![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক আগে একটা গল্প শুনেছিলাম। গল্পটা অনেকটা এরকম- এক দেশে এক অত্যাচারি জমিদার ছিলেন। নিজের জমিদারি টিকিয়ে রাখার জন্য তিনি কিছু কুকুর পালন করতেন। কেউ যদি তার বিরুদ্ধে টু শব্দটি করত তবে তার পিছনে কুকুর লেলিয়ে দিতেন। এই কুকুর থ্যারাপিতে দারুন কাজ হওয়ায় জমিদার তখন আর সব পেয়াদা সেপাই এর প্রতি নজর কমিয়ে দিয়ে কুকুর পালন বৃদ্ধি করতে লাগলেন। সেই সাথে নিজের জমিদারিকে আরো কঠিন এবং স্থায়ী করনে কুকুরদের কাজে লাগাতে লাগলেন।
সেই অত্যাচারি জমিদারের ভূমিকায় এখন কর্পোরেট ব্যবসায়ী মালিকদের দেখা যাচ্ছে। আর কুকুরের ভূমিকা পালন করছে মিডিয়া। নিজের ব্যবসাগুলোকে স্থায়ী এবং নিরাপদ রাখতে তারা খুলে বসলেন একের পর মিডিয়া। এই মিডিয়া তৈরীর দিক থেকে শীর্ষ স্থানে রয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বসুন্ধরা গ্রুপের রয়েছে টিভি চ্যানেল নিউজ ২৪, রয়েছে দৈনিক পত্রিকা বাংলাদেশ প্রতিদিন, কালের কন্ঠ ও দ্যা ডেইলি সান। এছাড়াও রয়েছে অনলাই নিউজ পোর্টাল বাংলা নিউজ ২৪ ডট কম। এরপরও তাদের একটি এফএম রেডিও চ্যানেলও রয়েছে। নাম, রেডিও ক্যাপিট্যাল Fm ৯৪. ০৮। এইসব গুলো মিডিয়াই এখন বসুন্ধরা গ্রুপের পাহারাদার কুকুর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে উক্ত মিডিয়াগুলোর পক্ষপাতিত্বই তা দিবালোকের মত স্পষ্ট করে দিয়েছে।
একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বসুন্ধরা এলাকায় ঘটে গেল ছোটখাট যুদ্ধ। এই মিডিয়াগুলোর ভাষায় সেরকমই মনে হচ্ছে। বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের কাজ শুরু করার প্রথম থেকেই নিজস্ব সিকিউরিটি বাহিনী গড়ে তোলে। সোজা বাংলায় বলতে গেলে তারা স্বাধীন বাংলাদেশের ভিতরে আর একটি রাষ্ট্র তৈরী করে। আর সেই রাষ্ট্রের জন্য তারা আলাদা একটি নিরাপত্তা বাহিনী গড়ে তুলে। এই নিরাপত্তা বাহিনীর অধিকাংশরাই সাবেক সেনা এবং বিডিআর সদস্য। অবসর গ্রহনকারী অনেক কর্মকর্তাকে দিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের এই বাহিনী গড়ে তুলে। সেনাবাহিনীর সেই সদস্যরা এই বসুন্ধরাতে এসেও তাদের পূর্বের ঠাটবাট বজায় রেখেছিল। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়নি এমন মানুষ বসুন্ধরা এলাকায় খুব কমই পাওয়া যাবে। ঘটনার রাতেও তাদের সেই ঠাটবাট বজায় রাখতে গিয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তপুকে আঘাত করে বসে। একজন মানুষকে ৭-৮ জন পিটুনী দিলে কি অবস্থা হতে পারে তা একবার কল্পনা করে দেখুন।
এই ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার শিক্ষার্থীরা। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইন্ডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ শুরু করে। সেই রাতেই বসুন্ধরার সিকিউরিটি গার্ডরা সংঘবদ্ধ হয়ে এই শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ করতে আসে। কিন্তু উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের সাথে পেরে না উঠে তারা লেজ গুটিয়ে পালিয়ে যায়। যার ফলশ্রুতিতে শিক্ষার্থীরা এই ভাঙ্গচুর চালায়। পরের দিন কালের খন্ড পত্রিকাসহ বাংলাদেশ প্রতিদিনে শিরোনাম হল, বসুন্ধরায় রাতভর জঙ্গিদের তান্ডব। এও কি সম্ভব? হ্যাঁ সম্ভব। অন্তত বাংলাদেশের মত একটি দেশে সম্ভব।
যেখানে সরকারই তাদেরকে এই পথটি দেখিয়ে দেয় সেখানে কর্পোরেট রাঘব বোয়ালরা চুপ করে বসে থাকবে কেন। যে দেশে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় হলুদ সাংবাদিকদের উদর পূর্তি করা হয় সেদেশে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটাই স্বাভাবিক। যেদেশে তেলমারা সাংবাদিকদেরই শুধু বঙ্গভবন এবং প্রধানমন্ত্রী বাসভবনে প্রবেশ করবার এবং প্রশ্ন করবার সুযোগ দেওয়া হয় সেদেশে এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। যেদেশে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করার বদলে উল্টো বাহবা প্রদান করেন, সেদেশে তো এই মিডিয়া সন্ত্রাস হওয়াটাই স্বাভাবিক। গুরুজনরা পথ দেখিয়ে গেছেন আর শিষ্যরা তাতো অনুসরন করবেই। এতোদিন রাজনৈতিক কাজে মিডিয়াকে কুকুর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে আজ ব্যক্তিগত স্বার্থউদ্ধারের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। আগামীতে যে আরো কত কিছু হবে তা সময়ই আমাদের বলে দিবে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৯
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: নষ্ট রাজনীতির ফসল এই সাংঘাতিক রা। এথিকস বলে কিছু নেই। মালিক যা বলে তাই...