নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মধুরেণ সমাপয়েৎ

হালুম মামা৯৯

আমি একজন এ দেশের সাধারণ জনগণ ।

হালুম মামা৯৯ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি দ্বিতীয় পর্ব

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ভোর ৫:১২

খোলা চিঠি - ২
সর্বসক্তিমান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করিলাম
হে সৃষ্টিকর্তা,
আমি তোমার এই সৃষ্ট সৌরজগতের পৃথিবী নামক গ্রহের নগণ্য এক প্রাণী। পত্রের প্রথমে এই অধমের অন্তরের অন্তস্থল থেকে শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন। আশা করি আমাদের সকলের
দোয়া আশীর্বাদে ভালো আছেন।
আপনার চিঠি পেয়ে বড্ড আনন্দিত হয়েছি প্রভু। তবে কিছুটা বিচলিত বটে। কেন জানেন?
আপনার এই কথাগুলোর কারণে।
"নিজেকে বদলে নিস..
সময় সমাগত.. যখন চক্ষু হবে স্থির, যখন প্রাণ হবে ওষ্ঠাগত
আত্মীয় পরিজন কাছেই থাকবে কোন কাজেই আসবে না
সেই দিনকে ভয় কর.. নিজেকে তৈরী করে নে- এক সুন্দর নতুন ভ্রমনের জন্য!"
আচ্ছা প্রভু এ কেমন কথা?
আপনি কি ভয় দেখিয়ে মাথা নত করাতে চান শুধু? আন্তরিকও তো হতে পারতেন!
আন্তরিক হলে কি আমি শ্রদ্ধা করতাম না?
আর আমাকে যে বললেন রেড ওয়াইন আমার মাথা খেয়েছে, কেন প্রভু? আমাকে কি দেখেছেন কখনো মাতলামি করতে?
আপনার তো নেমন্তন্ন ছিল প্রভু একদিন দুজন একসাথে সাগর পাড়ে বসে রেড ওয়াইন খাবো।
গ্রহণ করলেন না। যাই হোক। আপনার মত উচ্চমার্গের মানুষ আমার মত মামুলি বান্দার সাথে না বসাটা স্বাভাবিক। এই দেখুন আপনাকে মানুষের সাথে তুলনা করে ফেললাম। কি করবো বলুন? জন্তু তো আর বলিনি।
যাই হোক। আসল কথাই আসি। আমি বার বার চেষ্টা করেছি প্রভু তোমার সাথে কোনো দ্বন্দ্ব না রেখে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে। তা আর হতে দিলে কই তুমি? মনের কোন ইচ্ছেটা তুমি পূরণ করেছ বলতে পারবে?
দুঃখিত প্রভু। আপনি থেকে তুমিতে নেমে এলাম।
কিছু মনে করোনা। আমরা আমরাই তো!
কি করবো বলো? মনের দুঃখে সব।খুব ভালোবাসি একজনকে। অন্তত এই আশাটা পূরণ করে তো আমার মনে বসতে পারতে! তাও করলে না প্রভু। আসলে তুমি তো রং নাম্বার।
আচ্ছা শুনো প্রভু, রেড ওয়াইনের নিমন্ত্রণ তো গ্রহণ করোনি। এইবার ভালো একটা অফার দিচ্ছি। এসো একদিন। একটা মুভি দেখবো। "PK"
পপকর্ণ, কোকা-কোলা আর মুভি। জমবে প্রভু ভালো।তুমি চাইলে সিগারেটও খেতে পারো।
কথা দিচ্ছি প্রভু, প্রাইভেসি বজায় রাখবো।
তবে প্রভু ভন্ডামি এইবার ছেড়ে দাও।
কি পাচ্ছো বলো ভন্ডামি করে?
আসি এইবার সাম্প্রতিক ইস্যু নিয়ে কিছু কথা ছিল। রোহিঙ্গা আর মূর্তি ভাঙ্গার উৎসব।
১৯৪১ সালের আদমশুমারি তে বাংলাদেশে হিন্দু ছিল ৩০% আর ২০০১ সালে সেটা হয়েছে ৮.৫% যা বর্তমানে ৭%। আচ্ছা কই গেল এই মালাউনের বাচ্চাগুলো? কই আর যাবে বলুন প্রভু!
মালাউনের দেশ ভারতে।তোমার কি মনে হয় প্রভু সুখ সহ্য করতে না পেরে ওরা দেশ ছেড়েছে?
কই রোহিঙ্গাদের জন্য মানবতা উতলে পড়া মানুষগুলোকে কোনোদিন দেখিনি একটি টু শব্দ করতে। ও সরি। সব তো তোমার ইশারা।
আর জানো, প্রতি বছরের মত বাংলার বিখ্যাত উৎসব মূর্তি ভাঙ্গা উৎসব শুরু হয়ে গেছে কিন্তু। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে এইবার তো নতুন এক পদ্ধতিতে মূর্তি ভাঙ্গা হচ্ছে। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল, চল মূর্তি ভেঙ্গে রক্ত ঠান্ডা করে আসি।
