নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিক্ষিত হওয়ার অর্থটা কি ? যদি না অন্যায়ের সামনে দাঁড়িয়ে সত্যটা বলার সাহস বুকে না রাখতে পারি ? তাই আমার এই পথ চলা যেন হয় সত্যের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার।

নূর সালাম

নূর সালাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

" বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণঃ প্রতারণা নাকি ধর্ষণ ? "

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৪৬

আজকাল নারীঘটিত কেলেঙ্কারির সংবাদে অতি পরিচিত একটি শিরোনাম হচ্ছে " বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ"।
কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক নারী (বিয়ে বা অন্য কিছুর) প্রলোভনে পড়ে স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে এবং পরে সেটা না পেলে এসে ধর্ষণ মামলা করেন তা আমার কাছে একরকম হাস্যকর মনে হয়।
আপনার ভাবনা কি বলছে ? এক্ষেত্রে শুধু কি অভিযুক্ত পুরুষই দ্বায়ী
নাকি একসময়ে স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে যৌন সম্পর্ক স্থাপনকারী নারীটির ক্ষেত্রেও যথেষ্ট অপরাধ বিদ্যমান ?

আপনি কি মনে করেন, প্রলোভন ও ধর্ষণ শব্দ দুটি একই ?

অতি সাধারণ কাণ্ডজ্ঞান বলে “প্রলোভন” ও “ধর্ষণ” শব্দ দু’টি বিপরীতমুখী। ধর্ষণ হচ্ছে জোরপূর্বক কারও সাথে যৌনাচার করা। অন্যদিকে “প্রলোভন” শব্দটাতেই একটা আপসের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কারও সাথে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য কেউ কাউকে কখনও প্রলোভন দেখায় না। প্রলুব্ধ করার উদ্দেশ্যই মূলত অপর পক্ষকে আগ্রহী করার ইচ্ছা।
আর প্রলোভনে পড়ে কেউ যখন আপসে যৌন সম্পর্কে সম্মতি দেয় তখন আর জোর প্রয়োগের কোনও প্রশ্ন আসে না। এ ধরণের পরিস্থিতিতে ভিকটিম নিজেও জানবে যে এই ক্ষেত্রে বিয়ের বিষয়টি পুরোপুরি সুনিশ্চিত নয়, এখানে একটা অনিশ্চয়তা থেকেই যায়। কেউ নিশ্চয়ই মুখের কথায় অন্য কাউকে জমি-জমার দখল দিয়ে দেন না, নগদ অর্থ বুঝে নিয়ে তবেই সম্পদ হস্তান্তর করে থাকে। সুতরাং বিয়ের পূর্বে যদি কেউ যৌন সম্পর্কে সম্মতি দেন তবে তিনি হয় ঝুঁকি নিয়েই তা করেন অথবা তথাকথিত সামাজিক অানুষ্ঠানিকতায় তিনি শ্রদ্ধাশীল নন। সুতরাং তিনিও একই অপরাধে অপরাধী নন কি ?
তবে যে কোনও রকম প্রতিশ্রুতি কাউকে দিয়ে তা ভঙ্গ করাটা নিশ্চিতভাবেই ভীষণ অন্যায় ও প্রতারণা। আর যেকোনো প্রতারণাই একটা ক্রিমিনাল অফেন্স। সেক্ষেত্রে মামলা হতেই পারে। তবে সে মামলাটি ধর্ষণ মামলা না হয়ে প্রতারণা মামলা হওয়াই অধিক যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।
প্রলোভন শব্দটি নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন না থাকলে আসুন, ধর্ষণ নিয়ে আলোচনা করি।

ধর্ষণ কাকে বলে?

বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারা ধর্ষণের সংজ্ঞা দেয়। সেটা অনুযায়ী পাঁচটি অবস্থায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলা যায়। সেগুলো হলো—
১. নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে
২. নারীর সম্মতি ছাড়া
৩. মৃত্যু বা জখমের ভয় দেখিয়ে
৪. নারীর সম্মতি নিয়েই, কিন্তু পুরুষটি জানে যে সে ওই নারীর স্বামী নয় এবং পুরুষটি তাও জানে, নারীটি তাকে এমন একজন পুরুষ বলে ভুল করেছে যে পুরুষটির সঙ্গে তার আইনসঙ্গতভাবে বিয়ে হয়েছে বা বিবাহিত বলে সে বিশ্বাস করে।
৫. নারীর সম্মতিসহ কিংবা সম্মতি ছাড়া যদি সে নারীর বয়স ১৬ বছরের কম হয়। অর্থাৎ ১৬ বছরের চেয়ে কম বয়সী মেয়ের সঙ্গে তার মতে বা অমতে যেকোনো ভাবে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে তা ধর্ষণ বলে গণ্য হবে।

