নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের প্রথাবিরোধী ও বহুমাত্রিক লেখকদের অন্যতম কবি, ভাষাবিজ্ঞানী, প্রাবন্ধিক হুমায়ুন আজাদের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১১ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:১০


“ক্ষমতা মানুষকে শয়তানে পরিণত করে এবং বিশেষ ক্ষমতা মানুষকে পরিণত করে বিশেষ বা বিশিষ্ট শয়তানে” অথবা “আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে/নষ্টদের দানব মুঠোতে ধরা পড়বে মানবিক সব সংঘ পরিষদ” এমন দৃঢ তপ্ত উচ্চারণ যিনি করতে পারতেন তিনি ড.হুমায়ুন আজাদ। হুমায়ুন আজাদ বাংলাদেশের একজন প্রধান কবি, সমালোচক, ভাষা বিজ্ঞানী, প্রাবন্ধিক, কলাম প্রাবন্ধিক, কিশোর সাহিত্যিক এবং উপন্যাসিক। সাহিত্যকর্মে স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ২০১২ সালে (মরনোত্তর) একুশে পদক লাভ করেন। বাংলাদেশের প্রথাবিরোধী এই লেখক ২০০৪ সালের ১১ আগস্ট আকস্মিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। আজ প্রতিথযশা এই লেখকের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। প্রথাবিরোধী ও বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।

হুমায়ুন আজাদ ১৯৪৭ সালের ২৮ এপ্রিল (১৪ই বৈশাখ, ১৩৫৪ বঙ্গাব্দ), মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে রাঢ়িখালে জন্মগ্রহণ করেন। আজাদের বাবা আবদুর রাশেদ এবং মা জোবেদা খাতুন।যদিও হুমায়ুন আজাদের জন্ম তাঁর নানাবাড়ি কামারগাঁও কিন্তু রাঢ়িখালকে হুমায়ুন আজাদ মনে করতেন তাঁর জন্মগ্রাম। গ্রামটি পানির গ্রাম নামেও পরিচিত ছিল। কারণ গ্রামে অনেকগুলো পুকুর ছিল। যা বর্ষাকালে পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠত। আর গ্রামটিকে সেই পানির ওপর ভাসতে থাকা কচুরিপানার মনে হতো। রাঢ়িখাল আগে থেকেই বিখ্যাত একটি গ্রাম ছিল। কারণ এখানে জন্মেছিলেন বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু। হুমায়ুন আজাদের আসল নাম ‘হুমায়ুন কবীর’। লেখার জন্য নাম বদল করে শপথপত্রের মাধ্যমে তা স্থায়ী করে নেন। তাঁরা ছিলেন তিন ভাই ও দুই বোন। ছেলেবেলা থেকেই তিনি ছিলেন মেধাবী। পড়াশোনার শুরু নিজ গ্রামেই। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ার পর আর তৃতীয় শ্রেণীতে পড়েননি। সরাসরি চতুর্থ শ্রেণীতে ভর্তি হন স্যার জে. সি. বোস ইন্সস্টিটিউশন-এ। এটিই তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় বলে মনে করতেন হুমায়ুন আজাদ। তাঁর বাবা ছিলেন একাধারে গ্রামের স্কুলের শিক্ষক এবং অন্যদিকে পোস্টমাস্টার।

