়। নারী পুরুষের গভীর রাতের শীৎকার যেমন এখানে কারো ঘুম ব্যঘাত কিংবা কামনা জাগায় না, সারা রাত খিদার জ্বালায় অস্থির বাচ্চার কান্নাও তেমন কাঁপন সৃষ্টি করতে পারে না কারো হৃদয়ে। সূক্ষ্ম জীবন বোধগুলো গোদ রোগের মত স্থূলতায় আক্রান্ত হাজী দানেশ আলী সরকারী গুচ্ছগ্রাম। সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে যদিও এক সময় পনেরো বিশটা পরিবারের জন্য ঘর করে দেয়া হয়েছিল সর্বহারা, ভূমিহীনদের- এখন আর সে অবস্থা নেই। ভূমির সদ্ব্যবহার মানুষের জন্মগত বৈশিষ্ট্য। ঘর সরিয়ে নতুন ঠাশাঘর তুলে ভাড়া দিয়ে দিয়েছে নিজেরাই। নিজেদের অপ্রয়োজনীয় স্থানে আরেকটা মানুষকে টাকার বিনিময়ে জায়গা দিতে দোষ কি? এমনিতেই বাহিরের পৃথিবীতে জায়গার বড় অভাব। পেশায় ভিক্ষুকেরাও রিক্সাওয়ালাদের ঘর ভাড়া দিয়ে দিব্যি সুখে শান্তিতে দিন যাপন করে। ওপরওয়ালারাও তাদের দৈব দৃষ্টিতে সব দেখেও ওপরওয়ালার মতই চুপচাপ। নিচে নেমে এসে নীল মাছির ভন ভন করা আবর্জনা ঘাটার আগ্রহ ক’জনের থাকে?
মাঝি কবিয়ালের ঘরটাও এখানেই। উত্তর দিকে বাঁশ ঝাড়ে ঢাকা পুকুর ঘাটটার দিকে মুখ করা এক কামরার ঘর। দুই পাশেই ঠাশাঠাশি ভাবে ঘর রয়েছে। দক্ষিণ পাড়ার নুলো ফকির সোলায়মান আলীর ঘরটা বা পাশে। নতুন বিয়ে করা বৌটার সঙ্গে রাত বিরাতের নানান নিষিদ্ধ আলাপ বেশ পরিষ্কার ভাবেই ভেসে আসে মাঝির ঘরে। মাঝির রক্তেও আগুন ছিল এক বয়সে। এখন আগুন নেই। নিরুত্তাপ। ঘরের দাওয়ায় বসে আপন মনেই দোতারাটায় হাত বুলায় সে। বিড়বিড় করে চরণ বাঁধে-
“নর নারীর রসের কথন
গাইলে কো’বে শরম নাই,
রাত বিরাতে রসের আলাপ
লাজ লুকায়ে কোথায় যাই?”
