নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

যেতে নাহি দিব! হায় তবু চলে যায়ঃ ২০১৮ সালে যাদের হারিয়েছি আমরা

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৫


দরজায় কড়া নাড়ছে নতুন বছর। মহাকালের অমোঘ নিয়মকে লঙ্ঘন করার কোন সুযোগ নেই। বিদায়ের ঘন্টা বাজিয়ে বিদায় নেবে ২০১৮। রাত পোহালে ২০১৯ সাল। আনন্দ-বেদনা, আশা-নিরাশার ভেলায় চড়ে সবাই ২০১৮ সালকে বিদায় জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে আর নতুন বছরকে নিয়ে বুনছে নানা স্বপ্ন। বছর শেষে হিসেব করতে গেলে দেখা যায় কেউবা হয়েছে সফল কিংবা আবার দেখা যায় কেউ হারিয়েছেন অনেক কিছুই। অনেক স্বপ্ন অর্জনের পাশাপাশি ২০১৮ আমাদের দিয়েছে কিছু হারানোর ক্ষত। ২০১৮ সালে আমরা এমন সব মানুষকে হারিয়েছে যাদের কাছে ঋণী হয়ে থাকবে পৃথিবীর বাকি ইতিহাস। বিজ্ঞান, রাজনীতি, শিল্প-সাহিত্য, উদ্ভাবনে যাদের অবদানের কারণে আমাদের সভ্যতা এগিয়ে গেছে বেশ কয়েক ধাপ। হঠাৎ করেই এসব মানুষ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন চিরজীবনের মতো। তাদের আমরা আর কখনোই খুঁজে পাবো না। ‘যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়’। এই অমোঘ সত্যের কাছে হার মেনে গত বছর কালের গর্ভে হারিয়ে গেছেন আমাদের অনেক কীর্তিমান মানুষ যারা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে রেখে গেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তাদের কর্ম তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখবে সহস্র শতাব্দী।

পৃথিবীর সেরা মহাকাশবিজ্ঞানীদের একজন স্টিফেন হকিং। যার লেখা ‘আ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ সর্বকালের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বইয়ের একটা। ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর ও আপেক্ষিকতা নিয়ে গবেষণার জন্য বিখ্যাত ছিলেন ব্রিটিশ এই পদার্থবিদ। ২০১৮ সালের ১৪ই মার্চ ৭৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

স্ট্যান লিঃ
মার্কিন কমিক বই লেখক ও মার্ভেল কমিকসের স্রস্টা স্ট্যান লি। স্পাইডারম্যান, এক্স ম্যান, হাল্ক, আয়রনম্যান, ডক্টর স্ট্রেঞ্জের মতো দুনিয়া-কাঁপানো সব চরিত্রের অন্যতম স্রষ্টা তিনি। তাকে বলা হয় হিরোদের বাবা। চলতি বছরের ১২ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর

জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশঃ
যুক্তরাষ্ট্রের ৪১তম প্রেসিডেন্ট হন জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ। দুই দফা মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ১৯৮৯ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তাছাড়া তার ছেলে জর্জ ডব্লিউ বুশ দুই দফায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। গত ৩০ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পল অ্যালেনঃ
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কম্পিউটার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা পল অ্যালেন। গত ১৫ অক্টোবর ৬৫ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন তিনি।

কফি আনানঃ
জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনকারী কফি আনান ১৮ আগস্ট মারা যান। জাতিসংঘকে পুনরুজ্জীবিত করা ও মানবাধিকারকে প্রাধান্য দেয়ায় ২০০১ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান তিনি।

ভি এস নাইপলঃ
সাহিত্যে নোবেলজয়ী লেখক ভি এস নাইপল গত ১১ আগস্ট ৮৫ বছর বয়সে লন্ডনে নিজ বাসভবনে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এই লেখক ৩০টির বেশি বই লিখেছেন। ১৯৭১ সালে তিনি বুকার পুরস্কার পান। আর ২০০১ সালে পান সাহিত্যে নোবেল।

