নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বাঙ্গালী। বাংলা আমার অহংকার।

অচেনা হিমালয়

কোনটা বাস্তব, কোনটা কল্পনা, কোনটা আলো, কোনটা হতাশা, কোনটা ছায়া, কোনটা মরিচিকা......। অচেনা হিমালয়ের জগতে সব মিলে-মিশে একাকার......!!

অচেনা হিমালয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

সীমান্ত চুক্তি: নুন-নেহরু থেকে মোদি-হাসিনা

১০ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৯

‘বঙ্গবন্ধু বেরুবাড়ি দিয়ে দিয়েছে ভারতকে। ভারত আমাদেরকে তালপট্টি, তিন বিঘা দেবে বলেছে, দেয়নি।’

স্কুলে পড়ার সময় থেকে শুনে আসছি এই কাহিনী। যেন বঙ্গবন্ধু ইচ্ছে করে দিয়ে দিয়েছেন, ভারত যে চুক্তি বাস্তবায়ন করছে না সেটা বিষয় না। বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, ছোটকালে এর সঙ্গে আরও শুনেছি- ১৯৭১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশের অংশ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু শেখ মুজিব ভারতের সঙ্গে, বিশেষ করে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আপোস করে এটা ছেড়ে দিয়েছেন। সেই সব তো অবুঝকালের গল্প, কিন্তু বড় হয়েওতো বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুখেই শুনেছি- আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশ বিক্রি হয়ে যাবে ভারতের কাছে। বাংলাদেশের মসজিদে ঊলুধ্বনী শোনা যাবে। কিন্তু এখনও জানা হলো না- কত টাকায় বিক্রি হয়েছে বাংলাদেশ আর ঊলুধ্বনী কোন মসজিদটিতে শোনা যাচ্ছে!

প্রচারণা যাই হোক, আওয়ামী লীগ সরকার, বিশেষত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এখন জোর গলায় বলতে পারবে স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটিকে তারা প্রথমে জলে, পরে স্থলে মিলিয়ে- চূড়ান্তভাবে রাষ্ট্রীয় সীমানা উপহার দিয়েছে। আর শেখ হাসিনাও বলতে পারেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বসে তিনি দেশের জন্য কাজ করেন, মহারাণী সেজে পাঁচতারা হোটেল থেকে নিজের খাবারের অর্ডার করে রাষ্ট্রের ঘাড়ে ২৯ লক্ষ টাকা বিল রেখে যান না। কারণ বাংলাদেশের পথ ধরে ৪১ বছর পর হলেও ভারতের পার্লামেন্ট বাংলাদেশ-ভারত স্থল সীমান্ত চুক্তিটিকে অনুসমর্থন দিয়ে দু’দেশের সীমানা নির্ধারণে পথের সব কাটা দূর করে দিয়েছে। প্রতিবেশি ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে স্থল-সমুদ্র কোনও অংশে বাংলাদেশের সীমানা নিয়ে আর বিরোধ অবশিষ্ট থাকছে না। শেখ হাসিনার সরকার মূলত ভারতের সঙ্গে স্থল সীমানা নিয়ে ৪৪ বছরের সমস্যা নয়, প্রায় ৭০ বছরের একটি সমস্যার সমাধান করলেন। কারণ এটি ৪৭ সালের দেশভাগের পর থেকেই চলে আসা সমস্যা।

এই স্থল সীমান্ত চূড়ান্তকরণের জন্য ৫৭ বছর আগে নুন-নেহরু যা শুরু করেছিলেন তা অবশেষে শেষ করতে যাচ্ছেন মোদি-হাসিনা। মাঝখানে পাকিস্তান ভেঙে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম। আগামী জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরকালে হতে যাচ্ছে এ সংক্রান্ত পঞ্চম চুক্তিটি- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে। তার মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত এবং সর্ব সম্মত সীমান্ত পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত।

মাঝখানে এই উদ্দেশ্যেই সম্পাদিত হয়েছিল তারও তিনটি চুক্তি। ১৯৭৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও বাংলাদেশের প্রধামন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৮৬ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী এবং বাংলাদেশের জেনারেল এইচএম এরশাদ এবং ১৯৯২ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসীমা রাও এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ওইসব চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। তবে আসন্ন চুক্তিটি হতে যাচ্ছে ১৯৭৪ সালের ১৬ মে সম্পাদিত বহুল আলোচিত ইন্দিরা- মুজিব স্থল সীমান্ত চুক্তি এবং ২০১১ সালের দু’দেশের মধ্য সম্পাদিত প্রটোকলের আলোকে। লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে ল্যান্ড বাউন্ডারি চুক্তিটি ক্রমে-ক্রমে রুপান্তর হয়েছে। নুন-নেহরু চুক্তিতে যেমন পরিবর্তন এসেছে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির সময়, তেমনি ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির ১০৬টি ভারতীয় ছিটমহল এবং ৯২টি বাংলাদেশি ছিটমহলের সংখ্যারও মিল নেই বর্তমান প্রস্তাবিত চুক্তির সঙ্গে। এখনকার হিসেবে ভারতের ছিটমহল ১১১টি বাংলাদেশের ৫১টি।