মাঝি কবিয়াল যৌবনে ট্রেনে গান গেয়ে গেয়েই এক নারীর প্রেমে পড়েছিল। হাজেরা বানু। সাতক্ষীরার মেয়ে। ভিক্ষা করতে করতে সাত নদী পার হয়ে ট্রেনে উঠেছে। দিনে ভিক্ষা রাতে অন্য নারীতে বদলে যেত। দু পন্থায় ভিক্ষাবৃত্তি বেশ আয়ত্ব করে নিয়েছিল হাজেরা বানু। সূর্যের উপস্থিতি আর অনুপস্থিতি যে এক নারীকে মুহূর্তে মুহূর্তে কত রকমে বদলে দিতে পারে- হাজেরা বানু বিস্ময় সৃষ্টি করেছিল মাঝির মনে। সাদেক ফকীরের শিষ্য শুধু গানের দেওয়ানা হয়নি, বয়সে বয়সে শরীরের টানেও অসার হয়েছিল যত সিদ্ধ চেতনা থেকে। সমাজের অনুপ্রবেশ প্রায় নেই বললেই চলে যে জগতে, এরা সেখানেরই বাসীন্দা। মান অপমান, সম্ভ্রম, সম্মান কিংবা আত্মমর্যাদা বিলাসী বাবু মেমদের শব্দ। এখানে এলে গোবর-কাঁদা লেগে শব্দগুলোর বেশভূষাই নষ্ট হয়ে যাবে। ঘেন্নায় মুখ-নাক সিঁটকে দু কদম পা টিপেটিপে হেঁটেই ফেরত চলে যায় শব্দেরা। জৈবিকতা আর মানবিকতার দৌড়ে পার্থক্য প্রায় হাজার মাইল। মাঝির জীবনে হাজেরার উপস্থিতিটাও সেরকম। দুশো এক টাকা দেনমোহরানার বহু পূর্বেই এরা মনুষ্য ও জৈবিক জীবন ধারণ করা শুরু করেছিল। সংসার বাঁধার আদিখ্যেতাটা কাল্পনিক সমাজকে ঢোল পিটিয়ে শ্রদ্ধা কিংবা শ্রাদ্ধ করার মতই।
তবে মাঝি হাজেরা বানুকে ভালবেসেছিল। শরীর থেকে মানুষটার অভ্যস্থতা যখন স্বভাবে চলে আসে- তখন মুশকিল। হাজেরা বানু মাঝির জীবনে খুব অল্প অল্প করে মিশে গিয়েছিল। নদীর তীরে কাদার সাথে পানি যেমন মেশে। মেয়েটার হাতের কাঁচের চুড়ির শব্দে মাঝি ব্যাকুল থাকতো। গান বেঁধেছিল হাজেরা বানুকে নিয়ে এক জীবনে-
“তারে যদি বাঁধিতাম আমি
ঝাঁপাই তো সে ডানা,
আমি হইলাম পেমেত পাগল
কোরবো ক্যানে মানা?”
মেয়েটার খাড়া নাকের আগায় বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতো, ঠোঁটের ওপরেও ঘামের রেখা। মাঝি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতো। হাজেরা বানু নারী সুলভ লজ্জা পায়নি কখনো। সংজ্ঞাগুলো শেখার মত বয়স বা সুযোগ তাকে পৃথিবী দেয়নি। মাঝির দিকে তাকিয়ে তীব্র গলায় বলে উঠতো, “রাইতের লাইগা ভাতের চাউল নাই- প্যাডে ভুখ নিয়া কইলাম শইলের ভুখ মিটাইবেন না! মরদ হৈছেন যে সেইটা বিছানায় না পরমাণ দিয়া চুলার পাতিলে পরমাণ দেন। দিন রাইত অত পিরিতের বিষ ওঠায় লাভ নাই। মেজাজ খারাপ হৈলে কিন্তু এই চুলায় লাত্থি মাইরা রাতের বেলা আরেক বিছানায় যামু গা।”
