নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

সংস্কৃতি-সাধক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫২


বাংলাদেশের ভাগ্যবান লেখকদের অন্যতমপ্রখ্যাত প্রাবন্ধিক, সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুর।মোতাহের হোসেনের প্রবন্ধের গদ্যশৈলীতে প্রমথ চৌধুরী এবং মননে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’র প্রভাব লক্ষ্যণীয়। তার রচনায় সংস্কৃতি, ধর্ম, মানবতাবোধ ও মানুষের জীবনাচরণের মৌলিক বিষয়গুলি সংজ্ঞায়িত ও উন্মোচিত হওয়ার প্রয়াস দেখিয়েছে। বিচিত্র ও সুন্দর জীবনের মধ্যেও তিনি মহত্তোম জীবন খুঁজে বেড়িয়েছেন। মুক্তবুদ্ধিচর্চার প্রবক্তা, উদার মানবতাবাদী ও মননশীল প্রবন্ধকার হিসেবে মোতাহের হোসেন চৌধুরীর বিশেষ খ্যাতি আছে। তিনি ঢাকার মুসলিম সাহিত্য সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন এবং এর সভা ও সম্মেলনে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন। তাঁর রচিত ‘আমাদের দৈন্য’, ‘আদেশপন্থী ও অনুপ্রেরণাপন্থী’ ও ‘মুসলমান সাহিত্যিকদের চিন্তাধারা’ প্রবন্ধ যথাক্রমে সাহিত্য সমাজের পঞ্চম (১৯৩১), ষষ্ঠ (১৯৩২) ও অষ্টম (১৯৩৪) বার্ষিক সম্মেলনে পঠিত হয়। এছাড়া তাঁর ‘রবীন্দ্রনাথ ও বৈরাগ্যবিলাস’ প্রবন্ধটি সমাজের মুখপত্র শিখার পঞ্চম বর্ষে প্রকাশিত হয়। ১৯৫৬ সালের ১৮ আজকের দিনে তিনি চট্টগ্রাম কলেজে অধ্যাপনারত অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আজ তার ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী। সংস্কৃতি-সাধক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১৯০৩ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত (বর্তমানে বাংলাদেশ) নোয়াখালী জেলার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ আবদুল মজিদ ও মাতার নাম ফতেমা খাতুন। মাতামহ কুমিল্লার বিখ্যাত দারোগা বাড়ির মৌলভি আশরাফ উদ্দীন। তাঁর পিতা পেশায় একজন সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন, ফলে চাকরিসূত্রে তিনি নানা জায়গায় বদলী হতেন। ফলে মোতাহের হোসেন মায়ের কাছে নানাবাড়ি কুমিল্লাতেই থাকতেন। তিনি অল্প বয়সেই পিতৃহারা হন। কুমিল্লা ইউসুফ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আইএ ও বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন করেন। ইউসুফ হাইস্কুলে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু হয়। প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে বাংলায় মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন ১৯৪৩ সালে। এরপর কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে লেকচারার পদে যোগদান করেন ১৯৪৬ সালে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর চট্টগ্রাম কলেজে যোগদান করেন ও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ পদেই অধিষ্ঠিত থাকেন। এ কলেজে তার সহকর্মী ছিল প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আবুল ফজল। এছাড়াও জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে তিনি কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদির প্রমুখ’র সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন।

