![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পয়লা বৈশাখ
সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত হাসপাতালেই কাটালাম। কলেজ ক্যাম্পাসে বৈশাখ উদযাপন হচ্ছে কিন্তু যোগ দিতে পারছি না, খুব ইচ্ছে করছিল গিয়ে দেখে আসি।
ছুটির দিনে বোধয় আজ ছোট বাচ্চাগুলোরও ছুটি ছিল। দু-একজন ছাড়া কেউ কোনো অভিযোগ করল না। বেগুনি ফ্রক পরা নিউমোনিয়ার ছোট বাবুটা যে অ্যাঁ অ্যাঁ করে বারান্দার গ্রিলে বসে কাঁদে আর এক চোখ দিয়ে পানি ফেলে, কেন কাঁদছে জিজ্ঞেস করলে হাত বাড়িয়ে অ্যাঁ অ্যাঁ করে বলতে চায় যে তাকে ইনজেকশন দিয়েছে, সেও আজ কাঁদল না। রিফাতের ইউরিন কালচার রিপোর্ট ভুয়া এসেছে, ওরও জ্বর আসল না। শিশিরের পেটে এত পানি, তাও চুপ রইল। শুধু রাতুল মাস্টারের মন খারাপ। লাল-কালো জামা পড়ে চুপচাপ বসে আছে। লাফঝাঁপ নিষেধ তার। বিশ হাজারের কম প্লেটলেট নিয়ে তার জীবন চলছে।
এদের দেখতে দেখতে আমি ঘুমায় পড়লাম।
হাসপাতাল থেকে বের হয়ে দিশাকে নিয়ে ঘুরতে বের হলাম।
কুকিজারে আইসক্রিম আর ফালুদা, সিএনবি মোড়ের বনসাই, শিশু একাডেমির "শিশু" পত্রিকা, টিএফসি'র চিকেন কম্বো, নিউমার্কেটের ফুচকা-চটপটি, অকারণ হাঁটাহাঁটি, খিলখিল খুনসুটি, সাদা-লাল জামা দুজনেরই, কাজল মাখা চোখ, টিপ, ঠান্ডা পানি..... কদিনের সব কষ্ট যেন দূর হয়ে গেল।
শুধু বৃষ্টির দেখাই এবার পেলাম না। বৃষ্টিহীন আমার প্রথম পয়লা বৈশাখ।
ফুচকা খেতে খেতে কানে এলো, রাগত স্বরে, "এই পিচ্চি আমাকে তাড়াতাড়ি দিয়ে যা।"
পিছন ঘুরে সুশীল মহিলাটিকে দেখা গেল, লাল-সবুজ গ্রামের মেয়েদের মতো করে পড়া শাড়ি, জবরজং বৈশাখি গহনা, লাল টকটকে গ্লসি লিপস্টিক, সাতাশ-আঠাশের মা, পাশে বসা শিশু সন্তান।
ইচ্ছে হল মহিলার গলা টিপি....
রাত আটটায় বাসায় ফিরে প্রথম আলোর চটি পড়ে..... থাক বাজে কথা বলার ইচ্ছে হচ্ছে না।
সবাইকে নতুন বছরের প্রথম দিনের শুভেচ্ছা।
০১.০১.১৪২০
©somewhere in net ltd.