মাঝি আহত হত এসব কথায়। কিন্তু রক্তাক্ত হবার চিহ্নটুকু মুখে প্রকাশ করতো না। বন্য পাখি পোষ মানতে সময় লাগে। ট্রেনে ভিক্ষা করে বেড়ানো হাজেরা বানু কিংবা নিশিকন্যা হাজেরা সেই পাখি যাকে পোষ মানাতে চায় মাঝি। বয়সে প্রায় দশ বছরের ছোট হাজেরা বানু ধীরে ধীরে পোষও মানতে শুরু করেছিল মাঝি কবিয়ালের অভাবের সংসারে। দিনরাত স্বামীর ওপর অতিষ্ট সেই মেয়ে একটা সময় ঘর গৃহস্থি কোমর বেঁধে বুঝে নিয়েছিল। হাঁস মুরগী পালা, উঠানের শাক সবজি চাষ- ভালই রপ্ত করতে আরাম্ভ করেছিল হাজেরা বানু। বছর ঘুরতেই একটা ছেলেও হয়েছিল। ফুটফুটে একটা ছেলে। আফজাল নাম রেখেছিল। হাজেরা বানু সারাক্ষণ কপালে কাজলের টিপ দিয়ে রাখতো ছেলেটাকে। পাছে নজর না লাগে কারো।
নজর লেগেছিল। অদৃষ্টের। ধীরে ধীরে একটা সময় জানা যায় ছেলেটা বোবা আর কালা হয়েছে। কিছু শুনতে পায় না। বলতেও পারবে না। অনেক শখ করে রাখা আফজাল নামটা লোকমুখে ঘুরতে ঘুরতে যে কখন “গুঙ্গা” হয়ে গেল, মাঝি কিংবা হাজেরা টেরও পায়নি। মানবিক নিষ্ঠুরতাগুলো বড় অকৃপত হস্তে ব্যবহৃত হয় এখানে। সীমাবদ্ধতাগুলো নামেই প্রকাশ পায়। আর সেই আত্মপ্রকাশে মানুষ সাগ্রহে সাড়া দেয়। গ্রহন করে নেয় আনন্দের সাথে। গুঙ্গাও নিয়েছিল। হাজেরা অথবা মাঝির কথা না হয় উহ্যই থাকলো।
মাঝি ট্রেনে ট্রেনে ঘুরে বেড়ানোর দিনগুলোতে সাংসারিক অভাবের সময় রাতের বেলা তার অনুপস্থিতি হাজেরা বানুকে পুরাতন পেশা চর্চায় ডাকতে শুরু করেছিল বোধ করি। সংসারের সংশ্রব বিবর্জিত এলাকায় সংসারের বেশ ধরে থাকাটা সম্ভব না, কারণ ওটা মানুষের লোকালয়। মানুষের লোকালয়ে দেবদেবীদের জীবন বন্দনা বা চর্চা উচ্চবিলাসীতা ছাড়া আর কিছু না।
দীর্ঘদিন পর রাতের বেলা বাড়ির উঠানে ফিরে মাঝি কবিয়াল যখন গুঙ্গাকে উলঙ্গ অবস্থায় কোমরে ঝুনঝুনি পরে ঘুরে বেড়াতে দেখেছিল- খুব একটা অবাক হয়নি। বন্ধ দরজার ওপাশে হাজেরার অভ্যস্থ শব্দ, কথা বার্তা কিংবা পুরুষের চাপা নিঃশ্বাস মাঝিকে স্থবির করে দেয়নি। মানুষ মানুষের সংজ্ঞায় বিস্মিত হয় না। বিস্মিত হয় যখন দেবদূতের সামনে হঠাৎ নিজেকে আবিষ্কার করে বসে। ঘরের ভেতরে তারই মত দুজন নারী পুরুষ রয়েছে। হোক সেখানে একজন হাজেরা- তাতে কি? মাঝি চুপচাপ দাওয়ায় বসে অপেক্ষা করতে থাকে দরজা খোলার। রাতে কি আর দরজা খুলবে?
দূর থেকে উদয়ন ট্রেনটার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। নতুন গান বেঁধেছে এবার মাঝি। দাওয়ায় বসে গুনগুন করে দু লাইন গেয়ে নিল আপন মনে-
“এ মরণে যাইবো একা
তোমায় দেখার লাগি,
এক জনমে মিটলো না পেম
হইলো সবে ফাঁকি......”
