নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইলেক্ট্রনিকস বর্জ্যঃ স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:২৭


প্রযুক্তির সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাড়ছে প্রযুক্তি পণ্যের ব্যবহার। ডেস্কটপ পিসির জায়গা দখল করে নিয়েছে ল্যাপটপ। ল্যাপটপ বদলে ট্যাব, ফিচার ফোনের বদলে স্মার্টফোন, সিআরটি মনিটরের জয়গা দখল করেছে এলসিডি, এলইডি মনিটর। এভাবেই নতুন নতুন সংস্করণের ডিভাইস বিদায় জানাচ্ছে পুরোনো ডিভাইসকে। দিন দিন বাড়ছে ই-বর্জ্যের স্তুপ। প্রতিবছর বিশ্বে এই ই-বর্জ্য শতকরা ৫-১০% হারে বাড়ছে এবং এই বর্জ্যের শতকরা ৫ ভাগের বেশী পুনরুদ্ধার করা যায় না। বিশ্বজুড়ে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির বর্জ্য বা ই-বর্জ্য ২০২৫ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। এ সমস্যার সমাধানে জাতিসংঘসহ কয়েকটি সংগঠন বিশ্বের মোট ই-বর্জ্যের পরিমাণ হিসাব করেছে। পরিত্যক্ত রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, মুঠোফোন, মনিটর ইত্যাদি ই-বর্জ্যের অন্তর্ভুক্ত। এসব বর্জ্য রূপান্তর না করলে পরিবেশ দূষণ বাড়তে পারে। গবেষকদের অনুমান, সারা বিশ্বের এসব বর্জ্যের ওজন হবে প্রায় ২০০টি এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের (নিউইয়র্ক) ওজনের সমান। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে বাতিল ইলেক্ট্রনিক পণ্য– ই-বর্জ্য এখন মারাত্মক পরিবেশ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জীববৈচিত্র হুমকির পাশাপাশি দেশে ১৫ শতাংশ শিশুমৃত্যুরও কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এ বর্জ্য। গবেষকরা বলছেন, ই-বর্জ্যের সবচেয়ে বড় বিপদ হচ্ছে, বিষাক্ত কয়েক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ এবং বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক সামগ্রী। আর সুনির্দিষ্ট নীতিমালা বা আইন না থাকায় ডিজিটাল বর্জ্য ভাগাড় হতে চলেছে বাংলাদেশ। তারা এসব ই-বর্জ্য সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনার জন্য সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি বছর চারেক আগের খসড়া নীতিমালাকে আইনে পরিণত করার তাগিদ দেন। তারপরও দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ঝুলে রয়েছে ই-বর্জ্য ব্যস্থাপনা বিষয়ক নীতিমালা। ২০১১ সালে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খসড়া আইন ও বিধিমালা তৈরি করে পরিবেশ অধিদফতর। পরে ওই খসড়া আইন ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয় আইন মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় মতামত না দেয়ায় আইনটি প্রণয়নের কাজ থমকে রয়েছে। এছাড়া ই-বর্জ্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিয়ে ১৯৮৯ সালে শুরু হওয়া বেসেল কনভেনশনের স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচিতে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। এরপরেও সরকারি নীতি-নির্ধারক মহল বিষয়টি গুরুত্বসহ বিবেচনা না করলে আগামী দিনে দেশ একটি বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে, এমনটিই আশংকা বিশেষজ্ঞদের।

