নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে জানতে চাই,ছুটে চলেছি অজানার পথে,এ চলার শেষ নেই ।এক দিন ইকারাসের মত সূর্যের দিকে এগিয়ে যাব,ঝরা পাতার দিন শেষ হবে ,আর আমি নিঃশেষ হয়ে যাব ।

অপু দ্যা গ্রেট

গাহি সাম্যের গান- মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান, নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি, সব দেশে, সব কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।

অপু দ্যা গ্রেট › বিস্তারিত পোস্টঃ

মসলার জন্য যুদ্ধঃ মিথ, ইতিহাস নাকি অজানা কিছু সত্য - মসলার যুদ্ধ (বুক রিভিউ)

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৫০








আচ্ছা ভেবে দেখুন তো আপনি রান্না করছেন, কিন্তু কোন মসলা নেই । তাহলে কেমন হবে? কোন স্বাধ পাবেন । তখন কি মনে হবে না যে এভাবে কি রান্না হয় । খাওয়া যায় এগুলো । তাহলে ভাবুন তো এই মসলা নিয়েই সংঘঠিত হয়েছে যুদ্ধ । মসলার জন্য যুদ্ধ হয়েছে ভাবা যায় ।

মসলার জন্য বিখ্যাত ছিল আরব বনিকেরা । তারাই ছিল মসলার অন্যতম ব্যবসায়ী । তখন ইসলামের ছিল স্বর্নযুগ । যদিও এর আগে ক্রসেডে খ্রিস্টানরা জয় লাভ করে । তবে সেটা সে পর্যন্তই ছিল । এরপর সালাউদ্দিন আইয়ূব খ্রিস্টানদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন জেরুজালেম । তারপর থেকে তার কাছ থেকে কেউ আর জেরুজালেম কেড়ে নিতে পারেনি । তখন আবার ভারতবর্ষের সম্পদের কাহিনী ছড়িয়ে পরেছে পুরো ইউরোপ জূড়ে । তবে সেখানে যেতে হলে মিশর হয়ে যেতে হবে । সেটা সম্ভব নয় । আর এমনি তে মুসলমান আর খ্রিস্টানদের সম্পর্ক তখন ভাল ছিল না ।

অন্য দিকে কালিকট ছিল মসলা বানিজ্যের কেন্দ্র । ইন্দোনেশিয়া, মালয়, পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ এবং আরব বনিকেরা নানা জায়গা থেকে মসলা নিয়ে এসে এখানে বানিজ্য করত । এখানকার লোকজন অনেক অথিতিপরায়ন হিন্দু মুসলিম এক সাথে তাদের সখত্য গড়ে উঠেছে । মসলা তে প্রচুড় লাভ হয় এ কথা ছড়িয়ে পরার সাথে সাথে ই বাজার দখলের জন্য উঠে পরে লেগে যায় ডাচ, পর্তুগিজ ও ইংরেজরা । তবে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় কালিকট । এই কেন্দ্র কিছু তে দখল করতে পারে না কেউ ।

ভাবুন তো এই মসলার জন্য ই ডাচ, পর্তুগিজ ও ইংরেজরা এই ভারতীয় উপমহাদেশে এসেছে । মসলা কিন্তু কোন সাধারন বিষয় নয় । মসলা না থাকলে হয়ত তারা এদেশে আসত ই না । হয়ত রচিত হতো না সুদীর্ঘ ইতিহাস ।

ভাস্কো দা গামা আমরা সবাই জানি তাকে বলা হয় “ভারত আবিস্কারক বা ভারতীয় উপমহাদেশ আবিস্কারক” । এটা আমরা সাধারন ভাবে সবাই জানি । কিন্তু যেটা জানি না সেটা হচ্ছে তার উল্টো রূপ । তিনি একধারে জলদস্যু খেতাব প্রাপ্ত একজন মানুষ । কারন তিনি মসলার কেন্দ্র দখলের জন্য সমুদ্রে শুরু করেন ত্রাসের রাজত্য । পুরিয়ে মেরে ফেলেন হজ্জ করে আসা মুসলিমদের । অন্য দিকে এলবুকার্ক ভারতে গোয়া দখল করে বসেন । সেখানেও তিনি মেরে ফেলেন মুসলমানদের ।

