নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের ১২তম মৃত্যুবা্র্ষিকীতে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪১


ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন। পুরা নাম সাদ্দাম হোসেন আবু আল মাজিদ আল তিকরিতি। দুই দশকের বেশি সময় ধরে কঠোর হাতে ইরাক শাসন করেছেন তিনি। ১৯৭৯ সালের ১৬ জুলাই থেকে ২০০৩ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ইরাকের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ২০০৩ সালের মার্চ মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন ইরাকে ব্যাপক গণ বিধ্বংসী অস্ত্র থাকার অভিযোগে ইরাকে সামরিক অভিযান চালায়। ৯ এপ্রিল মার্কিন বাহিনী বাগদাদ দখল করে নিলে সাদ্দাম ক্ষমতাচ্যুত হন। একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর তাঁকে তাঁর জন্ম স্থান তিকরিত থেকে মার্কিন বাহিনী আটক করে। ২০০৫ সালের ১৯ অক্টোবর ইরাকের উচ্চ আদালতে দুজাইল গ্রামের হত্যাকান্ড মামলায় সাদ্দাম হোসেনের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। ৬৯ বছর বয়সী ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ওই বিচারে দোষী সাব্যস্ত করে ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর তার ফাঁসি কার্যকর করে। আজ তাঁর ১২তম মৃত্যুবা্র্ষিকী। ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট, ট্রাজেডি কিং সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যুবা্র্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

সাদ্দাম হোসেন আবু আল মাজিদ আল তিকরিতি ১৯৩৭ সালের ২৮ এপ্রিল পূর্ব বাগদাদের তিকরিত শহরের কাছাকাছি একটি ছোট গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি নিষিদ্ধ বাথ পার্টিতে যোগ দেন। পঞ্চাশের দশকে একবার বাথ পার্টি ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে ব্যথ হয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৮ সালে সাদ্দাম ইরাকের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ক্ষেত্রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেই সময় সাদ্দাম দৃঃঢ় ভাবে সরকার ও সামরিক বাহিনীর মধ্যকার বিরোধের অবসান ঘটান। এই উদ্দেশ্যে তিনি নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করেন। প্রথমে সাদ্দাম হোসেন জেনারেল আহমেদ হাসান আল বাকরের উপ-রাষ্ট্রপতি ছিলেন। এরপর ১৯৭৯ সালের জুলাই মাসে তিনি ইরাকের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হবার পর ইরাকের রাষ্ট্রপতি ও বাথ পার্টির প্রধান হিসেবে সাদ্দাম হোসেন আরব জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ধর্ম নিরপেক্ষ ও আধুনিক ইরাক গড়ে তুলতে প্রয়াস নেন।

জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ধর্ম নিরপেক্ষ ও আধুনিক ইরাক গড়তে গিয়ে এসময় সাদ্দাম হোসেন ইরাকে এক দলীয় শাসন কায়েম করেন। এসময়ই সাদ্দাম হোসেন ইরানের সাথে ৯ বছরের যুদ্ধে জড়িয়ে পরেন (১৯৮০-১৯৮৮)। তার মতে ইরাকের স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধের সকল পক্ষকে নির্মুল করার উদ্যোগ নেন। এই বিরুদ্ধ পক্ষে ছিল উপজাতীয় ও ধর্মীয় গোত্র গুলো যারা স্বাধীনতা দাবি করছিল। যেমন, ইরাকি শিয়া মুসলমান, কুর্দি, ইরাকি তুর্কি জনগন। ইরাক-ইরান যুদ্ধের পরে ১৯৯১-এ সাদ্দাম উপসাগরীয় যুদ্ধে জড়িয়ে পরেন। ১৯৯০ সালে তাঁর নির্দেশে ইরাক কুয়েত দখল করে নেয়। ১৯৯১ সালের প্রথম দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী কুয়েত দখল মুক্ত করে নেয়।

২০০৩ সালের মার্চ মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন ইরাকে ব্যাপক গণ বিধ্বংসী অস্ত্র থাকার অভিযোগে ইরাকে সামরিক অভিযান চালায়। যদিও যুদ্ধ পরবর্তি সময়ে এমন কোন অস্ত্রের হদিস পাওয়া যায় নাই। ৯ এপ্রিল মার্কিন বাহিনী বাগদাদ দখল করে, সাদ্দাম ক্ষমতাচ্যুত হন। একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর তাঁকে তাঁর জন্ম স্থান তিকরিত থেকে মার্কিন বাহিনী আটক করা হয়। ২০০৪ সালের ৩০ জুন মার্কিন বাহিনী সাদ্দামের ক্ষমতা ইরাকের অস্থায়ী সরকারের কাছে হস্তান্তর করে এবং ১ জুলাই ইরাকের বিশেষ আদালত সাদ্দামের বিচার শুরু হয়। ২০০৫ সালের ১৯ অক্টোবর ইরাকের উচ্চ আদালত দুজাইল গ্রামের হত্যাকান্ড মামলায় সাদ্দামকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু করে। উল্লেখ্য, সাদ্দাম হেসেনের প্রায় ২৫ বছরের শাসনামলে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। তাদের অধিকাংশই ছিল শিয়া সম্প্রদায়ের। এসব মৃত্যুর জন্য সাদ্দাম সরকারকেই দায়ী করা হয়। ১৯৮২ সালে সাদ্দাম দুজাইল গ্রামে স্থানীয় শিয়া সম্প্রদায়ের অধিবাসিদের হত্যার আদেশ দিলে এতে ১৪৩জন নিহত হয়। ২০০৬ সালে ৫ নভেম্বর ইরাকের উচ্চ আদালত চল্লিশ বারের বিচার নিয়ে মানবতা বিরোধী তত্পরতা চালানোর অভিযোগে সাদ্দামকে ফাঁসির আদেশ দেয়। ২৬ ডিসেম্বর ইরাকের মার্কিনীদের তাবেদার সরকারের আদালত সাদ্দামের আপীল নাকচ করে এবং আগের রায় বহাল রেখে ৩০ দিনের মধ্যে সাদ্দামের ফাঁসি কার্যকরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। রায় ঘোষণার স্বল্পতম সময়ে ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরের দিনে ইরাকি সময় সকাল ৬.০৬ মিনিটে সাদ্দাম হোসেনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফাঁসির রশিতে ঝোলানোর আগ পর্যন্ত তাঁর মনোবল ছিল অটুট, ছিল না কোনো অনুশোচনা। আজ সাদ্দাম হোসেনের ১২তম মৃত্যুবা্র্ষিকী।