বাংলাদেশে এখন ১৩ কোটি মুঠোফোন—এই তথ্য এখন আর কাউকে বিস্মিত করে না। বিস্মিত হতে হয়, যখন দেখি যে প্রতিবছর ২৫-৩০ শতাংশ মুঠোফোনের ব্যবহারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সেগুলো কোথায় যাচ্ছে তা অধিকাংশ মানুষই জানে না, জানার প্রয়োজনও বোধ করে না। ১৩ কোটি মুঠোফোনের ব্যবহারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ১৩ কোটি ব্যাটারি কোথায় যাবে—এ কথা ভাবলেই আন্দাজ করা যাবে বাংলাদেশের মতো অতিরিক্ত জনঘনত্বের এই দেশে ইলেকট্রনিক বর্জ্য ভবিষ্যতে কত বড় সমস্যা হয়ে উঠতে পারে। শুধু মুঠোফোন নয়, কম্পিউটারসহ সব ধরনের ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতিতে অনেক ধাতব ও রাসায়নিক উপাদান থাকে। যন্ত্রগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরে সেগুলোর যথাযথ ব্যবস্থাপনা করা না হলে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য যে ক্ষতিকর অবস্থা তৈরি হতে পারে, তা সম্পর্কে শিল্পোন্নত ও ধনী দেশগুলো অনেক আগেই সচেতন হয়েছে এবং এ ব্যাপারে অনেক ধরনের আইনকানুন ও বিধিবিধান প্রণয়ন করেছে। শুধু তা–ই নয়, অনেক ধনী ও চালাক দেশ তাদের ইলেকট্রনিক বর্জ্য নানা কারসাজির মাধ্যমে রপ্তানি করছে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। ২০১৪ সালে পৃথিবীতে মোট উৎপাদিত ইলেট্রনিক বর্জ্যের পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ২ লাখ মেট্রিক টন। এর সিংহভাগ উৎপন্ন হয়েছে ইউরোপ-আমেরিকার উন্নত দেশগুলোতে, কিন্তু ৯০ শতাংশই রপ্তানি বা ‘ডাম্প’ করা হয়েছে এশিয়া ও আফ্রিকার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে।

সুইডেনের প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক একটি সংগঠন এসএসএনসির অর্থায়নে বাংলাদেশের বেসরকারি সংস্থা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) পরিচালিত ‘ই-বর্জ্য: বাংলাদেশের বর্তমান চিত্র-২০১৪’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, ২০১১-১২ অর্থবছরে দেশে বাতিল হয়ে যাওয়া ই-বর্জ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫১ লাখ টন। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে তা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ১ কোটি ১০ লাখ টনে দাঁড়ায়। এর মধ্যে মোবাইল, টেলিভিশন এবং কম্পিউটার তৈরির বর্জ্যের পরিমাণ বেশি। এদিকে বাংলাদেশে জাহাজভাঙা শিল্পের জন্য আমদানি করা প্রতিটি জাহাজে বিভিন্ন প্রকারের বিপুল পরিমাণ অব্যবহৃত বৈদ্যুতিক পণ্য থাকায় এ থেকে তৈরি হওয়া বর্জ্য বেশি। এর বাইরে সিএফএল বাতি, মার্কারি বাতি, থার্মোমিটারসহ নানা প্রকারের চিকিৎসা ও গৃহস্থালি যন্ত্র থেকে তৈরি হয় বর্জ্য। ইএসডিও’র গবেষণাটি করা হয় প্রশ্নপত্র জরিপের ভিত্তিতে। মূলত ঢাকা এবং চট্টগ্রামে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৪ সালের জুলাই পর্যন্ত পরিচালিত এ জরিপের জন্য বাসাবাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক পণ্য ব্যবহারকারী, আমদানিকারক, বিক্রেতা, মেরামতকারী এবং বাতিল হওয়া পণ্য পুনর্ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার (রি-সাইক্লিং) কাজে জড়িত ছয় হাজার মানুষের সঙ্গে কথা বলা হয়। গবেষণার সুপারিশে বলা হয়েছে, ই-বর্জ্যের বিষয়ে সঠিক ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি দরকার এবং নীতিমালা মানা উচিত, অবৈধভাবে আমদানি করা ই-বর্জ্য ঠেকাতে এবং ভবিষ্যতে এবিষয়ে আরো বেশি বেশি গবেষণা দরকার হবে।

