নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উইড়্যা যায়রে বনের পঙ্খী, পইড়্যা থাকে মায়া।

নরকের সবচেয়ে অন্ধকার স্থানটি তাদেরই জন্য সংরক্ষিত, যারা ভাল এবং মন্দের সংঘাতের সময় নিরপেক্ষতা বজায় রাখে । - দান্তে

অশ্রু কারিগড়

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দূরত্ব হলো যখন, আমি তোমার পাশে থাকি কিন্তু তুমি জানো না যে আমি তোমাকে কতটা ভালবাসি !! ---রবি ঠাকুর মেইল: [email protected]

অশ্রু কারিগড় › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছুডুবেলার গপ্পঃ এক যে ছিল পান্তাবুড়ি......।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৫

এক দেশে ছিল এক পান্তাবুড়ি । তার তিন কূলে কেউ ছিল না । সে ছিল অনেক গরীব আর অভাবী । দু- বেলা ঠিকমত খেতেই পেত না । অনেক কষ্টে সে রাতের খাবারের ব্যাবস্থা করত শুধু । আর সেই খাবার থেকে বাঁচিয়ে কিছু ভাত সে পানি দিয়ে রেখে দিত পরের দিনের সকালের জন্য । রোজ সকালে বুড়ির দিন শুরু হত সেই পান্তাভাত খেয়ে । বুড়ির চাহিদা কম ছিল তো, এজন্য একটু কষ্ট হলেও তার দিন ভালই যাচ্ছিল ।



কিন্তু এভাবে বেশি দিন বুড়ির কপালে সুখ সইল না । শোন একদিন হল কি, এক চোর আসল বুড়ির বাড়িতে রাতের বেলায় । বুড়ি তো তখন ঘুমে অচেতন আর এদিকে চোর বুড়ির ঘরে চুরি করার জিনিস খুজছে । কিন্তু ঐ যে বললাম না, বুড়ি অনেক অভাবী ছিল তাই চোর তার ঘরে চুরি করার কিছুই পেল না । শেষে চোর রেগেমেগে বুড়ির পান্তাভাত খেয়ে চলে গেল ।



সকালে ঠাণ্ডা বাতাসে বুড়ির ঘুম ভাঙ্গল । বুড়ি ভাবল ঘরের দরজা বন্ধ করতে বোধ হয় ভুলে গেছি । একটু পড়েই বুড়ি বুঝল যে ঘরে চোর এসেছিল । প্রথমে বুড়ি একটু ভয় পেলেও যেইনা দেখল তার পান্তাভাত চোরে খেয়ে শেষ করে গেছে ওমনি বুড়ির কষ্টে আর রাগে বুক ফেটে কান্না আসতে লাগল । বুড়ি শেষে নিজেকে এই ভেবে সান্তনা দিল যে এখন থেকে সে সাবধানে থাকবে, তাহলেই আর এমন অঘটন ঘটবে না । কিন্তু পর পর তিনদিন যখন চোর বুড়ির পান্তাভাত সাবাড় করে দিল, বুড়ি তখন রাগে, দুঃখে, কষ্টে থানায় গিয়ে চোরের নামে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিল ।



এর পরদিন সকালে বুড়ি থানার উদ্দেশ্যে রওনা হল । পথে যেতে বুড়ির সাথে দেখা হল শিং মাছের । শিং মাছ বলল, “কই যাও পান্তাবুড়ি । তোমার কি হয়েছে ”? পান্তাবুড়ি তার দুঃখের কথা শিং মাছকে সব খুলে বলল । শুনে শিং মাছ বলল, “আমাকে তোমার সাথে নাও । আমি তোমার কাজে লাগব ।” কিন্তু বুড়ি বলল, “আগে আমি থানায় যাই বাপু, যদি এরপর দরকার হয় তখন তোমায় আমার সাথে নিয়ে যাব”।



