নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমাকে আমার মত থাকতে দাও

ওরে ভয় নাই আর , দুলিয়া উঠেছে হিমালয়-চাপা প্রাচী ! গৌরশিখরে তুহিন ভেদিয়া জাগিছে সব্যসাচী !

স্ক্রু ঢিলা

কেন পান্থ ক্ষান্ত হও হেরি দীর্ঘ পথ , উদ্যম বিহনে কার পুরে মনোরথ !

স্ক্রু ঢিলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার স্ক্রু ঢিলা টাইপ কপি-পেস্ট......ফরম - পরথম আলো

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:১৮

আমার মাথার একটা স্ক্রু হারিয়ে গেছে। কোথায় হারালো সেটা এখনো বুঝতে পারছিনা। সকাল থেকে এই কাজ সেই কাজ করে আসছি। হঠাৎ দেখি মাথাটা নড়বর করছে। মাথায় হাত দিয়ে দেখি কানের পেছনের আট নাম্বার স্ক্রুটা নেই। স্ক্রু হারিয়েছে বলে আমার মনিব এই পর্যন্ত মোট তিয়াত্তর বার আমাকে বিভিন্ন রকম গালি দিয়েছেন। কিন্তু গালি দিলে তো আর হারানো স্ক্রু খুঁজে পাওয়া যায় না। এই অতি সাধারন ব্যাপারটাও সে বুঝে না। মানুষদের এই একটা সমস্যা। কোন কিছু না বুঝেই কথা ফেলে বলতে পারে। হতো আমার মতো রোবট, তাহলে বুঝতো, কত রকম ক্যালকুলেশন করে কথা বলতে হয়।



চায়ের কাপটা নিয়ে সাত নাম্বার টেবিলে খদ্দেরের কাছে যেতে না যেতেই আমার মাথার এন্টেনাটা খুলে খদ্দেরের মাথার উপর পড়লো। আর যায় কই। খদ্দের তো বিশাল চেচামেচি শুরু করলো। আমার মনিব হেকমতউল্লাহ বেপারী এসে শেষে তার হাত পা ধরে মাপ চাইলো। গজগজ করতে করতে খদ্দের বের হয়ে গেলো হোটেল থেকে। আর আমার মনিব আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে যে সব কথা বললেন সেটা শুনে আমার ইচ্ছা করলো ব্যাটাকে এখনি হাজার ভোল্টের ইলেক্ট্রিক শক দিয়ে কাবাব বানিয়ে দেই। কিন্তু আমি তো আর মানুষ না। আমাকে কাজ করতে হয় অনেক ক্যালকুলেশন করে। তাই রাগটা চেপে গেলাম।



আমি চাকরী করি চাঙ্খারপুলের দি গ্রেট হেকমতউল্লাহ রেস্টুরেন্টে। বছর খানেক আগে আমার মনিব ওরফে এই হোটেলের মালিক হেকমতউল্লাহ বেপারী আমাকে ধোলাইখালের রোবট কারখানা থেকে নিয়ে এসেছে। এর আগে অবশ্য আমি একটা স্কুলে গার্ডের কাজ করতাম। কিন্তু রোবট হিসেবে আমার মডেলটা পুরনো হয়ে যাওয়ায় স্কুল কতৃপক্ষ আমাকে ধোলাইখালে বিক্রি করে দেয়। হেকমতুল্লাহ ব্যাপরী তখন মাত্র এই হোটেল চালু করেছেন। হোটেলের ওয়েটার হিসেবে একটা সস্তা রোবট খুঁজছিলেন। ধোলাইখালের রোবট কারখায়নায় আমাকে পেয়ে একদম পানির দামে এখানে নিয়ে এসেছেন। দিনে দুইবেলা আমাকে গ্যালন খানেক মোবিল দেন। এছাড়া আমার আর কোন পারিশ্রমিক নেই। পুরনো জামানার রোবট বলে এখনো আমি মোবিলে চলি। এখন অবশ্য পারমানবিক শক্তি চালিত রোবটও অনেক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে শুনেছি।



