নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

টয়লেট এর ভেন্টিলেটার দিয়ে আশার আলো দেখতে পাই, এই দেশের কিছু হবেনা

চোখ বুজলেই মহাশুন্নে পোওছে যাই, স্পেস সুট না থাকার কারনে দীর্ঘ সময় অবস্থান করতে পারিনা

হেমায়েতপুরী

আমার অনেক কষ্ট, একই রুমএর মধ্যে অনেক জনকে আটকে রেখেছে ওরা,

হেমায়েতপুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

খন্ডিত ও সংকীর্ণ চিন্তার মাধ্যমে ইসলামী সংস্কৃতিকে স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক করে দেখানোটা ঠিক নয় । ইসলাম মানেই সব স্থানিক সংস্কৃতিকে বিসর্জন দেয়া নয় ।-Muhsin Abdullah Mu

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৫১

পহেলা বৈশাখ উদযাপন নিয়ে তরুণ সমাজ যথারীতি দুটি পক্ষে সক্রিয় হয়ে ওঠে । একটি গ্রুপ গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে যথারীতি মেতে ওঠে নানা উন্মাদনায় । আর ‘ইসলামপন্থি’ হিসেবে অনেকেই নববর্ষ উদযাপনের বিপক্ষে কট্টর অবস্থান নেন । ‘নববর্ষ উদযাপন’ করাটাকেই ‘শিরক’ , ‘অনৈসলামিক’ হিসেবে তুলে ধরেন । এতে করে একটা সন্দেহ সবার মনে ঢুকে যায় ‘এরা যে ইসলামী সমাজের কথা বলে , সেখানে তাহলে পহেলা বৈশাখ বলে কিছু থাকবে না’ !



খন্ডিত ও সংকীর্ণ চিন্তার মাধ্যমে ইসলামী সংস্কৃতিকে স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক করে দেখানোটা ঠিক নয় । ইসলাম মানেই সব স্থানিক সংস্কৃতিকে বিসর্জন দেয়া নয় ।



পহেলা বৈশাখে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে যেসব কাজ করা হয় সেগুলোর একটা অংশ আছে বড় ধরনের গুনাহ এবং ঈমান – আক্বিদার পরিপন্থি । আরেকটা অংশ আছে যেগুলোকে শরীয়াতের দৃষ্টিতে ‘মুবাহ’ বলা যেতে পারে । ‘মুবাহ’ হচ্ছে এমন বিষয় যে সম্পর্কে ইসলাম বাধাও দেয়না , উৎসাহিতও করেনা । নেকীও নেই , গুনাহও নেই । পান্তা ভাত খাওয়া , সামর্থবানদের ইলিশ খাওয়া ,বৈশাখি মেলায় যাওয়া , বেলুন ও ঘুড়ি ওড়ানো, নাগরদোলায় চড়া , পরিবারের সবাইকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাওয়া, দোকানে ‘হালখাতা’ অনুষ্ঠান করা ইত্যাদি এই অংশে পড়ে । সারাদেশের সাধারণ মানুষ নববর্ষ উদযাপন বলতে এগুলোকেই বোঝে । এগুলোই করে । এগুলো কি গুনাহের কাজ ? এগুলো কি ঈমান – আক্বিদার সাথে সাংঘর্ষিক ? উত্তর- না ।



বড় শহরগুলোতে বিশেষত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী এবং এলিটদের একটা অংশ অতিরিক্ত যেসব কাজ করে – সকাল বেলা ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামক বিশেষ শোভাযাত্রা, ঢাকার রমনা বটমূলে এবং চট্টগ্রামে ডিসি হিলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে । গান গেয়ে বৈশাখকে স্বাগত জানায় । কোথাও কোথাও কনসার্টের আয়োজন থাকে । এসব স্থানে নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশার সুযোগ থাকে ।



এই অংশটা ‘মুসলিমদের জন্য’ ঈমান পরিপন্থি কাজ । তবে অন্যান্য ধর্মাবলম্বিদের জন্য নয় । কারণ , তাদের ধর্মে এসব অনুমোদিত ।



পহেলা বৈশাখ দিনটিকে কোন পবিত্র দিন মনে করা , এদিনে দুঃখ কষ্ট দুর হয়ে যায় এরকম কোন বিশ্বাস করা ঈমানের সাথে সাংঘর্ষিক হবে । পহেলা বৈশাখকে উপলক্ষ করে সংকীর্ণ 'জাতীয়তাবাদ' উস্কে দেয়া ,অন্তরে লালন করা এগুলোও মৌলিক আক্বীদার পরিপন্থি । কনসার্টে অংশগ্রহণ , ছেলেমেয়ে অবাধ মেলামেশার সুযোগ গ্রহণ করা স্পষ্ট সীমালংঘন । কিছু রীতি অনুসরণ (মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালানো , শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ , বিদঘুটে চেহারাধারন , প্রতিকৃতি তৈরি ) করা হাদিস অনুযায়ী উম্মতের অন্তর্ভুক্তি হতে বের হওয়ার কারণ । এসকল বিষয়ে মুসলিমদের সতর্ক থাকতে হবে ।