চোখে তন্দ্রা নেমে এসেছিল। দরজা খুলে পুরুষ মানুষটা কখন বেরিয়ে গেছে টের পায়নি মাঝি। হাজেরার গলা শুনে চমকে জেগে উঠল, “কখন আইছো মাঝি?” বাঁশের খুঁটিটায় হেলান দিয়ে অন্ধকারে বসে আছে হাজেরা। হাতে সস্তা বিড়ি। আগুন জ্বলছে। ধীরে ধীরে টান দিচ্ছে হাজেরা। গায়ের শাড়িটা আলগাছে ফেলে রেখেছে শরীরের ওপর। ঘাম চকচকে চামড়া বিড়ির লালচে আলোতেও জ্বলছে।
মাঝি উত্তর না দিয়ে উঠে গিয়ে ভেতরে পাটির ওপর বালিশ নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। হাজেরা ছোট একটা নিঃশ্বাস ফেলে। দশ টাকা দিয়ে গেছে রোকন খন্দকার। এলাকার ছোটখাট একটা মুদির দোকান চালায় লোকটা। মাঝে সাঝে বাকিতে চাল আটা আনা হয়। একটু নিশ্চিন্ত হওয়া গেল। আগামী কয়েকটা দিন চাল ডাল নিয়ে ভাবতে হবে না। আগের হিসাবগুলো কেটে দিয়েছে সন্ধায় আসার আগে। হাজেরা অন্ধকারেই হাসে। তৃপ্তির হাসি। সেখানে কোনো আক্ষেপ নেই। চাঁদের আলোয় উঠানে ঝুন ঝুন টুন টুন শব্দ করে দৌড়ে বেড়ানো গুঙ্গার দিকে তাকায় এক ঝলক। ছেলেটা বড় হয়ে যাচ্ছে। পাঁচ কি ছয় বছর হয়ে গেছে এর মাঝেই। শরীর বড় হচ্ছে ছেলেটার। ধর্ম-অর্ধমের চল নেই এখানে। তবু হাজেম ডেকে ছেলেটার খৎনা করিয়ে নেয়া দরকার। মাঝিকে বলতে হবে সময় করে। লোকটার দিন দুনিয়ার খবর একটু কম। গান বাঁধা ছাড়া আর কিছু বোঝে না।
ছানি পড়া চোখে পিটপিট করে তাকায় মাঝি। ঘাটের বাঁশ ঝাড়টার ওপর কমলা রঙের চাঁদ উঠেছে। স্থির ছবির মত চাঁদ। ভাল ভাবে দেখতে পাচ্ছে না সে। লাল কাঁকড়ার মত সূর্যটা বিদায় নিতেই ছবির মত স্থির চাঁদটা এসে যেন আকাশটা ভরিয়ে দিয়েছে। নীরব চাঁদ। সূর্যের মাঝে শব্দ আছে। কোলাহল আছে। চাঁদে আছে নীরবতা, নিস্তব্ধতা। ডান পাটা সোজা করার চেষ্টা করল মাঝি। হাঁটুর নিচ থেকে নেই। অনেক বছর হল ট্রেনের চাকায় কেটেছে ডান পা’টা। ডান বোগলে কাঠের ক্রাচ নিয়ে হাঁটতে হয় এখন। কবে কেটেছিল ঠিক মনে নেই দিন তারিখের হিসাবে। তবে এটুকু মনে আছে গুঙ্গার ছোট একটা বোন হয়েছিল সেবার। হাজেরার প্রায় মরার মত অবস্থা হয়েছিল তখন। মেয়ে বেরিয়ে গেছে কিন্তু ফুল পড়ছিল না। ধাই যাকে আনা হয়েছিল সেও মুখটুখ শুকিয়ে আমশি মেরে গেছে। বিড়বিড় করে দোয়া দরুদ পড়তে পড়তে টানা হ্যাচড়া চালিয়ে যাচ্ছিল। মুদির দোকানদার রোকন খন্দকার শেষ মেষ উপজেলা হাসপাতাল থেকে ডাক্তার নিয়ে এসে হাজেরাকে