নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার চারপাশের মানুষ গুলো অনেক ভাল।

নিথর শ্রাবণ শিহাব

মাটির মানুষ ভিজলে কাদা হয় না কেন প্রশ্ন জাগে, মানুষ গড়া অন্যকিছুয় আমার শুধু এমন লাগে।

নিথর শ্রাবণ শিহাব › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্ট্যাটাস ক্রাইসিস ও মহামারী

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪১


কি আশ্চর্য জীবন। বেঁচে থাকার জন্য কাজ করি। কাজ করে টাকা দিয়ে খাই। খেয়ে মোটা হই, মোটা শরীর চিকন করতে হয় স্ত্রী কিংবা সুন্দরী রমণীদের চোখে ভাল অবয়বে ধরা দেয়ার জন্য, তো আবার না খেয়ে থাকি।
আমাদের মানব জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য কি? খাওয়া, সেক্স এবং বাচ্চা পয়দা করা? খুব স্থুল হলেও চরম সত্য এটাই। এর মাঝখানে কেবল টাকা নামক একটা ইলেক্ট্রন সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ হবার মত চক্র কাটতে থাকে প্রতিটা সম্পর্কের অক্টেট পুরণ করতে। সে কারো হয় না, কিন্তু সবার মধ্যেই বিচরণ করে, সবার চাহিদা পুরন করে।
অর্থই কি মানব জাতির ব্রিডিং এর জন্য দায়ি? নাকি ইনসিকিউরিটি অব এক্সিসটেন্স? রোহিঙ্গাদের এত এত বাচ্চা পয়দা হবার পিছনে অর্থের কিংবা অপজিট সেক্সের প্রতি প্রলুব্ধ হবার কোনো কারণ নাই। নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য করছে এটা। আদিম প্রবৃত্তি থেকে। তাহলে তাদের লাইফে অক্টেট পুরণ করছে কোন নিয়ামক? সোশ্যাল সিকিউরিটি, লোকবল।
তারমানে যদি তাদের জাপানিজদের মত পূর্ণ জীবন বৃত্তের মাঝে ফেলে দেয়া হয়ঃ তারা কি বছর বাদে আত্মহত্যা প্রবণ জাতি হয়ে উঠবে না?
তাহলে কি দাড়াচ্ছে বিষয়টা?
ক্রিটিকাল সিচ্যুয়েশনে মানুষ অর্থের প্রয়োজন দেখে না। তারা বংশধর দেখে, জনবল দেখে। আদিম শিক্ষা থেকে। আর লাইফ স্টাইল ছাদে উঠিয়ে তীব্র ফ্যাটিগে ফেলে দিলে এই একই মানুষ তার সমস্ত এক্সিস্টেন্স বাতাসে মিলিয়ে দেবে।

সারমর্ম যেটা হলঃ মানুষের জীবনে অর্থের অবস্থান আসলে তেমন একটা নাই। যেটা প্রয়োজন, সেটা কোন সোসাইটিতে বাস করছি, কোন ভূখণ্ডে ও কোন রাজনৈতিক অবস্থায় বাস করছি সেটার ওপর নির্ভর করতে পারে। আফ্রিকা কিংবা এমাজনে পেপসির ঢাকনা আর ডলারের কয়েনে পার্থক্য নেই, সেখানে যেটা সমাজে স্ট্যাটাস ডিফাইন করে সেটা হচ্ছে বেবুনের মাথা, জাগুয়ারের চামড়া কিংবা অতীত সর্দারের স্টাফ করা কমলা লেবু সাইজের মাথার ওপরে আধিপত্য।

