নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
খ্যাতনামা আধুনিক রুশ সাহিত্যের স্থপতি কবি আলেক্সান্দর সের্গেয়েভিচ পুশকিন, যাকে রাশিয়ান প্রধান জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়। রাশিয়ার শেক্সপীয়র খ্যাত আলেক্সান্দর পুশকিন প্রেম বিষয়ক কবি হিসাবে জগদ্বিখ্যাত। সমসাময়িককালে তিনি শুধু রাশিয়ান হিসাবেই নয়, বরং সমগ্র পৃথিবীতে অত্যন্ত শক্তিমান কবি হিসাবে স্বীকৃত। রুশ সাহিত্যে পুশকিনের আসনের সঙ্গে তুলনীয় ইংরেজি সাহিত্যে শেক্সপীয়র, জার্মন সাহিত্যে গোয়টে ও বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের আসন। কথাসাহিত্যিক ও সমালেচক ভ্লাদিমির নাবোকভ বলেছেন, "সব কটি রুশ সম্রাটের রাজত্বকাল মেলালেও পুশকিনের কবিতার একটি পঙক্তিরও যোগ্য হবে না"। মূলতঃ কবি হলেও তিনি নাটক, গল্প, মহাকাব্য, উপন্যাসও লিখেছেন। মাত্র আটত্রিশ বৎসর আয়ুষ্কালে তিনি রুশ ভাষা ও সাহিত্যে একাধারে আধুনিক কাব্যভাষা, বাস্তববাদ, গদ্যকাহিনী, ট্রাজেডি, কাব্যনাট্য প্রভৃতির জনক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছেন। পুশকিন ছিলেন রাজতন্ত্র বিরোধী। রাশিয়ান রাজতন্ত্রে জারের রাজনৈতিক পুলিশের কঠোর প্রহরায় প্রকাশনা যখন কঠিন ছিল, তখনই নিজের জনপ্রিয়তম নাটক বরিস গদুনভ রচনা করেন। পুশকিন এতই জনপ্রিয় ছিলেন যে সম্রাট প্রকাশ্যে কিছু করার সাহস পাননি, কিন্তু আমৃত্য তার পিছনে গুপ্তচর লাগিয়ে রেখেছিলেন। এমনকি গোপনে কবির ব্যক্তিগত দাম্পত্য সম্পর্কের চিঠিপত্রও খুলে খুলে পড়ত। তাকে নাস্তিক হওয়ার জন্য নির্বাসন দণ্ডও ভোগ করতে হয়েছিল কিছুকাল। রাশিয়ান রোমান্টিজম এর প্রদর্শক হিসাবে স্বীকৃত পুশকিনের ২১৯তম জন্মদিন আজ। ১৭৯৯ সালের আজকের দিনে তিনি রাশিয়ার মস্কোতে জন্মগ্রহন করেন। আধুনিক রুশ সাহিত্যের জনক আলেক্সান্দর সের্গেয়েভিচ পুশকিনের জন্মদিনে আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা।
(শিশু আলেক্সান্দর সের্গেয়েভিচ পুশকিন)
আআলেক্সান্দর সের্গেয়েভিচ পুশকিন ১৭৯৯ সালের ২৬ মে জার শাসিত রাশিয়ার মস্কোতে জন্মগ্রহন করেন। তার বাবা সের্গিয়েই-এর পরিবার ছিল অন্তত ছ’শ বছরের পুরনো রুশ প্রাচীন অভিজাত বংশগুলোর একটি। আর মা ছিলেন সম্রাট পিওৎর ভেলিকি- যাকে আমরা পিটার দ্য গ্রেট হিসেবে জানি, তার অতি ঘনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য রাজন্য আব্রাহম গানিবালের দৌহিত্রী। তদনীন্তন খান্দানি পরিবারের ঐতিহ্য অনুযায়ী বাড়িতে ফরাশি গর্ভনেস রাখা হয়েছিল পুশকিনের জন্য। বাড়ির ফাইফরমাশ খাটার জন্য ছিল জার্মন চাকরবাকর, ইংরেজ পরিচারিকাও ছিল। আর ছিলেন আরিনা নামের দাই মা। যার মুখের ঘুমপাড়ানি ছড়া, গল্প ইত্যাদি শুনে শুনে সাধারণ রুশী জনজীবন ও মানুষজনের ভাষা বিষয়ে তিনি সচেতন হয়ে ওঠেন। জীবনীকারগণ বলেছেন, পুশকিন ফরাশি জানতেন ফরাশিদের মতোই, জার্মন, ইতালীয় ও ইংরেজি ভাষা থেকে অনুবাদ করতে পারতেন, গ্রিক ও লাতিন ধ্রুপদী সাহিত্য উত্তমরূপে পাঠ করেছিলেন এবং সমকালীন ইউরোপীয় ও মার্কিন কবি সাহিত্যিকদের রচনার সঙ্গে পরিচিত ছিলেন। পুশকিনের কবি প্রতিভার উন্মেষ ঘটে কিশোর বয়সেই। মাত্র পনের বছর বয়সে প্রথম তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়। রুসলান ই লুদমিনা (রুসসান ও লুদমিলা) নামে কাহিনীকাব্য ১৮২০ সালে প্রকাশিত হলে তখন থেকে উদায়মান যুগান্তকারী কবি হিসেবে পূর্বসূরী কবিকুলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরবর্তী