১৯৬৪ সালে হুমায়ুন আজাদ রাড়িখালের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ইন্সটিটিউশন থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। মেধাবী ছাত্র আজাদ ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ডিগ্রি এবং ১৯৬৮ সালে একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন; উভয় ক্ষেত্রেই তিনি প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন। ১৯৭৬ সালে তিনি এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল বাংলা ভাষায় সর্বনামীয়করণ। প্রধাবিরোধী বাংলাদেশী এই কবি, ঔপন্যাসিক, সমালোচক, ভাষাবিজ্ঞানী, কিশোর সাহিত্যিক এবং কলাম প্রাবন্ধিক ধর্ম, প্রথা, প্রতিষ্ঠান ও সংস্কারবিরোধিতা, নারীবাদিতা, রাজনৈতিক বক্তব্য এবং নির্মম সমালোচনামূলক বক্তব্যের জন্য তিনি ১৯৮০’র দশক থেকে ব্যাপক পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আর্কষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ১৯৮০-র দশকের শেষভাগ থেকে হুমায়ুন আজাদ সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। এ সময় তিনি ‘খবরের কাগজ’ নামীয় সাপ্তাহিক পত্রিকায় ‘কলাম’ লিখতে শুরু করেন। সামরিক শাসনের বিরোধিতা দিয়ে তার রাজনৈতিক লেখালিখির সূত্রপাত। ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম গ্রন্থটি প্রধানত রাষ্ট্রযন্ত্রের ধারাবাহিক সমালোচনা। ১৯৭১-এ প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশে রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যভিচারের প্রামাণিক দলিল এই গ্রন্থটি।
হুমায়ুন আজাদ ছিলেন স্বঘোষিত নাস্তিক। তাঁর অন্যতম প্রণোদনা ছিল প্রথা-বিরোধিতা। কবিতা, উপন্যাস ও রচনা সর্বত্রই তিনি প্রথাবিরোধী ও সমালোচনামুখর। গুস্তাভ ফ্লবেয়ারের আদলে ১৯৯০ দশকে প্রকাশিত প্রবচনগুচ্ছ এদেশের পাঠক সমাজকে আলোড়িত করতে সক্ষম হয়েছিল। হুমায়ুন আজাদের লেখালেখিতে বিজ্ঞানমনস্কতার ছাপ স্পষ্ট। তবে তিনি নিজেই ছিলেন তাঁর চিন্তা-চেতনা ও বিশ্বাসের প্রধান মুখপত্র। একটি বৈষম্যহীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তাঁর স্বপ্ন ছিল। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিকেই তিনি মুক্ত মানবের মুক্ত সমাজ গড়ার পক্ষে অনুকূল বলে মনে করতেন।

মূলতঃ গবেষক ও প্রাবন্ধিক হলেও হুমায়ূন আজাদ ১৯৯০-এর দশকে একজন প্রতিভাবান ঔপন্যাসিক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন। হুমায়ুন আজাদ যে গ্রন্থটির জন্য পাঠকের কাছে সবচেয়ে বেশি পরিচিত হন তা হলো ‘নারী’। ১৯৯২ সালে প্রকাশিত হয় প্রবন্ধের বই নারী। ‘নারী’ হলো তাঁর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। এই গ্রন্থটির জন্য তিনি সমালোচিত হন, বিতর্কিত হন। নারী গ্রন্থটি উপভোগ করে পাঠকের হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা। নারীবাদী ভাবনার এটি একটি আন্তর্জাতিক ভাষ্য। তিনিই প্রথম এ দেশে নারীবাদী সাহিত্যতত্ত্বের সংগঠিত রূপ পাঠকদের সামনে হাজির করেন। যদিও এই তত্ত্ব ইউরোপের কিন্তু তিনি তা এইদেশের প্রেক্ষাপটেই উপস্থাপন করেন অসাধারণ ভঙ্গিমায়। বইটির জন্য তিনি প্রতিক্রিয়াশীল ও ধর্মান্ধদের প্রবল বিরোধীতার মুখোমুখি হন। সেসময়ের সরকার এটিকে নিষিদ্ধ করে। যদিও পরে আদালতের রায়ে তা অবমুক্ত হয়। এরই অনুষঙ্গ হিসেবে হুমায়ুন আজাদ অনুবাদ করেন সিমন দ্যা বেভোয়ারের ‘দ্যা সেকেন্ড সেক্স’-‘দ্বিতীয় লিঙ্গ’ নামে।

২০০৪ খৃস্টাব্দে মৃত্যু অবধি তাঁর প্রকাশিত উপন্যাসের সংখ্যা ১৩। তাঁর ভাষা দৃঢ়, কাহিনীর গঠন সংহতিপূর্ণ এবং রাজনৈতিক দর্শন স্বতঃস্ফূর্ত। তবে কাহিনীতে যৌনতার ব্যবহার কখনো কখনো মাত্রাতিরিক্ত বা অপ্রয়োজনীয় হয়েছে বলে তিনি সমালোচিত হয়েছেন। শেষ দিককার কয়েকটি উপন্যাসে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি মূলতঃ রাজনৈতিক রচনার শিল্পরূপকে ক্ষুণ্ণ করেছে বলে প্রতীয়মান হয়। ১৯৯৪ সালে তিনি ঔপন্যাসিক হিসেবে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করেন প্রথম উপন্যাস ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল-এর মধ্যে দিয়ে। ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত হয় সব কিছু ভেঙ্গে পড়ে। আর এই বইয়ের জন্য তিনি বাংলা একাডেমীর পুরস্কার পেয়েছেন। ২০০২ সালে ১০০০০ এবং আরও একটি ধর্ষণ, ২০০৩ সালে একটি খুনের স্বপ্ন এবং ২০০৪ সালে প্রকাশিত পাক সার জমিন সাদ বাদ। তাঁর অন্য অনেক গ্রন্থের মতো এটিও সমালোচিত হয়। মৌলবাদীরা তাঁর উপর ক্রুদ্ধ হয়। রাজপথ থেকে একসময় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে সংসদে। মৌলবাদীরা প্রকাশ্যে তাঁকে হত্যার হুমকি দেয়। কিন্তু তিনি এসবের কোনোকিছুকেই তোয়াক্কা করেননি। তিনি তাঁর নিজের বিশ্বাস মতো লিখে গেছেন, কথা বলে গেছেন। রাজনৈতিক প্রণোদনাই এ সব রচনার প্রধান নিয়ামক।

