নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতের ৭০তম প্রজাতন্ত্র দিবস আজঃ সকল বন্ধুপ্রতিম ভারতীয়দের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৫৫


ভারত এমনই বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ, যেখানে প্রতি দিনই কোনও না কোন উৎসব পালন করা হয়। বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী, এবং মতাবলম্বী মানুষ তাঁদের নিজস্ব উৎসব উদযাপন করেন। কিন্তু ২৬ জানুয়ারি এমন একটি দিন যা এই দেশের জাতীয় উদযাপন। দেশের সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষ এই দিন আরও একবার অন্তস্থ দেশপ্রেমকে স্মরণ করে নেন। আজ ভারতের ৭০তম প্রজাতন্ত্র দিবস। ভারতের সংবিধান প্রবর্তনের স্মৃতিতে প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি তারিখটি প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়। ভারতে সাধারণতন্ত্র দিবস বা প্রজাতন্ত্র দিবস পালিত হয়। এই দিনটি ভারতের তিনটি জাতীয় দিবসের অন্যতম। অন্য দু'টি জাতীয় দিবস যথাক্রমে স্বাধীনতা দিবস ও গান্ধী জয়ন্তী। এই দিন সারা ভারতেই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানটি হয় নতুন দিল্লির রাজপথে। ভারতের রাষ্ট্রপতি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন।ভারতে সাধারণতন্ত্র দিবস বা প্রজাতন্ত্র দিবস পালিত হয় ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি তারিখে ভারত শাসনের জন্য ১৯৩৫ সালের ভারত সরকার আইনের পরিবর্তে ভারতীয় সংবিধান কার্যকরী হওয়ার ঘটনাকে স্মরণ করে। এটি ভারতের একটি জাতীয় দিবস। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতীয় গণপরিষদ সংবিধান কার্যকরী হলে ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়। কার্যকরী হওয়ার ঠিক দুই মাস আগে, ১৯৪৯ খ্রিঃ ২৬ নভেম্বর গণপরিষদ কর্তৃক ভারতের সংবিধান অনুমোদিত হয়। ২৬ জানুয়ারি দিনটিকে সংবিধান কার্যকর করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল কারণ ১৯৩০ খ্রিঃ ঐ একই দিনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কর্তৃক পূর্ণ স্বরাজের সংকল্প ঘোষিত ও গৃহীত হয়েছিল। এবার পালিত হচ্ছে দেশটির ৭০তম প্রজাত্ন্ত্র দিবস। উল্লেখ্য, পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের আগে এটাই ভারতের শেষ প্রজাতন্ত্র দিবস। দেশের সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষ এই দিন আরও একবার দেশপ্রেমকে স্মরণ করে নেন।