বাঁচিয়েছিল। লোকজনের দাবী এই মেয়ে রোকন খন্দকারের। নাহলে রাত বিরাতে এই রকম খারাপ মেয়ে মানুষের বাচ্চা বিয়াতে এতো দরদ উথলে উঠবে কেন? মাঝিও ছিল না। সে জানেও না বাড়িতে তার মেয়ে হয়েছে। ট্রেন থেকে পা ফসকে পড়ে গিয়ে ডান পা চাকার নিচে চলে গিয়েছিল। সেই কাটা পা নিয়ে সে তখন মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি। কেউ জানেও না মাঝি যে এখানে।
খোঁড়া পা নিয়ে বাড়িতে হাজির হতে হতে দেড় মাস লাগিয়ে দিয়েছিল মাঝি। যতদিনে এসেছে ততদিনে বৌ আরেক জনের ঘরে। মুদির দোকানী রোকন খন্দকার নিকে করে নিয়েছে হাজেরাকে। সেই সাথে নতুন মেয়েটাকেও। মাঝি বাড়ি ফিরে গুঙ্গাকেই পেয়েছিল কেবল। বাজার পেরোতে পেরোতে জেনে গিয়েছিল ঘরে বৌ নেই।
লোকটা আশ্চর্য রকম নিরুত্তাপ ছিল সেদিন। একবারের জন্য হাজেরার নতুন স্বামীর বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হয়নি। যে যাবার সেচ্ছায় গিয়েছে। এর পেছনে দাবীর অজুহাতে হাজির হওয়াটা যুক্তি সঙ্গত মনে হয়নি মাঝির। সে আগেও তার ছিল না। এখনও নেই। আগে অস্পষ্ট ভাবে জানতো, এখন পরিষ্কার ভাবে জানে। পাখিকে তার শস্য ক্ষেতেই ছাড়া উত্তম। খাঁচায় থাকলে না খেয়ে মরবে। মাঝির এই ভাবনার মাঝে ভালবাসা কিংবা উদারতা ছিল না। ছিল নির্লিপ্ততা, অনাগ্রহ, অকৌতূহল। নারীর প্রতি কৌতূহল মিটে যাওয়া পুরুষের কিছুকাল একা বসবাসের প্রয়োজন। মাঝি একা থাকতে চেয়েছে।
গুঙ্গার জন্য মায়ের দরকার তেমন ছিল না। ছেলে অনেকটাই বড় হয়েছে ততদিনে। দশ বারোর মত বয়স। মাঝি হুট করে হাজেরা যাওয়ায় বিয়ে বসেনি। একটু রয়ে সয়ে বসেছিল। প্রায় দেড় বছরের মাথায় অনেকটা গুঙ্গার বয়সীই এক মেয়েকে বিয়ে করে আনে মাঝি কবিয়াল।
“নববধূ চন্দনেতে হইল আঁকা মুখ,
লাজে হায় ঘোমটা দিয়া রইল ক্যানে চুপ?”
মাঝির নতুন ঘরটা তেমন টিকেনি। নববধূ চন্দনেতে মুখ এঁকে ঘরে এলেও দু মাসের মাথায় সাপে কেটে মারা যায়। কোথাও নিজের ছাপ রাখার আগেই সংসার বিয়োগ ঘটে। মাঝি আর গুঙ্গার সেই আগের একা সংসার যাপন ফের চালু হয়। মাঝি কবিয়াল ধীরে ধীরে ট্রেন ছেড়ে লোকালয়ে গান গেয়ে বেড়াতে শুরু করে। পথে প্রান্তরে সঙ্গীত ছড়িয়ে দিতে থাকে নিঃস্বার্থ ভাবে।
“জগতের এই রূপেতে মজিয়ারে ভাই
কবরেতে হইবে কি আর শান্তি ভরে ঠাঁই?
ও খোদা, ছাড়বা নাকি আমায় তুমি তবে?
ত্রিভূবনের বিচার যেদিন হবে?”