দশ বছর নানা ধরনের কবিতা রচনা, কবিতা ও কাব্যভাষা নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা ও উদ্ভাবনায় ব্যাপৃত থাকেন। পরে তাঁর মন যায় গদ্য রচনার দিকে- গদ্যকাহিনী নির্মাণ, ইতিহাস সম্পর্কিত গবেষণা ইত্যাদি। তাঁর লেখা রচনার প্রায় সবই ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। এছাড়া ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ, জার্মান, পোলিশসহ আরো অনেক ভাষায় তাঁর লেখা ভাষান্তরিত, অনূদিত হয়েছে। অনুবাদ করা শক্ত হলেও পুশকিনের রচনা পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হতেই থাকবে। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাসের নাম ‘ইয়েভেজেনি ওনেজিন’। উপন্যাসটি রুশ সাহিত্যের একটি মাইল স্টোন হিসেবে চিহ্নিত। এই উপন্যাসে তিনি সর্বপ্রথম বাস্তব কাহিনী-ভিত্তিক উপন্যাস রচনার দিক নির্দেশনা প্রদর্শন করেন। এ কারণে পুশকিনকে আধুনিক রুশ সাহিত্যের স্থপতি তথা প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়। ১৮১৪ খ্রীষ্টাব্দে প্রকাশিত হয় ‘ম্যাসেঞ্জার অব ইউরোপ’ নামে কবিতার বই। তাঁর আরো একটি উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ ‘রাশিয়ান অ্যান্ড লুইডম্যান’। আলেক্সান্দর পুশকিনের বড় বৈশিষ্ট্য ছিলো বিশ্বসাহিত্যের উপর তাঁর প্রচন্ড দখল। তিনি রাশিয়ান কবিতা বিশ্ব দরবারে যথার্থরূপে হাজির করেছেন। পুশকিন এর সময়কে রাশিয়ান কবিতার স্বর্ণসময় বলা হয়। রাশিয়ার তখন ছিলো রাজতন্ত্র। পুশকিন ছিলেন রাজতন্ত্র বিরোধী। রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণে পুশকিনকে সেন্ট পিটার্সবুর্গ থেকে বন্দী করে নির্বাসনে পাঠানো হয় দক্ষিণ রাশিয়ার একটি দুর্গম অঞ্চলে। রাশান নাট্যকার হিসাবে অ্যান্তন চেখভ সর্বসেরা হলেও পুশকিন এর নাটকগুলোও সমাদৃত। তিনি সাংবাদিকতাও করেছেন এবং তার সাংবাদিকতার বিষয় ছিল সাহিত্য। রুশ ভাষায় তাঁর যে সংবাদপত্র তিনি সম্পাদনা করতেন তার বাংলা নাম হতে পারে সমসাময়িক সাহিত্য।
পুশকিনের অসংখ্য কবিতা তরুণদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। রাশিয়ান রোমান্টিজম এর প্রদর্শক হিসাবে স্বীকৃত পুশকিন এর “আমি তোমাকে ভালবাসতাম, সম্ভবত এখনও ভালবাসি” I loved you, and I probably still do কবিতাটি একটি শক্তিশালী ভালবাসার কবিতা হিসাবে সমাদৃত। এ কবিতায় একজন প্রেমিকাকে ভালবাসার কথা বলেছেন। যাকে প্রেমিক ভালবাসতেন, দূরে সরে যাবার পরও ভালবাসেন। কখনও কখনও তিনি প্রেমিকার ভালবাসার আবেগনাভুতি স্মরণ করেন। কিন্তু তিনি একইসঙ্গে উল্লেখ করেন যে তার ভালবাসা প্রেমিকার জন্য বিড়ম্বনা বয়ে আনবে না। কবি তার প্রেমিকার জন্য কোন দুঃখ/যন্ত্রণার কারণ হতে চান না। কবি কোন আশা ছাড়াই তার প্রেমিকাকে ভালবাসতেন। এতে ঈর্ষা ছিল, সঙ্কোচ ছিল, কিন্তু আশা ছিল না। এ ভালবাসা ছিল অত্যন্ত শক্ত ও সত্য। যদি ঈশ্বর দয়া করেন তবে আবারও ভালবাসা হতে পারে।
I LOVED YOU AND I PROBABLY STILL DO
কবিতাটি লিখেছেন Alexander Sergeyevich Pushkin
ইংরেজি অনুবাদ করেছেন Genia Gurarie
I loved you, and I probably still do,
And for a while the feeling may remain...
But let my love no longer trouble you,
I do not wish to cause you any pain.
I loved you; and the hopelessness I knew,
The jealousy, the shyness - though in vain -
Made up a love so tender and so true
As may God grant you to be loved again.