জন ম্যাককেইনঃ
মস্তিষ্কে টিউমারসংক্রান্ত জটিলতায় ভুগে গত ২৫ আগস্ট রিপাবলিকান দলের মার্কিন সিনেটর জন ম্যাককেইন মারা যান। যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধে অংশ নেয়ার পর রাজনীতিতে যোগ দেন ম্যাককেইন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

উইনি ম্যান্ডেলাঃ
দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা উইনি ম্যান্ডেলা চলতি বছরের ২ এপ্রিল ৮১ বছর বয়সে মারা যান। ওই আন্দোলনের অবিসংবাদী নেতা প্রয়াত নেলসন ম্যান্ডেলার সাবেক স্ত্রী তিনি।

অ্যারেথা ফ্রাঙ্কলিনঃ
‘কুইন অব সোল’ হিসেবে জগৎজোড়া খ্যাতি ছিল সংগীতশিল্পী অ্যারেথা ফ্রাঙ্কলিনের। সেই কিংবদন্তির জীবনাবসান হয় ১৬ আগস্ট। ৭৬ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান তিনি।

বাংলার শিল্প ও সংস্কৃতির উন্নয়নে অনেক গুণী ব্যক্তিত্বের অবদান রয়েছে। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও অবদানের ফলে আজকের সাংস্কৃতিক অঙ্গন। তাদের অনেকেই আবার এ বছর চলে গেছেন আমাদের ছেড়ে। নিয়তির এক অমোঘ নিয়মে তারা পাড়ি জমিয়েছেন না-ফেরার দেশে। তারা স্থান করে নিয়েছেন আমাদের অন্তরের মণিকোঠায়। সংস্কৃতি অঙ্গন হারিয়েছে অবদান রাখা বেশ কজন কৃতি ব্যক্তিত্বকে। এক সময় যারা তাদের প্রতিভার আলোয় আলোকিত করেছে শিল্পাঙ্গন। তারা আজ চিরদিনের জন্য পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। তাদের হারানোর শোক বুকে নিয়েই নতুন শুরুর যাত্রা হবে আমাদের।

সিরাজ হায়দার, চলচ্চিত্র অভিনেতাঃ
বাংলা চলচ্চিত্রের শক্তিমান ও জনপ্রিয় অভিনেতা সিরাজ হায়দার চলতি বছরের শুরুর দিকে অর্থাৎ ১১ জানুয়ারি পরলোকগমন করেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর কল্যাণপুরে নিজ বাসায় মারা যান তিনি। সিরাজ হায়দার অভিনয়ের সাথে জড়িত ছিলেন পঞ্চাশ বছরেরও বেশী সময় ধরে।
১৯৬২ সালে নবম শ্রেণীর ছাত্রকালীন সময়ে ১৪ আগস্ট পূর্ব পাকিস্তান জাতীয় দিবসে টিপু সুলতান নাটকে করিম শাহ চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে অভিনয়ে পথচলা শুরু করেছিলেন। ২০১২ সালে এসে সেটা ৫০ বছরে পূর্ণ হয়। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি অভিনয় করেছেন যাত্রা, মঞ্চ, রেডিও, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্রে।
মুক্তিযুদ্ধের পর চলচ্চিত্র পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুনের সহকারী হিসেবে জল্লাদের দরবার নামক চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। প্রথম অভিনীত চলচ্চিত্রের নাম সুখের সংসার। নারায়ন ঘোষ মিতা পরিচালিত এ চলচ্চিত্রে সিরাজ হায়দার খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন। মঞ্চ নাটক নির্দেশনা দিয়েছেন মাত্র উনিশ বছর বয়সে। ১৯৭৬ সালে তিনি রঙ্গনা নাট্যগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেন এবং অনেকগুলো নাটকের নির্দেশনা দেন। সিরাজ হায়দার দুটি চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেছেন। এদের একটি ‘আদম ব্যাপারী’ যা মুক্তি পায় নি, অন্যটির নাম ‘সুখ’।

