নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

পঞ্চাশ-ষাট দশকের নিবেদিত প্রাণ এক কলম সৈনিক জহুর হোসেন চৌধুরী ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪০


প্রখ্যাত সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরী, সাংবাদিকতায় এক অবিসংবাদিত নাম। প্রগতিশীল চিন্তাধারার এই কলম সৈনিক তাঁর জীবদ্দশায় বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে নিরন্তর লিখে গেছেন। পেয়েছেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা। তিনি একাধারে একজন সাংবাদিক, সম্পাদক, কলামিস্ট ও রাজনীতিবিদ। জহুর হোসেন চৌধুরী পূর্ব পাকিস্তানের হতভাগ্য মেহনতি মানুষের জন্য যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গেছেন তা আমাদের সাংবাদিকতার ইতিহাসের স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায়। প্রগতিশীল রাজনৈতিক আন্দোলনের পাশাপাশি পূর্ববাংলার স্বায়ত্তশাসন, স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে তাররভূমিকা ছিল গৌরবোজ্জ্বল। জহুর হোসেন চৌধুরী তাঁর জীবনের বেশির ভাগ সময় সংবাদপত্র জগতে ব্যয় করেছেন। তার সাংবাদিক জীবনের সূচনা হয় প্রয়াত হাবীবুল্লাহ বাহার সম্পাদিত ‘বুলবুল’ পত্রিকায়। ১৯৫১ সালে ” সংবাদ “-এ সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৫৪ সালে সম্পাদক নিযুক্ত হন। আজীবন তিনি দৈনিক সংবাদের অন্যতম পরিচালক ছিলেন। দৈনিক সংবাদের পাতায় তিনি ‘দরবার-ই-জহুর’ নামে যে কলাম লিখতেন, তা খুবই জনপ্রিয় ছিল। মুক্তিযুদ্ধে দৈনিক সংবাদ-এর ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তৎকালীন সামরিক শাসনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সংবাদ নির্ভীক খবর পরিবেশন ও আন্দোলনের দিক-নির্দেশনা দিয়ে গেছে। যার কারণে মুক্তিযুদ্ধে হানাদার বাহিনী ঢাকার বংশালস্থ সংবাদ অফিস পুড়িয়ে দিয়েছিলো। সাংবাদিকতা বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ১৯৮১ সালে জেবুন্নেসা-মাহবুবউল্লাহ স্বর্ণপদক এবং ১৯৮২ সালে মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেন। আজ প্রখ্যাত সাংবাদিক, সম্পাদক ও কলামিস্ট জহুর হোসেনের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৮০ সালের আজকের দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কিংবদন্তি সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরীর জন্ম ১৯২২ সালের ২৭ জুন। বর্তমান ফেনী জেলার দাগনভূঁইয়া উপজেলার রামনগর গ্রামে। তাঁর বাবা ছিলেন সিরাজগঞ্জের ম্যাজিস্ট্রেট। পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে। তারপর পাঠশালা ও প্রাইমারী। এরপর তিনি ভর্তি হন সিরাজগঞ্জের এক উচ্চ বিদ্যালয়ে। এই বিদ্যালয় থেকে জহুর হোসেন চৌধুরী ১৯৩৮ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। তারপর জহুর হোসেন চৌধুরী কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে আইএ ভর্তি হন। এই কলেজ থেকে তিনি ১৯৪০ সালে আইএ পাসের স্বীকৃতি অর্জন করেন এবং ১৯৪২ সালে ইতিহাসে অনার্সসহ বিএ পাস করেন। ১৯৪৩ সালে তাঁর শারীরিক অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং অনেক দিন পর এ অবস্থার উন্নতি হয়। এই অসুস্থতাজনিত কারণে তিনি এমএ পরীক্ষা দিতে পারেননি। সাংবাদিকতার মাধ্যমেই পেশাগত জীবনের শুরু করেন জহুর হোসেন চৌধুরী। প্রথমে যোগ দেন কলকাতার বিখ্যাত পত্রিকা ‘স্টেটসম্যান’-এ। এরপর কাজ করেছেন দৈনিক ‘আজাদ’ এবং ইংরেজি সাপ্তাহিক ‘কমরেড’ পত্রিকায়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর কিছুকাল জহুর হোসেন ঢাকা থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক ‘পাকিস্তান অবজারভার’-এ কাজ করেন। তবে সাংবাদিক হিসেবে দীর্ঘকাল কেটেছে দৈনিক সংবাদ-এ। ১৯৫৪ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সতেরো বছর তিনি এই পত্রিকায় সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তীক্ষন মেধাবী এবং বলিষ্ঠ ও সাহসী সম্পাদক হিসেবে তিনি তৎকালীন রাজনীতি নিয়ে সম্পাদকীয় ও বিশ্লেষণধর্মী নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন। তাঁর ক্ষুরধার কলম চলেছে পাকিস্তানি চক্রান্তের বিরুদ্ধে, অসামপ্রদায়িকতা আর মানবতাবিরোধী সকল অপতৎপরতার বিরুদ্ধে। দৈনিক সংবাদের পাতায় তিনি ‘দরবার-ই-জহুর’ নামে যে কলাম লিখতেন, তা খুবই জনপ্রিয় ছিল। স্বাধীনতার পরে এসব নিবন্ধেরই বাছাই করা সঙ্কলন ‘দরবার-ই-জহুর’ নামে ১৯৮৫ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। জহুর হোসেন চৌধুরী ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান রেনেসাঁ সোসাইটি এবং পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেসক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।