ভালবাসতাম কবিতাটির বঙ্গানুবাদঃ
ভালবাসতামঃ আলেক্সান্দর পুশকিন
তোমাকে ভালবাসতাম, বোধকরি এখনো বাসি
সে দীপশিখাটি নিভেনি আজো, অবশ্য
এটা আমার ভেতর এখন এতো শান্তভাবে জ্বলছে যে
তোমার বিব্রত বোধ করার কোনো কারণ নেই।
নীরবে প্রতিদানহীনভাবে তোমাকে চেয়েছিলাম
খুব ঈর্ষা হতো কখনো, কখনো শরমিন্দা,
ঈশ্বর যেন তোমাকে এমন একজন মিলিয়ে দেন
যে তোমাকে ভালবাসবে ঠিক আমারই মতো
সন্তর্পণে ও বিশ্বস্ততায়।
পুশকিনের ব্যক্তিগত জীবন খুব সুখের ছিল না। তিনি বিবাহ করেছিলেন নাতালিয়া ইভানভনা গনচারভা নামের এক ডাকসাইটে বহুবল্লভা সুন্দরীকে। প্রাক বৈবাহিক দিনগুলোয় কবির বোহিমীয় জীবন, পানাসক্তি ও লাম্পট্য ছিল সুবিদিত। কিন্তু বিবাহোত্তর কালে তিনি সংসারী, পত্নীগতপ্রাণ, সুখী হতে চেয়েছিলেন। সন্তানও হয়েছিল কয়েকটি। কিন্তু বিধিলিপি খণ্ডাবে কে? জর্জ দঁত্যা নামের জনৈক ফরাশি কবি-স্ত্রীর সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠতা পাকিয়ে তুললেন যে নিজের সম্মান রক্ষার জন্য ভদ্রলোককে ডুয়েলে আহ্বান না করে পুশকিনের গত্যন্তর থাকল না। প্রখর আত্মসম্মান বোধসম্পন্ন পুশকিন ২৯টি দ্বন্দ্বযুদ্ধে লড়েছিলেন। ১৮৩৭ সালে ধোপা খানার খালের ধারে বারো নম্বর বাড়ীর উঠোনে ফরাসি সামরিক কর্মকর্তা ও রাজনীতিক জর্জ চার্লস ডি হিপোরেনের সঙ্গে লড়তে গিয়ে মারাত্মক আহত হন পুশকিন। জানা্ যায় হিপোরেন কবিপত্নী নাতালিয়া পুশকিনাকে বলাতৎকার করতে চেয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় ১৮৩৭ সালের ০৬ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৩৮ বছর বয়সে রাশিয়ার সবচেয়ে খ্যাতনামা কবি আলেক্সান্দর সের্গেয়েভিচ পুশকিন তার সেন্ট-পিটার্সবার্গের মইকা সড়কের নিজ বাস ভবনে পরলোক গমন করেন। সেই থেকে আলেক্সান্দার পুশকিনের স্মরণে পুরো রাশিয়া জুড়ে তাঁর মৃত্যুদিবস পালিত হয়। আলেক্সান্দর সের্গেয়েভিচ পুশকিন অকালে মারা গেলেও আজো তিনি আধুনিক রুশ সাহিত্যের জনক বলে স্বীকৃত। শুধু রাশিয়ায় নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে আলেক্সান্দর পুশকিনের প্রায় ২০০ স্মৃতিমূর্তি আছে। রাশিয়ায় প্রধান জাতীয় কবি আলেক্সান্দর পুশকিনের আজ ২১৯তম জন্মবার্ষিকী। রাশিয়ার শেক্সপীয়র নামে খ্যাত আধুনিক রুশ সাহিত্যের স্থপতি আলেক্সান্দর পুশকিনের জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।
আলেক্সান্দর পুশকিন সম্পর্কে আরো জানতে ক্লিক করুন
২৬ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:১৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ চৌধুরী ভাই
বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি
পুশকিনের জন্মবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা
প্রদানের জন্য। ভালো থাকবেন।
২| ২৬ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:২৪
সুদীপ কুমার বলেছেন: ভালোলাগা জানালাম।অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও তথ্য বহুল উপস্থাপনার জন্য।
২৬ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:৫৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ সুদীপ'দা
আমার ব্লগে স্বাগতম।
প্রীত হলাম আপনার চমৎকার মন্তব্যে।
সাথে থাকবেন আগামীতে সেই প্রত্যাশায়।
৩| ২৬ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৫১
জুন বলেছেন: প্রিয় লেখক পুশকিন । তার বই গুলোর মধ্যে ক্যাপ্টেনের মেয়ে আর বেলকিনের গল্পের কথা ভুলতে পারিনা । তার প্রতি রইলো শ্রদ্ধা ।
২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে জুন
প্রিয় কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য
৪| ২৬ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৫৭
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: পুশকিনের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। সুন্দর পোস্ট।
২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আনোয়ার ভাই
বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি
পুশকিনের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য।
৫| ২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:১১
কাইকর বলেছেন: ভাল লাগলো। সুন্দর পোস্ট
২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ কাইকর
লেখাটি পড়ার জন্য।
ভালো থাকবেন।
৬| ২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:১৮
ইব্রাহীম আই কে বলেছেন: খুব সাবলীল ভাবে পড়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু যখন "আমি তোমাকে ভালবাসতাম, সম্ভবত এখনো ভালবাসি" এই লাইনটা পড়লাম হঠাৎ থমকে গেলাম। হয়তো শিরোনামের সাথে আমার প্রেক্ষিতে কিছুটা বাস্তবতাও ছিল। বেশি কিছু এখন বলতে পারতেছিনা, তবে এটুকুই বলবঃ প্রভু যাতে তোমার সাথে এমন কারোর মিল ঘটাক, যে আমরণ তোমাকে আমার মত ভালোবেসে যাবে!