ঢাকার এলিফেন্ট রোড, নিমতলী ও ধোলাইখালে ছাড়াও অনির্দিষ্ট আরও কয়েকটি স্থানে স্তুপ করা হচ্ছে ই-বর্জ্য। ব্যবহার্য প্রযুক্তি পণ্যের পাশাপাশি ই-বর্জ্যের এই পাল্লা ভারি করছে সিঙ্গাপুর, চীন ও কোরিয়া থেকে অবৈধ পথে আসা পুরোনো পণ্য। কখনও নতুন পণ্যের সঙ্গে মিশ্রিতভাবে আবার কখনও অন্য পণ্যের সঙ্গে দেশে ঢুকছে এসব ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম যা অল্পদিনেই পরিণত হচ্ছে বাতিল পণ্যে। ফেলে দেয়া হচ্ছে যত্রতত্র। অথচ এসব পণ্যে বিদ্যমান পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর জিংক, ক্রোমিয়াম, নাইট্রাস অক্সাইড, সিসা, পারদ, ক্যাডমিয়াম, বেরিলিয়ামসহ বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান নিরব ঘাতকের মতো খুন করছে মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা। ক্যান্সার, কিডনির সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা, নবজাতকের বিকলাঙ্গতাসহ রক্তনালির বিভিন্ন রোগের প্রোকপ বাড়াচ্ছে। দেশের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর এখানে জমা হচ্ছে ১০ মিলিয়ন মেট্রিক টন ই-বর্জ্য। প্রতি দুই বছর অন্তর এই বর্জ্যের পরিমাণ দ্বিগুণ বাড়ছে। খোদ পরিবেশ অধিদপ্তরের সমীক্ষা বলছে, ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় ৫০০ টন ই-বর্জ্য বাড়ছে। আর দেশে মোট ই-বর্জ্যের ১৫ শতাংশই শুধু তৈরি হয় ঢাকায়। পরিবেশ বিষয়ক বেসরকারি সংস্থা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০১১-১২ সালে বাংলাদেশে ই-বর্জ্যের পরিমাণ ছিলো ৫১ লাখ ৮১ হাজার ৪০০ টন। আর ২০১৩-১৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ১ লাখ ৫ হাজার ৫৭০ টনে। এর মধ্যে শুধু সেলফোন থেকে বছরে হাজার টন আর টেলিভিশন/মনিটর থেকে তৈরি হচ্ছে ১ লাখ ৭০ হাজার টন। ডিভিডি প্লেয়ার, ভিডিও ক্যামেরা, ফ্যাক্স ও ফটোকপি মেশিন, ভিডিও গেমস, মেডিকেল ও ডেন্টাল সরঞ্জামাদি থেকে ১ লাখ টনের বেশি ই-বর্জ্য হয়। বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল মার্চেন্ডাইজ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সূত্রে, বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩২ কোটি টন ইলেকট্রনিক পণ্য ব্যবহার করা হয়। তবে এর মধ্যে পুনর্ব্যবহার উপযোগী করা হয় মাত্র ২০-৩০ শতাংশ পণ্য। এ ছাড়া দেশে প্রতিবছর ৫০ হাজারের বেশি কম্পিউটার আমদানি করা হচ্ছে। তবে পুরনো ও নষ্ট হওয়া কম্পিউটারগুলো কী হচ্ছে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সুনির্দিষ্ট আইন না বা বিধি না থাকার কারণে সে বিষয়টিও এখন উপেক্ষিত রয়েছে। এদিকে আমদানি নীতি আদেশ ২০১২-১৫-এর ২৬(২১) ধারায় পুরনো কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা না না মানায় এই ই-বর্জ্যের পরিমাণ আশঙ্কা জনক হারে বাড়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে দেশের চিহ্নিত কয়েকটি প্রযুক্তি বাজারে এখন ডেল, এইচপি ব্র্যান্ডের সম্পূর্ণ কম্পিউটার সেট ১০ হাজার টাকার মধ্যে দেয়া সম্ভব হচ্ছে। আর এই সস্তা প্রযুক্তি কিনে কেবল ক্রেতারাই পস্তাচ্ছেন না, হুমকীর মুখে পড়ছে ভবিষ্যত প্রজন্ম।