রাজনৈতিক জীবনে তিনি মুসলিম ছাত্রলীগ, পরে এমএন রায়ের ‘র‌্যাডিক্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি’ সদস্য হন। সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে পঞ্চাশের দশকে তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) প্রাদেশিক কমিটির সদস্য হন। তৎকালীন পাক-চীন মৈত্রী সমিতি এবং পাক-সোভিয়েত মৈত্রী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও সদস্যও ছিলেন তিনি। এছাড়া সাবেক পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়ন ও পূর্ব পাকিস্তান প্রেসক্লাবেরও তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। পরে তিনি নেপথ্যে থেকে আওয়ামী লীগ ও বামপন্থীদের মধ্যে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের লক্ষ্যে ঐক্যমোর্চা গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নিবেদিতপ্রাণ এক কলম সৈনিক জহুর হোসেন চৌধুরীর আজ ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী।১৯৮০ সালের ১১ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কিংবদন্তি সাংবাদিক জহুর হোসেন চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: উনাকে চিনি না কেন বলুন তো?

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনি চিনেন না বলেই আমার এই প্রয়াশ
আশা করি আজ থেকে চিনলেন। মনে রাখবেন।

২| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৪

রাজীব নুর বলেছেন: উনাকে চিনি না কেন বলুন তো?

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনি একই মন্তব্য ২বার পোস্ট করেন কেন বলুনতো ?
আগেও জিজ্ঞাস করে ছিলাম, কিন্তু সদুত্তর পাই নি কেন?

৩| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন:
আপনি একই মন্তব্য ২বার পোস্ট করেন কেন বলুনতো ?
আগেও জিজ্ঞাস করে ছিলাম, কিন্তু সদুত্তর পাই নি কেন?

আমি একই মানুষ দুই রকম কথা তো বলতে পারি না।
সত্য কথাই মন্তব্য করেছি। চালাকি করি নাই।

১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
চালাকির কথা আসছে কেন? তা ছাড়া আপনি এক কথার মানুষ
দুই কথার মানুষ না (!!)
তবে একই কথা একই পোস্টে ২বার (!)
এক কথার মানুষ এক কথা ২ বার বললেন, কেমন হলো না !
মাজেজা বুঝলাম না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.