উল্লেখ্য, স্কটল্যান্ডে বিশাল সংখ্যক নারীরা স্টেম ক্ষেত্র থেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও এর চাকুরিক্ষেত্রে প্রবেশ করেনি। যার ফলাফলে দেশটির জাতীয় আয়ের বাৎসরিক ক্ষতি প্রায় ১৭০ মিলিয়ন পাউন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মানে হচ্ছে, এটা কেবল বাংলাদেশ নয়, স্কটল্যাণ্ডের মত দেশেও শিক্ষা গ্রহণ এবং প্রয়োগ সম্পূর্ণ ভিন্ন স্রোতে চলছে। চাইলেই এটাকে অর্থের দিকে ঘুরিয়ে দেয়া যেত এই বিশাল শক্তিগোষ্ঠিকে, কিন্তু ভাল করে তাকালেই বোঝা যায়- এটা অর্থ বা টাকার যুদ্ধ নয়। তারা তাদের সমাজ ব্যবস্থাকে তাদের মত গড়ে নিচ্ছে।
আমি এটাকে প্রশংসার দৃষ্টিতেও দেখছি না, নিন্দাও করছি না। ফ্যাক্ট দেখাচ্ছি যে আমাদের মানসিক তুষ্টি নির্ধারণ করে আমি কোন স্কেলে বসবাস করছি? নির্ধারণ করবে লিভিং স্ট্যাণ্ডার্ড, নির্ধারণ করবে সেই দেশের আক্ষরিক অর্থে মানসিক উন্নতি অথবা অসুস্থ মানসিকতা।
এক্ষেত্রে বলা ভাল, কারাগারে লাইব্রেরি ও সিনেমার প্রচলন রয়েছে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে। এটা সময় কাটানোর জন্য নয়, চর্চা করার জন্য যে তুমি দুপেয়ে গরিলা হতে কেন ভিন্ন এটা আবিষ্কার করার জন্য। ফরাসি এক অপরাধী কারাগারে বসে গোটা উপন্যাস লিখে ফেলেছিলেন রাতারাতি সারা ফেলে দিয়েছিলেন। অন্যদিকে জাপানিজ লেখক ইসেয়েই স্যাগোয়া সুন্দর মত খুন করে বই লিখেছিলেন দিব্যি। রীতিমত সেই খুনের বর্ণনা দিয়ে। তো তাদের লাইফ স্টাইলে অক্টেট পূরণকারী বস্তু কিন্তু অর্থ নয়।
সুস্থ মানসিকতার মাদাম কুরী জানতেন যে তিনি অন্ধ হতে চলেছেন। তবু তিনি রেডিয়াম এক্সপেরিমেন্ট করে গিয়েছিলেন স্বামীকে নিয়ে। তাদের অক্টেট সংজ্ঞাও ভিন্ন। এজন্য রাষ্ট্র থেকে ক্ষুদ্র আমি পর্যন্ত "কোনো কিছু" সংখ্যার ভিত্তিতে ডিফাইন করা কতটা গ্রহণ যোগ্য? তাহলে বোসন, ফার্মিয়ন এসবের অস্তিত্বকে ভর ও গতিবেগে ফেলে আমরা মূল্য নির্ধারণ করতে বসিনি কেন?
আমাদের সংখ্যতত্ত্ব তখনই মহামারী ধারণ করে, যখন আপনি স্ট্যাটাস ক্রাইসিসে ভোগা শুরু করেন।
ধারণা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতের পৃথিবী ধ্বংসের জন্য অসুখ বিসুখ দায়ি থাকবে না। দায়ি থাকবে স্ট্যাটাস ক্রাইসিস। আপনি নিজেকে উন্নত করতে গিয়ে সংখ্যা ভিত্তিক যুদ্ধে লিপ্ত হবে।
অতীতে ডাচরা ভূখণ্ড দখলের দিকে নজর দিয়েছিল। ইংরেজরা ভূখণ্ড দখল আইডিয়া বানচাল করে দিয়ে নতুন আইডিয়া নিয়ে আসে মিড টুয়েন্টিজে, বাজার দখল কন্সেপ্ট। তারা ভূখণ্ড জুড়ে আর রাজত্ব বিস্তার করতে চায়নি, এটা তাদের উদারতা নয়, এটা ছিল সংখ্যাতত্ত্বের পরবর্তী সংষ্করণ।
আর বর্তমানে গুগল বা ফেসবুক যেটা করছে, আপনাকেই পণ্য বানিয়ে সংখ্যাতত্ত্বের আরো আপার গ্রেডে উঠে এসেছে। তারা মস্তিষ্ক দখল করছে।
ভাল করে তাকালেই দেখা যায়, অর্থ এখানে কেবল একটা পরিচালক। কিন্তু মানুষ কোন জিনিসটার দিকে তাকাচ্ছে এখন? লিভিং স্ট্যান্ডার্ড। আমাদের পরবর্তী দখল যুদ্ধ যেটা নিয়ে বাঁধতে যাচ্ছে তৃতীয় বিশ্ব থেকে শুরু করে প্রথম বিশ্ব পর্যন্ত- লিভিং স্ট্যান্ডার্ড সর্বোচ্চ পর্যায়ে তুলে আনার যুদ্ধ। যেখানে সংখ্যাতত্ত্ব ভয়াবহ আকার ধারণ করবে ফ্রাস্ট্রেশন, সিস্টেম কলাপ্সের মাধ্যমে। মানুষের প্রধান ক্যান্সার থাকবে হতাশা। অর্থের জন্য নয়। পজিশনের জন্য। একজন উদ্যোক্তা কখনো সংখ্যাতত্ত্বের দিকে যান না, যদি বলেও থাকেন, তিনি ডাহা মিথ্যাবাদী। তিনি পজিশন তত্ত্বে বিশ্বাসী। তিনি গ্লোবাল মার্কেটে নয়, মানুষের মাথার ভেতর কোন পজিশনে অবস্থান করছেন, সেটা থেকে আরেকটু উন্নত করা যায় কিনা, এই জিনিস নিয়ে লেগে থাকেন। থার্ড পার্টি উৎপাদকও একই বিশ্বাসধারায় পড়েন, উনি মঙ্গল থেকে এসে পড়েননি। যদি সংখ্যাতত্ত্বে বিশ্বাসী হতেন, তাহলে হয় সবাই মাইক্রোসফট, এমাজন কিংবা গুগলের মত সম অবস্থান তৈরি করতো যুদ্ধ বাধিয়ে হলেও, গলিতে, পাড়াতে মুদির দোকানদার বলে কিছু থাকতো না। কি ভাবছেন? পুঁজিই নাই তো মুদি না হয়ে কি হবে? ভুল। এটা আপনার চিন্তাধারা যে আপনি কোন বিশ্বাসে হাঁটছেন। অর্থ উৎপাদনের বহু কন্সেপ্ট রয়েছে। মগজ উন্নয়নের কন্সেপ্ট আসলেই সীমিত। দাউদ ইব্রাহীম কিংবা জজ ওয়াশিংটন হাওয়া থেকেই প্রকট হয়েছেন। বিরাট পুঁজি নিয়ে নামেন নি কেউ। এবং তারা ভিন্ন রাস্তায় মানুষের মাইণ্ডের পজিশন তৈরি করে নিয়েছে।
মানুষের প্রধাণ আরাধ্য জিনিসগুলো কিন্তু অতীতেই বলে গেছেন অনেকে। নাম, যশ, খ্যাতি। একটা জায়গাতেও অর্থেই উল্লেখ নেই। সংখ্যাতত্ত্ব আমাদের সাইকোলজিক্যালি ক্রমশ পঙ্গুত্ত্বের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, যেটার একটা বাস্তব উদাহারণও কিন্তু আমাদের নিজেদের শিক্ষা ব্যাবস্থা। ভাল গোল্ডেন ফাইভ কি উন্নত চাকরির জন্য নিতে চাচ্ছে আমাদের বাচ্চারা বা তাদের অভিভাবকেরা? নাকি মাইণ্ড পজিশনিং'র জন্য ভেবে দেখেন। আমাদের স্ট্যাটাস ক্রাইসিস এতই তীব্র যে ঘুষ দিয়ে হোক, প্রশ্নপত্র ফাঁস করে হলেও এ প্লাস পেতে হবে। এখানে অর্থ কি দোষী? নাকি স্ট্যাটাস ক্রাইসিস যেটা সংখ্যাতত্ত্বের নতুন ধরণের ফাঁদ? ভবিষ্যতে যেটা আপনাকে চরম হতাশার দিকে ঠেলে দিচ্ছে ক্রমশ?
আসলেই কি ভবিষ্যৎ পৃথিবীর মহামারীর নামঃ হতাশা হতে যাচ্ছে না?