তবে প্রজাতন্ত্র দিবস কী, অনেক ভারতীয়রাই তা জানেই না। বছরে ৩৬৫ দিন থাকলেও কেন শুধু ২৬ ই জানুয়ারী প্রজাতন্ত্র দিবস পালিত হয় সেটাও একটু জানা দরকার। ১৯২৯ সালের ৩১ সে ডিসেম্বর নেহরুজী লাহোরে প্রথমবার তিরঙ্গা উত্তোলন করেন এবং ১৯৩০ সালের ২৬ সে জানুয়ারী স্বাধীনতা দিবস হিসাবে ধার্য করেন। ওই দিনটাকে তারপর থেকে পরবর্তী ১৭ বছর ধরে “পূর্ণ স্বরাজ ” দিবস হিসাবে পালন করা হয়. কিন্তু স্বাধীনতা আসে ১৫ ই অগাস্ট, তাই ২৬ ই জানুয়ারী দিবসটিকে পালন করা হয় পরাধীন ভারতবর্ষ থেকে আধুনিক গণতন্ত্রে রূপান্তরিত হওয়ার দিন অর্থাৎ প্রজাতন্ত্র দিবস হিসাবে।“গণ” যার অর্থ সাধারণ অর্থাৎ আপামর ভারতবাসী যাদের জন্যই গণতন্ত্র দিবস । গণতন্ত্র মানে তাই জনসাধারণের জন্য আর জনসাধারণের দ্বারা । প্রজাতন্ত্র অনেকটা গণতন্ত্রের মতো কিন্তু শেষে একটা রাজা বা শাসক থাকে, যেমন ইংল্যান্ডের শাসন ব্যবস্থা হলো প্রজাতান্ত্রিক আর আমেরিকার শাসন ব্যবস্থা হলো গণতান্ত্রিক । ১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ এ দীর্ঘ স্বাধীনতা আন্দোলনের ফলে ভারত ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পায়। এই স্বাধীনতা আন্দোলনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে পরিচালিত, প্রায় সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ অহিংস অসহযোগ আন্দোলন ও আইন অমান্য আন্দোলন। স্বাধীনতা লাভের প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হয় যুক্তরাজ্যের সংসদে ভারতীয় স্বাধীনতা আইন পাশ হওয়ার মাধ্যমে। এর ফলে ব্রিটিশ ভারত ভেঙে গিয়ে কমনওয়েলথ অফ নেশনস-এর অন্তর্গত অধিরাজ্য হিসেবে দু'টি স্বাধীন রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের জন্ম হয়। ১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ এ ভারত স্বাধীন হলেও দেশের প্রধান হিসেবে তখনও বহাল ছিলেন ষষ্ঠ জর্জ এবং লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন ছিলেন এর গভর্ণর জেনারেল। তখনও দেশে কোনো স্থায়ী সংবিধান ছিল না; ঔপনিবেশিক ভারত শাসন আইনে কিছু রদবদল ঘটিয়েই দেশ শাসনের কাজ চলছিল। ১৯৪৭ খ্রিঃ ২৮শে আগস্ট একটি স্থায়ী সংবিধান রচনার জন্য ড্রাফটিং কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন ভীমরাও রামজি আম্বেডকর। ৪ঠা নভেম্বর ১৯৪৭ তারিখে কমিটি একটি খসড়া সংবিধান প্রস্তুত করে গণপরিষদে জমা দেয়। চূড়ান্তভাবে সংবিধান গৃহীত হওয়ার আগে ২ বছর, ১১ মাস, ১৮ দিন ব্যাপী সময়ে গণপরিষদ এই খসড়া সংবিধান আলোচনার জন্য ১৬৬ বার অধিবেশন ডাকে। এই সমস্ত অধিবেশনে জনসাধারণের প্রবেশের অধিকার ছিল। বহু বিতর্ক ও কিছু সংশোধনের পর ২৪ শে জানুয়ারি ১৯৫০ এ গণপরিষদের ৩০৮ জন সদস্য চূড়ান্ত সংবিধানের হাতে-লেখা দু'টি নথিতে (একটি ইংরেজি ও অপরটি হিন্দি) স্বাক্ষর করেন। এর দু'দিন পর সারা দেশব্যাপী এই সংবিধান কার্যকর হয়। সাধারণতন্ত্র দিবস উদ্‌যাপনের প্রধান কর্মসূচী পালিত হয় ভারতের রাষ্ট্রপতির সামনে, জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লীতে। এই দিন রাজপথে আড়ম্বরপূর্ণ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয় যা ভারত রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়।