এই আইনের কোথাও ছিলো না, কাউকে কোনো কিছুর প্রলোভন দেখিয়ে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে, পরে সেটা পূর্ণ না হলে সেটাকে ধর্ষণ বলা হবে।
কিন্তু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০, ধারা ৯(১) এর মতে-
যদি কোন পুরুষ বিবাহ বন্ধন ব্যতীত ১. [ষোল বৎসরের] অধিক বয়সের কোন নারীর সহিত তাহার সম্মতি ব্যতিরেকে বা ভীতি প্রদর্শন বা প্রতারণামূলকভাবে তাহার সম্মতি আদায় করিয়া, অথবা ২. [ষোল বৎসরের] কম বয়সের কোন নারীর সহিত তাহার সম্মতিসহ বা সম্মতি ব্যতিরেকে যৌন সঙ্গম করেন, তাহা হইলে তিনি উক্ত নারীকে ধর্ষণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।
আইনটি নারীদের সুরক্ষা দেওয়ার নিমিত্তে করা হলে বর্তমানে অনেক মানুষই এই আইনটির অপব্যবহার করছেন। উক্ত আইনের ভিত্তিতে আজকাল অনেকেই এধরনের মামলায় উৎসাহী হচ্ছে। এবং প্রতিনিয়তই “বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ” এরকম অদ্ভুত ও হাস্যকর একটি সংবাদ আমাদের সামনে উঠে আসছে।
আমার মনে হয় এধরনের মামলার মধ্যে তিনটির যেকোনো একটি উদ্দেশ্য থাকতে পারে। প্রথমত, অভিযুক্তের নিকট হতে আর্থিক সুবিধা লাভ। দ্বিতীয়ত, সামাজিক চাপে ফেলে বিয়ের সম্ভাবনার পথ তৈরি। তৃতীয়ত, নিতান্ত প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে অভিযুক্তের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করা।
অভিযুক্ত যদি সম্ভ্রান্ত পরিবারের কেউ হয় সেই ক্ষেত্রে বাদীর সুফল বেশি। আর যদি বিখ্যাত কোনও ব্যক্তিত্ব হয় তাহলে তো পোয়া বারো। কোনও একটি মামলায় কোনোভাবে বিখ্যাত কোনও ব্যক্তিকে জড়াতে পারলেই সেক্ষেত্রে মিডিয়া হয়ে ওঠে অতি উৎসাহী। আর মিডিয়ার উৎসাহ মানেই পাবলিসিটি। আর জনগণের কাছে সেই খবরটি হয়ে উঠে অতি মুখরোচক খাবার। আবেগের জায়গা।
সুতরাং " নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০, ধারা ৯(১) " আইনটি নিয়ে ভাববার সময় এসেছে বলে আমি মনে করি ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৫

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আজকাল নারীঘটিত কেলেঙ্কারির সংবাদে অতি পরিচিত একটি শিরোনাম হচ্ছে " বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ"।
কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক নারী (বিয়ে বা অন্য কিছুর) প্রলোভনে পড়ে স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে এবং পরে সেটা না পেলে এসে ধর্ষণ মামলা করেন তা আমার কাছে একরকম হাস্যকর মনে হয়।
আপনার ভাবনা কি বলছে ? এক্ষেত্রে শুধু কি অভিযুক্ত পুরুষই দ্বায়ী
নাকি একসময়ে স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে যৌন সম্পর্ক স্থাপনকারী নারীটির ক্ষেত্রেও যথেষ্ট অপরাধ বিদ্যমান ?

আমি বলব বিড়ালের সামনে যদি কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে শুটকি মেলে রাখে বিড়াতো সেটা সাবাড় করবেই।এতে বিড়লকে কেউ দায়ী করলে ভূল হবে।

২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:১৫

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: " বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণঃ প্রতারণা নাকি ধর্ষণ ? "

অবস্যই প্রতারণা। তবে নট ধর্ষন।

৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: এই প্রতারনা গত এক যুগ ধরে খুব বেশী বাড়ছে।

৪| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৬

ব্লু হোয়েল বলেছেন:
সেঞ্চুরিয়ানরা পদ পদবি পায় নতুন করে অনেকেই সেঞ্চুরির স্বপ্নে বিভোর হয় । ধিক এই প্রতারকদের প্রতি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.