নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিজেকে জানতে চাই,ছুটে চলেছি অজানার পথে,এ চলার শেষ নেই ।এক দিন ইকারাসের মত সূর্যের দিকে এগিয়ে যাব,ঝরা পাতার দিন শেষ হবে ,আর আমি নিঃশেষ হয়ে যাব ।

অপু দ্যা গ্রেট

গাহি সাম্যের গান- মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান, নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি, সব দেশে, সব কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।

অপু দ্যা গ্রেট › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিল্পী কোন দেশ বা জাতির নয়, তিনি পুরো বিশ্বেরঃ চার্লি চ্যাপলিন

১৯ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১০:৩৩









শিল্পী হচ্ছেন পৃথিবীর। তিনি না কোন রাষ্ট্রের, না কোন দেশের। তিনি সার্বজনীন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে তিনি সবার কথা বলেন। তিনি মানুষের কথা বলেন। এটাই তার পরিচয়।
.
এভাবেই পরিচয় দিতে ভালবাসতেন চার্লস স্পেন্সার চার্লি। যিনি পৃথিবী জুড়ে চার্লি চ্যাপলিন নামেই সবচেয়ে বেশি সমাদৃত হয়েছেন।
.
চ্যাপলিন তার সিনেমার মাধ্যমে নিজেকে চিনিয়েছেন। সবাই তাই ভাবে। আসলে তা কিন্তু নয়। তিনি একজন মানুষ। যার ভেতরে একটা হৃদয় রয়েছে। যার মনও কেদে উঠেছে। বার বার যিনি শান্তির কথা বলেছেন। অথচ তাকে কত কথাই না শুনতে হয়েছে। বলা যায়, শেষ পর্যন্ত তাকে আমেরিকা ছাড়তেই হয়েছে।
.
চ্যাপলিনের কথা আসলে তার অভিনয় নিয়ে কথা আসবেই। তিনি প্যান্টোমাইম এর উপর বিশেষ ভাবে দক্ষ ছিলেন।
.
এখন প্যান্টোমাইম কি? প্রশ্ন হচ্ছে সেটা। সহজ ভাষায় মূকাভিনয় হচ্ছে প্যান্টোমাইম।
.
এক্ষেত্রে যদি বলা যায় তবে আমি নিজের ভাষায় এর একটি অর্থ দাড় করিয়েছি। সেটা হচ্ছে কোন কিছু না বলে বা শব্দের প্রয়োগ ছাড়া অঙ্গ ভঙ্গির মাধ্যমে আবেগ, অনুভূতি, ও নিজের মনের ভাব প্রকাশ করাটাই হচ্ছে প্যান্টোমাইম বা মূকাভিনয়।
.
তো এখন প্রশ্ন হচ্ছে চার্লি এতে কিভাবে বিশেষ হলেন বা তার অভিনয়ের বিশেষ দিক কোনটি?
.
চার্লি ছোট বেলায় তার অভিনয়ের হাতে খড়ি মায়ের কাছ থেকে। তার মা আবার মানুষের নকল করতে উস্তাদ ছিলেন। তাই ধরা যায় সেখান থেকে তিনি এই গুনটি রপ্ত করেছেন। তিনিও মানুষকে খুব ভাল ভাবেই নকল করতেন।
.
এই নকল করাটাই তার জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখেছে। সেটা হচ্ছে অভিনয় জীবনে তিনি তার সব কিছু বাস্তব জীবন থেকে নিয়েছেন। বলা যায় তিনি নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সেখান থেকে অভিনয় নিয়ে এসেছেন।
.
এখানে লক্ষ্য করার বিষয় হচ্ছে যে, শুরুর দিকের চার্লি এবং পরের চার্লির মধ্যে বিস্তার পার্থক্য রয়েছে। এটা আপনি তার সিনেমা দেখলেই বুঝতে পারবেন। কারণ তিনি ধীরে ধীরে পরিনত হয়েছেন। বলা যায় তার অভিজ্ঞতা তাকে গড়ে তুলেছে অসাধারণ সৃষ্টির প্রতি। তিনি দিয়েছেন অসাধারণ সব সিনেমা।
.
প্রথম দিকে চার্লি বছরে ছবির সংখ্যা যদি হিসেব করে দেখেন তবে দেখতে পাবেন যে তিনি অনেক বেশি সিনেমাতে অভিনয় করেছেন। এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে যে তিনি ১৯১৪ থেকে ১৯২৩ সাল পর্যন্ত প্রায় ৭২টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এটা একজন শিল্পীর জন্য অবশ্যই অনেক বেশি।
.
কিন্তু এরপর ই একটা বিশাল পরিবর্তন আসে চ্যাপলিনের সিনেমায়। তিনি এরপর মানে ১৯২৩ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত মাত্র ৮টি সিনেমা করেন। সবচেয়ে মজার বিষয় এই সময়ের মধ্যে তিনি যে কটি সিনেমা করেছেন সব গুলোই অসাধারণ সিনেমা।
.
১৯২৩ সালে মুক্তি পায় " এ ওম্যান অব প্যারিস"। এই সিনেমায় চার্লি অভিনয় করেনি। বিশেষ একটি চরিত্র করেছেন শুধু। হয়ত চার্লির অন্যতম সিনেমা যেখানে তার অভিনয় মানুষ দেখতে পায়নি। তবে তার কাজ মানুষকে মুগ্ধ করেছে। এরপর পৃথিবী বিখ্যাত ছবি "দ্য গোল্ড রাশ", মুক্তি পায় ১৯২৫ সালে। যার জন্য চার্লি কে অনেক সমালোচনার শিকার হতে হয়। তবে চার্লি সব সময় ছিলেন অনড়। তার কথা হচ্ছে আমি মানুষের কথা বলি।
‍.
এরপর চার্লি যেন অদ্যম হয়ে উঠলেন। একে একে তৈরি করলেন সব অসাধারণ সিনেমা। ১৯২৮ সালে তৈরি করলেন "দ্য সার্কাস", এরপর ১৯৩১ সালে "সিটি লাইটস", এরপর এসে ১৯৩৬ এ তৈরি করলেন "মর্ডান টাইমস"
.
১৯৪০ এ এসে তো তিনি পুরো ইতিহাস সৃষ্টি করলেন। প্রথম বারের মত শব্দ নিয়ে আসলেন সিনেমায়। যদিও এর আগেই ১৯২৮ এর দিকে সিনেমাতে শব্দ যুক্ত করা হয়েছে। তবে চার্লি নির্বাক সিনেমাতেই বেশি মনোযোগী ছিলেন।

