![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"
আত্মকথন (পর্ব-২)
অমল বাইক চালানোর ফাকে বলল,
-জাবেদ ভাই, আপনি দারুন মানুষ, এত রাতে শুধু আমাকে দেখাবার জন্যে এত দুর চলছেন, আপনার মত বন্ধু পেয়ে আমি খুব খুশি।
জাবেদ নির্লিপ্ত ভাবে উত্তরে বলল,
-আমি আপনার বন্ধু হলাম কবে ?
- হননি ঠিক, তবে হয়ে যাবেন,
-হুম, যদি বেচে থাকি। আপ্নি কিন্তু দারুন অভদ্র, এত সময় ধরে আমার সাথে আছেন, অথচ নিজের নামটিও জানালেন না, অবশ্য আমি কিছু মনে করিনি
-আমি দুঃখিত, আমার নাম অমল, অমল আহমেদ, বাড়ি ঢাকায়, এখানে এসেছি ঘুড়ে বেড়াতে, আপনাদের এলাকাটা দারুন, আচ্ছা আর কত সময় লাগবে পৌছতে ?
-জানিনা কত সময় লাগবে, আমি সময় গুনে কাজ করিনা, আপনার নামটা অদ্ভুত, অর্ধেক হিন্দু, অর্ধেক মুসলিম,
-হ্যা, এটা নিয়ে আমাকে প্রায় ই বিপদে পরতে হয়, সামনে চায়ের দোকান দেখা যাচ্ছে, আসুন একটু গরম হয়ে নেই।
ওরা যখন বাইকটা থামাল, একদল কুকুর তখন সমানে চিত্কার শুরু করল.
অমল দু কাপ চায়ের অর্ডার দিল, ওর টাতে চিনি কম, দুধ ও কম, ওর একটা বন্ধু বলেছিল দুধ চিনি বেশি হলে চায়ের আসল স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়, একদিন ওটা ট্রাই করার পর থেকে অমল ও ওই ভাবেই চা খাওয়ার অভ্যাস করে ফেলেছে। স্বাদটা সত্য দারুন, একটু কষ কষ লাগে, কিন্তু কফির মত কাজ করে। কুকুর গুলো এখন ও তার্স্বরে চেচিয়ে যাচ্ছে, কোন কোনটা বুক ফাটিয়ে কেঁদে চলছে, মহা বিরক্তিকর একটা অবস্থা।
অমল পা উঠিয়ে আরাম করে বসে দোকানীকে জিজ্ঞাসা করল,
-ভাই আপনাদের এখানে এত কুকুর কেন ?এভাবে চেচালে তো পুরো গ্রামের কেউ ঘুমাতে পারবে না,
দোকানী বিরক্তের সাথে জানাল,
-ভাই এই গ্রামত ১ টাই কুত্তা, কিন্তু আইজ কেমনে এতগুলান হইছে আল্লাহ মালুম, আমগো পুরা গ্রামত এত্ত কুত্তার দেখা পাইতায় না, আফনারা ফাকানিত (বেড়াতে) যাইননি বা ?
-হ্যা, আমরা রাখাল শাহ'র মাজার দেখতে যাচ্ছি, আজ নাকি ওখানে ওরশ হবে ?
- যাও তে, আমাদের লাগি দোয়া করিও।
অমল ই বিল দিল, ১ প্যাকেট গোল্ড লিফ সিগারেট ও নিল, তারপর ত্রস্ত পায়ে বাইকের দিকে এগুলো, কোথায় যেন শুনেছিল, রাতে কুকুর রা অশরীরি আত্মা দেখতে পায়, আর ওই সময় তারা খুব চেচায় বা কাঁদে। আজকের ব্যাপারটা কি তেমন কিছু ? কি আসে যায়, কখনো দেখা হয়্নি, আজ হয়ে গেলে মন্দ কি।
অমল যখন বাইকে উঠল, জাবেদ ওর হাত ধরে বলল,
-ভাই আরেকটু পর যাই, আরেকটা সিগারেট খেয়ে নেই।
আসলে জেবেদের মনে তখন কিছু ভয় কাজ করছিল, ও জানে এ এলাকাটা তেমন সুবিধার না। তার ওপর কুকুর গুলো অস্বাভাবিক আচরন করছে। অমল কে ওর ভাল লেগেছে, ও চায়্না অমলের কোন ক্ষতি হোক।
ওরা যখন পুনরায় বাইকে উঠল, সেই আরেকজন তখন ওদের চেয়ে অনেক সামনে, কারন সে কুকুর পছন্দ করে না। কুকুরের চিত্কার তার কাছে অসহ্য লাগে। অমলদের হারাবার কোন ভয় নেই তার, সে জানে ওরা মাজারে যাবে, কেন জানবে না ? সে যে সেই স্টেশন থেকে ওদের পিছু নিয়েছে।
"
©somewhere in net ltd.