এভাবে থানায় যাওয়ার পথে বুড়ির সাথে দেখা হল কয়লা, বেল, গোবর, কাস্তে এবং বালুর । সবাই বুড়ির মন খারাপের কারণ জেনে বুড়ির সাথে যেতে চাইল । কিন্তু বুড়ি সবাইকে একই জবাব দিল, “থানায় কাজ না হলে তখন নিয়ে যাবে”।



অবশেষে বুড়ি থানায় পৌছাল । কিন্তু বুড়ির নালিশে কেউ কান-ই দিল না । সারাদিন কত কাজ তাদের, দেশে কত মানুষ খুন হচ্ছে, ডাকাতি হচ্ছে, গণ্ডগোল তো আছেই । তাদের কি আর এই পান্তাবুড়ির কথা শোনার সময় আছে । পান্তাবুড়ি না হয়ে পোলাওবুড়ি হলে তাও না হয় একটা ব্যাপার ছিল । সুতরাং পান্তাবুড়িকে হতাশ হয়ে থানা থেকে ফিরতে হল কিন্তু ফেরার সময় শিং মাছ, কয়লা, বেল, গোবর, কাস্তে এবং বালুকে সাথে করে নিয়ে আসতে ভুলল না ।



পান্তাবুড়ি তার সারাদিনের কাজ শেষে রাতের খাবার খেয়ে যখন ভাতের হাড়িতে পানি দিতে গেল তখন তার মধ্যে শিং মাছও ছেড়ে দিল । আর কয়লায় আগুন জ্বেলে রাখল চুলায়, তবে আগুনে বেলকে রাখতে ভুলল না । চুলার সামনের পাশে রাখল গোবর । আর দরজার মেঝের কাছে বালু রেখে তাতে কাস্তে লুকিয়ে রাখল । সব কিছু শেষে বুড়ি ঘুমাতে চলে গেল ।



প্রতিদিনের মত সেই রাত্রেও চোর আসল আর কিছুক্ষন পর পান্তাভাতের হাড়ি নিয়ে বসল । চোর যেই না হাড়িতে হাত ঢুকিয়েছে ওমনি শিং মাছ তার হাতে কাটা ফুটিয়ে দিল । চোর তো তখন প্রচণ্ড যন্ত্রণায় অস্থির । হঠাৎ চোর দেখল কি যে চুলায় আগুন জ্বলছে । আগুনে হাতটা একটু সেকে নেয়ার জন্য চোর যেই না চুলার কাছে গেল, তখনি চুলায় রাখা বেলটা বিকট শব্দে ফেটে গেল । বেলের কিছু টুকরো চোরের চোখে লেগেছে তো, এজন্য ব্যাটা চোর কিছুই দেখছে না । তার পা গিয়ে পড়ল সোজা গোবরের ভিতর । চোর খানিকবাদে আশেপাশে চেয়ে মেঝের কাছে বালু দেখে তাতে পা মুছতে গেল । কিন্তু পা মুছতে গিয়ে বেচারার পা’টাই কেটে গেল বালুতে রাখা কাস্তের কারণে ।



কাটা পা নিয়ে হাটতে না পেরে চোর মেঝের পাশেই সারারাত বসে রইল । আর ওদিকে সকালে উঠেই পান্তাবুড়ি দেখল চোর কাটা পা নিয়ে বসে আছে । এরপর আর কি, বুড়ি গ্রামের লোকজন ডেকে চোর কে ধরিয়ে দিল আর আমার গল্পটিও ফুরাল ।



[অফটপিকঃ গল্পটা ছোটবেলায় মা’র কাছে অনেক বার শুনেছি । তবে মা অনেক ভাল করে বলতে পারত, আমার মত ফালতু না। ]

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৯

শায়মা বলেছেন: আমারও প্রিয় গল্প!
আমিও বাচ্চাদেরকে অনেক শুনাই এই গল্পটা ভাইয়া।

বাচ্চারা অনেক মজা পায়।


তুমি যদি চাও তোমাকেও শুনাতে পারি।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৪