১৯৭৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও বাংলাদেশের প্রধামন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৮৬ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী এবং বাংলাদেশের জেনারেল এইচএম এরশাদ এবং ১৯৯২ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসীমা রাও এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ওইসব চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। তবে আসন্ন চুক্তিটি হতে যাচ্ছে ১৯৭৪ সালের ১৬ মে সম্পাদিত বহুল আলোচিত ইন্দিরা- মুজিব স্থল সীমান্ত চুক্তি এবং ২০১১ সালের দু’দেশের মধ্য সম্পাদিত প্রটোকলের আলোকে।

একটু ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখি, স্যার শেরিল রেডক্লিফ নামের এক ইংরেজ ভদ্রলোক ১৯৪৭-এ ভারত-পাকিস্তান ভাগ করতে গিয়ে অনেকটা ইচ্ছেমত একটা সীমান্ত রেখা টেনে যান। কিন্তু প্রায় ৭০ বছর ধরে তার টানা সীমান্তরেখা নিয়ে সমস্যা লেগে আছে এই উপমহাদেশে। প্রথমে এই ঝামেলা দূর করার জন্য উদ্যোগ নেন নুন-নেহরু। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ খান নুন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৫৮ সালে চুক্তি করেন স্থল সীমান্ত সমস্যা মেটানোর জন্য।

ভারতের রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ সুপ্রীমকোর্টের মতামত চান- এই চুক্তি বাস্তবায়ন করতে বাধা আছে কিনা? আদালত জানিয়ে দেয়, সরকার এটা করতে পারবে না, সংবিধান সংশোধনী লাগবে। পাকিস্তান আর এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেননি। যেমন করে তারা সিন্ধু নদীর পানির হিস্যা নিয়ে চুক্তি করেছে, গঙ্গা নদী নিয়ে না। ফলে ভারতও সুযোগ পেয়েছে ফারাক্কা বাঁধ তৈরি করার।

পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে এই দায়িত্ব পড়েছিল বঙ্গবন্ধু সরকারের ঘাড়ে। সে কারণে অনেকটাই নুন-নেহরু চুক্তির বিষয় বহাল রেখে স্বাধীন বাংলাদেশ স্থল সীমান্ত নিয়ে চুক্তি করে ভারতের সঙ্গে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার পর চুক্তি বাস্তবায়ন থেমে যায়। চুক্তি অনুযায়ী দু’ দেশের ৪ হাজার ২১ কিলোমিটার সীমান্ত চিহ্নিতকরণ, অপদখলীয় জমি হস্তান্তর এবং ছিটমহল সমস্যা সমাধানের কথা ছিল। বাংলাদেশ চুক্তি সম্পাদনের পর-পর ২৮ নভেম্বর ১৯৭৪ সালে সংসদে সংবিধানের তৃতীয় সংশোধনী পাশের সময় সীমান্ত চুক্তিটি অনুমোদন করলেও নানা অযুহাতে ভারত তা করা থেকে বিরত ছিল।

শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী ভারতকে তিনবিঘা করিডোরের বিনিময়ে ১২ নং বেরুবাড়ি ইউনিয়নও হস্তান্তর করে। ভারত তিনবিঘা দেয়নি। তবে বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম আমলে ‘৯২ সালের ২৬ জুন তিনবিঘা নামের ১৭৮ মিটার করিডোরটি ১০০ বছরের জন্য বাংলাদেশকে লিজ দেয় ভারত, যাতে ছিটমহল আঙ্গরপোতা-দহগ্রামের বাসিন্দারা বাংলাদেশি হিসেবে তাদের মূল ভূখণ্ড আসা-যাওয়া করতে পারে। জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় থাকতে প্রথম আঙ্গরপোতা-দহগ্রাম সফর করেন। কংগ্রেস সরকারের প্রতিশ্রুতির ধারাবাহিকতায় আরেক কংগ্রেস সরকার বেগম জিয়ার আমলে ছিটমহলবাসীকে কিছুটা হলেও মুক্তির স্বাদ দেয়। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে ছিটমহলটিতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার প্রমাণ রাখেন। বিডিআর-এর তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজুর রহমান বীরউত্তম ১৯৯৭ সালে বিডিআর-এর একটি স্থায়ী ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করেন সেখানে। ছিটমহলটিতে বাংলাদেশের ২টি ইউনিয়ন আছে।