এন্টেনাটা চেপে চুপে লাগিয়ে আমি আবার কাজে ফিরে গেলাম। তিন নাম্বার কেবিনে ছেলে আর মেয়ের একটা জুটি বসছে। সেই কখন থেকে ফিসফিস আর হাসির শব্দ শোনা যাচ্ছে। আজকাল যে কি যুগ পড়ছে। মানুষের তো চক্ষু লজ্জাও থাকে। প্রেম করবি কর। সবাইকে জানানোর কি আছে। যখনই কেবিন থেকে মেয়েটার হাসির শব্দ শোনা যাচ্ছে হোটেলের সব কাষ্টমার কেবিনের দিকে ফিরে ফিরে তাকাচ্ছে।যেন সবাই দেখতে পারছে কাপড় ঘেরা কেবিনের ভেতরে কি হচ্ছে। অবস্থা দেখে আমারই লজ্জায় এন্টেনার লাল বাতি বারবার জ্বলে উঠছিলো।



-"এই স্ক্রু ঢিলা"

ফিরে তাকিয়ে দেখি পাঁচ নাম্বার টেবিলে নতুন কাষ্টমার আসছে। কালো, মোটা। দেখেই বুঝা যায় মহা খবিশ লোক।

-"জ্বী বলেন কি লাগবে? বিরিয়ানী, তেহারী আর সাদা ভাত। ভাতের সাথে গরু,মুরগী,খাসী।

-যা ভাত নিয়ে আয়। সাথে মুরগী আর পাতলা ডাল।

আমি অর্ডার নিয়ে রান্নাঘরে চলে এলাম।"স্ক্রু ঢিলা" নিসন্দেহে একটা চরম অপমান জনক গালি। তবে রোবটদের মান অপমান থাকতে নেই। তাই আমি এখন আর এসব গায়ে মাখি না। রান্না ঘরে গিয়ে আরো একবার আমার স্ক্রুটা খুঁজে দেখলাম। এখানেই কোথাও হারিয়েছি। কোথায় যে গেলো!



গরম গরম খাবার পরিবেশন করে আমি আবার তিন নাম্বার কেবিনে কি হচ্ছে বোঝার চেষ্টা করলাম। অনেক্ষন ধরে কোন সাড়া শব্দ নেই। ঘুমিয়ে পড়লো নাকি?



-"এই স্ক্রু ঢিলা"

আবারো আমার পাঁচ নাম্বার টেবিলের কাষ্টমার আমায় ডাকলো।

-"কি সব হাবি জাবি নিয়ে আসছিস? এর নাম ডাল? ডালে কি চিনি দিয়েছিস? শরবত শরবত লাগছে?"

আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না। আমাদের রাঁধুনী খারাপ রাঁধেন না। কিন্তু প্রতিদিনই একজন দু'জন এমন কাষ্টমার পাওয়া যায় আমার ধারনা যাদেরকে একদম বেহেস্তী খানা এনে দিলেও হয় বলবে লবন কম হয়েছে কিংবা রান্না খারাপ হয়েছে।



হঠাৎ মট করে একটা শব্দ হলো। আমি তাকিয়ে দেখি আমার একটু আগের পাঁচ নাম্বার টেবিলের খবিশ কাষ্টমার তার একটা দাঁত হাতে নিয়ে বসে আসে। মুখ দিয়ে গল গল করে রক্ত পড়ছে। ব্যাপার কি?



কাছে গিয়ে দেখি কিছু একটাতে কামড় পড়ে তার সামনের পাটির দুটো দাঁত ভেঙ্গে গেছে। কিসের কারনে ভেঙ্গেছে সেটা দেখে আমি দ্রুত জিনিসটা হাতের মুঠোয় নিয়ে নিলাম।



খদ্দের তো মাহা খাপ্পা । আমার মনিব হেকমতুল্লাহ বেপারী তখন তাকে থামানোর নানা রকম চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাদের ঘিরে ছোটখাটো একটা ভীড় জমে গেছে। তাতে আমার কি? কোন ভাবে নিশ্চয় আজ সকালে যখন রান্নাঘরে গিয়েছিলাম তখনই আমার মাথার স্ক্রুটা খুলে ডাল বা মুরগীর তরকারীতে পড়েছে। আর এটাই আমার নতুন খদ্দেরের দাঁত উৎপাটনের কারন। ভীড় ঠেলে হাসিমুখে বের হয়ে এলাম। ভীড়ের বাইরে এসে আমি আমার হাতের মুঠো টা খুললাম। সেখানে চকচক করছে আমার হারিয়ে যাওয়া স্ক্রুটা।



