নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে জানতে চাই,ছুটে চলেছি অজানার পথে,এ চলার শেষ নেই ।এক দিন ইকারাসের মত সূর্যের দিকে এগিয়ে যাব,ঝরা পাতার দিন শেষ হবে ,আর আমি নিঃশেষ হয়ে যাব ।

অপু দ্যা গ্রেট

গাহি সাম্যের গান- মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান, নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি, সব দেশে, সব কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।

অপু দ্যা গ্রেট › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিয়ে এবং বিয়ের ভালবাসার উপন্যাসঃ লালশাড়ি (বুক রিভিউ)

০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৪








বিয়ে একটা সুন্দর সম্পর্কের শুরু । বিয়ে শুধু দুটো মানুষের কাছে আসা নয় । এখানে জড়িয়ে থাকে দুটো পরিবার, তাদের ভালো লাগা, খারাপ লাগা । বিয়ে দুটো অপরিচিত মানুষকে যেমন এক সাথে করে দেয় আবার ঠিক পরিচিত প্রিয়জন কে নিজের করে নেয় । বিয়ে সম্পর্কটাই এমন যে কেউ এড়িয়ে যেতে চাইলেও পারে না । আবার বিয়ের মাঝেই লুকিয়ে আছে অজানা এক সুখ । বিয়ে আসলেই একটা দিল্লীকা লাড্ডু, যে খায় সে পস্তায় আবার যে না খায় সেও পস্তায় । সম্ভবত খেয়ে পস্তানো ভালো । সে যাইহোক অবশেষে পড়ে শেষ করলাম শাহীন রহমানের “লাল শাড়ি” উপন্যাস । লাল শাড়ি উপন্যাসটি বিয়ের উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে ।

অনেক দিন ধরেই মেয়ে দেখে যাচ্ছে জুয়েল । কিন্তু কিছুতেই তার পছন্দ হচ্ছে না । এত বার মেয়ে দেখাও তার কাছে ভাল লাগছে না । তারপরও পরিবারের চাপে মেয়ে দেখে যাচ্ছে । জুয়েল ব্যাংকে চাকরি করে বলে এত ছুটিও নেয়া যায় না । তবুও মায়ের ও পরিবারের ইচ্ছেতেই সে মেয়ে দেখতে যায় । তারপরও কিছুতেই কিছু হচ্ছে না । এমন ভাবে চলতে থাকলে তাকে চিরকুমার হয়েই কাটিয়ে দিতে হবে ।

জুয়েল এবার আবারও যাচ্ছে মেয়ে দেখতে, এবার কি তার মেয়ে পছন্দ হবে নাকি এবারও বিয়ের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে ।
জুয়েলের ভাই ও ভাবী নীলা দুজনেই উত্তেজিত কারন আজ তারা জুয়েলের জন্য মেয়ে দেখতে যাচ্ছে । এবার কিছু একটা হবেই । তারাও চান জুয়েল যেন সুখি হয় মনের মত একজন কে সঙ্গী হিসেবে পায় । তবে ব্যাটে বলে সেটা হচ্ছে না । কিছুতেই মিলছে না । তবে আজ দিনটা অন্যরকম এবার কিছু হবেই কারন মামা দায়িত্ব নিয়েছেন । এবার কি সত্যি জুয়েলের বিয়েটা হবে ?

অভি জুয়েলের বন্ধু । তার সাথে এক ব্যাংকে চাকরি করে । জুয়েলের সব কিছুতেই অভি জড়িয়ে আছে । বলা যায় হরিহর আত্মা । একজন অপর জনকে ছাড়া চলেই না । অভিও চায় জুয়েল বিয়ে করুক । তবে অভিরও বিয়ে হয়নি, সেটা অবশ্য তার কোন সমস্যা নেই । জুয়েলের শালীকেই সে বিয়ে করবে বলে ঠিক করেছে ।

জুয়েল ও অভির সাথেই চাকরি করে যুথি নামের একটি মেয়ে । মেয়েটি অফিসে থাকা অবস্থায় জুয়েলের দিকে মাঝে মাঝে তাকিয়ে থাকে । আড় চোখের চাউনি দিয়ে সে জুয়েল কে দেখে । যদিও জুয়েল যুথি একজন সহকর্মী হিসেবেই দেখে । তবুও জুয়েল কি তার প্রেম পরে যাবে । যুথি কিন্তু সুন্দরী তারপর জুয়েলের মনে কি দোলা দিতে পারবে । মায়াতে বাধতে পারবে জুয়েল কে, নাকি তার জন্য অপেক্ষা করছে অন্য কিছু । জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার মত হয়ত সময় চলে এসেছে ।

স্পর্শীর জীবনে অনেক বড় একটা পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে । সে নিজেও হয়ত জানে না । কিন্তু এই পরিবর্তন কি তার পুরো জীবনটাকে পালটে দেবে নাকি ভাসিয়ে নিয়ে যাবে অজানাতে । সময় খুব কম এই অল্প সময়ের মধ্যে তার পরিবর্তন হয়ত সেকি মানতে পারবে । নাকি তার জীবনে নেমে আসতে যাচ্ছে অন্ধকার ।