কবি হিসাবে স্মরণীয় না-হলেও হুমায়ুন আজাদ আমৃত্যু কাব্যচর্চ্চা করে গেছেন। তিনি ষাটের দশকের কবিদের সমপর্যায়ী আধুনিক কবি। সমসাময়িক কালের পরিব্যাপ্ত হতাশা, দ্রোহ, ঘৃণা, বিবমিষা, প্রেম ইত্যাদি তার কবি সত্বার প্রধান নিয়ামক। তার প্রথম কাব্যগন্থের নাম অলৌকিক ইস্টিমার যা প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালেরে জানুয়ারি মাসে। তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ জ্বলো চিতাবাঘ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮০ সালে মার্চে। সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে তাঁর তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয় প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালের এপ্রিলে। ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ ‘’যতোই গভীরে যাই মধু যতোই ওপরে যাই নীল‘’। তার পঞ্চম কাব্যগ্রন্থ আমি বেঁচে ছিলাম অন্যদের সময়ে প্রকাশিত হয় ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এর আট বছর পর ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয় তার ষষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু। তার সপ্তম কাব্যগ্রন্থ পেরোনোর কিছু নেই প্রকাশিত হয় ফেব্রুয়ারি, ২০০৪ সালে। এটিই হুমায়ুন আজাদের জীবদ্দশায় প্রকাশিত শেষ কাব্যগ্রন্থ। তবে হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুর পর ফেব্রুয়ারি ,২০০৫ সালে এই সাতটি কাব্যগ্রন্থ সহ আরো কিছু অগ্রন্থিত ও অনূদিত কবিতা নিয়ে তাঁর কাব্যসমগ্র প্রকাশিত হয়।

বাঙলাদেশে যখন মৌলবাদ বিস্তারলাভ করতে থাকে, বিশেষ করে ২০০১ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত, তখন ২০০৪ এ প্রকাশিত হয় হুমায়ুন আজাদের ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ বইটি। বইটি প্রকাশিত হলে মৌলবাদীরা ক্ষেপে ওঠে, তারা মসজিদে মসজিদে হুমায়ুন আজাদের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। বইটিতে উঁনি মৌলবাদীদের, ফ্যাসিবাদীদের চিত্রের শৈল্পিক রূপ দেন, মুখোশ খুলে ফেলেন ফ্যাসিবাদী জামাতের । আর তারই জের ধরে ২০০৪ সালে হুমায়ুন আজাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা হয়, যার দায়িত্ব পরবর্তীতে জমিয়াতুল মুজাহেদীনের জঙ্গী সন্ত্রাসবাদীরা স্বীকার করে। ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ২৭ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমীতে অনুষ্ঠিত বইমেলা থেকে বেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজের বাসায় যাওয়ার পথে ঘাতকদের আক্রমণের শিকার হন তিনি। বিদেশে নিবিড় চিকিৎসার মাধ্যমে তিনি কিছুটা সুস্থ হন। এর কিছুদিন পরেই জার্মান সরকার তাকে গবেষণা বৃত্তি প্রদান করে। ২০০৪-এর ৭ আগস্ট জার্মান কবি হাইনরিশ হাইনের ওপর গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যান। ২০০৪ সালের ১১ আগস্ট রাতে একটি পার্টি থেকে প্রত্যাবর্তনের পর আবাসস্থলে আকস্মিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হুমায়ুন আজাদ। ১২ আগস্ট ফ্ল্যাটের নিজ কক্ষে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুর পর জার্মান সরকারের তত্ত্বাবধানে মিউনিখে তার এপার্টমেন্টে পাওয়া সব জিনিসপত্র ঢাকায় তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। ওই জিনিসপত্রের ভেতরেই পাওয়া যায় তার হাতের লেখা তিনটি চিঠি। চিঠি তিনটি আলাদা তিনটি পোস্ট কার্ডে লিখেছেন বড় মেয়ে মৌলিকে, ছোট মেয়ে স্মিতাকে এবং একমাত্র ছেলে অনন্য আজাদকে। অনুমান করা হয়, ওই লেখার অক্ষরগুলোই ছিল তার জীবনের শেষ লেখা।