মোতাহের হোসেন চৌধুরী কিশোর বয়স থেকেই সাহিত্যে আগ্রহী হয়ে উঠেন। তিনি প্রথমদিকে কবিতা বেশি লিখতেন।বাঙালী মুসলমান সমাজের অগ্রগতির আন্দোলন হিসেবে পরিচিত "বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন" সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি এই আন্দোলনে কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদির প্রমুখের সহযোগী ছিলেন। তিনি ঢাকার মুসলিম সাহিত্য সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। এর নানা সভা ও সম্মেলনে তিনি অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন প্রবন্ধ পাঠ করেন। এর মধ্যে আমাদের দৈন্য সাহিত্য সমাজের পঞ্চম বার্ষিক সম্মেলন (১৯৩১), আদেশপন্থী ও অনুপ্রেরণাপন্থী ষষ্ঠ বার্ষিক সম্মেলন (১৯৩২) ও মুসলমান সাহিত্যিকদের চিন্তাধারা অষ্টম বার্ষিক সম্মেলনে (১৯৩৪) পাঠ করা হয়। এছাড়াও মুসলিম সাহিত্য সমাজের মুখপত্র শিখার পঞ্চম বর্ষে ১৯৩১ সালে তাঁর প্রবন্ধ রবীন্দ্রনাথ ও বৈরাগ্যবিলাস প্রকাশিত হয়। তিনি বিচিত্রা, মাসিক মোহাম্মদী, সওগাত, ছায়াবীথি, বুলবুল প্রভৃতি সাহিত্য পত্রিকাতেও প্রবন্ধ লিখেছিলেন। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ গ্রন্থ "সংস্কৃতির কথা" (১৯৫৮)। এছাড়াও তাঁর অনুবাদকৃত দুটি গ্রন্থ হচ্ছে ক্লাইভ বেলের Civilization গ্রন্থ অবলম্বনে রচিত সভ্যতা (১৯৬৫) এবং বার্ট্রান্ড রাসেলের Conquest of Happiness গ্রন্থের অনুবাদ সুখ (১৯৬৫)। সৈয়দ আবুল মকসুদের সম্পাদনায় ১৯৯৫ সালে বাংলা একাডেমি তাঁর প্রকাশিত এবং অপ্রকাশিত সমস্ত রচনা রচনাবলি আকারে প্রকাশ করে।প্রাবন্ধিক, সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী’র ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম কলেজে অধ্যাপনারত অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। উদার মানবতাবাদী ও মননশীল প্রবন্ধকার মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নুরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৭

রাকু হাসান বলেছেন: আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি । উনাকে পোস্ট দেওয়ায় আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ রাকু ভাই
উৎসাহ দেবার জন্য।

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৯

পাঠকের প্রতিক্রিয়া ! বলেছেন: মন্তব্য না করলেও আপনার পোস্ট প্রায়ই পড়ি। আপনাকে অগ্রীম ধন্যবাদ। (কাজা, কাফফারা সহ.);)

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে
সর্বদা ছায়ার মতো
পাশে থাকার জন্য।

৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৯

অভিশপ্ত জাহাজী বলেছেন: আধুনিক যুগে উনাদের মত মেধাবী আর প্রাণচঞ্চল কবি পাচ্ছি না আমরা।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
তবুও আশায় আশায় থাকি !!

৪| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: নুরু ভাই আমিও কিন্তু গণমাধ্যম কর্মী।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ সহকর্মী !!

৫| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৯

জসীম অসীম বলেছেন:
মোতাহের হোসেন চৌধুরী কেন ভাগ্যবান লেখক? তিনি যে কুমিল্লায় বাস করতেন, সেটা জানতাম। 1993 সালের দিকে প্রথম তাঁর ‘সংস্কৃতির কথা’ পড়ি। সেই গ্রন্থ পড়ে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলাম যে, মনে হয়েছিল এই গ্রন্থ মাধ্যমিকে না হলেও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে পাঠ্য করা উচিত। কেননা সংস্কৃতি সম্পর্কে আমাদের সঠিক কোনো বোধ বা ধারণাই নেই। তাই। এই মহান সাহিত্য-শিল্পীকে নিয়ে আলোকপাত করার জন্য আপনাকে অভিনন্দন।
অলংকরণ: জসীম অসীম।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ব্যাপারটা মোটেই এ নয় যে, তিনি যতটা খ্যাতি পেতে পারতেন, তারচেয়ে বেশি পেয়েছেন। বরং বলা উচিত, তিনি যথার্থ সম্মান ও স্বীকৃতি পেয়েছেন। বাংলাদেশের মননশীল লেখকদের খুব ছোট্ট তালিকায়ও তাঁর ঠাঁই হয়। গুরুত্বপূর্ণ প্রাবন্ধিক হিসাবেও তিনি সবসময়েই স্বীকৃতি পেয়ে আসছেন। এ দুটোই আসলে তাঁর পরিচয়। তিনি মননশীল। তিনি প্রাবন্ধিক। প্রথমটির জন্য তাঁর প্রধান ঋণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে, আর দ্বিতীয়টির ক্ষেত্রে তিনি প্রধানত প্রমথ চৌধুরীর অধমর্ণ। তাঁর প্রবন্ধগুলোতে এ দুইয়ের সমন্বয় ঘটেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.