কিন্তু এসব না করেও নববর্ষ উদযাপন করা যায় । ‘শোভাযাত্রা’ নিজে হারাম নয় , এর সাথে যুক্ত হওয়া মুর্তি , বিভিন্ন বিদঘুটে প্রতিকৃতি , বেপর্দা অবস্থায় নারী পুরুষের একসাথে অংশগ্রহণ এসব উপাদান এটিকে দূষিত করেছে । এসব উপাদান বাদ দিয়ে শোভাযাত্রা করলে সেটাও হারাম বা গুনাহ না হয়ে ‘মুবাহ’ পর্যায়ে পড়বে । নিষিদ্ধ বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার না করে এবং নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশার সুযোগ না রেখে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও করা যেতে পারে । বিভিন্ন স্থানে শিশু- কিশোর সংগঠন ‘ফুলকুড়ি’ এবং অন্যান্য ইসলামী সাংস্কৃতিক সংগঠন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে । এসব অনুষ্ঠান নারীদেরও উপভোগ করার সুযোগ রাখা হয় ।



কেউ কেউ নববর্ষ উদযাপনকে ‘হিন্দু’ সংস্কৃতি বলে পুরোপুরি বর্জন করার কথা বলছেন । ‘কোন ব্যক্তি যে জাতির অনুসরণ করবে সে তাদের অন্তর্ভূক্ত’ এই হাদীসকে ব্যবহার করছেন ।



কীভাবে এটা ‘হিন্দু’ সংস্কৃতি হলো ? বেদ, গীতা , ভগবত , রামায়নে কি পহেলা বৈশাখ উদযাপনের কথা বলা হয়েছে ? নেপালেও তো হিন্দুরা বাস করেন , সেখানকার হিন্দুরা কি পহেলা বৈশাখে নববর্ষ উদযাপন করেন ? না । তাহলে কেন ? কলকাতার হিন্দুরা আগে থেকে এটা পালন করেন । শুধুমাত্র এই যুক্তিতে এটাকে ‘হিন্দু সংস্কৃতি’ বলে চালানো ঠিক হবে না । কলকাতা একসময় এই অঞ্চলের রাজধানী ছিল । সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু ছিল । সেজন্য ওখানে হয়তো জাকজমক বেশি ছিল । ওখানকার খবরও প্রচারিত হয়েছিল বেশি ।



অন্য ধর্মের লোকেরা করলেই কি সব ‘পরিত্যাজ্য’ হয়ে যায় ? শিখরা তো দাড়ি রাখে এবং পাগড়ী পড়ে, তাই বলে কি সেসব মুসলিমদের জন্য নিষিদ্ধ হয়ে যাবে ?



মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়েছে অতি সম্প্রতি , ১৯৮৯ সাল থেকে । এটা নববর্ষ উদযাপনের কোন সার্বজনীন অনুষঙ্গ নয় । বাঙ্গালির হাজার বছরের ঐতিহ্যও নয় । এটাকে সহজেই বাদ দেয়া যেতে পারে ।



সুতরাং , ‘পহেলা বৈশাখে নববর্ষ উদযাপন’ কে সরাসরি ইসলাম বিরোধী বলার কোন যৌক্তিকতা আমি দেখিনা । ইসলাম শুধু আরবের জন্য ছিল না , ইসলাম সারা বিশ্বের জন্য । বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নানারকম স্থানীয় সংস্কৃতি রয়েছে । সবকিছুই ইসলাম বিরোধী নয় , হতেও পারেনা । ইসলামের মৌলিক সীমার ভেতরে যেকোন উৎসব গ্রহণযোগ্য । স্থানিক সংস্কৃতির সাথে আরব সংস্কৃতির মিল না থাকতে পারে , তাই বলে সবকিছুকে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক করে দেখানো ইসলামের প্রসারের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হবে ।



আমি মনে করি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলেও সেখানে নববর্ষ উদযাপনের ব্যবস্থা থাকতে হবে । যেসব বিষয় মুসলিমদের জন্য ঈমান পরিপন্থি , অন্যান্য ধর্মাবলম্বিদের জন্য সীমিত পরিসরে সেসব উপাদানসহ উদযাপনের সুযোগ দিতে হবে । কারণ, তাদের ধর্মে তো সেসব নিষেধ নেই ।



মোটকথা , ইসলামের সীমার ভেতরে থেকে অবশ্যই নববর্ষ উদযাপন করা যাবে । যদি কেউ সন্দেহ পোষণ করেন তাহলে তিনি তাক্বওয়াবান হিসেবে নিজে বিরত থাকতে পারেন ।



আমি নিজে সাধারণত ঘুমিয়ে এবং বই পড়ে পহেলা বৈশাখ কাটিয়ে দেই । কখনো কখনো বিকেলে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে বের হই । পান্তা , কাঁচামরিচ আমার মত মানুষের জীবনে নিত্যদিনের খাবার । আর ইলিশ আমার নাগালের বাইরে । তবে কেউ দাওয়াত দিলে মিস করিনা বটে !

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:১৯

কলাবাগান১ বলেছেন: বাংলা কি আফগানিস্তান????

২| ০২ রা মে, ২০১৩ সকাল ১১:৪১

কাজী দিদার বলেছেন: আমি মনে করি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলেও সেখানে নববর্ষ উদযাপনের ব্যবস্থা থাকতে হবে । যেসব বিষয় মুসলিমদের জন্য ঈমান পরিপন্থি , অন্যান্য ধর্মাবলম্বিদের জন্য সীমিত পরিসরে সেসব উপাদানসহ উদযাপনের সুযোগ দিতে হবে । কারণ, তাদের ধর্মে তো সেসব নিষেধ নেই ।

ভাই কি বললেন বুঝায়ে বলবেন , ????

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.