তাঁর মরদেহ কফিনে করে জার্মানি থেকে ঢাকায় আনা হয়। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে ইসলামি প্রথায় জানাযার নামাজশেষে তাঁর মরদেহ জন্মস্থান রাঢ়িখালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই ইসলামি প্রথায় সমাহিত করা হয়। সাহিত্যকর্মে স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ২০১২ সালে একুশে পদক লাভ করেন। বহুমাত্রিক জ্যোর্তিময় কবি, ঔপন্যাসিক, সমালোচক, ভাষাবিজ্ঞানী, প্রাবন্ধিক, রাজনীতিক বিশ্লেষক ও কিশোর সাহিত্যিক অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ চেয়েছিলেন সমাজের কূপমণ্ডুক মানুষগুলোকে বুদ্ধির বন্দিত্ব থেকে মুক্তির দিকনির্দশনা দিতে। আর এ কারণেই চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তিনি। আজ এই কবির ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। প্রতিথযশা কিশোর সাহিত্যিক অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ৩২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৩২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:২০

বিজন রয় বলেছেন: হুমায়ূন আজাদের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ধন্যবাদ।

১১ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:২৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ বিজন'দা
প্রথাবিরোধী লেখক
হুমায়ূণন আজাদের
মৃত্যুবার্ষিকীতে
শ্রদ্ধা নিবেদনের
জন্য।

২| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৩:২৬

বিজন রয় বলেছেন: আপনি কেমন আছেন?

চা খাওয়াবেন পল্টন মোড়ে?

১১ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমি আছি ভালো আলহামদুলিল্লাহ
চা খাওয়ার নিমন্ত্রণ সবসময় !
কিন্তু পল্টন মোড়ে !! দিন যে সাবাড় হয়ে যাবে !!
চায়ের কাপের চরম মূল্য দিতে হবে যে !!

৩| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:১২

সুখী পৃথিবীর পথে বলেছেন: হে কবি! আপনার আত্মার সুখ কামনা করছি।

১১ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ জনাব
সুন্দর প্রত্যাশার জন্য।

৪| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৩১

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী শ্রদ্ধেয় হুমায়ুন আজাদের ১৪ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলী ।


অনেক শুভকামনা প্রিয় নূরভাইকে।

১১ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
চৌধুরী ভাই
শুভেচ্ছা ও শুভকামনা আপনার জন্য।
মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা।

৫| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


শেষ লাইনে উপসংহার টানলেন "কিশোর সাহিত্যিক"; উপরে এত কিছুর পর, শেষ লাইনে এসে উনি কিশোর সাহিত্যকে পরিণত হলেন?

১১ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
পণ্ডিত সাব,
তাতে কি তাঁর মর্যাদা ক্ষুন্ন হযেছে ?
একটা বিশেষণ বাড়তি যোগ করেছি
মর্যাদা বাড়ার কথা। অবশ্য আপনার তা
বোধগম্য হবার কথা না!!

৬| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৫২

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: বিনম্র শ্রদ্ধা..........

১১ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
হাসান জাকির ভাই
আপনাকে ধন্যবাদ।
হাসান জাকির নামে আমার এক কলিগ ছিলো !!
কোন এক চ্যানেলে!!
আপনাকে ধন্যবাদ

৭| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৪

নূর আলম হিরণ বলেছেন: উনার কোন রচনাই পুরোপুরি পড়া হয়নি! পড়ার ইচ্ছে আছে। পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

১১ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এবার চেষ্টা করবেন পড়তে
আশা করি ভালো লাগবে।

৮| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমিও বিক্রমপুরের।
আমার গ্রাম থেকে তার গ্রাম খুব একটা দূরে নয়।

১১ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: আপনি ধন্য!!
ভালো থাকবেন রাজীব ভাই

৯| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২০

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:



তিনি একজন প্রবাদপ্রতিম পুরুষ! কবিত্ব তার অলংকার! প্রকৃত অলংকার!

১১ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ ভ্রমরের ডানা,
চমৎকার মন্তব্য করে গুণীকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।

১০| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনার গরুর রচনার কারণে গুণীদের আসল গুণই বাদ পড়ে যায়।

১২ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:২৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
যথার্থ বলেছেন !!
গরুদের জন্যই গরুর রচনা !!
কারণ গরুর কাছে ঘাস ও যা
বিন্নি ধানের শিষ ও তা !!

