নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশিষ্ট বাঙালি চিকিৎসক, লেখক ও রাজনীতিবিদ হাকিম হাবিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫৯


ইউনানী চিকিৎসা শাস্ত্রে একজন খ্যাতিমান চিকিৎসক হাকিম হাবিবুর রহমান। তিনি ছিলেণ একাধারে ইউনানী চিকিৎসক, সাহিত্যসেবী, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ। চিকিৎসক ছাড়াও হাকিম হাবিবুর রহমান সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে খুবই প্রভাবশালী ছিলেন। হাবিবুর রহমান নবাব স্যার খাজা সলিমুল্লাহর একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। সে যুগের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের ব্যবহূত ভাষা উর্দু হওয়ায় একজন বাঙালি হওয়া সত্ত্বেও হাকিম হাবিবুর রহমানের সকল রচনাই ছিল উর্দু ভাষায়। ঢাকার উপর রচিত তার দুইটি গ্রন্থ আসুদগান-এ-ঢাকা এবং ঢাকা পাঁচাস বারাস পেহলে ঢাকার উপর দুইটি মৌলিক তথ্য সমৃদ্ধ গ্রন্থ। তার পাণ্ডুলিপি, মুদ্রা, অস্ত্র এবং শিল্পকর্মের বিশাল সংগ্রহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে হাকিম হাবিবুর রহমান সংগ্রহ নামে সংরক্ষিত রয়েছে। তার জন্মস্থান ছোট কাটরা মহল্লার নিকটস্থ হাকিম হাবিবুর রহমান লেন তার স্মরণে নামকরণ করা হয়েছে। ১৯৯৪ সালে তার স্মরণে হাকিম হাবিবুর রহমান ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। হার্বা‌ল ও ইউনানি চিকিৎসার গবেষণা এবং পৃষ্ঠপোষকতার জন্য এটি স্থাপিত হয়। ১৯৯৬ সালে ভারতের হাকিম সৈয়দ জিল্লুর রহমানকে তার কৃতিত্বের জন্য পুরষ্কার প্রদান করা হয়। আজ হাকিম হাবিবুর রহমানের ৭২তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৪৭ সালের আজকের দিনে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। বিশিষ্ট বাঙালি চিকিৎসক, লেখক ও রাজনীতিবিদ হাকিম হাবিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

হাবিবুর রহমান ১৮৮১ সালের ২৩ মার্চ ঢাকার ছোট কাটরা মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের বেশির ভাগ ছেলেমেয়েদের মতো তিনি বাড়িতেই প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ঢাকা মাদ্রাসা ও কানপুর দারুল উলুম মাদ্রাসা থেকে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেন। লক্ষ্ণৌ, দিল্লিও আগ্রাতে ইউনানী চিকিৎসা পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ লাভের পর তিনি ১৯০৪ সালে চিকিৎসা পেশায় আত্মনিয়োগ করেন। পূর্ব বাংলায় হাকিম হাবিবুর রহমান খিলাফত আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন। ১৯২০ এবং ৩০ এর দশকে তিনি ঢাকার স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান সর্দারদের সালিস ছিলেন। তিনি ১৯০৬ সালে উর্দু মাসিক পত্রিকা আল মাশরিক সম্পাদনা করতেন। ছাড়াও ১৯২৪ সালে তিনি খাজা আদেলের সঙ্গে যৌথভাবে যাদু নামে অপর একটি উর্দু মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। পত্রিকাটি মাত্র দুই বছর টিকেছিল। হাকিম হাবিবুর রহমান প্রায়শ ‘আহসান’ ছদ্মনামে লিখতেন। খাজা আদিলের সাথে যৌথভাবে ১৯২৬ সালে তিনি উর্দু মাসিক পত্রিকা জাদু প্রকাশ করেন। ১৯৩০ সালে তিনি ঢাকার তিব্বিয়া হাবিবিয়া কলেজ স্থাপন করেন। তার প্রতিষ্ঠিত তিব্বিয়া হাবিবিয়া কলেজ বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন মেডিকেল কলেজ এবং সবচেয়ে পুরনো ইউনানি মেডিকেল কলেজ। এই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ইউনানি চিকিৎসার পথিকৃৎ হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। এখানে পড়াশোনা করা চিকিৎসকরা ডিইউএমএস (ডিপ্লোমা ইন ইউনানি মেডিসিন এন্ড সার্জারি) উপাধি পেত। একে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইউনানি মেডিকেল কলেজে রূপান্তর করা হয় এবং বিইউএমএস (ব্যাচেলর ইন ইউনানি মেডিসিন এন্ড সার্জারি) ডিগ্রি প্রদান করা হয়। পূর্ববাংলার মানুষকে ইউনানী চিকিৎসা সেবা দানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ১৯৩৯ সালে ‘শেফা-উল-মুলক’ খেতাবে ভূষিত করেন। চিকিৎসা পেশার পাশাপাশি তিনি প্রচুর লেখালেখি করেন।