২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আহা্ কি নির্দোশ ভালোবাসা,
ভালোবাসাতে এমনই হয়।
না পাওয়ার ক্ষোভে কাউকে
নষ্ট করা নয়।
ধন্যবাদ ইব্রাহীম ভাই
স্বাগতম আমার ব্লগে
সাথে থাকবেন সেই
প্রত্যাশা রইলো।
৭| ২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:১৯
ইব্রাহীম আই কে বলেছেন: আচ্ছা কবিতাটা কি এখানেই শেষ, না আরো আছে? কাইন্ডলি জানাবেন।
২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ ইব্রাহীম ভাই
পুনরায় ফিরে আসার জন্য।
"হ্যাঁ কবিতাটি ওখানেই শেষ,
যেন শেষ হয়েও হ্ইলোনা শেষ,
রয়ে গেছে প্রেমিকের হৃদয় জুড়ে
শান্তির পরশ মাখা মধুর আবেশ"
৮| ২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:২২
অচেনা হৃদি বলেছেন: ভাইয়া, আপনি ভালো লেখক এবং অভিজ্ঞ ব্লগার । ইতিমধ্যে আমার অপরিপক্ব ব্লগটি আপনি দেখে এসেছেন, অনেক ধন্যবাদ । আমার পোস্টে সবসময় আপনার বুদ্ধিদীপ্ত পদচারণা থাকবে এই আশা করছি ।
২৬ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অসংখ্য ধন্যবাদ হৃদি
খুব খুশি হলাম আপনার স্তববাক্যে।
আশা করি আপনার সুন্দর লেখনীতে
পাঠক আকৃষ্ট হয়ে আপনার ব্লগ বাড়ি
মুখরিত করে তুলবে।
৯| ২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: তার অনেক লেখা আমি পড়েছি। মহান একজন সাহিত্যিক।
২৬ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে রাজীব ভাই
সব লেখায় আপনাকে সাথে পাই
কি করে আপনাকে এড়িয়ে যাই,
সাথে থাকার মিনতি জানাই।
১০| ২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
উনার বিখ্যাত একটি লেখা, "সোনালী মাছ"।
২৭ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:১৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: লেখাটি "সোনালী মাছ" নয়.
ওটি মৎস শিকারী ও সোনালী মাছ"
আপনার জন্য পুশকিনের
Fisherman and the Golden Fish এর কিয়দাংশ
শুরুটা এমন<
There once lived an old man and his good-wife on the shore of the deep blue ocean; They lived in a tumble-down hovel for thirty-three summers and winters. The old man used to fish for his living, and his wife spun yarn on her distaff. He once cast his net in the ocean, and pulled it up with mud from the bottom; He again cast his net in the ocean, and this time caught nothing but seaweed; When he cast his net for the third time, one fish was all that he landed, No common fish, though, but a goldfish. Now the goldfish began to implore him, and it spoke like a real human being:
Goldfish Speaks
"Put me back, old man, into the ocean.
I will pay you a right royal ransom,
I will give you whatever you ask me."
বঙ্গানুবাদ করলে এমন দাড়াবেঃ
অনেক অনেক দিন আগের কথা ...রাশিয়ার এক অজ গাঁয়ের একটি ভাঙা কুঁড়েতে বাস করত এক বুড়ো আর এক বুড়ি । সংসারে অভাব-অনটন ছিল তাদের নিত্যসঙ্গী। কুঁড়ের পিছনে বনপাহাড়। সেই বনপাহাড় পেরুলেই অথই নীল সাগর। বুড়ো প্রতিদিনই জাল নিয়ে নীল সাগরে মাছ ধরতে যেত। মাছ ধরে হাটে বিক্রি করত। এভাবে বুড়োবুড়ি কোনওমতে টিকে ছিল।
একদিন।
ভোরবেলায় বুড়ো সৈকতে দাঁড়িয়ে নীল সাগরে জাল ফেলেছে। কিছুক্ষণ পর জাল বেশ ভারি মনে হল। আশ্চর্য! এরকম তো এর আগে কখনও হয়নি! জালে বড়সরো মাছ আটকালো নাকি। বুড়ো আপনমনে বলল। জাল এত ভারি যে টেনে তোলাই যাচ্ছে না । যাহোক। বহু কষ্টে সৈকতে জাল টেনে তুলল বুড়ো। জালে একটি সোনালি রঙের ছোট মাছ ছটফট করছে। আর কোনও মাছ নেই। বুড়ো দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
বুড়োকে অবাক করে দিয়ে মাছটি কথা বলে উঠল!
বলল, ও বুড়ো, ও বুড়ো। আমায় তুমি ধরো না, ধরো না। আমায় তুমি নীল সাগরে ফেলে দাও। আমি তোমার সব ইচ্ছে পূরণ করব। সত্যি করে বলছি।
জেলে বুড়োটা ছিল ভারী ভালোমানুষ। এই একটু বোকাসোকা আর কী। সে বলল: আমি আমার কিছু চাইনে বাপু। তোমায় আমি ছেড়ে দিলাম। তুমি মনের সুখে নীল সাগরে সাঁতার কাটো গে যাও।
এই বলে বুড়ো ছোট্ট সোনালি মাছটিকে নীল সাগরে ছেড়ে দিল।
তারপর জাল গুটিয়ে বাড়ি ফিরে এল।
বুড়োকে দেখেই খেঁকিয়ে উঠল বুড়ি, আজ ক’টা মাছ পেলে শুনি?
বুড়ো বলল, না রে বুড়ি। আজ মাছ-টাস তেমন পাইনি।
পাওনি! সে কী! বলে বুড়ি চিৎকার করে কাঁদতে লাগল। হায়, ঈশ্বর। আজ না-খেয়ে থাকতে হবে । ঘরে যে আজ রুটিও নেই।
বুড়িকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্যই হয়তো বুড়ো বলল, আজ জালে একখানি ছোট সোনালি মাছ উঠেছিল । ছেড়ে দিয়েছি।
ছেড়ে দিয়েছ!