উপন্যাসের কাহিনী ও চিত্রপট বলা যায় নতুন । বিয়ে নিয়ে এর আগে আমি তেমন কিছু পড়িনি । যদিও আমার রোমান্টিক উপন্যাস পড়তে ভাল লাগে না । তবে বলতে হবে লেখক তার চেষ্টা সফল করেছেন । তিনি বিয়ের আগে এবং পরের দৃশ্য গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন । দুটি পরিবারের মধ্যের বন্ধন । বিয়ের আগের সময় ও বিয়ের পর পরিবর্তন গুলো তুলে ধরার ভাল একটা প্রচেষ্টা ছিল ।

তবে লেখক হয়ত ভুলে গিয়েছিলেন বাস্তবতা ভিন্ন জিনিস । উনি ওনার ভূমিকাতে লিখেছেন বইটি লিখতে উনি সময় নিয়েছেন । ভাল কিন্তু আমরা মনে হয় ওনার বিয়ের বাস্তব অভিজ্ঞতা দরকার ছিল । কল্পনা আর বাস্তবতা দুটো ভিন্ন জিনিস । আমি যদি কল্পনাও ধরি তবুও তার অনেক কিছু জিনিস দৃষ্টির বাইরে রাখতে পারিনি ।

এক জায়গাতে জুয়েলের ফোনে টাকা আসে, কিন্তু সেটা কে বা কারা পাঠিয়েছে সেটার কোন তথ্য নেই । এমনি এটা নিয়ে পরে যে ভেবেছে তেমনও নয় । আবার জুয়েল যখন মেয়ে দেখতে গিয়ে একা কথা বলেছে মেয়েটি কোন কথাই জুয়েল কে জিজ্ঞেস করেনি সেটা আবার একটু আমার কাছে অন্যরকম লেগেছে । কারন মেয়ে কিছু জানতে চাইবে না এটা এমন নয় । যেহেতু বইটি এখনকার সময়ে লেখা তাই বলা যায় মেয়ের দিক থেকে তার চরিত্রটি একটু দুর্বল করে ফেলা হয়েছে ।

আবার জুয়েলের মা বা বাবার চরিত্র একদম নেই বললেই চলে । একটা বিয়েতে সন্তানের মা বাবা সবচেয়ে বেশি খুশি হয়ে থাকেন । তারাই সব কিছুর দেখাশুনা করেন । অথচ তাদের দৃশ্যপট নেই । তারা অনেক নিস্প্রভ । উপন্যাসে জুয়েলের ভাইয়ের চরিত্রও অনেক দুর্বল তাকে সেভাবে লেখক উঠিয়ে নিয়ে আসতে পারেননি ।

এছাড়া তিনি বিয়ের আগের যেভাবে তুলে ধরেছেন বিয়ের পরের ঘটনা সেভাবে তুলে ধরতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছেন । একটু বাড়িয়ে বলেছেন । যদিও এটা লেখকের ইচ্ছে তার লেখা তিনি সেভাবেই লিখবেন । তবে এটাও ভাবতে হবে এটা একটা সামাজিক উপন্যাস বাস্তবতার সাথে কিছুটা মিল রাখলে ভাল হতো । এছাড়া তিনি রোমান্টিকতা বা ভালবাসাটাকে একদন উপচে পরা দেখিয়েছেন যেটা আমার কাছে ভাল লাগেনি ।
অপর দিকে বানান ভুল ছিল অনেক জায়গাতে । এছাড়া ‘মতো’ শব্দটি অনেক বার এসেছে বাক্যের মাঝখানে । সেটা পড়তে গিয়ে অনেক সময় থমকে যেতে হয়েছে ।

এছাড়া বইটির প্রাপ্ত বয়স্করাই পড়তে পারবে । তবে বইটি অন্যান্য দিক থেকে ভাল । লেখনি ভাল হয়েছে । প্রচ্ছদ চমৎকার । তবে লাল শাড়ি নাম না দিয়ে বিয়ের উপর না দেয়া যেতো । এটা ভেবে দেখা যেতো । বইয়ের বাধাই ও পৃষ্ঠা চমৎকার ।

সর্বোপরি সবদিক থেকে বইটি ভাল, তবে আমার মনে হয় আরো ভাল হতে পারত ।

বইঃ লালশাড়ি
লেখকঃ শাহীন রহমান
পৃষ্ঠাঃ ১৭৬
মলাট মুল্যঃ ৩৫০/-
প্রকাশনীঃ ছায়াবিথী

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪০

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: তবে কি.... .. এই শীতে বরফ গললো ? মহাপুরুষ আজ বিয়ে নিয়ে.... :D

নববর্ষের শুভেচ্ছার সাথে বিয়ের জন্য (!) শুভকামনা রইলো ;)

২| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪২

ফয়সাল রকি বলেছেন: প্রচ্ছদটা সুন্দর।

৩| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:০৩

একজন অশিক্ষিত মানুষ বলেছেন: রিভিউ ভালো লাগল ।

৪| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:০৩

নুরহোসেন নুর বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন, নববর্ষের শুভেচ্ছা রইলো।

৫| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৩১

বিজন রয় বলেছেন: লালশাড়ি, নামেই বিয়ের সৌরভ।

৬| ০২ রা জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: অনুরোধ, এই সমস্ত বই না পড়ে ভালো ভালো বই পড়ূন। সময় কাজে লাগান। পরে আফসোস করতে হবে। আমি বাংলা সাহিত্য এবং বিশ্ব সাহিত্যের ১০০ বইয়ের তালিকা করেছি। সে গুলো পড়ুন। কাজে লাগবে।

৭| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৪১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অসাধারণ প্রকাশ । অসাধারণ l

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.