শাম্মী আখতার, সংগীতশিল্পীঃ
নন্দিত সংগীতশিল্পী শাম্মী আখতারকেও আমরা হারিয়েছি এ বছরই। প্রায় ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে স্তন ক্যান্সারের ভুগছিলেন তিনি। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতির হলে চামেলিবাগের বাসা থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এরপর ১৭ জানুয়ারি তাঁকে ঢাকার শাহজাহানপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।
তিনি প্রায় ৪০০টি ছবিতে প্লে-ব্যাক করেছেন। তার গাওয়া গানের দুটি ক্যাসেট প্রকাশিত হয়েছে।। ‘ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না’ ছবির ‘ভালোবাসলেই সবার সাথে ঘর বাঁধা যায় না’ গানের জন্য ২০১০ সালে শ্রেষ্ঠ নারী সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে শাম্মী আখতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। তার জনপ্রিয় উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘ঢাকা শহর আইসা আমার’, ‘খেলিব প্রেমের পাশা’,’ ‘মনে বড় আশা ছিল ‘, ‘এই রাত ডাকে ঐ চাঁদ’, ‘তুমি আমার বন্ধু’, ‘বিদেশ গিয়া বন্ধু তুমি আমায় ভুইলো না’, ‘ঝিলমিল ঝিলমিল করছে রাত’ ইত্যাদি।

কাজী আজিজ আহমেদ, গীতিকারঃ
বাংলা চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান গীতিকার কাজী আজিজ আহমেদ। বাংলা গানের তালিকায় কালজয়ী এক সংযোজন ‘চোখ যে মনের কথা বলে’র মত অসংখ্য গানের রচয়িতা তিনি। গান লেখার পাশাপাশি অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমার চিত্রনাট্যও লিখেছেন তিনি। চিত্রনাট্যকার, কাহিনীকার, সংলাপ রচয়িতা এবং চিত্র পরিচালক কাজী আজিজ আহমে দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন নানা শারীরিক জটিলতায়। শক্তিমান এই ব্যক্তিত্ব বার্ধক্যজনিত কারণে ৩০ জানুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
‘চোখ যে মনের কথা বলে’, ‘এ আঁধার কখনো যাবে না মুছে’ – ইত্যাদি গানের জন্য বিখ্যাত হলেও তিনি ‘খান আতা’র ‘অনেক দিনের চেনা’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার এবং চিত্রপরিচালনাও করেছেন তিনি। উলঝান, যে আগুনে পুড়ি, ক খ গ ঘ ঙ, এরাও মানুষ, ওরা ১১ জন, সংগ্রাম, গুনাই বিবি, অনন্ত প্রেম, বাজিমাত ইত্যাদি সিনেমার কাহিনী ও চিত্রনাট্য লিখেছিলেন তিনি।

সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলী আকবর রুপুঃ
দেশ বরেণ্য সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলী আকবর রুপু মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে গেলো ২২ ফেব্রুয়ারি না ফেরার দেশে চলে যান। দীর্ঘদিন ধরেই ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন আলী আকবর রুপু। তার হার্ট ও কিডনিতেও সমস্যা ছিল।
১৯৮৪ সালে মালেক আফসারী পরিচালিত ‘রাস্তার ছেলে’ ছবিতে গান করে জনপ্রিয়তা পান এ সুরকার। মাত্র ছয়টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন তিনি। আব্দুল্লাহ আল মামুনের ‘দুই বেয়াইর কীর্তি’ তার সংগীত পরিচালনায় সর্বশেষ চলচ্চিত্র। তবে আলী আকবর রুপু দেশের সর্বত্র পরিচিতি পেয়েছিলেন বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র হাত ধরে। প্রায় দুই যুগ ধরে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র অসংখ্য গানের সুর করছেন তিনি। হানিফ সংকেতের মুখে অনুষ্ঠানটির প্রতি পর্বে আলী আকবর রুপুর নাম শোনাটা হয়ে উঠেছিলো নিয়মিত বিষয়।
আলী আকবর রুপুর সুর ও সংগীত পরিচালনায় অসংখ্য গান জনপ্রিয় হয়েছে। গানের তালিকায় রয়েছে সাবিনা ইয়াসমিনের ‘প্রতিটি শিশুর মুখে হাসি’, এন্ড্রু কিশোরের ‘পদ্ম পাতার পানি নয়’, মুরাদের ‘আমি আগের ঠিকানায় আছি’, কুমার বিশ্বজিতের গাওয়া ‘একদিন কান্নার রোল পড়বে আমার বাড়িতে’, ‘যারে ঘর দিলা সংসার দিলা রে’, ‘দস্যু যেমন মুখোশ পরে প্রবেশ করে ঘরে’, ‘দরদিয়া’, ‘এ অনিশ্চয়তা’, ‘এ পশলা বৃষ্টি’, শাকিলা শর্মার ‘তোমাকে দেখলেই মৌনতা ভুলে যাই’, সাবিনা ইয়াসমিন, কনক চাঁপা ও সামিনা চৌধুরীর ‘সব চাওয়া কাছে পাওয়া’, নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরীর ‘কবিতার মতো মেয়েটি, গল্পের মতো ছেলেটি’, সামিনা চৌধুরীর ‘জানতে চেয়ো না কোন সে বেদনাতে’, দিনাত জাহান মুন্নীর ‘পুরোনো কাপড়ের মতো আমি আজ অবহেলিত’, মৌটুসীর ‘বারে বারে পোড়া বাঁশি এত রাতে আর ডেকো না’ ইত্যাদি।
এছাড়াও তিনটি টিভি চ্যানেলের উদ্বোধনী সংগীত তৈরি করেছেন তিনি। গানগুলো হলো একুশে টিভির ‘নব শতকের সম্ভাবনার দিনে’, এনটিভির ‘বাংলাদেশর বিজয়ের আলো জ্বেলে’ আর এটিএন বাংলার ‘দিনরাত এটিএন এশিয়া ইউরোপে’।

চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রানী সরকারঃ
মোসাম্মৎ আমিরুন নেসা খানম হলেও সবাই তিনি রানী সরকার নামে পরিচিত। ষাটের দশক থেকে চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আসছেন তিনি। বাংলা চলচ্চিত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরুস্কারের আজীবন সম্মাননা প্রদান করেন। ৮৬ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী বার্ধক্যজনিত কারণে ৭ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৫৮ সালে বঙ্গের বর্গী মঞ্চনাটকের মাধ্যমে রানী সরকার অভিনয় জীবন শুরু করেন। সে বছরই তার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় এ জে কারদার পরিচালিত ‘দূর হ্যায় সুখ কা গাঁও’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। এরপর ১৯৬২ সালে বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার এহতেশামুর রহমান পরিচালিত উর্দু চলচ্চিত্র ‘ চান্দা’তে অভিনয় করেন তিনি। সেই ছায়াছবির পর থেকে তার পিতৃপ্রদত্ত নাম মেরীর বদলে নতুন নাম হয় রানী সরকার।
চান্দা চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর উর্দু ছায়াছবি ‘তালাশ’ ও বাংলা ছায়াছবি ‘নতুন সুর’ এ কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে অভিনয় করেন। এই ছায়াছবি দুটিও বেশ জনপ্রিয় হয়। এরপর তিনি প্রায় ২৫০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে ‘খাঁচা, গ্রাস, নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ, অবুঝ বউ, এবাদত, থার্ড পার্সন সিঙ্গুলার নাম্বার, আয়না, ঘানি, শ্যাম সাহেব, দেবদাস, রংবাজ, সমাধান, নোল্ক, বন্ধন, নবাব সিরাজউদ্দৌল্লা, বেহুলা, কাঁচের দেয়াল ইত্যাদি।

