নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঢাকা শহরে আমার একমাস ব্যাপী ঈঁদ হল বইমেলা। করোনার কারনে এবারের বইমেলায় শেষ দু'দিন যাওয়া হয়েছিল। তিনটি বই কিনি মাত্র। তার ভেতর দুজনার বই আগে থেকেই পরিকল্পনা করা আর একটি বই ভালোলাগায় কেনা।
অপ্রকাশিত অগ্রন্থিত শহীদুল জহির উপন্যাস,গল্প ও অন্যান্য
গ্রামসি ও তার রাষ্ট্রচিন্তা
ধর্ষনের তত্ব তালাশ পুরুষতন্ত্র বনাম নারীবাদ
আমার পড়া বাংলাদেশী উপন্যাসিকদের ভেতরে শহীদুল জহির, সৈয়দ শামসুল হক এদু'জন প্রধানতম। এদের লেখা মুগ্ধ হয়ে পড়ি। সাবলীলতার ভেতরে মধু মাখানো লেখা। অবশ্য আহমাদ ছফার উপন্যাস এখনো পড়া হয়নি। তিনিও অন্যতম হবেন আশাকরি। তার গল্প পড়া হয়েছে।
গ্রামসি সমন্ধে তার হেজিমনি তত্ব নিয়ে জানতে পারার পরে আগ্রহ জাগে। বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ধর্ষণ একটি নিয়মিত ঘটনায় রুপান্তরিত হয়েছে। বন্ধুর বন্ধু বইটা বের করে। স্টলে গিয়ে বইটা হাতে নিয়ে মু্গ্ধ হই।
শহিদুল জহির
আগেই বলেছি শহিদুল জহির আমার প্রধানতম প্রিয় লেখকদের একজন। তার লেখায় জাদুবাস্তবতার ছোঁয়া আছে। ফলে কিছুটা স্প্যানিশ সাহিত্যের স্বাদও পাওয়া যায়। এই বইটার ভেতর তার চারটা গল্প ও দুটি উপন্যাস ছাড়াও তার সাক্ষাৎকার রয়েছে। পুরাতন ঢাকার নারিন্দার ভুতের গলিতে জন্ম নেয়া ক্ষণজন্মা কথাসাহিত্যিক পুরোনো ঢাকার প্রত্যোকটা অলিগলিকে একেছেন বাস্তবতার সাথে তার শিল্পের কলমে।
এই বইটার ’উড়াল’ উপন্যাসের শেষে লেখকের নিজের কথা শিরোনামে ছোট্ট করে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। যা আমাকে মুগ্ধ করে। আমি তার উপর আরো মনোনিবেশ ঘটাই।
লেখকের নিজের কথা
মানুষ আমাকে ফ্যাসিনেট করে। ব্যাপারটায় মৌলিকত্ব নেই আমি জানি, তবুও। মানুষ মূলত মানুষের সঙ্গে স্থাপিত এবং প্রতিস্থাপিত। আমার আগ্রহ মানুষে যতটুকু, প্রকৃতিতে ততটুকু নয়। আসলে সব মানুষই, আমার বিশ্বাস, মানুষ সমর্পিত। কবি, লেখকরাও। মানুষকে বুঝতে হয় এবং বোঝাতে হয়, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক এমনটি নয়। খোলা আকাশ তাকিয়ে দেখলেই হয়ে যায়, কিন্তু খোলা চোখ?
পুরোনো ঢাকার এক খালবাকলা ওঠা গলিতে আমি জন্মেছি। ওইসব গলিতে প্রকৃতির প্রকাশ যতটুকু, তার চাইতে বিরাট এবং ব্যাপক উপস্থিতি মানুষের। পরে অবশ্য আমি বাবার সঙ্গে তার কর্মস্থলে ঘুরে ঘুরে খোলা প্রকৃতিকে দেখেছি।
এইসব নিয়ে আমি বয়স্ক হয়েছি। আমার বয়স বেড়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনৈতিক বিজ্ঞানে মাস্টার ডিগ্রি অর্জন সরকারী চাকরিতে ঢুকেছি। আমি ভাবি, আমি কী হতে পেরেছি। মনে হয় কিছুই হইনি, আর এ নিয়ে আমার কষ্ট হয়। অথচ আমি জানি আমার পক্ষপাত কিছুই যারা হয়নি, হতে পারেনি তাদের প্রতিই।
গ্রামসি ও তার রাষ্ট্রচিন্ত
বইটা লিখেছেন আলতাফ পারভেজ , প্রথমা প্রকাশন থেকে বের হয়েছে।
শুরুতে লেখকের জীবনে তার সময়কার ইতালির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে আমাদের পরিচয় ঘটান। তারপরে তিনি গতানুগতিক ধারায় না গিয়ে আগে গ্রামসির পরিভাষাগুলোর সাথে আমাদের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে দেন। তারপরে গ্রামসির তত্বগুলো তুলে ধরেন। বইটা অনেক মান সম্মত মনে হয়েছে।
ধর্ষণের তত্ব তালাশ
বইমেলায় যাওয়ার প্রধান কারণ হলো কিংশুক বিশ্বাস । টিউশন থেকে বের হয়ে শাঁখারী বাজার হয়ে বাসায় ফেরার পথে ওর ফোন। হুটহাট করে বইমেলায় যাওয়া। শুনি ওর বন্ধুর বই বের হয়েছে। ধর্ষণ নিয়ে বইটা শুনে আগ্রহ প্রকাশ করি। সংবেদের স্টলে যাবার পরে মুগ্ধ হই। কোন সস্তা সাহিত্য নেই। জ্ঞানলব্ধ করার মত বইগুলো সারিসারি সাজানো। বইটা হাতে নেই। দু’এক পৃষ্ঠা উল্টেপাল্টে বেশ ভালো বলে ধারণা হয়। নিয়ে বের হই। বইয়ের লেখক দু’জন। যৌথ সম্পাদনা। অনেক তথ্যে ভরা তাত্বিক বিশ্লেষণের সাথে বাংলাদেশের আইনে ধর্ষনের বিচার সবমিলেয়ে বেশ সাবলীল ভাষায় প্রকাশ করেছে বইটি।
বই কিনে আমরা বাইরে আসি । ঠান্ডা পানি চা সিগারেটের আড্ডা হয়। তারপরে কার্জন হলের গলি ধরে গুলিস্তান। সেখান থেকে বাসে উঠে বাসায় ফেরা।
০৬ ই মে, ২০২১ রাত ২:১১
অধীতি বলেছেন: আপনি জ্ঞানী মানুষ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই মে, ২০২১ রাত ১২:২১
রাজীব নুর বলেছেন: তিনটাই কঠিন বই।
আমার মাথায় বুদ্ধি কম এসব বিষয় ডুকবে না মাথায়।