নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি অ্যাডভোকেট মোঃ রাকিবুল ইসলাম (রুবেল)। মনের আনন্দে লিখি, সেগুলির কিছু কিছু প্রকাশ করি।

অনন্ত৪২

পাগলের প্রলাপ লিখে প্রকাশ করি

অনন্ত৪২ › বিস্তারিত পোস্টঃ

৭-ই মার্চ থেকে মৃত্যু অবধি সেই একই বজ্রকন্ঠে জাতির পিতা

১৬ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৪৩

এটা গত ৭-ই মার্চ আমার ফেইসবুকে নোট হিসেবে লেখাটি লিখি। নিজের ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে ব্লগে দিতে পারি নি। দেরি হলেও আজ দিলাম।




"হে বঙ্গ জননী আমি অকৃতজ্ঞ সন্তান,
আমি বজ্রকন্ঠের সেই পিতাকে করি অসম্মান! "

৭-ই মার্চ,১৯৭১ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান লাখো লোকে লোকারণ্য পিতা কলরেডি'র মাইকে উচ্চারণ করলেন- 'ভায়েরা আমার, আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি'

পুরো ১৯ মিনিটের রোমাঞ্চকর ভাষণ। লাখো লোকের সমর্থন, সমুদ্র উত্তাল জনস্রোত । প্রতিটি শব্দ একেকটি বোমা। পিতার বলিষ্ঠ উচ্চারণ আর তর্জনী দেখে সেদিন ভীতসন্ত্রস্ত হয়েছিল পাকি শাসকেরা। বাঙালি মুক্তিকামী জনগণ পেয়েছিল মুক্তির এক দিক-নির্দেশনা যা মহাকাব্য বললে কম বলা হবে। আর মহাকাব্যের কারিগর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান 'পোয়েট অব পলিটিক্স'।

নিরস্ত্র বাঙালি সেদিন জাতির পিতার আহবানে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে দ্বিতীয়বার ভাবে নি। স্ব-মহিমায় উজ্জ্বল জাতির পিতার প্রতিটি ভাষণ ছিল বাঙালি জাতির জন্য দিক-নির্দেশনা। আজ স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরও যতবার শুনি মুগ্ধ হই ।

আমি যখন এই পোস্টটি লিখছি নিজে অনেক ঝামেলার মধ্যে আছি। যতটা ভেবেছিলাম ততটা অর্থবহ পোস্ট উপহার দিতে পারছি না বলে ভীষণ অতৃপ্তিতে ভুগছি। আজ ৭-ই মার্চের ভাষণ নিয়ে মূলত সবাই আলোচনা করছে আমি এটা নিয়ে আলোচনা করবো না। আমি জাতির পিতাকে একজন আত্মসমালোচক হিসেবে কতিপয় বক্তব্যের অবতারণা করার প্রয়াস চালাবো।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন-স্বার্বভৌম এক ভূ-খন্ড আর লাল-সবুজের পতাকা খচিত একটি দেশ পেলাম আমরা যার নাম 'বাংলাদেশ' ।

স্বাধীন দেশ ভঙ্গুর অর্থনীতি, চারিদিকে অভাব-অনটন পিতা দেশটা বিনির্মাণে বদ্ধপরিকর, হাল ছাড়েন নি। নিজের সততা আর একাগ্রতা দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেবার স্বপ্নে বিভোর বঙ্গবন্ধু। উনার চেয়ে বড় সমালোচক আমি আর কোনো নেতাকে দেখি নি। নিজের দলের সমর্থক চোরদের তিনি সমালোচনা করে বলেছিলেন -

'দেশে সাত কোটি কম্বল আসলো, আমার ভাগের কম্বলটি কোথায় গেল? '

উদারনৈতিক মনোভাব আর কত বড় ব্যক্তিত্বের অধিকারী হলে একজন নিজেকে এভাবে সমালোচনা করতে পারে?

'দেশ স্বাধীন করে অন্যেরা পায় তেলের খনি, সোনার খনি, আর আমি পায় চোরের খনি। '

এমন সত্য উচ্চারণ একমাত্র জাতির পিতায় করতে পারেন। এমন সত্যবাদী, ডেডিকেটেড মানুষ প্রতিদিন জন্মে না, স্রষ্টা আশির্বাদ স্বরূপ পাঠান।

ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে গড়া সংগঠন। জাতির পিতার আদর্শের সৈনিক ছাত্রলীগ কেমন হবে সে সম্পর্কে ১৯৭৩ সালের, ১৯ আগস্ট ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বলেছিলেন-