আস্তে আস্তে ক্রাচে ভর করে উঠে দাঁড়ায় মাঝি। পুকুরের পাশের বাঁশঝাড়টার কাছে সরকারী কবরস্থান। বেড়াগুলো পঁচে গেছে। ভেঙে গিয়ে লতা পাতার দাঙ্গল উঠেছে। খুব বড় না কবরস্থানটা। ঝিঁঝিঁ পোকার কর্কশ ডাকে কান ফেটে যেতে চায়। বাতাস নেই। বাঁশ ঝাড়ের পাতাগুলো স্থির, নিশ্চল। মাঝির কাঁধ থেকে সাদেক ফকীরের সেই দোতারাটা ঝুলছে। খোঁড়াতে খোঁড়াতে গোরস্থানের শেষ মাথার নতুন কবরটার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। দুই দিন হচ্ছে কবর দেয়া হয়েছে। কবরটা গুঙ্গার।
দুদিন আগে দুপুরবেলা পুকুর ঘাটে গিয়েছিল গুঙ্গা। শ্যাওলা ধরা ঘাটে পা পিছলে ঘাটেই পড়ে গিয়েছিল। মাথায় বাড়ি লেগেছিল বোধহয়। গড়িয়ে পানিতে পড়ে যাওয়াতে আর বাঁচেনি। কেউ না থাকায় জানতেও পারেনি কেউ। মাঝি ফিরেছে পরেরদিন। শমশের নগর গিয়েছিল পালাগানের এক আসরে। বেশ কিছু চাল, ডাল আর একশো টাকা মিলেছে। গুঙ্গার মৃত্যু সংবাদ বহন করার কেউ ছিল না তার কাছে। সন্ধ্যার দিকে পাশের বাড়ির সোলায়মানের ছোট মেয়ে শিউলি ঘাটে গিয়ে উপুর হয়ে ভাসতে থাকা গুঙ্গার লাশ প্রথম দেখে। মৃত্যু খুব পরিচিত ঘটনা এখানে। অতি আবেগী মানুষেরা এই লোকালয়ের বাসীন্দা না। তারা সভ্য জগতে বাস করে। যাদের খেয়ে পড়ে আবেগ চর্চার সময় থাকে। এদের তা নেই। খুব নীরবে, নিভৃতে বিদায় নিয়েছে গুঙ্গা। তার নিঃশব্দ জীবনের অবসানেও মানুষেরা নিঃশব্দই ছিল। এমনকি চাল ডাল নিয়ে ফেরত আসা মাঝিও একদিনের অপেক্ষমান লাশ কবর দিয়ে এসে চুলা ধরিয়ে ভাত রেঁধে খেয়েছে। একটা খেজুরের ডাল কেটে এনে কবরটার ওপর বিছিয়ে দিয়েছিল মাঝি সকাল বেলা। ছেলের মৃত্যুতে শোক আসেনি মানুষটার। বাউলের মন কাদার মত নরম হতে হয়, মাঝির মনের ভেতর কাদা নেই। শুকিয়ে শক্ত হয়ে গেছে মাটি।
আস্তে আস্তে নতুন বেড়াটার গায়ে হাত বুলালো মাঝি। দু মাস গেলেই চাষ দিয়ে দেবে এখানে। নতুন কবর তোলার জন্য চাষ দেয়া হয়। সরকার জীবিত ভূমিহীনদের জমি দিয়ে উদারতা প্রকাশ করেছে ঠিকই, কিন্তু মৃত্যুর পর ভূমি দিয়ে অতি উদারতা দেখানো সম্ভব না। অপ্রয়োজনীয় মানুষদের জীবিত অবস্থাতেই মূল্য দিতে কষ্ট হয়, তার মৃত্যুর পর তো দেয়াটা বোকামি। পৃথিবীতে স্থান সঙ্কুলন হবে না। আত্মীয় স্বজনদের বিলাপ-হাপিত্যেশ করার জন্য মাসখানেক সময় তো দেয়াই আছে। লাশ পঁচে গলে মিশে যাবার পর ঢিবির সামনে অহেতুক পুরনো ভিড় তুলে লাভ নেই। নতুন ঢিবি উঠুক। নতুন নতুন মানুষ এসে বসে থাকুক কদিন।
মাঝি দীর্ঘ একটা মুহূর্ত কবরটার দিকে তাকিয়ে থাকার পর অন্ধকার আকাশটার দিকে ছানি পড়া চোখে তাকালো। অস্ফুট গলায় বলে উঠলো, “ইয়া মাবূদ, পারওয়ারদেগার, আমার গুঙ্গা পুলাডারে সাওয়াল জওয়াবের ফান্দে ফালাইছোস কিনা জানি না, ওরে তো কিছু শিখাইতে পারি নাই। জওয়াব ক্যাম্নে দিছে?”