বিশেজ্ঞরা বলছেন, কম্পিউটারের বর্জ্য মাটিতে পুঁতে ফেলা হচ্ছে। যা থেকে তৈরি হচ্ছে ল্যাকটেটস। এটি মাটির নিচে পানিকে দূষিত করছে। এ ছাড়া বাসাবাড়ির আশপাশে দীর্ঘদিন ফেলে রাখা ই-বর্জ্য থেকেও ভয়াবহ মাত্রার স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন বড় বড় সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলোতে নষ্ট হয়ে যাওয়া ইলকট্রনিক পণ্যগুলো নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক বর্জ্যরে ব্যবস্থাপনাবিষয়ক আন্তর্জাতিক ভেসেল কনভেনশনে স্বাক্ষর করছে। কনভেনশনের শর্তানুযায়ী ইলেকট্রনিক বর্জ্যবিষয়ক একটি নীতিমালা বাংলাদেশের তৈরি করার কথা। কিন্তু বাংলাদেশ এখনও তা তৈরি করেনি। এদিকে ই-বর্জ্যরে ভয়াবহতার কথা স্বীকার করে পরিবেশবাদীরা বলছেন, গেল এক দশকে ই-বর্জ্য জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সংকটে ভয়াবহ মাত্রা যোগ করেছে। ২০১২ সালে ইলেকট্রনিক বর্জ্য নিয়ে ডিসপোজাল ম্যানেজমেন্ট রুল নামে একটি আইনের খসড়া পরিবেশ অধিদফতর থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু এটি এখনও আলোর মুখ দেখেনি। দীর্ঘদিন বিষয়টি নিয়ে আর কোনো কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পরিষদের নির্বাহী কমিটির ২২তম সভায় ই-বর্জ্য আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ সিদ্ধান্তের পর ২০১৭ সালের ১০ জুন ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত আইন/বিধিমালা পর্যালোচনা করতে ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ৯ আগস্ট সর্বশেষ পর্যালোচনা বৈঠক শেষে আইন/বিধির খসড়া চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। বর্তমানে সেটি আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের জন্য অপেক্ষমান রয়েছে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইন মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিব বলেন, সংশ্লিষ্টদের একমত হতে না পারার কারণে আইনটি প্রণয়নে দেরি হচ্ছে। তবে শুধু ই-বর্জ্যের জন্য আইন তৈরি করা হলে সমস্যাও রয়েছে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন সংশোধন করে সব বর্জ্যের জন্য সম্মিলিত একটি আইন করে বিধিমালা সংশোধন করা যায় কিনা তাও বিবেচনা করা হচ্ছে। পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ৪ কোটি টন ই-বর্জ্য জমা হয়। প্রতিদিন জমা হওয়া বিষাক্ত বর্জ্যরে প্রায় ৭০ শতাংশই ই-বর্জ্য। তবে পুনঃব্যবহার উপযোগী হলেও এর মাত্র ১২.৫ শতাংশ ব্যবহৃত হয়। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে জমা হওয়া ই-বর্জ্যরে প্রায় ৮০ ভাগই এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয় পুনঃব্যবহারযোগ্য করে তোলার জন্য। এসব ই-বর্জ্যে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর উপাদান যেমন- পারদ, সিসা, আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম ইত্যাদি থাকে; যা পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।আমরা যদি সামনের বিপদ দেখতে না পাই, তাহলে ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক বর্জ্যের পাহাড় একটা সময় আমাদের জন্য এক বিরাট অভিশাপ হয়ে উঠতে পারে।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৪১

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: সচেতনতামূলক পোস্ট....

প্রিয়তে...