সঙ্গীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চুঃ
বাংলা ব্যান্ডসংগীতের ইতিহাসের কিংবদন্তি শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু। তার ডাক নাম রবিন হলেও শ্রোতা ভক্তদের কাছে তিনি এবি নামেই বেশি পরিচিত। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই ১৯৭৮ সালে যোগ দেন ব্যান্ড ফিলিংসে। শহীদ মাহমুদ জঙ্গির ‘হারানো বিকেলের গল্প’ গানে প্রথম কণ্ঠ দেন আইয়ুব বাচ্চু। এরপর ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত জনপ্রিয় ব্যান্ড সোলসে গান গেয়েছেন তিনি।আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম প্রকাশিত একক অ্যালবাম ‘রক্তগোলাপ’। এরপর নিয়মিত প্রকাশ পেতে থাকে ‘সুখ’, ‘তবুও’, ‘ঘুমন্ত শহরে’, ‘স্বপ্ন’, ‘আমাদের বিস্ময়’, ‘মন চাইলে মন পাবে’, ‘অচেনা জীবন’, ‘মন আছে নাকি নাই’, স্পর্শের মতো অ্যালবামগুলো। সুখ অ্যালবামের ‘সুখ’, ‘চলো বদলে যাই’, ‘রুপালি গিটার’, ‘গতকাল রাতে’ উল্লেখযোগ্য গান গুলো ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। আর ‘চলো বদলে যাই’ বাংলাদেশের সঙ্গীত জগতে অন্যতম জনপ্রিয় একটি গান। গানটির কথা লিখেছেন ও সুর করেছেন বাচ্চু নিজেই। ২০১২ সালে ব্যান্ডটির সর্বশেষ অ্যালবাম ‘যুদ্ধ’ বের হয়েছে। ব্যান্ডটির একমাত্র লাইভ অ্যালবাম ‘ফেরারী মন’ ১৯৯৬ সালে মুক্তি পায়। ‘লুটতরাজ’ সিনেমায় তিনি প্রথমবার প্লে-ব্যাক করেন। এই ছবির ‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’ গানটি দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এরপর লাল বাদশা, আম্মাজান, ব্যাচেলর,রং নাম্বার, গুন্ডা নাম্বার ওয়ান, চাঁদের মত বউ, চোরাবালি, এক কাপ চা ছবিতে গান করেন।
২০১২ সালের ২৭ নভেম্বর ফুসফুসে পানি জমে যাওয়ার কারণে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। তবে সুস্থ হয়ে আবার সঙ্গীতজগতে ফিরলেও হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে হার্টে রিং পরাতে হয়েছে তাঁর। সর্বশেষ ১৬ অক্টোবর রংপুর জিলা স্কুলের মাঠে ‘শেকড়ের সন্ধানে’ শিরোনামের একটি অনুষ্ঠানে কনসার্টে অংশগ্রহণ করেন তিনি।
সেখান থেকে ঢাকায় ফিরে আসার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন আইয়ুব বাচ্চু। ১৮ অক্টোবর মগবাজারে নিজ বাসভবন থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে হার্ট অ্যাটাকের কারণে বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতের এই মহাতারকার মৃত্যু হয়। বাংলা সঙ্গীতজগতে অপূরণীয় অভাব রেখে গেলেন আইয়ুব বাচ্চু।