অশ্রু কারিগড় বলেছেন: আসলেই অনেক মজার একটা গল্প, আর আমি যখন ছোট ছিলাম তখন রোজ গল্প শুনতে শুনতে ঘুমাতাম । আফসোস আম্মা পাষাণ হইয়া গেছে, আগের মত গল্প শুনায় না |-) :( |-)

আর গল্প শুনার জন্যতো আমি এক পায়ে খাড়া । এখনি শুনাও .।.।.।।।

২| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪০

খেয়া ঘাট বলেছেন: গল্পটি আমি ও শুনেছি। ভালো লাগলো পড়ে।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৫

অশ্রু কারিগড় বলেছেন: প্রিয় ব্লগার, ভাল আছেন নিশ্চয়ই । আপনার ভাল লাগল জেনে খুশি হলাম ভাই । ভাল থাকবেন ।

৩| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০৪

রামন বলেছেন:
গল্পে সামান্য পান্তা খেয়েও কঠিন শাস্তি পেতে হলো চোরকে অথচ এ দেশে দুর্নীতিবাজ আমলা, রাজনীতিকরা সিনা চুরি করেও বুক ফুলিয়ে চলে, কোন বিচার হয় না :(

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:১৭

অশ্রু কারিগড় বলেছেন: দারুণ বলেছেন তো । আসলেই তাই ভাই । তবে আমাদের আমজনতার দিন ও একদিন আসবে । সেই সুন্দর আগামীর অপেক্ষায় ।

৪| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২০

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন:

ছোটবেলার গল্পটা মনে পরে গেল । আহা কি দিনগুলোই না ছিল তখন!!!! গল্প বলার ধরণটাও অক্ষুন্ন রয়েছে । ভালো লাগল ।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৪

অশ্রু কারিগড় বলেছেন: আসলেই ভাই সোনালী সেই দিনগুলি কোথায় হারিয়ে গেল । ইস, আবার যদি ফিরে যেতে পারতাম |-)

৫| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৭

মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: নাইস শেয়ার!

১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৫

অশ্রু কারিগড় বলেছেন: ধন্যবাদ মাসুম ভাই । ভাল থাকবেন ।

৬| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১৩

কাগজের নৌকা (রাসেল হোসেন) বলেছেন: অনেক মজার একটা গল্প ।

ছোটকালে অনেক শুনতাম।

এখন মাঝে মাঝে শুনাতে হয়

শুভ কামনা

১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৬

অশ্রু কারিগড় বলেছেন: আসলেই মজার । আরও অনেক মজার গল্প শুনেছি কিন্তু এখন ঠিক মনে করতে পারি না । বয়স হইছে তো =p~ :P =p~

৭| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২১

মামুন রশিদ বলেছেন: ছোটবেলার গল্প বড়বেলায় শুনে খুব ভালো লাগলো ।

১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:১৭

অশ্রু কারিগড় বলেছেন: ধন্যবাদ মামুন ভাই । ভাল আছেন নিশ্চয়ই।

৮| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩০

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: হাহা, দারুণ গল্প তো!

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩১

অশ্রু কারিগড় বলেছেন: ধন্যবাদ প্রোফেসর । ভাল থাকবেন । আর দেরিতে মন্তব্যের জন্য দুঃখিত ।

৯| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩১

শুঁটকি মাছ বলেছেন: এইডা তো আমার চরম অপছন্দের গল্প।
অপছন্দ ক্যান জানেন?আমার আম্মু একটা গল্প বলা শুরু করলে সেইটা বলতেই থাকত।এই গল্পটাও তেমনি একটা গল্প।গল্পটা শুনতে শুনতে আমার ঐ বুড়ীটা আমার চক্ষুসূল হয়ে গেছিল! X((

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৩৫

অশ্রু কারিগড় বলেছেন: হা হা হা, ভালই মজা করেছেন ছোটবেলায় আম্মুর সাথে । তবে আমার কিন্তু বুড়িটাকে বেশ লাগত । মাঝখানেতো আমি আমার নানুমনিকে পান্তাবুড়ি ডাকতাম :P :#) :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.