এসব কেন করা হয়েছে । কি কারনে করা হয়েছে । এটা আসলে কোন ধর্ম বা ধর্ম যুদ্ধের কারনে নয় । সব কিছু ই হয়েছে মসলার বাজার দখল করার জন্য । কারন আরব বনিকেরা সবাই মুসলমান তারা মসলার বাজার ধরে রেখেছিল । তাদের সরাতে না পারলে এই বাজার দখল করা যাবে না । কারন তারা জানত আরবরা এই বাজার ছাড়বে না । তবে যুদ্ধের নৃশংসতা ছিল ভয়াবহ ।

অপর পক্ষে পোপের আর্শীবাদ পুষ্ট হয়ে রাজা হেনরি ডোম নিজেকে পুরো সমুদ্র রাজ্যের অধিপতি ঘোষনা করেন । তিনি নিজেকে এই পুরো রাজ্য নিজের দখলে নিয়ে পরিচালনা করে । ধীরে ধীরে তার নৃশংসতা বাড়তেই থাকে । সব জায়গাতেই তিনি নিজের সম্রাজ্য বিস্তার করতে থাকেন ।

কিন্তু এত সহজে আরব, ভারতীয়, চৈনিকেরা ছাড়ার পাত্র নয় । তারা রূখে দাড়িয়েছিল এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে । কাধে কাধ মিলিয়ে লড়াই করেছে শোষন আর শাসনের বিরুদ্ধে । অনেকের সাহায্যেও পেয়েছে । তবে তাদের কূটনীতি আর দেশীয় কিছু দোসর যারা নিজেদের আত্মসম্মান বিক্রি করে দিয়েছিল তাদের কাছে হেরে গিয়েছে । ইউরোপীয়দের হাতে পুরো দেশটাই একটা কলোনি হয়ে গিয়েছে । ধীরে ধীরে সবাই ভুলে গিয়েছে মসলা চাষী আর তাদের সংগ্রামের কথা । তাদের লড়াই ও রক্তাক্ত আখ্যানের কথা সবাই ভুলে গিয়েছে ।

সত্যেন সেন “মসলার যুদ্ধ” বইটিতে তুলে এনেছেন সেই ইতিহাস । তুলে ধরেছেন অজানা সব ইতিহাস । মসলার যুদ্ধ থেকে শুরু হয়ে সেটি যে একটি বিরাট ইতিহাসে পরিনত হয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না । ছোট এই বইটিতে সব কিছুই সুন্দর ভাবে বর্ননা করা হয়েছে । বর্ননা করা হয়েছে এই উপমহাদেশের একটা অজানা ইতিহাস ।

বইঃ মসলার যুদ্ধ
লেখকঃ সত্যেন সেন

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:০৪

হাবিব বলেছেন: পেঁয়াজ আমাদের কতকিছু শিখালো......

২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:০৯

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: পেঁয়াজের কারণে পেঁয়াজ বিষয়ক হাদীস জানলাম, এবার জানলাম মসলার যুদ্ধ সম্পর্কে...

৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৮

বিজন রয় বলেছেন: গ্রেট!!
আপনি সত্যেনদা'র বইও পড়েন!!
অনেক ভাল লাগল।

আপনার সাথে অনেক কথা বলার আছে।
সময় পেলে ডাকবো আপনাকে।

৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৫৮

করুণাধারা বলেছেন: চমৎকার রিভিউ। মসলার ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম।

৫| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার সব বইয়ের সন্ধান আপনি পান কই??

৬| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৪১

নীল আকাশ বলেছেন: আরে দূর ভাই, পিয়াজই নাই? আর আপনি আছেন মসল্লা নিয়ে? আগে পিয়াজ তারপর না মসলা।
দেখুন পিয়াজ নিয়ে কোন বই আছে নাকি?

৭| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: মসলার ইতিহাস এবং মসলা নিয়ে যুদ্ধের কাহিনী জানতে পারলাম আপনার এ পোস্ট পড়ে। লেখককে ধন্যবাদ, এমন একটি বিষয় নিয়ে লেখার জন্য, এবং আপনাকেও, বইটি নিয়ে আলোচনা করার জন্য।
পোস্টে প্লাস + +।

৮| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৪:৫২

হাসিবুল_শান্ত(হাসু) বলেছেন: রিভিউ পড়ে ইচ্ছা জাগলো পড়বার। পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে নিলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.