হ্যাঁ ছেড়ে দিলাম। ওইটুকুন মাছ। বেচে ক’টাকাই বা পাব।
বুড়ি এবার কান্না থামিয়ে বুড়োর দিকে তীব্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল। যেন পুড়িয়ে ছাই করে দেবে।
বুড়ো বলল, আজ কি কান্ড হয়েছে জান? সোনালি মাছটি মানুষের ভাষা জানে। আমাকে বলল, আমায় ধরো না ধরো না। আমায় নীল সাগরে যেতে দাও। আমি তোমায় সাহায্য করব। তোমার ইচ্ছে পূরণ করব।
বুড়োর কথা শুনে বুড়ি রেগে উঠল। চেঁচিয়ে বলতে লাগল, মাছ তোমার ইচ্ছে পূরণ করবে বলল। তারপরও মাছের কাছে কিছু চাইলে না। ঘরে রুটি নেই। তুমি রুটি অন্তত চাইতে পারতে।
বুড়ি গজগজ করতেই লাগল।
বুড়ির গজগজানি বুড়োর সহ্য হয় না।
সে নীল সাগরের দিকে যেতে লাগল। সোনালি মাছের কাছে রুটি চাইবে।
সৈকতে পৌঁছে চিৎকার করে বুড়ো বলল, ও মাছ, ও মাছ। আমার দিকে মুখ করে তুমি তোমার লেজের ওপর দাঁড়াও না।
সোনালি মাছটি সাঁতরে সৈকতে এল।
তারপর জিজ্ঞেস করল, কি হল বুড়ো? তুমি আমায় ডাকছ কেন?
বুড়ো বলল, তুমি তখন আমায় বললে না যে তুমি আমার ইচ্ছে পূরণ করবে?
হ্যাঁ। বলেছি তো। তা, এখন তোমার কি ইচ্ছে হচ্ছে শুনি?
বুড়ো বলল, আমার বুড়ি আমার উপর ভয়ানক ক্ষেপেছে। আমি তোমার সাহায্য নিইনি বলে আমার ওপর খুব ঝাল ঝারছে।
আহা। তুমি আমার কাছে কি চাও তাই বল না কেন?
বুড়ো তাড়াতাড়ি বলল, আমার ঘরে রুটি নেই। তুমি কি আমায় একখানা রুটি দিতে পার?
সোনালি মাছ বলল, ও, এই কথা। তা তুমি এখন ঘরে যাও বুড়ো। তারপর প্রার্থনা কর। দেখবে যে ঘরে রুটি আছে।
বুড়ো ঘরে এল।
বুড়িকে জিজ্ঞেস করল, ঘরে কি রুটি আছে?
বুড়ি বলল, হ্যাঁ, ঘরে অনেক রুটি আছে। কিন্তু,-
কিন্তু, কি? বুড়ো অবাক।
আমাদের কাপড় ধোয়ার পাত্র আছে না?
হ্যাঁ।
সেটি ভেঙে গেছে। তুমি আবার মাছের কাছে যাও। একখানি নতুন কাপড় ধোয়ার পাত্র নিয়ে এসো।
কি আর করা। কাপড় ধোয়ার পাত্র চাইতে বুড়ো আবার নীল সাগরের পাড়ে এল।
সৈকতে চিৎকার করে বলল, ও মাছ, ও মাছ। আমার দিকে মুখ করে তুমি তোমার লেজের ওপর দাঁড়াও না।
সোনালি মাছটি সাঁতরে সৈকতে এল। তারপর জিজ্ঞেস করল, আবার কি হল বুড়ো?
তোমার কাছে সাহায্য চাইতে এসেছি।
বেশ। বল এবার তুমি কি চাও?
আমাদের কাপড় ধোয়ার পাত্রটি ভেঙে গেছে। বুড়ি এখন নতুন এটি কাপড় ধোয়ার পাত্র চাইছে।
সোনালি মাছ বলল, কাপড় ধোয়ার পাত্র পাবে। তার আগে ঘরে যাও। তারপর প্রার্থনা করো।
বুড়ো ঘরে ফিরে এল।
ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই বুড়ি চেঁচিয়ে বলল, এরকম ভাঙা ঘরে কি মানুষ থাকে! তুমি এখুনি মাছের কাছে যাও। নতুন বাড়ি চাও। নতুন বাড়ি না দিলে আমার যে দিকে দু’চোখ যায় আমি চলে যাব।
বুড়ির চিল্লচিল্লি বুড়োর সহ্য হচ্ছিল না।
নতুন বাড়ি চাইতে নীল সাগরের পাড়ে এল বুড়ো ।
এসে চিৎকার করে বলল, ও মাছ, ও মাছ। আমার দিকে মুখ করে তুমি তোমার লেজের ওপর দাঁড়াও না।
সোনালি মাছটি সাঁতরে সৈকতে এল। তারপর জিজ্ঞেস করল, এবার কি হল বুড়ো?
বুড়ো বলল, আমার বুড়ি একখানি নতুন বাড়ির আব্দার করেছে। নতুন বাড়ি না পেলে যে দিকে দু’চোখ যায় চলে যাবে বলল।
সোনালি মাছ বলল, ঠিক আছে। তুমি এখন ঘরে ফিরে যাও। তারপর প্রার্থনা কর। একটি নতুন বাড়ি পাবে।
বাড়ির দিকে যেতে লাগল বুড়ো।
বাড়ি কাছাকাছি এসে থমকে দাঁড়ালো বুড়ো । ভাঙা কুঁড়ের জায়গার সুন্দর একখানি বাড়ি। একেবারে নতুন। পুরোটাই ওক কাঠের তৈরি। বাদামি রঙের দরজা। সবুজ রঙের জানালা। জানালার ওপরে সবুজ আঙুর লতা ছড়ানো। ছাদে একখানি টিনের তৈরি লাল রঙের মোরগ। বাতাসে ঘুরছে। টিনের মোরগ ছাড়াও ছাদের ওপর একটি কালো রঙের চিমনি।
বুড়োকে দেখেই বুড়ি দৌড়ে এল। বলল, শুধু ভালো বাড়ি হলেই কি সুখ হয় গো? গাঁয়ের লোকেরা আমায় পাত্তা দেবে ভেবেছ? কাতিউসারাও তো একখানা নতুন বাড়ি তুলল। তাহলে?