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ আর্কিওপটেরিক্স
সু-চিন্তিত মতামত প্রকাশের জন্য।
শুভকামনা আপনার জন্য।
সচেতন হোন
সুন্দরে বাঁচুন।

২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার একটি পোষ্ট।
দারুন সব তথ্য দিয়েছেন।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ রাজীব নূর ভাই
গতানুগতিক ধারার বাইরে
আপনার আজকের মন্তব্যের জন্য
অসংখ্য ধন্যবাদ।

৩| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:১০

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: ভয়ংকর তথ্য!!! পরিবেশ অধিদপ্তর কি করেন ? লাইসেন্সে ব্যাবসা করে যাচ্ছে নাকি এখনো তারা জানেই না ই-বর্জ্য কি ? আসলে নূরু ভাই বাংলাদেশর মানুষ আমরা হচ্ছি গন্ডার সদৃশ শুড়ুশুড়িতে তিন দিন পর উপলব্ধি হয় ! বর্জ্য ব্যাবস্থাপণা বাংলাদেশে যে কি পারিমান হুমকির মুখে তা লিখতে হলে ৩৬৫ দিন ৩৬৫ জন এক্সপার্ট কাজ করে রিপোর্ট করতে লাগবে আরো ৩৬৫ দিন।

ব্যাটারি !!! সেল ফোনের ব্যাটারি যদি হয় বাংলাদেশর মানুষের খাদ্য তাহলেই একমাত্র সমাধান - সেলফোনের বাতিল ব্যাটারি বিলু্প্তি হবে ।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:২২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ঠাকুর ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্য করার জন্য।
আসলে আমরা সাধারণ মানুষ যা বুঝি বা যা নিয়ে ভাবি তা কেন
নীতি নির্ধারকরা বুঝেন না বা তা নিয়ে ভাবেন না। ই বর্জের সূদুর
প্রসারী আগ্রাসনে কি পরিমান ক্ষতি হতে পারে তা তারা বুঝবে
তখনই যখন তার বিরুপ প্রতিক্রিয়া শুরু হবে ব্যাপক ভাবে পলিথিন
বিপর্যয়ের মতো। পুলিশ নিয়োগ করতে হবে ই বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের জন্য।

৪| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৫

হাবিব বলেছেন:





চমৎকার পোস্ট তা বলার অপেক্ষা রাখেনা......
অত্যন্ত জনসচেতনতামূলক লেখা........
আসলে এরপরও মানুষ সচেতন হবে না, এটাই স্বাভাবিক।

আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টের জন্য.........

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ হাবিব ভাই
জনসচেতনতামূলক এই লেখাটি সংশ্লিষ্ট
কর্তৃপক্ষ গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিয়ে
প্রেয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে আমাদের
আগামী প্রজন্ম পাবে নির্মল ভবিষ্যৎ।

৫| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৫

রাকু হাসান বলেছেন:

দারুণ পোস্ট । ই-বর্জ্যের ভয়াবহতা অনেক । সে সব জিনিস মাথায় রেখেই আমার নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করেছিলাম । আপনার পোস্ট দেখলাম ,পড়লাম । অভিনন্দন সুন্দর পোস্টের জন্য । শুভকামনা জানবেন ।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ রাকু হাসান ভাই
আপনার উৎসাহ ব্যাঞ্চক
মন্তব্যের জন্য। সংশ্লিষ্ট
সকলের টনক নড়ুক সেই
প্রত্যাশায় রইলাম।

৬| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৭

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
রিসাইকেল করা দরকার।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ সাজ্জাদ ভাই
খুশীর কথা সচেতন হচ্ছে মানুষ।
গত বছরই কমপক্ষে ১৫ হাজার টন ই-বর্জ্য রিসাইকেল করেছে
আজিজু রিসাইক্লিং অ্যান্ড ই-ওয়েস্ট। তবে এটি দেশে তৈরি হওয়া
মোট ই-বর্জ্যের ৫ শতাংশও না। নিজস্ব ই-বর্জ্য রিসাইকেল করছে যারা
স্যামসাং, গ্রামীণফোন, রবি, এয়ারটেল, বাংলালিংক, এরিকসন, অ্যালকাটেল,
নকিয়া, ডেল, এইচপি, সিসকো, বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ বিমান,
এসিএফ,র্ যাংকসটেল, এডিএন টেলিকম, লিংকথ্রি টেকনোলজিস,
ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, জ্ঞ্নোবাল ব্র্যান্ড।
ই-বর্জ্যরে সবচেয়ে বড় বিপদ হচ্ছে বিষাক্ত কয়েক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ এবং
বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক সামগ্রী। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেরই এই বিপুল পরিমাণ ই-বর্জ্য
রিসাইকেল করার মতো সামর্থ্য নেই। তথাপি
মানবস্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর এসব বর্জ্য সঠিক কালেকশন, ব্যবস্থাপনা,
ডাম্পিংও রূপান্তর না করলে পরিবেশ দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করবে
ফলে পরিবেশ দূষণের চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বাংলাদেশ।