আমার সৌভাগ্য যে সাংবাদিক হওয়ার পর থেকেই, বিশেষ করে ১৯৯২ সাল থেকে লিখে আসছি ভারত বাংলাদেশের সীমান্ত সমস্যা, মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে। সরেজমিনে দেখা হয়েছে অনেক সীমান্তের সমস্যা, বিরোধ। দেখা হয়েছে আঙ্গরপোতা-দহগ্রামবাসীর দুর্দশাও। ভালো লাগছে যে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানও দেখার সুযোগ হচ্ছে।

বর্তমানে বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের ১৭ হাজার ১৫৮ একর ৫ শতাংশ আয়তনের ১১১টি ছিটমহল রয়েছে। অপরদিকে ভারতের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের ৭ হাজার ১১০ একর ২ শতাংশ আয়তনের ৫১টি ছিটমহল। চুক্তির আওতায় এসব বিনিময় করা হবে। দু’দেশের অচিহ্নিত সাড়ে ৬ কিলোমিটার সীমানা চিহ্নিত করা হবে। আর অপদখলীয় জমিও বিনিময় হবে। অপদখলীয় জমি হচ্ছে সে সব জমি যা সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন কিন্তু দেশ ভাগের পর সেটা এখন পড়ে গেছে অন্য দেশে। মানে এক দেশের বাসিন্দা, জমি পড়েছে আরেক দেশে। এ ধরনের জমির পরিমাণ প্রায় সাড়ে চার হাজার একর। ভারত ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে সাড়ে ৯ হাজার একর জমি হারাচ্ছে বাংলাদেশের কাছে, তেমনি অপদখলীয় জমি বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশও প্রায় সাত শ’একর জমি হারাচ্ছে ভারতের কাছে। দীর্ঘ দিনের জমে থাকা সমস্যাটি সমাধানে দু’দেশের কাছে অবশ্য এই জমিটা এখন তুচ্ছ ব্যাপার। একদেশে পাকঘর আরেক দেশে শোবার ঘর সুখের বিষয় না। আর যেখানে পাশের বাড়ির সঙ্গে দেয়াল রাখতে আমাদের আপত্তি নেই সেখানে রাষ্ট্র যখন ভিন্ন, কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়েও রাজনীতি করার দরকার নেই।

দু’দেশের ছিটমহলগুলোতে বাস করে প্রায় ৬০ হাজার লোক, এর প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগই আবার বাস করে বাংলাদেশে। এদেরকে অপশন দেওয়া হচ্ছে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার। তবে সিংহভাগই দেখা যাচ্ছে বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নেবেন, মানে যেখানে আছেন সেখানে থেকে যাবেন। দুই সরকারের পক্ষ থেকে তাদের জন্য বাসস্থান, জল, বিদ্যুৎসহ ন্যূনতম নাগরিক সুবিধাগুলো নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষে এই ঐতিহাসিক বিলটি বাংলাদেশের পর ভারতীয় পার্লামেন্টেও পাশ হওয়ায় দুই দেশের ক্ষমতাসীন সরকাররা নিজেদের নাগরিকদের কাছে নিজ সরকারের সাফল্য দেখানোর সুযোগ পেলেন। বিশেষত মোদি সরকার। কারণ কংগ্রেস সরকারের ক্ষেতের ফসল নিজের ঘরে তুলেছেন মোদি। ২০১১ সালে ভারতের তখনকার প্রধানমন্ত্রী মনমোহনের ঢাকা সফরে আসার আগেই ভারতীয় সংসদে এই বিলটি পাশ হওয়ার কথা ছিল। চুক্তিটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের যেমন পূজনীয় নেতা বঙ্গবন্ধু জড়িত রয়েছেন, কংগ্রেসেরও তেমনি চার নেতা জড়িত রয়েছেন, বিশেষত নেহরু এবং ইন্দিরা। কিন্তু তখনকার বিরোধী দল বিজেপি, কলকাতার মমতার তৃণমূল, আসামের আসাম গণপরিষদের তীব্র বিরোধীতায় সেটা ব্যর্থ হয়। সবচেয়ে বেশি নাটক করেন মমতা ব্যানার্জী। এবার যেটি পাশ হলো সেটাতে মনমোহন সরকারের আনা বিলের দাড়ি কমাসহ রয়েছে বলে সংসদে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তিনি মনমোহনের শেষ করা কাজকে শুধু বাস্তবায়ন করছেন বলে স্বীকার করেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদও দেন। অতীতে তারা এই বিলের বিরোধিতা করেছেন সেটাও অকপটে বলেন।

