![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
খেলা দেখতে মাঠে গিয়েছি,
গিয়েই মেজাজ খারাপ । আমাদের
সামনে বেশ কয়েকটা ছেলে পাকিস্তানের
জার্সি আর পতাকা নিয়ে বসে আছে ।
বাংলাদেশি হয়ে পাকিস্তান সাপোর্ট
করা, এই একটা জিনিস আমার কোনদিন সহ্য
হয় নাই, হবেও না । পেছন থেকে আমাদের
প্রত্যেকটা কথা তাদের কানে গেছে, তাও
লজ্জা শরম বোধ তাদের মধ্যে ছিলো না,
পাকিস্তান ৪/৬ মারলেই তারা আনন্দ
করতেসিলো । এইরকম আর কিছুক্ষণ
চলতে থাকলে কনফার্ম নেমে মারা শুরু
করতাম ।
হঠাৎ দেখি লাল দাড়িওয়ালা এক
চাচা উঠে আসলেন । বয়স কমপক্ষে ৭৫ হবে ।
উনি এসেই ঐ পাকিস্তান সাপোর্টারদের
দিকে ইঙ্গিত করে চিৎকার করা শুরু করলেন
"তুই রাজাকার, তুই রাজাকার" বলে । ওনার
গলায় কি পরিমান
ঘৃণা ছিলো সেইটা লিখে বুঝানোর
ক্ষমতা আমার নাই । উনার
সাথে সাথে আমরাও উচ্চস্বরে শুরু করলাম,
"তুই রাজাকার, তুই রাজাকার" ।
আমাদের কানফাটানো চিৎকারের
কারনে নাকি লজ্জিত হয়ে জানি না,
ছেলেগুলো আমাদের
গ্যালারী ছেড়ে মাথা নিচু
করে চলে গিয়েছিলো । সেইদিন
থেকে "রাজাকার" কথাটা শুনলেই সেই
চাচা'র কথা মনে পড়ে ।
আজকে শাহবাগে আন্দোলনের ঠিক
মাঝখানে হঠাৎ দেখি সেই লাল
দাড়িওয়ালা চাচা গলা ফাটায় চিৎকার
করছেন, "গ তে গোলাম আযম, তুই রাজাকার,
তুই রাজাকার", আর তার
সাথে সাথে চিৎকার
করে গলা ফাটাচ্ছে হাজার হাজার তরুন ।
সবার গলায় সেই অসম্ভব ঘৃণা, অসম্ভব
ক্রোধ, গায়ের লোম দাড়িয়ে গেলো,
মনে হলো, কে বলেছে আমাদের দেশকে কেউ
ভালোবাসে না ? এই যে জীবনের শেষ
প্রান্তে এসে দাঁড়ানো বৃদ্ধ শত কষ্ট সহ্য
করে চিৎকার করে যাচ্ছেন, অসম্ভব
দেশপ্রেম
না থাকলে কি এইগুলো করা সম্ভব ?
এই চাচার মত হাজার হাজার মানুষের
জন্য, যারা গত ৪১ বছর ধরে বিচারের
অপেক্ষায় রয়ে গেছেন, তাদের জন্য হলেও
আমরা রাস্তা থেকে নড়বো না ।
©somewhere in net ltd.