অবশেষে আমি আমার মাথার হারিয়ে যাওয়া স্ক্রুটা খুঁজে পেয়েছি।আমার মাথার একটা স্ক্রু হারিয়ে গেছে। কোথায় হারালো সেটা এখনো বুঝতে পারছিনা। সকাল থেকে এই কাজ সেই কাজ করে আসছি। হঠাৎ দেখি মাথাটা নড়বর করছে। মাথায় হাত দিয়ে দেখি কানের পেছনের আট নাম্বার স্ক্রুটা নেই। স্ক্রু হারিয়েছে বলে আমার মনিব এই পর্যন্ত মোট তিয়াত্তর বার আমাকে বিভিন্ন রকম গালি দিয়েছেন। কিন্তু গালি দিলে তো আর হারানো স্ক্রু খুঁজে পাওয়া যায় না। এই অতি সাধারন ব্যাপারটাও সে বুঝে না। মানুষদের এই একটা সমস্যা। কোন কিছু না বুঝেই কথা ফেলে বলতে পারে। হতো আমার মতো রোবট, তাহলে বুঝতো, কত রকম ক্যালকুলেশন করে কথা বলতে হয়।



চায়ের কাপটা নিয়ে সাত নাম্বার টেবিলে খদ্দেরের কাছে যেতে না যেতেই আমার মাথার এন্টেনাটা খুলে খদ্দেরের মাথার উপর পড়লো। আর যায় কই। খদ্দের তো বিশাল চেচামেচি শুরু করলো। আমার মনিব হেকমতউল্লাহ বেপারী এসে শেষে তার হাত পা ধরে মাপ চাইলো। গজগজ করতে করতে খদ্দের বের হয়ে গেলো হোটেল থেকে। আর আমার মনিব আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে যে সব কথা বললেন সেটা শুনে আমার ইচ্ছা করলো ব্যাটাকে এখনি হাজার ভোল্টের ইলেক্ট্রিক শক দিয়ে কাবাব বানিয়ে দেই। কিন্তু আমি তো আর মানুষ না। আমাকে কাজ করতে হয় অনেক ক্যালকুলেশন করে। তাই রাগটা চেপে গেলাম।



আমি চাকরী করি চাঙ্খারপুলের দি গ্রেট হেকমতউল্লাহ রেস্টুরেন্টে। বছর খানেক আগে আমার মনিব ওরফে এই হোটেলের মালিক হেকমতউল্লাহ বেপারী আমাকে ধোলাইখালের রোবট কারখানা থেকে নিয়ে এসেছে। এর আগে অবশ্য আমি একটা স্কুলে গার্ডের কাজ করতাম। কিন্তু রোবট হিসেবে আমার মডেলটা পুরনো হয়ে যাওয়ায় স্কুল কতৃপক্ষ আমাকে ধোলাইখালে বিক্রি করে দেয়। হেকমতুল্লাহ ব্যাপরী তখন মাত্র এই হোটেল চালু করেছেন। হোটেলের ওয়েটার হিসেবে একটা সস্তা রোবট খুঁজছিলেন। ধোলাইখালের রোবট কারখায়নায় আমাকে পেয়ে একদম পানির দামে এখানে নিয়ে এসেছেন। দিনে দুইবেলা আমাকে গ্যালন খানেক মোবিল দেন। এছাড়া আমার আর কোন পারিশ্রমিক নেই। পুরনো জামানার রোবট বলে এখনো আমি মোবিলে চলি। এখন অবশ্য পারমানবিক শক্তি চালিত রোবটও অনেক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে শুনেছি।



এন্টেনাটা চেপে চুপে লাগিয়ে আমি আবার কাজে ফিরে গেলাম। তিন নাম্বার কেবিনে ছেলে আর মেয়ের একটা জুটি বসছে। সেই কখন থেকে ফিসফিস আর হাসির শব্দ শোনা যাচ্ছে। আজকাল যে কি যুগ পড়ছে। মানুষের তো চক্ষু লজ্জাও থাকে। প্রেম করবি কর। সবাইকে জানানোর কি আছে। যখনই কেবিন থেকে মেয়েটার হাসির শব্দ শোনা যাচ্ছে হোটেলের সব কাষ্টমার কেবিনের দিকে ফিরে ফিরে তাকাচ্ছে।যেন সবাই দেখতে পারছে কাপড় ঘেরা কেবিনের ভেতরে কি হচ্ছে। অবস্থা দেখে আমারই লজ্জায় এন্টেনার লাল বাতি বারবার জ্বলে উঠছিলো।