হাবিবুর রহমান একজন উর্দু সাংবাদিক ও লেখক ছিলেন। তিনি আহসান ছদ্মনামে লিখতেন। তাঁর অসংখ্য লেখার মধ্যে রয়েছে আল-ফারিক, হায়াত-ই-সুকরত, আসুদগান-ই-ঢাকা এবং ঢাকা পঁঞ্চাশ বারাস পহলে। সর্বশেষ উল্লিখিত বইটিতে রয়েছে তাঁর সময়ে ঢাকা শহরের অধিবাসীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের প্রাঞ্জল বর্ণনা। আসুদগান-এ-ঢাকা এবং ঢাকা পাঁচাস বারাস পেহলে ছাড়াও তার অন্যান্য প্রধান রচনা হল আল-ফারিক (১৯০৪), সক্রেটিসের জীবনী হায়াত-এ-সুকরাত (১৯০৪), তাজকিরাতুল ফুজালা এবং মাসাজিদ-এ-ঢাকা। দীর্ঘ চল্লিশ বছর যাবত তিনি বঙ্গে লিখিত আরবি, ফারসি ও উর্দু বই সংগ্রহ করেছেন এবং সুলাসা গুসালা নামে একটি ক্যাটালগ প্রকাশ করেছেন। ইনশায়ে শায়েকে তিনি মীর্জা গালিব এবং ১৯ শতকে ঢাকার উর্দু কবি খাজা হায়দার জান শায়েকের মধ্যকার পত্রাবলী তিনি সঙ্কলন করেছেন। পূর্ববঙ্গ ও আসামে উর্দুর পৃষ্ঠপোষকতার জন্য তিনি আঞ্জুমানে উর্দু সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি ছিলেন। ১৯৪৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় হাকিম হাবিবুর রহমানের। আজ তার ৭২তম মৃত্যুবার্ষিকী। বিশিষ্ট বাঙালি চিকিৎসক, লেখক ও রাজনীতিবিদ হাকিম হাবিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৩৮

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন: সৈয়দ জিল্লুর রহমানকে তার কৃতিত্বের জন্য ফাউন্ডেশন থেকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছিলো? এই ব্যাপারটা একটু ক্লিয়ার করতেন যদি প্লিজ।

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৪৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: হাকিম হাবিবুর রহমান ফাউন্ডেশন
১৯৯৪ সালে তার স্মরণে হাকিম হাবিবুর রহমান ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। হার্বা‌ল ও ইউনানি চিকিৎসার গবেষণা এবং পৃষ্ঠপোষকতার জন্য এটি স্থাপিত হয়। ১৯৯৬ সালে ভারতের হাকিম সৈয়দ জিল্লুর রহমানকে তার কৃতিত্বের জন্য পুরষ্কার প্রদান করা হয়।

২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম।

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:০৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ রাজীব ভাই
জানার জন্য। জানার কোন
শেষ নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.