নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভেসে আসি সমুদ্রের ঢেউয়ে,বালুচর চুষে নেয় আমারে।

অধীতি

আপনারেই চিনার তরে,পরিচয় দেই কি করে??

অধীতি › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢোঁড়াই চরিত মানস একটি আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক নিরীক্ষা

২৬ শে জুন, ২০২৫ দুপুর ১:৪৮

ইউটিউবে সুনীল গঙ্গোপাধ্যয়ের একটা সাক্ষাৎকার দেখছিলাম। সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে রবীন্দ্রনাথের এক অন্ধ ভক্তকে যা-তা অবস্থা করে ছেড়েছিলেন। তখন তিনি এই উপন্যাসের নাম করে বলেছিলেন যে “এরকম একটা বই যেকোন ভাষার জন্য দূর্লভ একটা রচনা” ওখান থেকেই বইটা সম্পর্কে জানা।

ঢোঁড়াই চরিত মানস শুধু একটা উপন্যাসই নয়। এটা একটা রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক নিরীক্ষা। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র ঢোঁড়াইয়ের উত্থান-পতনের সঙ্গে ফুঁটে উঠে তখনকার নিম্নবর্গের মানুষের সঙ্গে উচ্চ বর্গের মানুষের প্রতারণার চিত্র। কিভাবে বাবুসাহেবরা জমি দখল করে। কিভাবে টোলার মানুষকে বোকা বানিয়ে আঙ্গুলের ছাপ নেয়ার মাধ্যমে তাদের উচ্ছেদ ঘটায়।

এজন্যই মাস্টার সাহেবের বেটা যখন মরনাধারের কাছে বলে যে ইংরেজ সরকার নাকি তাৎমাদের পূর্ব পুরুষের বুড়ো আঙ্গুল কেটে নিয়েছিল তাই তাৎমাদের উপার্জন নেই। তখন যে উত্তরটা দেয় তা হলো, “দেখ কান্ডখানা একবার! তবে একটা সুবধে বুড়ো আঙ্গুল না থাকলে কেউ আর জোর করে সাদা আঙ্গুলে ছাপ দিতে পারবে না; না অনিরুদ্ধ মোক্তার , না সাওজী, না জমিদারবাবু।”

সম্পূর্ণ উপন্যাসটা পড়তে বেশ কাঠখড় পোহাতে হয়েছে। বিহারের জিরানিয়া জেলার তাৎমাটুলি, ধাঙড়টুলি, সাওতাল, বিসকান্ধা পাড়ার কোয়ারী মানুষদের ভাষাকে কেন্দ্র করে লেখা এই উপন্যাসের প্রতি পৃষ্ঠায় নতুন নতুন শব্দের সঙ্গে পরিচয় হতে গিয়ে পড়ার গতিতে একট স্থিরতা আসে। ফলে এক বসায়, এক ধ্যানে উপন্যাসটি শেষ করা যায়না। তবে চিন্তা করার পরিধিটা তখন বাড়ে। একটা গরীব মানুষ ঠকে যাচ্ছে এটা দেখেও যেমন আমরা নির্মোহভাবে বিবেকের বাঁধাকে উৎরে যাই চলার পথে। তেমনি এই উপন্যাসেও লেখক উৎরে গেছেন তার মোহকে। একদম নির্মোহ ভাবে লিখে গেছেন। প্রতিটা চরিত্রকে ছেড়ে দিয়েছেন বাস্তবতার নিরীখে।

তখনকার সময়ের রাজনৈতিক বাস্তবতা এই উপন্যাসের অন্যতম একটা উপজীব্য বিষয়। ইংরেজদের বিরুদ্ধে মহাত্মাজীর আন্দোলন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ফৌজদের ক্যাম্পে জোর করে নাম লেখানো। সবকিছুই ফুঁটে ওঠে এই উপন্যাসে। এটাকে উপন্যাসের থেকেও একটা আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক নিরীক্ষা হিসেবে পড়া উচিত।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুন, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পড়তে হবে ।

০১ লা জুলাই, ২০২৫ রাত ১:১৮

অধীতি বলেছেন: পড়তে পারেন। বেশ ভালো।

২| ২৭ শে জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: ইদানিং আমার বই পড়া হচ্ছে না।

২৭ শে জুন, ২০২৫ দুপুর ২:৫১

অধীতি বলেছেন: চিন্তার বিষয়। বাচ্চাকাচ্চা সংসার মিলিয়ে বই পড়া কঠিন হয়ে যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.