৭০তম প্রজাতন্ত্র দিবসের এবারের অনুষ্ঠানের মূল অতিথি দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি সিরিল রামফোসা (cyril ramaphosa)। তাঁর সঙ্গে স্ত্রী ছাড়াও আছেন সে দেশের ব্যবসায়ীদের একটি দল। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসেবে আসছেন। এর আগে ১৯৯৫ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে উপস্থিত ছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা। এবার গান্ধিজির জন্মের সার্ধ শতবর্ষ পূরণ হচ্ছে। তাঁর সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিশেষ সম্পর্ক ছিল। সেটা মনে রেখেই এবারের অনুষ্ঠানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবারের প্রজাতন্ত্র দিবসের অন্যতম প্রধান দিক নারী শক্তি। প্রথমবারের মতো ভারতের রাজপথে দেখা যাবে অসম রাইফেলের নারী শক্তির কুচকাওয়াজ। তাছাড়া আরেক মহিলা অফিসার রাজপথে বাইক নিয়ে নানা রকমের কসরত করবেন।সামরিক শক্তিরও প্রদর্শন হয়। স্থল থেকে বায়ু - সব জায়গাতেই শক্তি প্রদর্শিত হবে। তাছাড়া অনুষ্ঠান ঘিরে গোটা দিল্লিতে থাকছে কড়া নিরাপত্তা। মোতায়েন থাকছেন প্রায় ২৫ হাজার পুলিশ কর্মী। ভারতের ৭০ তম প্রজাতন্ত্র দিবসে দেশবাসীকে গুগলের বিশেষ অভিনন্দন জানিয়েছে। ৭০ বছর আগে এই দেশের সংবিধান লাগু করার ঐতিহাসিক দিনটিকে চিহ্নিত করতে গুগল একটি বিশেষ ডুডল (Google Doodle) তৈরি করে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। গুগল 'ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস' (Indian Republic Day) শিরোনাম দিয়ে তাঁদের বিশেষ ডুডল তৈরি করেছে। এবারের প্রজাতন্ত দিবসে দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান পাচ্ছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়, নানাজি দেশমুখ এবং গায়ক ভূপেন হাজারিকা ভারতের ৭০তম প্রজাতন্ত্র দিবসে সকল বন্ধুপ্রতিম ভারতীয়দের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:০১

হাবিব বলেছেন: ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে সকল বন্ধুপ্রতিম ভারতীয়দের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:০৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ হাবিব ভাই
মন্তব্য প্রদানের জন্য।

২| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:০৩

সনেট কবি বলেছেন: তাদের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব অটুট থাকুক।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৪৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমরা চাই বন্ধুত্ব, প্রভূত্ব নয়!

৩| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:২৯

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ৭০ তম প্রজাতন্ত্র দিবসে শুভকামনা ও ভালোবাসা জানবেন।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৪৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ চৌধুরী সাহেব
ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে শুভকামনা
প্রকাশের জন্য।

৪| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:১২

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ভারতের সকল সম্মানিত নাগরিকদের শুভকামনা ও আন্তরিক শুভেচ্ছা।।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৪৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আনোয়ার ভাই
তবে শুধু সম্মানিত নাগরিক কেন?
সাধারণ নাগরিক বাদ পড়লো কেন?

৫| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: ভারত আমার প্রিয় একটা দেশ।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৫১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তাদের
অবদান অনস্বীকার্য

৬| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:১৪

এস এম ইসমাঈল বলেছেন:

বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠকালে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর বাসার সামনের লনে উঠানো ছবিতে সবার বামে আমি, ১৯৭৯ সাল।

৭| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৮

আখ্যাত বলেছেন: জয় বাংলা
পূর্ববাংলার পক্ষ থেকে
লাল গোলাপ শুভেচ্ছা

৮| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৩

লক্ষণ ভান্ডারী বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন স্যার!
পাঠ করলাম তবে অনেক দেরীতে।
মন্তব্য লিখে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।
আন্তরিক শ্রদ্ধা বিনয়ের সঙ্গে জ্ঞাপন করি।

বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী দেশ হলো ভারতবর্ষ। ভারতবর্ষের 70তম সাধারণতন্ত্র দিবসে
আপনি যা লিখেছেন এইজন্য আপনাকে শ্রদ্ধা জানাই। সেই সাথে কৃতজ্ঞচিত্তে
স্বীকার করি আপনার এই লেখা স্বদেশধর্মী ও স্বাধীনতা চেতনায় ভারতবর্ষ সহ
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণকে অনুপ্রাণিত করবে।

সাথে থাকুন, পাশে রাখুন।
লেখককে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.