কমলা রঙের চাঁদটা এখনো স্থির, ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। উত্তর এলো না আকাশ থেকে। উত্তর আসে না। মাঝি জানে সে দুই গুঙ্গার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে। গুরু সাদেক ফকীরের গানের দু লাইন মনে পড়ল-
“আমি ডাকি স্যেয় শোনে না
তয় কি স্যে’তে কালা?
মাটির দুন্যে চাষ করে খাই
হইছে আমার জ্বালা......”
তাক্ষতের ডাক শোনা যায় উত্তরের জঙ্গল থেকে। সাদের ফকীর একদা ঐ দিকটায় হারিয়ে গেছে। মাঝি ধীরে ধীরে মুখ ঘুরিয়ে পেছনে বাঁশঝাড়টার দিকে তাকায়। ম্লান চাঁদের আলোয় অস্পষ্ট ভাবে দেখতে পায় কালো বোরখা পড়ে কেউ দূর থেকে তাকিয়ে আছে এদিকে। চেহারা বুঝতে না পারলেও হাজেরা বানুকে চিনতে কষ্ট হয় না মাঝির। গুঙ্গার ‘মা’ এসেছে ছেলের কবর দেখতে। চোরের মত।
মাঝি দোতারাটায় হাত বুলায়। তারপর একটা নিঃশ্বাস ফেলে ঘুরে ক্রাচ নিয়ে হাঁটতে থাকে পুকুর ঘাটটার দিকে। হাজেরা বানু দূরের মানুষ। কাছে যাবার দরকার কি? থাকুক ওর মত। এক জীবনের কৃত কর্মের দিকে তাকিয়ে থাকুক।
পুকুরে পানির রঙটা কালো দেখাচ্ছে। পাতলা আলকাতরার মত। তার মাঝে কমলা চাঁদটা ফুটে আছে ঠিক মাঝখানটায়। দুয়েকটা শুকনো বাঁশ পাতা উড়ে উড়ে ঘুরতে ঘুরতে গিয়ে পড়ছে সেই পানিতে। বাতাস বইতে শুরু করেছে। খুব ধীরে। সব কেমন যেন স্লথ হয়ে গেছে। মাঝি ঘাটটায় পা ছড়িয়ে বসে ক্রাচটা রেখে। গুঙ্গা এখানেই মারা গেছে দুই রাত এক দুপুর আগে।
দোতারাটা হাতে নিয়ে মৃদু টুনটান শব্দ করে মাঝি। সুর আসছে না মনে। অসুখ হয়েছে মনের কোথাও। বিড়বিড় করে সুর ধরার চেষ্টা করল-
“চান্দের গায়ে পড়িল্ পাতা
ঢেউ না খেলে জলে,
কি কবিয়াল হইছি আমি
মন্দ লোকে বলে......”
গুরু সাদেক ফকীরের দোতারাটা আজকে সুর দিচ্ছে না মাঝি কবিয়ালকে। হাজার গানের দোহার দোতারাটার বয়স হয়েছে অনেক। সাদেক ফকীরের মত জীবদ্দশায় বিদায় চায় হয়ত।
হাজেরা বানু চলে গেছে। আজ থাকলে দেখতে পেতো গুরু সাদেক ফকীরের দেয়া পরম আরাধ্য দোতারাটাকে মাঝি নির্লিপ্ত মুখে পুকুরের পানিতে ছেড়ে দিয়েছে। আধো ডোবা, আধো ভাসা অবস্থায় পুকুরের পানিতে সাঁতার কেটে বেড়াচ্ছে ওটা। ভাসতে ভাসতে কমলা চাঁদটার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে......