আগামী বছর আসামের প্রাদেশিক নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপি আসামকে বাদ দিয়ে বিলটি পাশ করাতে চেয়েছিল। আসামে কংগ্রেসের ১৫ বছরের শাসনের অবসানই ছিলো এর প্রধান উদ্দেশ্য। কিন্তু এর তীব্র সমালোচনা করেন আসামের কংগ্রেস দলীয় মুখ্যমন্ত্রী। কংগ্রেস কেন্দ্রীয়ভাবেও জানিয়ে দেয় তাহলে তারাও সংসদে এই বিলের বিরোধিতা করবে। আগামী মাসে ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশকে শ্রেষ্ঠ কিছু উপহার দিতে উদগ্রীব মোদি ঝুঁকি নিতে রাজী ছিলেন না। লোকসভার ৭ মে’র অধিবেশনে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ- সব রাজ্যকে অন্তর্ভূক্ত করেই সব দলের সমর্থনে, উপস্থিত সব সাংসদের ভোটে, ঠিক ৪১ বছর আগের মে মাসে সম্পাদিত চুক্তিটি বিল আকারে পাশ করালেন তিনি এই মে মাসে।

পাশের সঙ্গে-সঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খবরটি জানাতে ফোন করেন। পত্রিকায় তথ্য অনুযায়ী, দু’জনই পরস্পরকে ধন্যবাদ জানান।

শুরুতে যেমনটা বলছিলাম- ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সমস্যা নিয়ে রাজনীতি করার জন্য এখানে দলের অভাব না থাকলেও সমস্যা সমাধানে সক্ষমতা কেউ প্রমাণ দিতে পারেনি আওয়ামী লীগ ছাড়া। এখানে জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর আন্তরিকতার অভাব ছিল তা বলবো না আমি কিন্তু দক্ষতার যে ঘাটতি ছিল তাতো আজ প্রমাণিত। রাজনৈতিক ছাড়ও তারা কম দেয়নি ভারতকে, বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু আদায়ের বেলায় কূটনৈতিক সফলতা চোখে পড়ে না। গঙ্গার পানির হিস্যা আদায় চুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্রোহীদের ভারতের ইন্ধন বন্ধ করে তাদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্থাপন, ঢাকা-কলকাতা বাস সার্ভিস চালু, সমুদ্রসীমা নির্ধারণ কিংবা স্থল সীমান্ত চূড়ান্তকরণ- সব কিছুতে শেখ হাসিনার সরকারেরই সাফল্য।

স্থল সীমান্ত বিলটি ভারতীয় পার্লামেন্টের উভয়কক্ষে পাশ হওয়ার ঘটনা তাই শেখ হাসিনা সরকারের বিরাট এক কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখতে হচ্ছে। বাংলাদেশে বিএনপিসহ অনেক দল এটা বিশ্বাস করে বসে ছিল যে ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় আসলে শেখ হাসিনা সরকার থেকে ভারত মুখ ফিরিয়ে নেবে। কারণ শেখ হাসিনা সরকার কংগ্রেস ঘেষা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে উল্টো মোদি সরকার আওয়ামী লীগ ঘেষা। যে দলগুলো ভারতে এই বিল পাশে তীব্র বিরোধীতা করেছে- উল্টো তারাই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য এই বিল পাশে মরিয়া প্রমাণ করেছে। মোদি থেকে মমতা, সোনিয়া থেকে মনমোহন- সবাই শেখ হাসিনার গুণগান গাইছেন এখন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পার্লামেন্টে গান গাইছেন ভারতীয় সাংসদরা, চোখের পানিও ফেলছেন

আনিস আলমগীর॥
লেখক: সাংবাদিক ও শিক্ষক

[email protected]

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০১৫ রাত ২:০৯

প্রভাষ প্রদৌত বলেছেন: "আর অপদখলীয় জমিও বিনিময় হবে। অপদখলীয় জমি হচ্ছে সে সব জমি যা সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন কিন্তু দেশ ভাগের পর সেটা এখন পড়ে গেছে অন্য দেশে। মানে এক দেশের বাসিন্দা, জমি পড়েছে আরেক দেশে। এ ধরনের জমির পরিমাণ প্রায় সাড়ে চার হাজার একর। ভারত ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে সাড়ে ৯ হাজার একর জমি হারাচ্ছে বাংলাদেশের কাছে, তেমনি অপদখলীয় জমি বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশও প্রায় সাত শ’একর জমি হারাচ্ছে ভারতের কাছে। দীর্ঘ দিনের জমে থাকা সমস্যাটি সমাধানে দু’দেশের কাছে অবশ্য এই জমিটা এখন তুচ্ছ ব্যাপার। একদেশে পাকঘর আরেক দেশে শোবার ঘর সুখের বিষয় না। আর যেখানে পাশের বাড়ির সঙ্গে দেয়াল রাখতে আমাদের আপত্তি নেই সেখানে রাষ্ট্র যখন ভিন্ন, কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়েও রাজনীতি করার দরকার নেই।"

এই অংশটুকু বুঝি নাই , বুঝিয়ে দিবেন ?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.