১১| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১১

চাঙ্কু বলেছেন: হুমায়ূন আজাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১১ ই আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ চাঙ্কু ভা্ইয়া
ভালো থাকবেন

১২| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৩০

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
পৃথিবীর যে কোন ভাষার চেয়ে বাংলা একটি উন্নত সমৃদ্ধ ভাষা।
এই ভাষার দেশে যে পরিমাণ গান পুথি নাট্য কবি সাহিত্যিক জন্ম নিয়েছে, অন্য কোন দেশে নজির নেই।
দুর্ধর্ষ কবি শ্রদ্ধেয় হুমায়ুন আজাদের ১৪ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি ।

১২ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:২৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ হাসান ভাই
চমৎকার মন্তব্য!
শুভেচ্ছা রইলো।

১৩| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:১০

চেংকু প্যাঁক বলেছেন:

হুমায়ুন আজাদ একটা সজারু[link||view this link]

১২ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৪২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ
আপনার লিংকের জন্য

১৪| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:০৬

ডার্ক ম্যান বলেছেন: নুরু ভাই, আপনার পোস্ট বরাবর ভাল লাগে।
একটা জিনিস বোধগম্য নয়, তিনি নাস্তিক ছিলেন কিন্তু কেন তাকে ইসলামী রীতিতে শেষ বিদায় জানানো হল।

১২ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ ডার্ক ম্যান
উৎসাহ দেবার জন্য।

আপনার কৌতুহলের জবাব
অরণ্যক রাখাল মিটিয়েছেন আশা করি।

১৫| ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:৪৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ডার্ক ম্যান, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় মৃত্যুর আগে দেহদানের কথা বারবার বলেছিলেন। তার ইচ্ছে ছিল দেহদান করার। কিন্তু তার পরিবার তা করতে দেয়নি। বরং হিন্দু প্রথায় তার শ্রাদ্ধ করা হয়েছে। এই তো কদিন আগের ঘটনা। গুগোল ঘাটলেই পাবেন।
এমন আরো অনেক উদাহরণ পাবেন। মৃত্যুর পর আর কারো ইচ্ছে খাটে না। তখন পরিবারের ইচ্ছেই প্রধান হয়ে দাঁড়ায়। সুনীল ঘোর নাস্তিক ছিলেন অথচ তাকে পোড়ানো হয়েছে হিন্দু উপায়ে। এমনটা হুমায়ুন আজাদের বেলাতেও হয়েছে। তিনি মারা যাওয়ার পর তো আর বলতে পারেন না, আমাকে ইসলামি প্রথায় কবর দিও না। তার সে ক্ষমতা ছিল না। আর হঠাৎ মারা গিয়েছেন তিনি। বয়স হলে না হয় উইলে কীভাবে তার সতকার করা হবে, তা নিয়েও নির্দিষ্ট করে লিখে যেতেন। তা তো হয়নি।
এটা কমন সেন্সের ব্যাপার।
মৃত্যুর পর কী হয়েছে তা দিয়ে বিচার করবেন না তাকে। বিচার করুন তাকে তার সাহিত্য দিয়ে, কিশোর রচনা আর প্রবন্ধগুলো দিয়ে। দেখবেন, আপনার সামনে অপার জগত খুলে গিয়েছে। খুলে গিয়েছে একটা মুক্ত দুনিয়া।


ধন্যবাদ, নূর ভাই পোস্টের জন্য। তবে হুমায়ুন আজাদ তার নামের বানানে হ্রস্ব-'উ' কার ব্যবহার করতেন। আপনি হঠাৎ এমন 'ঊ' ব্যবহার করলেন কেন? তিনি বানানে ব্যাপারে প্রচন্ড সচেতন ছিলেন। সেখানে আপনি তার নামের বানানটাই করে ফেললেন ভুল। তিনি বেঁঁচে থাকলে ক্ষেপে যেতেন খুব

১২ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ আরণ্যক রাখাল
চমৎকার বিশ্লেষণ ও সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

ভুল করি বলেই মানুষ ভাবি নিজেকে !! হাহাহা

১৬| ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:০৭

গরল বলেছেন: উনার একটা বাণী আমার খুব প্রিয় "নষ্টদের অধীনে সব কিছু নষ্ট হয়ে যায়" যা আজ প্রমাণিত।

১৭| ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:২৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



প্রিয় লেখক হুমায়ুন আযাদের ১৪তম মৃত্যু বার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.