তাহলে তুমি কি চাও শুনি? বুড়ো মিনমিন করে বলল।
বুড়ি বলল, আমি কি চাই সেটা কি তোমায় মুখে বলে দিতে হবে?
আহা বলই না। না-বললে বুঝব কেমন করে? লোভী বুড়ির ওপর বুড়োর ভয়ানক বিরক্তি ধরে যাচ্ছিল।
বুড়ি বলল, আমি একজন সুশীল রমনী (মূল ইংরেজি সংস্করনে রয়েছে ‘ফাইন লেডি’) ... আমি একজন সুশীল রমনী হতে চাই! শোন, তুমি এখুনি সাগরপাড়ে যাও! আমার মনের ইচ্ছের কথা তোমার মাছসাধুকে বলগে যাও!
বুড়ো চিন্তিত মনে নীলসগারের পাড়ে এল। বুড়ির যে আরও ইচ্ছে পূরণ করতে হবে, তা বোঝাই যাচ্ছে। সোনালি মাছের কাছে আর কিছু চাইতে লজ্জ্বা করছে বুড়োর । কিন্তু, কি আর করা। বুড়িকে কোনওমতেই রাগানো চলবে না। তাহলে বুড়োর জীবন নরক হয়ে উঠবে। আর সত্যি বলতে কি - বুড়িকে খুশি করতে ভালোই লাগছে। চল্লিশ বছর হল একসঙ্গে ঘর-সংসার করেছে। বলতে গেলে তেমন কিছুই দিতে পারেনি বুড়িকে।
নীল সাগর পাড়ে এসে চিৎকার করে বুড়ো বলল, ও মাছ, ও মাছ। আমার দিকে মুখ করে তুমি তোমার লেজের ওপর দাঁড়াও না।
সোনালি মাছটি সাঁতরে সৈকতে এল।
তারপর জিজ্ঞেস করল, কি হল বুড়ো? আমায় ডাকছ কেন?
বুড়ো বেশ কুন্ঠিত হয়ে বলল, আমি সমস্যায় পড়েছি।
কি সমস্যা?
আমার বুড়ি সুশীল রমনী হতে চায়।
ঠিক আছে। বাড়ি ফিরে প্রার্থনা কর। দেখবে যে তোমার স্ত্রীটি সুশীল রমনীতে পরিনত হয়েছে।
বুড়ো বাড়ি ফিরে অবাক। আগের সেই ওক কাঠের তৈরি নতুন বাড়ি নেই। তার জায়গায় একটি পাথরের তৈরি বাড়ি। বড় । তিনতলা । বাড়ির সামনে বড় উঠান। একপাশে আস্তাবল। গৃহভৃত্যরা সব ব্যস্ত হয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে। রান্নাঘরে বাবুর্চি হরেক রকম রান্না করছে। আর বুড়ি বসে আছে একটা উঁচু চেয়ারে । পরনে ঝলমলে ব্রোকেডের পোশাক । ভৃত্যদের এটা-ওটা নির্দেশ দিচ্ছে।
বুড়ির চেয়ারের পিছনে কালো চামড়ার পোশাক পরা একটি শক্তপোক্ত ডাকাবুকো চেহারার মুশকো ধরনের ন্যাড়ামাথা যুবক দাঁড়িয়ে আছে। সেটিকে বুড়ি দেহরক্ষী বলে মনে হল।
বুড়ো এবার ক্ষেপে উঠে বলল, এখানে এসব কী হচ্ছে শুনি!
বুড়ি চেঁচিয়ে বলল, কি! তোর এত সাহস। আমাকে ধমক দিচ্ছিস। গুস্তাফ!
সেই ন্যাড়া মাথা মুশকো ডাকাবুকো যুবকটি এগিয়ে এল।
বুড়ো ঢোঁক গিলল। কি ব্যাপার? একে দিয়ে আমাকে মার খাওয়াবে নাকি। লোভী রমনীর পক্ষে সবই সম্ভব।
বুড়ি হাত তুলে কর্কসকন্ঠে বলল, যা! এই বুড়োকে আস্তাবলে নিয়ে যা। তারপর আচ্ছামতন চাবকা!
