![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রোহিঙ্গাদের পাশে কেউ নেই, এমনকি নেই আমরাও। যে কারনে আমরা প্রদিবাদ করি প্রতিমা ভাংচুরে, যে কারনে আমরা সোচ্চার হই সাঁওতাল দমনে, ঠিক একই কারনে রোহিঙ্গাদের পাশে আমাদের থাকার প্রয়োজন নয় কি? ঐতিহাসিক ভাবে এই রোহিঙ্গাদের সাথে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক, এমনকি রক্তের। স্বাধীন আরাকান রাজ্য সবসময়ই নির্ভর ছিল বাংলার শাসকদের উপর। ১১শ শতক থেকে ১৪শ শতক পর্যন্ত কমপক্ষে একশো বার আক্রান্ত হয়েছে বর্মীয়দের দ্বারা। প্রতিবারই তাঁদের রক্ষা করেছে বাংলার রাজারা। কারন ভৌগোলিক ভাবে এই আরাকান রাজ্য ছিল বাংলার ভুমির সাথে যা ইয়মা (রুমা) পর্বতমালা দ্বারা ছিল বার্মা থেকে বিচ্ছিন্ন। ১৪০৪ সালে যখন বর্মীয়রা আরাকান দখল করে, তখন বাংলায় চলছিলো গানেশা'র সাম্রাজ্য। আরাকানের রাজা "সাও মন" এসে আশ্রয় নেয় রাজা গানেশার কাছে। তাঁর ছেলে যাদু পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহন করে যার নাম হয় জালালুদ্দিন মুহাম্মদ শাহ্, তিনি সাও মন কে তাঁর রাজ্য ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন এবং তাঁরই সহযোগিতায় ১৪২৮ সালে প্রায় ৪০ হাজার বাঙ্গালী সৈন্য সহ আরাকান অভিমুখে রওনা দেন সাও মন। ১৪২৯ সালে রাজ্য ফিরে পান রাজা সাও মন এবং জালালুদ্দিনের অনুমতি নিয়ে নিজের কাছেই রেখেদেন সিংহ ভাগ বাঙ্গালী সৈন্য। সেই সৈন্যরাই শত শত বছর ধরে স্থানীয় মগদের সাথে মিশে হয়েছেন আজকের রোহিঙ্গা। বাংলার মানুষের এই সহযোগিতা কখনোই ভুলেনি আরাকানবাসী। তাই তাঁদের রাজসভায় চলতো বাংলার বন্দনা। ১৬শ শতকে মহাকবি আলাউল সেই রাজসভায় রচনা করেছিলেন মহাকাব্য "পদ্মাবতী"। বাংলার মুসলমান রাজাদের সাথে মিলিয়ে আরাকানি মগ রাজারাও নিজের আরও একটি ইসলামিক নাম রাখতেন। ১৭৮৪ সালে বার্মা আবার দখল করে নেয় এবং ১৮৮৬ সালে আরাকান সহ বার্মা চলে আসে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার কাছে।
মগ এবং রহিঙ্গাদের সম্পর্ক কখনোই খারাপ ছিল না। কারন এই ভুমি ঐতিহাসিক ভাবে বাংলার ভুমি। ১৫শ/ ১৬শ শতকের দিকে তাকালে দেখা যায় একসময় এই রোহিঙ্গারা আরাকানের মন্ত্রীসভায় গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ছিল এমন কি প্রধানমন্ত্রীও। সমস্যা শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর পর। জাপানীরা যখন ভারত বর্ষ আক্রমণ করে তখন বার্মিজরা তাঁদের সহযোগিতা করে। এর কারন ছিল তখন পুরু ভারত জুড়েই চলছিলো ইংরেজ হটাও আন্দোলন। এই ইংরেজদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধ হয় জাপানিদের আরাকান অঞ্চলে। সেই সময় রোহিঙ্গারা ইংরেজদের সমর্থন করে, কিন্তু মগরা করে জাপানিদের। ১৯৪১/৪২ সালে যখন ইংরেজরা পিছুহটে এবং আরাকান ছাড়ে, তখন মগদের সাথে শুরু হয় সমস্যা। তখনও হাজার হাজার রোহিঙ্গা কে হত্যা করা হয় জাপানি সৈন্যদের সহযোগিতায়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া মগরা, আমরা যাদের রাখাইন নামে চিনি, তারাও রোহিঙ্গা নিধনে বিশেষ ভুমিকা রাখে।
এই ইতিহাসের মূল কথা হল, আরাকান কখনোই বার্মার অংশ ছিল না। আজ রোহিঙ্গাদের উপর তারা যা করছে, ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পাকিস্তানিরাও আমাদের তাই করতে চেয়েছিল। আজ যদি আমরা এই রোহিঙ্গাদের পাশে না দাড়াই, তবে ইতিহাস কি আমাদের ক্ষমা করবে?
২| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:৫১
Mukto Mona বলেছেন: হত্যা করে আপনারা মুসলমানরা ঈমানী চেতনা দেখাবেন
ভাই আপনার কমেন্টের সাথে আমি একমত। মুসলমান আবার কি আমরা সবাই মানুষ এটা আমাদের বড় পরিচয়। একরকমের লোক আছে যারা বলে আমরা মুসলমান মুসলমান সেই বলে একের পর এক মানুষ হত্যা যোগ্যের ঘটনা ঘটাচ্ছে। ২ বছরের ও বেশী সময় ধরে যখন সৌদি আরব হামলা চালাচ্ছে ইয়েমেনএ তখন আপনারা মুসলমানদের আপনাদের এত ঈমানী চেতনা দরদ কই ছিল?
ঈমানী চেতনা তখন স্থগিত ছিল কেন। এখন কি অন্য জাতীকে হত্যা করে ঈমানী চেতনা আপনারা মুসলমানরা দেখাবেন।
৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২১
অেসন বলেছেন: "আরাকান কখনোই বার্মার অংশ ছিল না।"- তেমনি বার্মা মনে করে রোহিঙ্গা রা বার্মার নাগরিক না। তাহলে রোহিঙ্গা রা স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করবে, আর বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের পাশে থেকে সাহায্য করবে। - আপনি বোধহয় সেটাই চাচ্ছেন। কিন্তু ভেবে দেখেন, চীন মায়ানমারের পাশে থাকবে। শুধু ইসলামের নামে এই ধরনের চিন্তা দেশকে বিপদের মুখে ঠেলে দিবে। বাংলাদেশের উচিত তারা যেন তাদের দেশে নিজ অধিকার বলে শান্তিতে বসবাস করতে পারে, তার জন্য আন্তর্জাতিক জনমত গরে তোলা।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:০৫
Saikat Palash বলেছেন: যেখানে আমরা রাষ্ট্রীয় নাগরিকত্ব পাওয়া উপজাতি নিধনে স্বরব, সেখানে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারটা একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যায় না? শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার জন্যই কি ওদের ভূখন্ডে নিতে হবে? খুবই খোড়া যুক্তির একটি লেখা পড়লাম