কি দারুণ, কি দারুণ।
একটু হাত তালি দিয়ে নাও প্রভু।
সাথে একটা সিগারেট টানা শুরু করো।নাহলে তোমার মেজাজ বিগড়ে যেতে পারে।
কত লক্ষ লক্ষ আদিবাসীর ঘড় পুড়িয়ে গৃহহীন করা হয়েছে সে খবর কি রেখেছ?
কত আদিবাসী মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে সে খবর কি রেখেছ?
তুমি কি নাছির নগরের কথা ভূলে গেলে?
প্রশ্নগুলো তোমাকে কেন করছি বলো?
যখন মিয়ানমারের সংখ্যালঘুর জন্য তোমার সৃষ্ট বান্দারা যুদ্ধের ডাক দেয়, তারা কি একবার ভেবেছে নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের কিভাবে রেখেছে?
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর যে অত্যাচার চলছে তার জন্য আমার মনের ভিতরটা কেঁপে উঠে। ওরাও মানুষ।ওদেরও বেঁচে থাকার অধিকার আছে। কিন্তু যখন এই কথাটাই আমি রাজিব,অভিজিৎ,নিলয়,অনন্তর মত মানুষগুলোর খুন হওয়ার মদদ দেয়া মানুষগুলোর মুখে শুনি তখন কেমন লাগে বল প্রভু। আর কেউ কেউ অতি আবগের বশে রোহিঙ্গা ইস্যুর সাথে ৭১ মিলিয়ে বসছে। আমি হলফ করে বলতে পারি ৭১ এ যে ভারত এক কোটি বাঙালীকে থাকার জায়গা দিয়েছিল সেটা যদি বর্তমান সময়ে হত এক লক্ষ বাঙালীকেও ঠায় দিতো না। আর যে তুরস্ককে মাথায় নিয়ে নাচা হচ্ছে সেই তুরস্কই সিরিয়ান রিফিউজি তার দেশে ঢুকে পরবে বলে বর্ডার কড়া পাহারায় রেখেছিল আর সেই তুরস্কের ফাস্ট লেডি বাংলাদেশে এসে মায়াকান্না কেঁদে গেল।
আর কত কিছু দেখাবি বলতো প্রভু?
আসলে গরম ভাতে বিলাই বেজাড়।
জঙ্গি হামলা হলে সন্ত্রাসের কোনো ধর্ম নেই,মূর্তি ভাঙলে দুর্বৃত্ত আর মিয়ানমারের ওরা বুদ্ধিস্ট।
এ কেমন বিচার?
রোহিঙ্গারা অলরেডি তাদের প্রতিভা দেখানো শুরু করে দিয়েছে।জুয়া খেলতে না দেয়ায় ইউপি মেম্বারকে মারধর,অস্ত্র নিয়ে তিন রোহিঙ্গা, ইয়াবা ইত্যাদি। এইগুলো তো সাম্প্রতিক সময়ের। অতীতের গুলো ছেড়েই দিলাম। ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রভু।
মিয়ানমার বলেই দিয়েছে উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া একজন রোহিঙ্গাও ওরা ফেরত নিবে না। ভাবটা এমন যেন আরাকানে কিছুই হয়নি আর ওরা যেন হাফ ছেড়ে বাচঁলো।
আসলে বাঙালী হচ্ছে এক কঠিন আবেগপ্রবণ জাতি। কিন্তু দুঃখ একটাই।
আবেগগুলো বড্ড সীমাবদ্ধ। কোথাও হয়তো আবেগের সাগর ভাসিয়ে দিচ্ছে আর কোথাও চোখ বন্ধ করে পালাচ্ছে। উদাহরণ জানতে চাস?
ইয়েমেন হচ্ছে উদাহরণ।
আর প্রতিবছরের মত এইবারও কিন্তু ধুমধাম করেই মূর্তি ভাঙ্গা উৎসব পালিত হচ্ছে।দ্বিতীয় বার তোর মাথায় দিলাম ব্যাপারটা। ভাবছি সময় পেলে সামনের বছর আমিও একবার সামিল হবো।
তুই তো বলেছিলি সব তোর সৃষ্টি। কোনোদিন কি সবাই এক চোখে দেখে এক পাল্লায় মেপেছিস?
তোরে বলে আর কি করবো? তোর তো গন্ডারের চামড়া। বললেও যা না বললেও তা। অনেক কথাই তো বলে ফেললাম।রাগ করিস না। আর তোর সাগর পাড়ে একসাথে বসে রেডওয়াইন খাওয়ার নিমন্ত্রণটা কিন্তু রয়েই গেল। আমি কিন্তু ওসব ছাইপাঁশ খাওয়া ছেড়েছি আগেই। শুধু তোর জন্য আবার বসবো। তো ভেবে দেখ তোরে আমি কত ভালবাসি। আর শুন,চিঠির উত্তরে আগের বারের মত ভয় দেখিয়ে উল্টা পাল্টা কিছু লিখিস না। জানিস তো আমি এমনিতেই অল্পেই ভয় পাই। আজ এইটুক।আর যেখানেই থাকিস একটু সাবধান। পাবলিক কিন্তু তোকে হন্য হয়ে খুজঁছে।
ইতি,
তোর পেয়ারের সৃষ্টি।
বিঃ দ্রঃ :- আমার কাছে চুলকানির মলম নেই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.