নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আখ্যাত

আমি একজন মন্দ মানুষ বলেই নিজেকে জানি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার উদারতা।

আখ্যাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

দু’টি কালো ২৫ : দু’টি ভারত

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ২:২৮


৭১ এর কালো ২৫। বর্বর রাষ্ট্রযন্ত্র নিজেরই দেশের এক অংশের (পূর্বপাকিস্তান) নিরীহ নাগরিকের উপর কাপুরুষের মত অভিযান চালালো। নির্মম অভিযান। গণহত্যা, গণধর্ষণ, গণ অগ্নিসংযোগের নির্মম শিকার হলো অগণিত বনিআদম। জীবন বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের শরণার্থীশিবিরে ঠাঁই পেয়েছিলাম লাখে লাখে অসহায় ক্ষুধার্ত যুবক বৃদ্ধ নারী শিশু।

মমতাময়ী ভারত অশ্রয় দিয়েছে, গলাধাক্কা দেয়নি । ত্রাণের পুটলি ধরিয়ে দিতে দিতে বলেনি, “শুধু মানবিক দিক বিবেচনা করেই কিন্তু আমরা এই রিলিফ দিচ্ছি, তাই বলে এদেশের ভূমি ব্যবহার করে কোন ধরণের ‘সন্ত্রাসী’ কর্মকাণ্ড কিন্তু বরদাশ্ত করা হবেনা বলে দিচ্ছি।”


নিবু নিবু স্বরে নরখাদক পাকিদেরকে বলেনি, “আমরা পাকিস্তান সরকারের কাছে অনুরোধ করবো, তারা যেন পূর্বপাকিস্তানের নিরীহ মানুষের উপর নির্যাতন বন্ধ করেন, তারা যেন প্রকৃত দোষী (স্বাধীনতাকামীদের)কে খুঁজে বের করেন, এক্ষেত্রে প্রতিবেশী হিসেবে আমরা আপনাদেরকে সহযোগিতা করবো। একজনের দোষে কেন লাখ লাখ নির্দোষ মানুষ কষ্ট পাবে।”

স্বার্থপরের মত বলেনি, “বাঙ্গালি সমস্যা’ পাকিস্তানের একান্ত নিজেদের। এর সমাধানও তাদেরকেই করতে হবে, তাদের দেশেই। আমরা কেন বাঙ্গালি শরণার্থীদের এই আপদ বয়ে নিয়ে বেড়াবো্”

ভারত বরং ভাত দিলো, ওষুধ দিলো, অস্ত্র দিলো, অস্ত্রচালনা শিক্ষা দিলো, সশস্ত্র সামরিক বাহিনী দিলো, “চলো, তোমাদের জালিম অবৈধ সরকারকে উতখাত করে তোমাদেরকে স্বাধীন করে দিয়ে আসি।”

ভারতের সুদক্ষ নেতৃত্ব ও পরিচালনায় যুদ্ধ করলাম। ‘পূর্বপাকিস্তান’ ‘বাংলাদেশ’ হলো, ভারতের কাছে চিরঋণী হলাম। তাইতো বিএসএফ এর হাত থেকে নিজেদের ’গরুচোরদের’ লাশ রিসিভ করার সময়, বিজিবির মুখে হাসি থাকে। ফারাক্কার বাঁধখোলা বন্যায় নাকানিচুবানি খাওয়ার সময়ও পূর্ববাংলার মুখে হাসি থাকে। কৃতজ্ঞতার হাসি, সলাজ রক্তিম হাসি, আদি আসল অকৃত্রিম হাসি।

কালো ২৫:দুই
১৭ সালের কালো ২৫। নরপশু রাষ্ট্রটি নিজেরই দেশের একাংশের (আরাকান) নিরীহ মানুষের উপর অমানুষের মতো অভিযান চালালো, চালাচ্ছে। নির্মম অভিযান। গণহত্যা, গণধর্ষণ, গণআগুনের নির্মম বলী হলো অগণিত মানুষ। জীবন বাঁচাতে সীমান্ত মাড়িয়ে, নাফনদ পেরিয়ে, সাগর সাত্রিয়ে ভারতবাংলাদেশে অশ্রয় নিয়েছে লাখে লাখে মানুষ। না খাওয়া, গুলি খাওয়া, কোপ খাওয়া, আগুনে পোড়া শিশু বৃদ্ধ নারী পুরুষ।

ভারত তাদেরকে ঠাঁই দেয়নি, অর্ধচন্দ্র দিয়ে বের করে দিয়েছে। অনড় অবিচল তার সিদ্ধান্তের কথা খোলাখুলি জানিয়ে দিয়েছে সে। সে তাদেরকে ভাত দেবেনা, ওষুধ দেবেনা, অস্ত্র দেবেনা, অস্ত্র চালানো শিখাবেনা, নিজের টাকায় পোষা সেনাবাহিনী দিয়ে মায়ানমারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আরাকানকে স্বাধীন করে দিয়ে আসবে না।


গলাধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেয়া অব্যাহত রাখেনি পূর্ববাংলা । বাংলাদেশের জনমতকে আমলে নিয়ে রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে পূর্ববাংলা। বিশ্বব্যাপি প্রশংসিত হয়েছে সে। সে বলেছে, “১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের উপরেও একইভাবে অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছিলো, আমাদের মানুষদের ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো, মানুষ উপায় না পেয়ে ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল। তাই আমরা মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদেরকে আশ্রয় দিলাম। আমরা যদি প্রতিদিন ১৬কোটি মানুষকে খাওতে পারি, মাত্র ৫-৭ লাখ মানুষকে খাওয়াতে পারবোনা? তবে আমাদের ভূমি ব্যবহার করে রোহিঙ্গারা যেন মায়ানমারের উপর সন্ত্রাসী আক্রমণ চালাতে না পারে, সে বিষয়ে আমরা সজাগ আছি।”

পূর্ববাংলা বলেছে, “আমরা মায়ানমার সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ করবো, তারা যেন নিরীহ মানুষের উপর নির্যাতন বন্ধ করেন, যেন প্রকৃত অপরাধী (“বিচ্ছিন্নতাবাদীদের”)কে খুঁজে বের করেন, আমরাও দরকার হলে তাদেরকে সাহায্য করবো। একজনের দোষে সবাই কষ্ট পাবে, তাতো হয়না।”

“রোহিঙ্গা সমস্যা’ মিয়ানমারের একান্ত নিজেদের। কাজেই, এর সমাধান তাদেরকেই করতে হবে, তাদের দেশেই। আমরা কেন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এই বোঝা বয়ে নিয়ে বেড়াবো”

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:০২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ভালো কথা লিখেছেন। সব দেশেরই সব সকালেই জনগণের সঙ্গে সরকার ভাবনার কিছু মিল অমিল থাকবেই।

শুভকামনা জানবেন।

২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:১০

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: কষ্ট কষ্ট কষ্ট

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.