গুস্তাফ বুড়োর গলায় লোহার শিকল বেঁধে টানতে টানতে আস্তাবলে নিয়ে গেল । তারপর শপাং শপাং চাবুক কশাতে লাগল। গুনে গুনে চল্লিশবার চাবুক মারল। বুড়োর অচেতন রক্তাক্ত শরীর আস্তাবলের খড়ের ওপর পড়ে রইল।
জ্ঞান ফিরে এলে বুড়োকে ভৃত্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হল। প্রতিদিন তিনবেলা ঝাঁটা হাতে উঠান সাফ করতে হবে । খেতে হবে রান্নাঘরের মেঝেতে বসে । কাজে ভুলভাল হলেই আস্তাবলে নিয়ে গুস্থাফ চাবুক মারবে।
উঠান ঝাঁট দিতে দিতে মনে মনে জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যায় বুড়ো। আপনমনে বিড়বিড় করে বলে: ডাইনি বুড়ি! আমি ওকে সুখের জীবন দিলাম আর এখন আমাকে স্বামীর মর্যাদা দেয় না।
এদিকে সুশীল রমনী হয়ে থাকতে থাকতে ক্লান্তি ধরে গেছে বুড়ির । মেজাজ খিটিমিটি হয়ে উঠেছে। আজ ওকে মারে তো কাল ওকে মারে। একদিন গালিগালাজ করে গুস্তাফকে তাড়িয়ে দিল।
বুড়ি একদিন বুড়োকে ডেকে বলল, অ্যাই বুড়ো, তুই এখনি সোনালি মাছের কাছে যা। গিয়ে বল যে আমার আর গর্ভনরের বউ হয়ে থাকতে ভাল লাগছে না । তোর মাছবাবাকে বলো গে আমি রানী হতে চাই।
বুড়ো ক্লান্ত পা ফেলে ফেলে নীল সাগরের পাড়ে এল।
মার খেয়ে খেয়ে শরীর দূর্বল হয়ে গেছে।
সৈকতে দাঁড়িয়ে ফ্যাসফ্যাসে কন্ঠে চিৎকার করে বুড়ো বলল, ও মাছ, ও মাছ। আমার দিকে মুখ করে তুমি তোমার লেজের ওপর দাঁড়াও না।
সোনালি মাছটি সাঁতরে সৈকতে এল।
তারপর জিজ্ঞেস করল, কি হয়েছে বুড়ো? এবার তুমি কি চাও?
বুড়ো বলল, আমার বুড়ির আর সুশীল রমনী হয়ে থাকতে ভালো লাগছে না।
কেন? তোমার স্ত্রী এখন কি চায়?
আমার বুড়ি এবার রানী হতে চায়। আমার ইচ্ছে তুমি পূরণ কর।
আচ্ছা করব। সোনালি মাছ বলল। তার আগে বাড়ি ফিরে যাও। প্রার্থনা কর। তোমার স্ত্রী রানী হয়ে যাবে।
বুড়ো গাঁয়ে ফিরে এল। এসে তাজ্জব বনে গেল। পুরনো বাড়ির জায়গায় বিশাল একটি আকাশচুম্বি প্রাসাদ। চূড়াটি সোনার তৈরি। প্রাসাদের সামনে লোহার তৈরি ফটক। সশস্ত্র সৈন্যরা ফটকের সামনে কাঁধে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে। প্রাসাদের পিছনে একটি মনোরম বাগান। প্রাসাদের সামনে বিশাল চারণভূমি। সেই চারণভূমিতে সৈন্যরা সারিবদ্ধ হয়ে কুচকাওয়াজ করছে। বুড়ির পরনে রানীর পোশাক। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সৈন্যদের অভিবাদন গ্রহন করছে। বুড়ির পাশে সেনাপতি এবং গর্ভনর দাঁড়িয়ে। ড্রামস বাজছে। উর্দিপরা লোকজন রণসঙ্গীত। সৈন্যরা সমস্বরে চিৎকার করে উঠল ‘হুররা’!
যা হোক। কিছুকাল এভাবে কাটল। তারপর রানীর জীবনে ক্লান্তি এসে যায় বুড়ি । বুড়ি সেনাপতিকে নির্দেশ দিল, যাও, বুড়োটাকে খুঁজে আন।
কোন্ বুড়ো? সেনাপতি হতভম্ব।
যা হোক। শেষে সৈন্যরা বুড়ো কে প্রাসাদের পিছন থেকে ধরে আনল।
বুড়ি বলল, ও বুড়ো শয়তান। শোন। রানীর জীবন আমার ভাল লাগছে না। আমি নীল সাগরের কর্ত্রী হতে চাই । যাতে মাছেরা আমার কথা শোনে। যাঃ, এখনি এ কথা তোর মাছকে গিয়ে বল।
বুড়ো প্রতিবাদ করার চেষ্টা করল। অবশ্যি কোনও লাভ হল না। এখনই নীল সাগরপাড়ে না-গেলে বুড়ির নির্দেশে সৈন্যরা মাথা কেটে নেবে।
বুড়ো নীল সাগর পাড়ে এল।
সৈকতে চিৎকার করে বলল, ও মাছ, ও মাছ। আমার দিকে মুখ করে তুমি তোমার লেজের ওপর দাঁড়াও না।
কিন্তু, সোনালি মাছটি আর এল না।
বুড়ো বেশ কয়েকার বলল. ও মাছ, ও মাছ। আমার দিকে মুখ করে তুমি তোমার লেজের ওপর দাঁড়াও না।
কিন্তু সোনালি মাছটি এল না।
হঠাৎ যেন সাগরের পানি কাঁপতে লাগল। উপচে পড়তে লাগল পানি । আগে যেখানে ছিল স্বচ্ছ নীল জল, এখন ঘোর কৃষ্ণবর্ণ হয়ে উঠতে লাগল।
যা হোক। সোনালি মাছ সাঁতরে এল। এসে বলল, এবার কি চাও বল?
বুড়ো কাঁপতে কাঁপতে বলল, আমার বুড়ি মনে হয় পাগল হয়ে গেছে । সে এখন সাগরের কর্ত্রী হতে চায়। যাতে মাছেরা ...