-"এই স্ক্রু ঢিলা"

ফিরে তাকিয়ে দেখি পাঁচ নাম্বার টেবিলে নতুন কাষ্টমার আসছে। কালো, মোটা। দেখেই বুঝা যায় মহা খবিশ লোক।

-"জ্বী বলেন কি লাগবে? বিরিয়ানী, তেহারী আর সাদা ভাত। ভাতের সাথে গরু,মুরগী,খাসী।

-যা ভাত নিয়ে আয়। সাথে মুরগী আর পাতলা ডাল।

আমি অর্ডার নিয়ে রান্নাঘরে চলে এলাম।"স্ক্রু ঢিলা" নিসন্দেহে একটা চরম অপমান জনক গালি। তবে রোবটদের মান অপমান থাকতে নেই। তাই আমি এখন আর এসব গায়ে মাখি না। রান্না ঘরে গিয়ে আরো একবার আমার স্ক্রুটা খুঁজে দেখলাম। এখানেই কোথাও হারিয়েছি। কোথায় যে গেলো!



গরম গরম খাবার পরিবেশন করে আমি আবার তিন নাম্বার কেবিনে কি হচ্ছে বোঝার চেষ্টা করলাম। অনেক্ষন ধরে কোন সাড়া শব্দ নেই। ঘুমিয়ে পড়লো নাকি?



-"এই স্ক্রু ঢিলা"

আবারো আমার পাঁচ নাম্বার টেবিলের কাষ্টমার আমায় ডাকলো।

-"কি সব হাবি জাবি নিয়ে আসছিস? এর নাম ডাল? ডালে কি চিনি দিয়েছিস? শরবত শরবত লাগছে?"

আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না। আমাদের রাঁধুনী খারাপ রাঁধেন না। কিন্তু প্রতিদিনই একজন দু'জন এমন কাষ্টমার পাওয়া যায় আমার ধারনা যাদেরকে একদম বেহেস্তী খানা এনে দিলেও হয় বলবে লবন কম হয়েছে কিংবা রান্না খারাপ হয়েছে।



হঠাৎ মট করে একটা শব্দ হলো। আমি তাকিয়ে দেখি আমার একটু আগের পাঁচ নাম্বার টেবিলের খবিশ কাষ্টমার তার একটা দাঁত হাতে নিয়ে বসে আসে। মুখ দিয়ে গল গল করে রক্ত পড়ছে। ব্যাপার কি?



কাছে গিয়ে দেখি কিছু একটাতে কামড় পড়ে তার সামনের পাটির দুটো দাঁত ভেঙ্গে গেছে। কিসের কারনে ভেঙ্গেছে সেটা দেখে আমি দ্রুত জিনিসটা হাতের মুঠোয় নিয়ে নিলাম।



খদ্দের তো মাহা খাপ্পা । আমার মনিব হেকমতুল্লাহ বেপারী তখন তাকে থামানোর নানা রকম চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাদের ঘিরে ছোটখাটো একটা ভীড় জমে গেছে। তাতে আমার কি? কোন ভাবে নিশ্চয় আজ সকালে যখন রান্নাঘরে গিয়েছিলাম তখনই আমার মাথার স্ক্রুটা খুলে ডাল বা মুরগীর তরকারীতে পড়েছে। আর এটাই আমার নতুন খদ্দেরের দাঁত উৎপাটনের কারন। ভীড় ঠেলে হাসিমুখে বের হয়ে এলাম। ভীড়ের বাইরে এসে আমি আমার হাতের মুঠো টা খুললাম। সেখানে চকচক করছে আমার হারিয়ে যাওয়া স্ক্রুটা।



অবশেষে আমি আমার মাথার হারিয়ে যাওয়া স্ক্রুটা খুঁজে পেয়েছি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.