পাশ্চাত্য এবং অনেক ইরাকির চোখে তিনি নিষ্ঠুর একনায়ক আর ভয়ংকর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী রাষ্ট্রনায়ক। যদিও সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ গুলো আজ ও প্রমানিত হয়নি। প্রহসনের বিচারে সাদ্দামের ফাঁসি তাই ইতিহাসের এক নির্মম ট্রাজেডি। আজ ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের ৭৮তম জন্মবার্ষিকী। সাদ্দাম হোসনে ভালো কি খারাপ ছিলেন তার বিচারের ভার মহান সৃষ্টিকর্তার। আমরা শুধু ট্রাজেডি কিং সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাই।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৪৬

নজসু বলেছেন:





আজকে উনার ফাঁসি দিবসে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি রইল।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:২৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ সুজন ভাই
বীরকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।

২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৫৩

যোখার সারনায়েভ বলেছেন: আল্লাহ ভালো জানেন।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:২৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
জ্বি আল্লাহই ভালো জানেন।

৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০২

কালীদাস বলেছেন: সাদ্দামের সাথে হিটলারের পার্থক্য সামাণ্যই; সাদ্দাম গ্যাস চেম্বার ইউজ করেনি (জানামতে), সাদ্দাম মুসলিম, হিটলারের টেস্টিকল ছিল ১টা (সাদ্দামেরটা সিআইএ জানে, ব্লগের মহাপন্ডিত কয়েকজনও জানতে পারে)। এর বাইরে এদের এক্টিভিটজ কাছাকাছিই ছিল এবং ইন্টারেস্টিং যেটা: হিটলারের মত সাদ্দামও বর্তমান বাংলাদেশের ভুখন্ডে যারা থাকে তাদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। যে উগ্র জাতীয়তাবাদ নিজের দেশে অগণিত মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়, অন্য সার্বভৌম দেশে হামলা চালানোর ইন্ধন যোগায়, সেটা দেশপ্রেম না, সাইকোর সিমটম। বিচারও পেয়েছে সে আল্লাহর কাছ থেকেই, মরেছে ভুল দোষের শাস্তি পেয়ে।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৩০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

দোষীর সাস্তি হবে এটা্ই বিধান।
কি্ন্তু বীরের কাছে বীরতো বীরের
ব্যবহার আশা করতেই পারে।
সাদ্দামকে প্রহসনের বিচারে
দোষী সাব্যস্ত করে হত্য করা
হয়েছে যা সভ্য সমাজে কাম্য নয়।

৪| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩৫

আলী নওয়াজ খান বলেছেন: জালিম ও অত্যাচারীর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শন করার অর্থ হল মানবতা ও মানবতা ও মনুষ্যত্বকে পদদলিত করা। যেমনী ভাবে আজকে আমরা দেখতে কিছু কাপারুষ হুজুর ইয়াজীদকেও শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়ে থাকেন।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৩৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমার লেখার শেষ প্যারাতে আপনার
মন্তব্যের উত্তর খুঁজে পাবেন।
অন্যায় করলে তার শাস্তি আছে,
তাকেযে ভাবে হত্যা করা হয়েছে
তা কতটুকু যুক্তিযুক্ত !
যদি অন্যায় ভাবে তাকে
হত্যা করা হয় তা হলে
তারও বিচার হবে।

৫| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: সাদ্দাম পরাজিত।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৩৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সাদ্দাম নিহত !

৬| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩৭

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: স্যালুট জানাই মহান নায়ককে।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৩৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বীর, বীরের কাছে, বীরের
আচরণ প্রত্যাশা করে।

৭| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ ভোর ৪:২৭

নাজিম হাসান বলেছেন: দারুন লিখেছেন । সামনে আরো এমন লেখা পাবো বলে আশা করি...

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৩৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ
সাথে থাকলে
পেতেও পারেন।
ধন্যবাদ মন্তব্য
প্রদানের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.