" বাবারা, একটু লেখাপড়া শিখ। যতই জিন্দাবাদ আর মুর্দাবাদ কর, ঠিকমত লেখাপড়া না শিখলে কোন লাভ নেই। আর লেখাপড়া শিখে যে সময়টুকু থাকে বাপ- মাকে সাহায্য কর। প্যান্ট পরা শিখেছো বলে বাবার সাথে হাল ধরতে লজ্জা করো না। দুনিয়ার দিকে চেয়ে দেখ। কানাডায় দেখলাম ছাত্ররা ছুটির সময় লিফট চালায়। ছুটির সময় দু'পয়সা উপার্জন করতে চায়। আর আমাদের ছেলেরা বড় আরামে খান, আর তাস নিয়ে ফটাফট খেলতে বসে পড়েন।" (সংক্ষিপ্ত)

জাতির পিতা সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী, ডাক্তার- ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকার, আইনজীবী কাউকেই বাদ দেন নি সমালোচনা থেকে।

' আপনি চাকরি করেন , আপনার মাইনা দেয় ওই গরীব কৃষক ; আপনার মাইনা দেয় ওই গরীব শ্রমিক ; আপনার সংসার চলে ওই টাকায় । আমি গাড়ি চড়ি ওই টাকায় ,
আমরা বেচে থাকি ওদের টাকায় । ওদের সম্মান করে কথা বলেন ; ওদের ইজ্জত করে কথা বলেন ; ওরাই মালিক , ওদের সংসার ই চলে!!!

এই বেটা কোত্থেকে আসলি ???
সরকারী কর্মচারীকে বলব, মনে রেখো , এ স্বাধীন দেশ , এ ব্রিটিশ কলোনি নয় , পাকিস্তানি কলোনি নয় ।
যে লোকরে দেখবা তার চেহারাটা হয়ত বাবার মতো , তোমার ভাই এর মতো। ওর পকেটে পয়সা;ওরাই হবে;সম্মান
বেশি পাবে ; কারন ওরা নিজে কামাই কইরা খায় ; আর তোমরা কাজ পাইয়া । একটা কথা জিজ্ঞাসা করি ; আপনাদের কাছে ; মনে করবেন না কিছু ।

আমাদের কাছে জিজ্ঞাসা করি , আপনাদের বলব কেন ? আমিতো আপনাদের একজন । আমাদের লেখাপড়া শিখাই সে কে ডা ? আমার বাপ-মা ? আমরা মনে করি বাপ মা; আমাদের লেখাপরা শেখায় সে কে ?
আমার বাহে ডাক্তারি পাস করায় কে ? আর ইঙ্গিনিয়ারিং পাস করায় কে ? আর সায়েন্সে পাস করায় কে ? আর বৈজ্ঞানিক করে কে ? আর অফিসার করে কে ? কার টাকায় ?

বাংলার দুঃখী জনগণের টাকায় !
আপনাদের কাছে আমার জিজ্ঞাসা ?
শিক্ষিত ভাইরা , যে আপনার লেখাপড়ার খোরপোশ দিয়েছে , শুধু আপনার সংসার দেখার জন্য নয়, আপনার ছেলেমেয়ে দেখার জন্য নয় ; দিয়েছে তাদের আপনি কাজ করবেন , সেবা করবেন ; তাদের আপনি কি দিয়েছেন ? কি ফেরত দিচ্ছেন ? কতটুকু দিচ্ছেন ?

কার টাকায় ইঞ্জিনিয়ার সাব , কার টাকায় ডাক্তার সাব , কার টাকায় অফিসার সাব , কার টাকায় রাজনীতিবিদ সাব , কার টাকায় মেম্বার সাব , কার টাকায় সব সাব ??

সমাজ যেন ঘুণে ধরে গেছে , এ সমাজকে আমি চরম আঘাত করতে চাই ।।

আঘাত করতে চাই , যে আঘাত করেছিলাম পাকিস্তানিদের ; সেই আঘাত করতে চাই এই ঘুণে ধরা সমাজ ব্যাবস্থাকে ।। (সংক্ষিপ্ত)
Youtube Link:-
https://www.youtube.com/watch?feature=youtu.be&v=rbcq_IrGTi4


বঙ্গবন্ধু সেই অগ্নিপুরুষের নাম যার তেজস্বী কন্ঠ পুরো জাতিকে স্বাধীন রাষ্ট্রই দিয়ে যায় নি, দিয়ে গেছে একটি সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা। বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু দুটি শব্দ একটি অর্থ। কবি সুফিয়া কামালের 'ডাকিছে তোমারে' কবিতার কয়েকটি লাইন দিয়ে শেষ করছি-


" এই বাংলার আকাশ- বাতাস, সাগর-গিরি ও নদী
ডাকিছে তোমারে বঙ্গবন্ধু, ফিরিয়া আসিতে যদি
হেরিতে এখনও মানবহৃদয়ে তোমার আসন পাতা
এখনও মানুষ স্মরিছে তোমারে, মাতা-পিতা- বোন- ভ্রাতা।"

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৩৬

হাইড্রোক্লোরাইড এসিড বলেছেন: জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু

২| ১৭ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১০:৪২

সাদী ফেরদৌস বলেছেন: জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.