যাইহোক, ১৯৪০ তিনি তৈরি করেছেন "দ্য গ্রেট ডিক্টেটর"। যে সিনেমার মুক্তির পর তাকে সমালোচকরা প্রায় একদম ধুয়ে দিচ্ছিলেন। এই সিনেমা অনেক জায়গাতেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবুও চার্লি তার জায়গাতে ছিলেন অনড়। ঠিক যেন বট বৃক্ষ।
.
এরপর ১৯৪৭ সালে তিনি হাজির হলেন সম্পূর্ন নতুন রূপে। এ যেন নতুন চার্লি। কিভাবে যেন বদলে ফেলেছেন সব। নিজেকে পরিবর্তন করেছেন। ১৯৪৭ এর "মিশিয়ে ভের্দু" সিনেমায় হাজির হলেন নতুন চেহারা আর চরিত্রে। যদিও সুক্ষ্ম ভাবে দেখলে ট্রাম্প কেই খুজে পাবেন।

এই সিনেমার একটা লাইন খুব জনপ্রিয়, "যখন কেউ একজন কে হত্যা করে, তখন সে অপরাধী। আবার যখন কেউ লক্ষ লক্ষ লোক হত্যা করে তখন সে হিরো"।
.
সবশেষে ১৯৫২তে এসে তৈরি করলেন ''লাইম লাইট"। এ যেন চার্লির নিজের প্রতিচ্ছবি। নিজের আত্মজীবনী বললেও ভুল কিছু বলা হবে না। তবে এখানেই তিনি তার স্বকীয়তা বজায় রেখেছেন। যদিও এই সময়ে চার্লি কে আমেরিকা থেকে রাজনৈরিক নির্বাসন দেয়া হয়েছিল।
.
আমেরিকা থেকে যখন তাকে নির্বাসন দেয় তখন উনি সুইজারল্যান্ডে তার নিবাস গড়েন এবং শেষ জীবন পর্যন্ত ওখানেই ছিলেন। যদিও পরবর্তিতে তার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। কিন্তু মানুষটি চার্লি। তিনি তার সেই নিষেধাজ্ঞার কাগজপত্র জেনেভাস্থ আমেরিকান দূতাবাসে জমা দিয়ে আসেন। আর বলে আসেন তার এখন আর ওসবের প্রয়োজন নেই। এভাবেই তিনি আমেরিকাকে বিদায় জানান।
.
বইঃ চার্লি চ্যাপলিন
লেখকঃ মৃনাল সেন
প্রকাশনীঃ কবি প্রকাশনী

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১০:৩৯

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: খুব ভাল লেগেছে লেখাটি।
নতুন কিছু জানলাম। ধন্যবাদ।

২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:৫১

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: মর্ডান টাইম - মুভির এই দৃশ্য ও দৃশ্যের সরলতা ও ভালোবাসায় মুগ্ধ হই-অদ্যাবদি

৩| ১৯ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:১১

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর রিভিউ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.