বুড়োর কথা না ফুরোতেই সোনালি মাছটি লেজ ঘুরিয়ে নীল সাগরের অতলে তলিয়ে গেল।
বুড়ো বিষন্ন মনে গাঁয়ে ফিরে এল।
ফিরে এসে এক অবিশ্বাস্য দৃশ্য দেখল বুড়ো। সেই আকাশচুম্বি প্রাসাদটি শূন্যে মিলিয়ে গেছে। সেই সবুজ চারণ ক্ষেত্রটিও নেই। নেই সৈন্যসামন্তে তাঁবু। তার বদলে সেই পুরনো ভাঙা কুঁড়ে। কুঁড়ের ভিতরে বুড়ি । পরনে পুরনো শতছিন্ন পোশাক । কেমন লাগলো জানাবেন।
১১| ২৬ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৩
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: নূরু ভাই?? ভাল আছেন?
আজ মেজাজ হট!
পড়তে পারবো না!!
২৬ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আলহামদুলিল্লাহ মন্ডল ভাই
ভালো আছি, আল্লাহর অশেষ কৃপায়।
মেজাজ কেন হট
খুলে গেছে কি নাট?
টাইট দিলে নাট
করবেনা কট কট!!
১২| ২৬ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৭
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: রাখেন ওসব নাট বল্টু
বীরের রক্ত আজ গরম! লড়াই করার মত কাউকেও পাচ্ছি না!!!
২৬ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমার সাথে লাগতে পারেন
থাকলে ভালো হাতিয়ার,
দা'কুড়োল আর খোন্তা কাঁচি?
পথ পাবেনা বাঁচিবার।
বীরের মতো জিততে হলে,
কৌশলটাও জানা চাই,
তা না হলে যুদ্ধে জিতা
সহজ হবার নয়রে ভাই।
১৩| ২৬ শে মে, ২০১৮ রাত ৮:২৫
কোলড বলেছেন: Pushkin's maternal great grandfather was African (Ethiopea or from Chad).
২৭ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:০১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
According to his son-in-law and first biographer, Abram (or Ibrahim) was the son of a ruler in Africa: possibly Chad, possibly Abyssinia. At an early age he was either abducted or sent to the court of the Turkish Sultan in Constantinople. Bought from the Sultan, Abram arrived in Russia and was baptised with Tsar Peter standing as his godfather. Peter visited France in 1717, and at the same time Abram was sent to study there. He returned with the conventional skills of an officer of artillery, but he had also acquired a new surname, Hannibal (in Russian, Gannibal), and the name had significant echoes of republican defiance. A respected military engineer, he was promoted under successive rulers and lived on into the reign of Catherine the Great. There is no reliable likeness of Gannibal. Hugh Barnes, in his book Gannibal: The Moor of Petersburg (2005), has shown that this portrait, long thought to be of Gannibal, cannot be of him.
Gannibal's third son (of 11) by his second marriage Osip Abramovich married Marya Alexeevna Pushkin, and their daughter was Pushkin’s mother Nadezhda. Pushkin’s father Sergei Lvovich Pushkin came from a family of boyars (nobles) whose fortunes had declined under Peter the Great. Sergei Lvovich inherited the family estates, and had the reputation of being idle, frivolous and miserly. He was also a fluent French speaker and had a large library of French literature and philosophy, both of which offered Pushkin a solid grounding for his later education. Pushkin’s mother inherited the family estates from her father Osip, but he had left it so heavily encumbered with debt that, during her lifetime, the income went into paying it off. She was beautiful and elegant, but Pushkin was no closer to her than he was to his father.
১৪| ২৬ শে মে, ২০১৮ রাত ৯:১৭
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: খালু এইটা প্রিয়তে না নিলে ঘুম আসতো না। আমি রুশ লেখকদের প্রতি দূর্বল। রুশ গ্রান্ড মাস্টারদেরও খুব ভালোবাসি। দাবা নিয়ে টুকটাক লিখুন না
২৭ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:০৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ প্রান্তর পাতা,
রুশ লেখদের প্রতি তোমার এই
দূর্বলতা সত্যিই প্রসংশার দাবী রাখে।
তোমার এই ভালোলাগা অব্যাহত থাকুক।
আমিতো দাবা বুঝিনা! ওটা রাজা-রাজদের খেলা,
কুটিল চক্র!! আমি সাদা সিধা মানুষ, প্যাচঘোচে নাই।
১৫| ২৬ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:০৭
ইব্রাহীম আই কে বলেছেন: মন্তব্যের উত্তর দেখার জন্য যখন আসলাম তখন লেখাটা আবার পড়লাম। বিশেষ করে ঐ কবিতাংশটুকু। এবার পোষ্টাকে প্রিয়র তালিকায় না নিয়ে পারলাম না।
"হ্যাঁ কবিতাটি ওখানেই শেষ,
যেন শেষ হয়েও হ্ইলোনা শেষ,
রয়ে গেছে প্রেমিকের হৃদয় জুড়ে
শান্তির পরশ মাখা মধুর আবেশ"
আপনার লেখা এই অংশটুকুও ডায়েরীর পাতায় নিরব যতনে সাজিয়ে রাখবো।
স্নেহের খাতিরে পাওয়া মান
করিতে হয় তার যথার্থ সম্মান।
কি করে বলেন না নেই প্রিয়তে
লিখেছেন যখন পরম যতনে।
২৭ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:১৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ ইব্রাহীম ভাই
আপনার প্রদত্ত মন্তব্যের প্রতিউত্তর দেখতেে
এসে ফেঁসে গেলেন !!
লেখাটি প্রিয়তে রাখার জন্যে আবারো ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৩
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
প্রেমের কবি পুশকিন। বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। উনার কবিতায় চমৎকার কিছু দর্শন সংযোজিত হয়েছে। যার মূল্য অতুলনীয়। কবিকে নিয়ে লেখার জন্য ধন্যববাদ আপনাকে।
আর উনার I Loved you কবিতাটি তো বিশ্ববিখ্যাত।