৭| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:১৪

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: অত্যান্ত যুগোপযোগী একটি পোষ্ট।

ধন্যবাদ নুরু ভাই।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনােকে ধন্যবাদ মহমুদুর রহমান ভাই
সচেতনতার বিকল্প নাই।
সচেতন হই সবা্ই

৮| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৭

আল ইফরান বলেছেন: খুবই চমৎকার লিখেছেন, নুরু ভাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে অবস্থায় ২য় বর্ষে ডিপার্টমেন্ট অফ এনভায়রনমেন্ট নিয়ে একটা কাজ করতে গিয়ে সামান্য অনুধাবন করতে পেরেছিলাম যে এই ডিপার্টমেন্ট আসলে একটা অলস-অকেজো প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কিছুই না।
প্রশাসনের পাকে-চক্রে এই অধিদপ্তরের করার মত ক্ষমতা খুবই কম- আর তার উপরে উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপ ত আছেই।
আপনি যেই বিষয় নিয়ে লিখেছেন সেই বিষয় নিয়ে খোজ নিয়ে দেখেন হয়তো তারা এখনো চিন্তা-ভাবনাই শুরু করে নাই।
পলিসি মেকিং অথবা এনফোর্সমেন্ট তো আরো পরের বিষয়।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আল ইফরান ভাই।
ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পশ্চিমা বিশ্ব অত্যাধুনিক পন্থা অবলম্বন করে। যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে মাইলের পর মাইল জায়গা রয়েছে, যেখানে চাষবাসও হয় না আবার মানববসতিও নেই। ই-বর্জ্য ধ্বংসের জন্য তারা এসব ফাঁকা জায়গা বেছে নেয়। কিন্তু আমাদের তেমন জায়গা নেই। ফলে ই-বর্জ্য মাটিতে মিশতে না দিয়ে রিসাইকেল জোর দিতে হবে। তবে দুঃখজনক হচ্ছে, দেশে এখনও ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সরকারি কোনো উদ্যোগ নেই। তবে গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে ই-বর্জ্য প্ল্যান্ট স্থাপনে হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জাপানের রিটিম করপোরেশনের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। পাশাপাশি প্রাত্যহিক ব্যবহারে বিভিম্ন ইলেকট্রনিক সামগ্রী বাতিল বা মেয়াদোত্তীর্ণ হলে তা বিক্রেতা বা উৎপাদনকারীর মাধ্যমেই ফেরত নেওয়ার বিধান রেখে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে 'ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক পণ্য হতে সৃষ্ট বর্জ্য (ই-বর্জ্য) ব্যবস্থাপনা বিধিমালা' খসড়া তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক বর্জ্যরে ব্যবস্থাপনা বিষয়ক আন্তর্জাতিক ভেসেল কনভেনশনে স্বাক্ষর করছে। কনভেনশনের শর্তানুযায়ী ইলেকট্রনিক বর্জ্যবিষয়ক একটি নীতিমালা বাংলাদেশের তৈরি করার কথা। যে নীতিমালা অনুযায়ী যে কোন হ্যাজারডাস পন্য আমদানি রপ্তানি নিষিদ্ধ। কিন্তু বাংলাদেশ এখনও তা পুরোপুরি ভাবে তৈরি করেনি। হয়তো শিঘ্রই তৈরী হবে। ধন্যবাদ আপনাকে সচেতনতার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.