(সমাপ্ত)
উৎসর্গঃ
মোঃ আয়ুব। আমার বাবা।
২৮ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:২১
নিথর শ্রাবণ শিহাব বলেছেন: ধন্যবাদ। হ্যাঁ। আমারই লেখা গানগুলো। ভাল থাকবেন সব সময়
২| ২৮ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:৪২
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: পুরোটা শেষ করতে পারলাম না। আবার পরে...নিউ
৩| ২৮ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:৪৮
সুমন কর বলেছেন: ভালো হয়েছে। গুড
২৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:২৩
নিথর শ্রাবণ শিহাব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই ভাল থাকুন সব সময়।
৪| ২৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:১১
is not available বলেছেন: অসাধারণ লেখা! আবেগে আপ্লুত হয়ে গেলাম(যদিও 'আবেগ' নামের এই আদিখ্যেতা দেখানোর সুযোগ আল্লাহ সবাইকে দেননি)!
২৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:২৩
নিথর শ্রাবণ শিহাব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই ভাল থাকুন সব সময়।
৫| ২৯ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:০৩
সানজিদা হোসেন বলেছেন: ছুঁয়ে গেল। প্রিয়তে।
২৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:২৩
নিথর শ্রাবণ শিহাব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপা ভাল থাকুন সব সময়।
৬| ২৯ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:০৯
স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
সূর্যের উপস্থিতি আর অনুপস্থিতি যে এক নারীকে মুহূর্তে মুহূর্তে কত রকমে বদলে দিতে পারে-
পরে পুরোটুকু পড়বো ।
যতটুকু পড়লাম দারুণভাবে ছুঁয়ে গেল ! ++
২৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:২৪
নিথর শ্রাবণ শিহাব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই ভাল থাকুন সব সময়।
৭| ২৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৩০
স্বপ্নছোঁয়া বলেছেন: আপনার লেখনীর ছোঁয়াতে চরিত্র গুলো মন ছুঁয়ে গেছে..
গানগুলো ও চমৎকার হয়েছে |
২৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:২৪
নিথর শ্রাবণ শিহাব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই ভাল থাকুন সব সময়।
৮| ২৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:০৬
এহসান সাবির বলেছেন: খুব ভালো লিখেছেন আপনি।
মন্তব্যে পড়লাম গান গুলোও আপনার লেখা, দারুন।
শুভ কামনা।
৯| ২৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:০৩
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
সুন্দর লিখেছেন ৷
২৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:২৪
নিথর শ্রাবণ শিহাব বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই ভাল থাকুন সব সময়।
১০| ২৯ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৪
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন:
আবারও পড়লাম। আরেকবার।
অসাধারন। ....
মাঝি জানে সে দুই গুঙ্গার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে।
গল্পের চমৎকারিত্বে আমিও মন্তব্যে (কি লিখব!!!) গুঙ্গা হয়ে আছি
++++++++++
২৯ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:২৪
নিথর শ্রাবণ শিহাব বলেছেন: হা হা হা! অনেক ধন্যবাদ ভাই ভাল থাকুন সব সময়।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:২৩
খাটাস বলেছেন: সুন্দর। ভাল লেগেছে। মাঝ খানে কিছু কিছু জায়গা হৃদয় ছোঁয়া। তবে মনে হল, গল্পে বেশ কিছু অপ্রয়োজনীয় কথা ও আছে, যা ছন্দ টা কে কিছু টা হ্রাস করেছে। সব মিলিয়ে ভাল লাগা। প্লাস।
গল্পের গান গুলো কি আপনার লেখা? ভাল লাগছে।
শুভ কামনা জানবেন।