![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মগজের অলিগলি হেঁটে বেড়ায় লোকটা।গোল গোল।ক্রমাগত।বাচ্চাটাকে আজকাল অর্গানিক দুধ খাওয়ায় সিফাতআপা।সেলফের সবচাইতে দামীদুধ।ওজন বাড়ছেনা কেন?আজ দুপুরবেলায় পেপারওয়ালার দাড়িপাল্লায় বসিয়েছিলো বাচ্চাটাকে।ছটাক বেড়েছে।বাহ!বেশ বেশ! এভাবে ওজন মেপে নিলে এক ধরনের স্বস্তি পায় সিফাতআপা। তবুও পোড়াদুধের গন্ধ আসে।সিফাত আপা শাড়ি পাল্টায়।ব্লাউজটা কি ছোট হয়ে গেছে?একটা হুক লাগছেনা যে!
সুপারমার্কেটে থেমে দড়ি ও অর্গানিক দুধ কেনে।এটা শীতকাল নয় তবুও নকশিকাঁথার গল্প রোদে শুকোতে দেয়।লোকটা ঘুর ঘুর করে।সিফাতআপার মাথা ঝিমঝিম করে। বাদামের খোসা ভেঙে বাদামিরঙ দেয়ালে টাঙাচ্ছে লোকটা। একটা টুল হবে? এই যে শুনছেন সিফাতআপা? ওদিকে যাবেন না। রেলিঙ নেই ওখানটায়!
ফ্যান ঝুলছে।ছাদ দুলছে।দুধপোড়া গন্ধ ছড়াচ্ছে।লোকটা কি এখনও নিচে দাড়িয়ে আছে? উঁকি দেয় সিফাতআপা।বাচ্চাটা ওকে দেখে ফিক করে হেসে দেয়।লোকটা হাত বাড়ায়। কোলে দেবে কিনা ভাবছে সিফাতআপা। সিঁড়িভেঙ্গে নিচে নামে ওরা।দড়িটা নাইলনের।শক্ত করে ধরে রাখলেও পিছলে যাচ্ছে বারবার।হাত ভিজে যাচ্ছে সিফাতআপা।চপচপে ঘাম।
ল্যাভেন্ডার পাউডার ছিটিয়ে পিঠে আদর দেয়।বাচ্চাটা খিল খিল হাসে। সিফাতআপা আঁচলে হাত মোছে।খালিপায়ে সিঁড়ি ভাঙ্গে। লোকটা মগজে ঘোরে সারাদিন।সিফাতআপা লোকটার কাছে যাবে কিনা ভাবছে।দারোয়ানকে পাঠাবে দড়ি ও বাচ্চাটা দিয়ে।লোকটা কোলে নেবেতো?
দুধপোড়া গন্ধ।তিনতলা থেকে এতো নিচে এলো কি করে? এটা বর্ষাকাল নয় তবুও বাচ্চার কাঁথা শুকোচ্ছে রান্নাঘরে।
দড়িতে ঝুলছে কাঁথা।ছোটবড় ফুলফলভালুকের গল্প দুলছে।সিলেন্ডারের গ্যাস ফুরিয়ে যাচ্ছে।সিঁড়িও ফুরিয়ে যাচ্ছে।দড়ি ফুরাচ্ছেনা।কমলা নাইলনের দড়ি।দারোয়ানের শুধু ঘুম পায়।এইতো লম্বা টুল এখানে।চারপাওয়ালা।লোকটা তবে টুলের খোঁজে এখানে কেন? সাদা ফুলহাতা শার্টের সঙ্গে বাদামি সোয়েটার।এটাতো শীতকাল নয়।লোকটার কি অসুখ করলো নাকি? বাদামিরঙ দেয়ালে টাঙাতে গিয়ে বুঝি সোয়েটারে ঢেলে দিয়েছে।
নাইলনের দড়িটা কি ম্যাচ করে ফ্যানের রঙের সাথে?
নারকেলকুরানি খুঁজে পায়নি সিফাতআপা।রান্না ঘরে অপেক্ষা করছে পারুলের মা।নারকেলদুধে গলদা চিংড়ির ডুবসাঁতার হবে আজ।ঝোলঝোল নয়।টিভিতে আন্নাহাজারীর মুখ।অনশনরত।টুল,চেয়ার নেই ওখানে।শাদাশাদা চাদরপাতা। আন্নাহাজারীর সাথে ওরা কারা? সুপারমার্কেটে নারকেলকুরানি খুঁজে পায়নি সিফাতআপা। পারুলের মা অনশনরত টেলিভিশনের পাশে গিয়ে বসে।এক কোপে নারকেল ভাঙে।বটিতে এখন কাটাকুটি করছে সে।বাচ্চাটা হামাগুড়ি দিতে শেখেনি।তাহলে বটির কাছে আসে কি করে মাঝে মাঝে? আকাশের দিকে তাক করা বটি।আকাশের দিকে তাক করা নাইলনের দড়িও।
বাচ্চাটা খালি গায়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ল্যাভেন্ডার পাউডার উড়ে যায়। লোকটা মগজে ঢুকে গেছে সিফাতআপার।ফ্যানের ক্যাচ ক্যাচ।বাচ্চা দুধ মুখে নেয় না। সুপারমার্কেট ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে।অর্গানিক দুধের ব্র্যান্ড পাল্টায় সিফাতআপার।শাড়িটাও পাল্টে ফেলে।বাচ্চাটা এতরাতে খিল খিল হাসে!সিফাতআপার ব্লাউজগুলো ছোট হয়ে যাচ্ছে।একে একে।অর্গানিক দুধ উবে যায়।চুলাবন্ধ কেন?রাতে কাঁথা ভিজে।দুমাস ধরে ব্লাউজও।
দুধশাদা নদী সিফাতআপার।দড়িটা কেমন কটকট তাকিয়ে থাকে সিফাতআপার দিকে!নাইলনের দড়িটার কি ফ্লোরোসেন্ট রঙ?
টেলিভিশন বন্ধ।লোকটা নিচে এখনো দাড়িয়ে।টুলটাও দাড়িয়ে।মগজে ঘুরঘুর অর্গেনিকদুধ। লোকটাও।ফ্যান ও দড়ি একসাথে মগজে ঘুরঘুর করে সিফাতআপার। বাদামিরঙের দেয়ালে লেপটে থাকতে সিফাতআপা।তাও নদী ভেসে যায়। আন্নাহাজারীর অনশন কাটেনা।আজকাল সুপারমার্কেটও ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে।
(প্রকাশিত : ২০১৩)
২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৪৮
নম্রতা বলেছেন: ধন্যবাদ কবি।
৩| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:২৭
ডানাহীন বলেছেন: অদ্ভুত
৪| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৫৫
নম্রতা বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৫
হাসান মাহবুব বলেছেন: পড়লাম। নেশা নেশা লেখা।