চিত্রগ্রাহক, আনোয়ার হোসেনঃ
আনোয়ার হোসেন ছিলেন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মানের একজন আলোকচিত্রী, চলচ্চিত্র ভিডিওগ্রাফার। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে চিত্রগ্রহণে অবদানের জন্য তিনি পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে মাত্র দুই ডলার দিয়ে কেনা প্রথম ক্যামেরা দিয়ে তার আলোকচিত্রী জীবনের শুরু। প্রথম সাত বছর ধার করা ক্যামেরা আর চলচ্চিত্রের ধার করা ফিল্ম দিয়ে তিনি কাজ করেন। ঐ ফিল্মগুলো ছিল সাদাকালো। তিনি ৩৬ টাকা ব্যয়ে রঙিন ছবি তোলা শুরু করেন ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে। পরবর্তি ২০ বছর আলোকচিত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আবিষ্কারের চেষ্টা করেছেন। গেলো ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

চলচ্চিত্র পরিচালক আমজাদ হোসেনঃ
আমজাদ হোসেন বাংলা চলচ্চিত্রের একজন বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা। একাধারে তিনি ছিলেন একজন অভিনেতা, লেখক ও গীতিকার।
ব্যতিক্রমধর্মী এই চলচ্চিত্র নির্মাতা তাঁর কর্মজীবনে ১২টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ৬টি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেছেন। সাবিনা ইয়াসমিনের (১৩টি) পর তিনি সর্বাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী। এছাড়া তিনি প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ছয়টি ভিন্ন বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন এবং এক আয়োজনে পাঁচটি বিভাগে (গোলাপী এখন ট্রেনে চলচ্চিত্রের জন্য) জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র আগুন নিয়ে খেলা। পরে তিনি ‘নয়নমনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘ভাত দে’ দিয়ে প্রশংসিত হন। ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালকের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘একুশে পদকে’ ভূষিত করে। এছাড়া সাহিত্য রচনার জন্য তিনি ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুইবার অগ্রণী শিশু সাহিত্য পুরস্কার ও ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ একাধিক পুরস্কার লাভ করেন।
২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে আমজাদ হোসেন ইশকেমিক স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাকে ঢাকার ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীকালে সরকারী অনুদানে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ২৭ শে নভেম্বর ব্যাংককে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর গত ১৪ই ডিসেম্বর ৭৬ বছর বয়সে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

চলচ্চিত্র পরিচালক সাইদুল আনাম টুটুলঃ
সাইদুল আনাম টুটুল ছিলেন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র ও নাট্য পরিচালক। গত ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
২০০৩ সালে ‘আধিয়ার’ চলচ্চিত্র নির্মাণের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জীবনে প্রবেশ করেন। ১৯৭৯ সালে ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ চিত্রসম্পাদকের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
চলচ্চিত্র সম্পাদক হিসেবে তিনি তার কর্মজীবন শুরু করেন। সালাউদ্দিন জাকির ঘুড্ডি, শেখ নিয়ামত আলীর দহন মোরশেদুল ইসলামের দীপু নাম্বার টু ও দুখাই ছায়াছবির সম্পাদনা করেন টুটুল। চলচ্চিত্র সম্পাদনার পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্র ও নাটক পরিচালনা করেছেন। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র আধিয়ার ২০০৩ সালে মুক্তি পায়। ১৯৪৬-৪৭ সালের বাংলার কৃষক চাষীদের তেভাগা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলচ্চিত্রটির কাহিনী লিখেছেন গিয়াসউদ্দিন সেলিম। এরপর তিনি নাটক নির্মাণে মন দেন। ২০০৯ সালে তার নির্মিত তিনটি নাটক বখাটে, আপন পর ও নিশিকাব্য জনপ্রিয়তা লাভ করে।
এরপর তার নির্মিত উল্লেখযোগ্য নাটকসমূহ হচ্ছে ‘৫২ গলির এক গলি, দায় মার সন্তানেরা, অপরাজিতা, মৃতের প্রত্যাবর্তন[, শিউলিমালা, কুটে কাহার, গোবরা চোর।
২০১৪ সাল থেকে তিনি এটিএন বাংলা ও ব্যাকড্রপ লিমিটেডের যৌথ আয়োজনে নির্মিত এটিএন বাংলায় প্রচারিত টেলিভিশন নাটক বিষয়ক রিয়েলিটি শো ‘রয়েলে টাইগার নাট্যযুদ্ধ’-এর বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন।