উদাহারণ সরূপঃ কিছুদিন আগে কাতার চারদিক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। সে সময় বেশ কিছুদিন অর্থের কোনো মূল্য ছিল না। দ্রব্যের যোগান বন্ধ হয়ে যাওয়াতে ক্যাশ ফ্লো থাকলেও মোটামুটি ভালই থ্রেট খেয়েছিল, অল্পের ওপর দিয়ে গেছে। যেটা সরাসরি একটা উদাহারণ যে অর্থ সকল চাহিদা পুরণ করে না। ব্যবস্থা করতে পারে, লাইফে স্বাচ্ছন্দ বড় জোর আনতে পারে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই মানুষের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে না। মানূষের ওপর যেটা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে, সেটা হচ্ছে ভয়। ভৌগলিক, রাজনৈতিক ভয়। স্ট্যাটাসের ভয়। অর্থ কেবল মাত্র একটা ক্যাটালিস্ট।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৬

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: এত বড় সারমর্ম!!!!!!!:(


মাঝেমধ্যে ইচ্ছে হয়, বনবাসে যামু...:(

২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩৬

নিথর শ্রাবণ শিহাব বলেছেন: প্যারা ভাঙ্গাটা ঠিকমত আসে নাই :প

৩| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: না, লেখাটা মনের মতো হয়নি।

৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:২৬

নিথর শ্রাবণ শিহাব বলেছেন: তবুও ধন্যবাদ পড়ার জন্য :)

৫| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:২৩

নতুন বলেছেন: মানুষ যদি নিজে সুখী হওয়া না শেখে তবে অবশ্যই সব রকমের ক্রাইসিসে ভুগবে।

৬| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৫

নিথর শ্রাবণ শিহাব বলেছেন: :) ধন্যবাদ আপনাকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.