এটিএন নিউজের প্রধান উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার ফিরোজঃ বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট টিভি ব্যক্তিত্ব ও এটিএন নিউজের প্রধান উপদেষ্টা সরকার ফিরোজ মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি...রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর ‘বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হসপিটাল’-এ তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২। তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যা রেখে গেছেন। বিকেল ৩টায় এটিএন নিউজ কার্যালয়ে প্রথম নামাজে জানাজা এবং বাদ আসর ধানমন্ডি ঈদগাহ মসজিদে দ্বিতীয় নামাজে জানাজার পর শাহজাহানপুরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। দীর্ঘ ৫০ বছর দেশের টেলিভিশন মাধ্যমের সাথে যুক্ত ছিলেন সরকার ফিরোজ।

বলিউডের যারা চলে গেলেন|
অভিনেত্রী আভা মুখার্জীঃ ১৭ জানুয়ারী মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আভা মুখার্জী। সঞ্জয়লীলা বানসালির ‘দেবদাস’ হয়েছিলেন বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খান। সেখানে তার দাদীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন আভা মুখার্জি। যারা ছবিটি দেখেছিলেন নিশ্চয়ই তাদের মনে আছে দেবদাসের প্রতি তার দাদীর অনুরাগ, ভালোবাসা।

অভিনেত্রী শ্রীদেবীঃ ২৫ ফেব্রুয়ারী চলে গেলেন প্রখ্যাত বলিউড অভিনেত্রী শ্রীদেবী। দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে শ্রীদেবীর বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। তিনি খ্যাতনামা পরিচালক ও প্রয়োজক বনি কাপুরের স্ত্রী। এই দম্পতির দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

অভিনেত্রী নার্গিস রাবাডিঃ ৬ মার্চ চলে গেলেন বলিউডের অভিনেত্রী নার্গিস রাবাডি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। সাধারণত শাম্মি আন্টি নামেই তিনি পরিচিত ছিলেন।

অভিনেতা ‌নরেন্দ্র ঝাঃ ১৪ মার্চ নরেন্দ্র ঝা মারা গেছেন। ওয়াডায় নিজের ফার্মহাউজে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। গুণী এই অভিনেতা ‌‘রইস’, ‘হায়দার’ এবং ‘কাবিলে’র মতো অনেক জনপ্রিয় হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন। মারা গেছেন। ওয়াডায় নিজের ফার্মহাউজে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। গুণী এই অভিনেতা ‌‘রইস’, ‘হায়দার’ এবং ‘কাবিলে’র মতো অনেক জনপ্রিয় হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন।

অভিনেত্রী রিতা ভাদুরীঃ ১৭ জুলাই মারা যান প্রবীণ অভিনেত্রী রিতা ভাদুরী। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর মারা যান এই অভিনেত্রী। ভারতের টিভি সিরিয়ালে জনপ্রিয় মুখ ছিলেন রিতা ভাদুরী।

অভিনেত্রী সুজাতা কুমারঃ ১৯ আগষ্ট চলে গেলেন সুজাতা কুমার। তিনি মূলত মায়ের চরিত্রই বেশি করতেন। ‘ইংলিশ ভিংলিম’ সিনেমায় তিনি প্রশংসিত ও পুরস্কিত হয়েছিলেন।

চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও লেখক মৃনাল সেনঃ
বাংলাদেশী জন্মোদ্ভূত বিখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও লেখক মৃনাল সেন। নিয়ম ভেঙে চলচ্চিত্র বানানোতেই যিনি সবচেয়ে বেশি উৎসাহী ছিলেন। এ চলচ্চিত্রকার পাল্টে দিয়েছেন বাংলা ছবির ধারা। বাংলা চলচ্চিত্রের আধুনিক রূপরেখা দিয়েছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক খ্যাতিম্পন্ন এই পরিচালকের প্রতিটি ছবিতে ক্ষুদ্র গলি থেকে রাজপথ, বস্তি থেকে অট্টালিকার চিত্র তিনি তুলে ধরেছেন যা আর শেষ পর্যন্ত শুধু কলকাতার মাঝে সীমাবদ্ধ থাকেনি, পেয়েছে বৈশ্বিক রূপ। আর এখানেই মৃণাল সেন নির্মাতা হিসেবে অনন্য, আর সবার থেকে আলাদা। ছাত্র রাজনীতিতে বেশ দাপটের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মৃণাল সেন। ছাত্রাবস্থায় কমিউনিস্ট পার্টির সাংস্কৃতিক শাখার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এরপর তিনি সমাজবাদী সংস্থা ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশন (আইপিটিএ) এর সাথে যুক্ত হন। এ সংস্থার মাধ্যমে তিনি সমভাবাপন্ন মানুষদের কাছাকাছি আসতে সক্ষম হন। কিংবদন্তি এই চিত্র পরিচালক ৩০ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ১১টার দিকে ভবানীপুরে নিজ বাড়িতে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

মৃত্যু এক অলঙ্ঘনীয় নিয়তির নাম। এই নিয়তির কাছে হার মেন সূর্যের মতো উদিত হওয়া উপরোক্ত মানুষগুলি চিরদিনের জন্য পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। যারা কোনদিন ফিরবেন না। তবে যাবার পূর্বে তাঁদের মেধা-মনন আর সৃষ্টির কল্যাণে জাতিকে আলোকিত করে গেছেন। দেশ-জাতি এসব গুণীজনদের কাছে ঋণী। ‘আমরা তোমাদের ভুলবো না’।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৭

বাংলার মেলা বলেছেন: যাদের যাদের জন্ম হয়েছে, তাদের লিস্ট কোথায়?

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনার মতো বিখ্যাত হলেই তাদের
জন্ম পরিচয় নিযে হাজির হবো ইনসাআল্লাহ !

২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩০

নজসু বলেছেন:





উড়ে যায় পক্ষী নিচে পড়ে ছায়া
মানুষ মরে যায় রেখে যায় মায়া।
........................................

চলে যাওয়াদের মায়া আমরা সযতনে হৃদয়ে লালন করবো প্রিয় নুরু ভাই।
ধন্যবাদ এই পোস্টের জন্য।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:২০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য প্রদানের জন্য।

৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: আহারে--
মৃত্যু আমাকে খুব কাঁদায়।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:২৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মৃত্যু সবাইকে কাঁদায়
বিশেষ করে মৃতের আপন
জনদেরকে।

৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪১

সেলিম৮৩ বলেছেন: এভাবেই ২০২০ সালে অার একটা তালিকা হবে। হারিয়ে যাবে কত নামী-দামী মানুষ।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এভাবেই চলবে অনন্ত কাল।
স্মৃতির পাতায় রয়ে যাবে
শুধু গুণীজনের নাম।

৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৮

মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেছেন: অনেক বড় কালেকশন! সময় দিয়েছেন খুব!

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:২৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ ইসলাম ভাই
উৎসাহ পেলাম। কাজের স্বীকৃতি
কাজ করতে অনুপ্রেরণা যোগায়।

৬| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৬

ফেনা বলেছেন: সংগ্রহে রাখার মত তথ্য। ভাল লাগা।
জানাও ডোট কমে দিলাম।

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:২৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ ফেনা ভাই
আমার লেখাটিকে
আপনার জানাওকমে
স্থান দিবার জন্য।

৭| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০২

ফেনা বলেছেন: যেতে নাহি দিব! হায় তবু চলে যায়ঃ ২০১৮ সালে যাদের হারিয়েছি আমরা

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:২৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
দুঃখিত
লিংক কাজ করছেনা।

৮| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:০৭

নজসু বলেছেন:

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৩০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও নববর্ষের শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.